|

লরি মিলার

৩১ মার্চ, ১৯২৩ তারিখে টারানাকির নিউ প্লাইমাউথ এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ছিলেন। দলে তিনি মূলতঃ ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলতেন। বামহাতে ব্যাটিং করতেন। ১৯৫০-এর দশকে নিউজিল্যান্ডের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছিলেন।

১৯৫০-৫১ মৌসুম থেকে ১৯৫৯-৬০ মৌসুম পর্যন্ত প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন অতিবাহিত করেন। সেন্ট্রাল ডিস্ট্রিক্টস ও ওয়েলিংটনের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যর্থতার পরিচয় দিলেও ঘরোয়া আসরে অবিচ্ছেদ্য অংশ ছিলেন। প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে প্রায় পাঁচ হাজার রান তুলেছেন। ১৯৫২-৫৩ মৌসুমে কোনরূপ আউট ব্যতিরেকে ৩৯৭ রান সংগ্রহ করেছিলেন। বেশ দেরীতে ৩০তম জন্মদিনের পূর্বে জাতীয় পর্যায়ে খেলার জন্যে আমন্ত্রণ বার্তা লাভ করেন। সামগ্রিকভাবে তাঁর আন্তর্জাতিক খেলোয়াড়ী জীবন তেমন সফল ছিল না। প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে আসার ফলে তাঁর খেলোয়াড়ী জীবন ব্যাহত হয়।

১৯৫৩ থেকে ১৯৫৮ সময়কালে নিউজিল্যান্ডের পক্ষে সর্বমোট ১৩ টেস্টে অংশগ্রহণ করেছিলেন। ১৯৫২-৫৩ মৌসুমে নিজ দেশে জ্যাক চিদামের নেতৃত্বাধীন স্প্রিংবকের মুখোমুখি হন। ৬ মার্চ, ১৯৫৩ তারিখে ওয়েলিংটনে অনুষ্ঠিত সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে খেলেন। টেড মিউলি, এরিক ফিশার ও বব ব্লেয়ারের সাথে তাঁর একযোগে টেস্ট অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। খেলায় তিনি ১৭ ও ১৩ রান সংগ্রহ করেছিলেন। সফরকারীরা ইনিংস ও ১৮০ রানে জয় পেলে দুই-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে এগিয়ে যায়।

একই সফরের ১৩ মার্চ, ১৯৫৩ তারিখে অকল্যান্ডে সিরিজের দ্বিতীয় ও চূড়ান্ত টেস্টে অংশ নেন। ব্যক্তিগত সাফল্যের সাথে নিজেকে জড়ান। প্রথম ইনিংসে ১৮ রানে পৌঁছানোকালে ব্যক্তিগত পূর্বতন সর্বোচ্চ রান অতিক্রম করেন। একবার ব্যাটিংয়ে নেমে ৪৪ রান সংগ্রহ করেছিলেন। খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ালেও স্বাগতিকরা ১-০ ব্যবধানে সিরিজ খোঁয়ায়।

সমগ্র টেস্ট খেলোয়াড়ী জীবনে কোন অর্ধ-শতরানের ইনিংস খেলতে পারেননি। এছাড়াও, উপর্যুপরী চারটি শূন্য রানের অমর্যাদাকর রেকর্ডের সাথে জড়িত রয়েছেন ও অল্পের জন্যে পঞ্চমটিতে দুই রান তোলার ফলে হাতছাড়া হয়ে যায়।

১৯৫৩-৫৪ মৌসুমে জিওফ রাবোনের নেতৃত্বাধীন কিউই দলের সদস্যরূপে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে যান। দুই দলের মধ্যকার প্রথম টেস্ট সিরিজে অংশ নেন। ২৪ ডিসেম্বর, ১৯৫৩ তারিখে জোহানেসবার্গে অনুষ্ঠিত সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে অংশ নেন। নিউজিল্যান্ডের প্রথম ইনিংসে ১ ও দলীয় ২৪/৩ থাকাকালে বুকে আঘাত পেলে হাসপাতালে নীত হন। এরপর, দলের সংগ্রহ ৫৭/৫ থাকাকালে পুণরায় মাঠে ফিরে আসেন। খেলায় তিনি ১৪ ও ০ রান সংগ্রহ করেছিলেন। সফরকারীরা ১৩২ রানে পরাভূত হলে ২-০ ব্যবধানে সিরিজে পিছিয়ে পড়ে।

