| |

কার্ল রেকেম্যান

৩ জুন, ১৯৬০ তারিখে কুইন্সল্যান্ডের ওন্ডাই এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার, কোচ ও রাজনীতিবিদ। মূলতঃ বোলার হিসেবে দলে ভূমিকা রেখে গেছেন। ডানহাতে ফাস্ট বোলিংয়ের পাশাপাশি ডানহাতে নিচেরসারিতে ব্যাটিংয়ে নামতেন। অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন।

দলীয় সঙ্গীদের কাছে ‘মক্কা’ ডাকনামে ভূষিত হয়েছিলেন। শক্ত মজবুত গড়নের অধিকারী ছিলেন। নিজের সময়কালে অন্যতম কার্যকর ফাস্ট বোলার হিসেবে পরিগণিত হয়েছিলেন। ব্যাটসম্যানদের সমীহের পাত্রে পরিণত হয়েছিলেন। ১৯৭৯-৮০ মৌসুম থেকে ১৯৯৫-৯৬ সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান রাখেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটে কুইন্সল্যান্ড এবং ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে সারের প্রতিনিধিত্ব করেছেন।

১৯৮২ থেকে ১৯৯১ সাল পর্যন্ত সময়কালে অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে সর্বমোট ১২ টেস্ট ও ৫২টি ওডিআইয়ে অংশ নিয়েছেন। ১৯৮২-৮৩ মৌসুমে নিজ দেশে বব উইলিসের নেতৃত্বাধীন ইংরেজ দলের মুখোমুখি হন। ২৬ নভেম্বর, ১৯৮২ তারিখে ব্রিসবেনে অনুষ্ঠিত সফররত ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে অংশ নেন। কেপলার ওয়েসেলসের সাথে তাঁর একযোগে টেস্ট অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। ঘটনাবহুল এ টেস্টে ইংল্যান্ডের দ্বিতীয় ইনিংসে আঘাতের কবলে পড়লে ব্রুস ইয়ার্ডলি তাঁর ওভার শেষ করেন। নিজস্ব ত্রয়োদশ ও ইনিংসের ৩৫তম ওভারে বোলিংকালে দুই বল বোলিংয়ের পর নিজের অপরাগতা প্রকাশ করেছিলেন। খেলায় তিনি ২/৬১ ও ০/৩৫ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। এছাড়াও, একবার ব্যাটিংয়ে নেমে ৪ রান সংগ্রহসহ একটি ক্যাচ তালুবন্দীকরণে অগ্রসর হন। তবে, অপর অভিষেকধারী কেপলার ওয়েলসেলসের স্মরণীয় ক্রীড়াশৈলী প্রদর্শনের সুবাদে স্বাগতিকরা ৭ উইকেটে জয় পেলে পাঁচ-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে যায়।

১৯৮৩-৮৪ মৌসুমে পার্থে সফরকারী পাকিস্তানের বিপক্ষে দূর্দান্ত সূচনা ঘটান। ১১ উইকেট দখল করেন। দক্ষিণ আফ্রিকায় বর্ণবৈষম্যবাদ চলাকালীন ১৯৮৫-৮৬ মৌসুমে গমন করেন ও নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়েন। এছাড়াও, আঘাতে জর্জড়িত থাকার কারণেও তাঁর খেলোয়াড়ী জীবনে বিরূপ প্রভাব ফেলে। খেলোয়াড়ী জীবন স্বল্পকালীন হলেও বলে কার্যকর পেস ও নিখুঁতভাব বজায় রাখতেন।

১৯৮৯-৯০ মৌসুমে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে নিজেকে স্মরণীয় করে রাখেন। দ্বিতীয় ইনিংসে ৩১-২১-২৩-১ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করিয়েছিলেন।

১৯৮৯-৯০ মৌসুমে নিজ দেশে জন রাইটের নেতৃত্বাধীন কিউই দলের মুখোমুখি হন। ২৪ নভেম্বর, ১৯৮৯ তারিখে পার্থের ওয়াকা গ্রাউন্ডে অনুষ্ঠিত সফররত নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের একমাত্র টেস্টে অংশ নেন। ব্যক্তিগত সফলতার সাথে নিজেকে জড়ান। খেলায় তিনি ব্যক্তিগত পূর্বতন ১২ রানের সর্বোচ্চ রান অতিক্রম করেন। দলের একমাত্র ইনিংসে ১৫* রান সংগ্রহ করেছিলেন। এছাড়াও, ২/৩৯ ও ১/২৩ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। তবে, মার্ক গ্রেটব্যাচের অসাধারণ ব্যাটিং দৃঢ়তায় খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ায়।

