২ জুলাই, ১৮৮২ তারিখে সাউথ অস্ট্রেলিয়ার জেমসটাউনে জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ও ধারাভাষ্যকার ছিলেন। মূলতঃ উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলতেন। ডানহাতে ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি ডানহাতে বোলিং করতেন। অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন।
জন্ম সনদে তিনি ‘রিচার্ড এডগার মেইন’ নামে পরিচিতি পান। দীর্ঘদেহী ও সুদর্শন প্রকৃতির ব্যাটসম্যান হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন। কাট ও ড্রাইভের দিকেই অধিক মনোনিবেশ ঘটাতেন। তবে, সাধারণমানের ফিল্ডিং করতেন। ১৯০৬-০৭ মৌসুম থেকে ১৯২৫-২৬ মৌসুম পর্যন্ত সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন অতিবাহিত করেছেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটে সাউথ অস্ট্রেলিয়া ও ভিক্টোরিয়া দলের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। ১৯০৬ সালে সাউথ অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে প্রথম খেলতে নামেন।
১৯১২ থেকে ১৯২১ সাল পর্যন্ত সময়কালে অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে চারটিমাত্র টেস্টে অংশগ্রহণের সুযোগ পেয়েছিলেন। ১৯১২ সালে প্রথমবারের মতো ইংল্যান্ডের মাটিতে টেস্ট খেলেন। ঐ বছর ইংল্যান্ডে অনুষ্ঠিত মুখ থুবড়ে পড়া ত্রি-দেশীয় প্রতিযোগিতায় সিড গ্রিগরি’র নেতৃত্বাধীন অজি দলের সদস্যরূপে গমন করেন। এ প্রতিযোগিতায় দক্ষিণ আফ্রিকার মুখোমুখি হন। এ সফরে দুই টেস্টে অংশগ্রহণ করেন। ১৫ জুলাই, ১৯১২ তারিখে লন্ডনের লর্ডসে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে তাঁর টেস্ট অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। খেলায় তিনি ২৩ ও অপরাজিত ২৫ রানের ইনিংস খেলেন। ১০ উইকেটে জয়লাভ করে তাঁর দল।
এরপর, ১৯১৪ সালে আমেরিকা গমনার্থে শক্তিধর দলের সদস্য ছিলেন। এ পর্যায়ে তিনি নিজ রাজ্য দলের অধিনায়কের দায়িত্বে ছিলেন। প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শেষ হবার পর ভিক্টোরিয়া দলে চলে যান। পাশাপাশি দলকে নেতৃত্ব দেন। ১৯২১ সালে ওয়ারউইক আর্মস্ট্রংয়ের নেতৃত্বাধীন দলের সদস্যরূপে পুণরায় ইংল্যান্ড গমন করেন। এ পর্যায়ে খুবই সীমিত পর্যায়ে অংশগ্রহণের সুযোগ পান। কোন টেস্টে অংশগ্রহণের সুযোগ পাননি। কেবলমাত্র গুরুত্বহীন খেলাগুলোয় তাঁকে রাখা হয়।
তাসত্ত্বেও, ১৯২১-২২ মৌসুমে হার্বি কলিন্সের নেতৃত্বাধীন অজি দলের সদস্যরূপে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে যান। এবারও তিনি সফল হননি। ২৬ নভেম্বর, ১৯২১ তারিখে কেপটাউনে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজের তৃতীয় ও চূড়ান্ত টেস্টে অংশ নেন। খেলায় তিনি একবার ব্যাটিংয়ে নেমে ১৫ রান সংগ্রহসহ দুইটি ক্যাচ তালুবন্দী করেছিলেন। সফরকারীরা ১০ উইকেটে জয় পেলে ১-০ ব্যবধানে সিরিজে বিজয়ী হয়। পরবর্তীতে, এটিই তাঁর সর্বশেষ টেস্টে পরিণত হয়।
১৯২৩-২৪ মৌসুমে মেলবোর্নে কুইন্সল্যান্ডের বিপক্ষে বিল পন্সফোর্ডের (২৪৮) সাথে প্রথম উইকেট ৪৫৬ রানের জুটি দাঁড় করান ও রাজ্য দলের রেকর্ড গড়েন। তিনি ২০৯ রান তুলেছিলেন। সবগুলো প্রথম-শ্রেণীর খেলায় অংশ নিয়ে ৩২.৭২ গড়ে ১৪ শতক সহযোগে ৭৬২৪ রান তুলেছিলেন। এছাড়াও, মাঝে-মধ্যে বোলিং করার সুযোগ পেয়ে ৩৩.৮৪ গড়ে ১৩ উইকেট দখল করেছিলেন। পাশাপাশি, ৮০টি ক্যাচ তালুবন্দী করেন। ক্রিকেট খেলা থেকে অবসর গ্রহণের পর ধারাভাষ্য কর্মের দিকে ঝুঁকে পড়েন। ১৯২৪-২৫ মৌসুমে বেতার ধারাভাষ্যে তিনি শুরুরদিকের অন্যতম প্রথম ধারাভাষ্যকার ছিলেন। স্থানীয় বেতার কেন্দ্রে এমসিজিতে অনুষ্ঠিত দুইটি অ্যাশেজ টেস্টে ধারাভাষ্য দেন। ২৬ অক্টোবর, ১৯৬১ তারিখে ভিক্টোরিয়ার রিচমন্ড এলাকায় ৭৯ বছর ১১৬ দিন বয়সে তাঁর দেহাবসান ঘটে।