নিউজিল্যান্ডের ইতিহাসের প্রথম টেস্ট বিজয়ে অমূল্য ভূমিকা রাখেন। বড় ধরনের ইনিংস না খেললেও তাঁর সংগৃহীত রান বেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। ১৯৫৫-৫৬ মৌসুমে অকল্যান্ডে সফরকারী ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে নিম্নমূখী রানের খেলায় দলের জয়ে বিশাল অবদান রেখেছিলেন। ডেনিস অ্যাটকিনসনের নেতৃত্বাধীন ক্যারিবীয় দলের মুখোমুখি হন। ৯ মার্চ, ১৯৫৬ তারিখে অকল্যান্ডে সিরিজের চতুর্থ ও চূড়ান্ত টেস্টে অংশ নেন। ব্যক্তিগত সাফল্যের ছাঁপ রাখেন। প্রথম ইনিংসে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ পূর্বতন ৪৪ রান অতিক্রম করেন। ৪৭ ও ২৫ রান সংগ্রহ করেছিলেন। এছাড়াও, একটি ক্যাচ তালুবন্দী করে ২৬ বছর ও ৪৫ টেস্টে অংশ নেয়ার পর নিউজিল্যান্ডের প্রথম টেস্ট বিজয়ে অনবদ্য অবদান রাখেন। খেলায় তাঁর দল ১৯০ রানে জয় পেলেও ৩-১ ব্যবধানে সিরিজ খোঁয়ায়।

১৯৫৮ সালে জন রিডের নেতৃত্বাধীন কিউই দলের সদস্যরূপে প্রথমবারের মতো ইংল্যান্ড সফরে যান। ৫ জুন, ১৯৫৮ তারিখে বার্মিংহামে অনুষ্ঠিত সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। ব্যাট হাতে নিয়ে ৭ ও ৮ রান সংগ্রহ করেন। সফরকারীরা ২০৫ রানে পরাজিত হলে পাঁচ-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে পিছিয়ে পড়ে।

একই সফরের ২১ আগস্ট, ১৯৫৮ তারিখে ওভালে অনুষ্ঠিত সিরিজের পঞ্চম ও চূড়ান্ত টেস্টে অংশ নেন। খেলায় তিনি ২৫ ও ৪ রান সংগ্রহ করেছিলেন। খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ালেও সফরকারীরা ৪-০ ব্যবধানে সিরিজ খোঁয়ায়। পরবর্তীতে, এটিই তাঁর সর্বশেষ টেস্টে পরিণত হয়।

পরবর্তীতে ওয়েলিংটনে বসবাস করতেন। ক্রিকেট খেলার বাইরে ঘরোয়া পর্যায়ে প্রথম-শ্রেণীর রাগবি খেলায় অংশ নিয়েছিলেন। ১৭ ডিসেম্বর, ১৯৯৬ তারিখে ওয়েলিংটনের কাপিটি এলাকায় ৭৩ বছর ২৬১ দিন বয়সে তাঁর দেহাবসান ঘটে।

Similar Posts

  • | | |

    জিম পার্কস, ১৯০৩

    ১২ মে, ১৯০৩ তারিখে সাসেক্সের হেওয়ার্ডস হিদ এলাকায় জন্মগ্রহণকারী বিখ্যাত ক্রিকেটার, কোচ ও আম্পায়ার ছিলেন। মূলতঃ অল-রাউন্ডার হিসেবে খেলতেন। ডানহাতে ব্যাটিং কর্মে অগ্রসর হতেন। ১৯৩০-এর দশকে ইংল্যান্ডের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন। নিজ শহরে শৈশবকাল অতিবাহিত করেন। সাসেক্সের ক্লাব ও গ্রাউন্ড দলের বিপক্ষে চমৎকার ক্রীড়াশৈলী প্রদর্শনে সাসেক্স কর্তৃপক্ষের নজর কাড়েন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর ইংরেজ কাউন্টি…

  • |

    জাভেদ ওমর

    ২৫ নভেম্বর, ১৯৭৬ তারিখে ঢাকায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার। মূলতঃ উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলতেন। ডানহাতে ব্যাটিং কর্মে মনোনিবেশ ঘটাতেন। এছাড়াও, লেগ-ব্রেক বোলিংয়ে পারদর্শী ছিলেন। বাংলাদেশের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন। ‘গুল্লা’ ডাকনামে পরিচিত জাভেদ ওমর বেলিম কখনোবা ‘ওমর বেলিম’ নামে পরিচিতি পেয়েছেন। ১৯৯৭-৯৮ মৌসুম থেকে ২০১১-১২ মৌসুম পর্যন্ত সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান রাখেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর…

  • | | |

    ডেল স্টেইন

    ২৭ জুন, ১৯৮৩ তারিখে ছোট্ট শহর ফালাবোরা এলাকায় জন্মগ্রহণকারী বিখ্যাত ক্রিকেটার, কোচ ও ধারাভাষ্যকার। মূলতঃ বোলার হিসেবে দলে ভূমিকা রেখে গেছেন। ডানহাতে ফাস্ট বোলিংয়ের পাশাপাশি ডানহাতে নিচেরসারিতে কার্যকর ব্যাটিং করতেন। দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে সকল স্তরের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন। ৫ ফুট ১০ ইঞ্চি (১.৭৯ মিটার) উচ্চতার অধিকারী। পিতা খনিতে কাজ করতেন। ক্ষুদে সংস্করণের ক্রিকেটে দক্ষিণ…

  • | | |

    কপিল দেব

    ৬ জানুয়ারি, ১৯৫৯ তারিখে চণ্ডীগড়ে জন্মগ্রহণকারী বিখ্যাত ক্রিকেটার ও কোচ। মূলতঃ অল-রাউন্ডারের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিলেন। ডানহাতে ফাস্ট-মিডিয়াম বোলিং ও ডানহাতে ব্যাটিং করতেন। এছাড়াও, ভারত দলের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেছেন। ভারতীয় ক্রিকেটের অন্যতম জীবন্ত কিংবদন্তী। এককথায় অদ্যাবধি ভারতের সেরা ফাস্ট বোলিং অল-রাউন্ডার হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছেন স্ব-মহিমায়। ভারতীয় ক্রিকেটের ইতিহাসের সেরা পেস বোলার হিসেবে পরিচিতি লাভ…

  • |

    বিলি গান

    ৪ ডিসেম্বর, ১৮৫৮ তারিখে নটিংহ্যামের সেন্ট অ্যান্স এলাকায় জন্মগ্রহণকারী বিখ্যাত, পেশাদার ক্রিকেটার ও ফুটবলার ছিলেন। মূলতঃ ব্যাটসম্যান হিসেবে দলে ভূমিকা রেখে গেছেন। ডানহাতে ব্যাটিং কর্মে অগ্রসর হতেন। পাশাপাশি ডানহাতি স্লো বোলিং করতেন। ইংল্যান্ডের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছিলেন। ১৪ বছর বয়সে নটিংহ্যামের লিস্টার গেটে অবস্থিত রিচার্ড ডাফ্টের ক্রিকেটসামগ্রী প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন। ৬ ফুট ২ ইঞ্চি…

  • | |

    হিউ ম্যাসি

    ১১ এপ্রিল, ১৮৫৪ তারিখে ভিক্টোরিয়ার বেলফাস্টের কাছাকাছি এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ছিলেন। মূলতঃ ব্যাটসম্যান হিসেবে দলে ভূমিকা রেখেছিলেন। ডানহাতে ব্যাটিং করতেন। ১৮৮০-এর দশকে অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন। এছাড়াও, দলের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেছিলেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটে নিউ সাউথ ওয়েলসের প্রতিনিধিত্ব করতেন। ১৮৭৭-৭৮ মৌসুম থেকে ১৮৯৫ সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন অতিবাহিত করেছেন। ১৮৮১…