১৯৮৯-৯০ মৌসুমে প্রথমবারের মতো নিউজিল্যান্ডের মাটিতে টেস্ট খেলেন। ঐ মৌসুমে অ্যালান বর্ডারের নেতৃত্বাধীন অজি দলের সদস্যরূপে নিউজিল্যান্ড গমন করেন। ১৫ মার্চ, ১৯৯০ তারিখে ওয়েলিংটনে সিরিজের একমাত্র টেস্টে অংশ নেন। বল হাতে নিয়ে ০/৪২ ও ০/৩৯ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। ব্যাটিংয়ে নেমে ৬* ও ১ রান সংগ্রহ করেন। প্রতিপক্ষীয় অধিনায়ক জন রাইটের অনবদ্য ব্যাটিংশৈলীর কল্যাণে স্বাগতিকরা ৯ উইকেটে জয় পায়।

১৯৯০-৯১ মৌসুমে নিজ দেশে গ্রাহাম গুচের নেতৃত্বাধীন ইংরেজ দলের মুখোমুখি হন। ৪ জানুয়ারি, ১৯৯১ তারিখে সিডনিতে অনুষ্ঠিত সফররত ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের তৃতীয় টেস্টে অংশ নেন। খেলায় তিনি ০/৮৯ ও ০/২০ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। এছাড়াও, ব্যাট হাতে নিয়ে ১ ও ৯ রান সংগ্রহ করেছিলেন। মাইকেল অ্যাথার্টনের বীরত্বপূর্ণ শতকের কল্যাণে খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ালেও পাঁচ-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে স্বাগতিকরা ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে যায়। পরবর্তীতে, এটিই তাঁর সর্বশেষ টেস্টে পরিণত হয়।

টেস্টগুলো থেকে ৩৯ উইকেট ও ওডিআইয়ে ৮২ উইকেট পেয়েছেন। ওডিআই থেকে মাত্র ২.৮৩ গড়ে ৩৪ রান তুলতে পেরেছিলেন। নিজের সময়কালে অস্ট্রেলিয়ার অন্যতম সেরা বোলার হিসেবে চিত্রিত করলেও পূর্ণাঙ্গভাবে নিজেকে মেলে ধরতে পারেননি। চোখে স্বপ্ন নিয়ে ২৩ বছর বয়সে পার্থে প্রথম পা রাখেন। অনেকাংশেই তা প্রথম দর্শনেই প্রেমে নিমজ্জ্বিত হবার শামিল ছিল। ১৯৯৫ সালে ক্রিকেট জগৎ থেকে অবসর গ্রহণ করেন।

মাইকেল কাসপ্রোভিচ লাল-বলের খেলা প্রতিপক্ষীয় ক্রিকেটারদের সেরা দলের তালিকায় তাঁকে ঠাঁই দিয়েছেন। ক্রিকেট খেলা থেকে অবসর গ্রহণের পর কোচিং জগতের দিকে ধাবিত হন। ২০০০ সালে জিম্বাবুয়ে দলের কোচ হিসেবে মনোনীত হন। দুই মৌসুম এ দায়িত্ব পালনের পর জুলাই, ২০০১ সালে অন্য ভুবনের দিকে দৃষ্টিপাত করেন। এক পর্যায়ে রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। সেপ্টেম্বর, ২০১১ সালে ক্যাটার্সের নেতৃত্বাধীন অস্ট্রেলিয়ান পার্টির প্রার্থী হিসেবে কুইন্সল্যান্ড রাজ্যের নানাঙ্গো নির্বাচনী এলাকার প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। ঐ নির্বাচনে তিনি পরাজিত হয়েছিলেন। লন্ডনে দেশত্যাগী অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেট দল প্রতিষ্ঠা করেন ও জড়িতরা নিজেদেরকে ‘কার্ল রেকেম্যান অল স্টার্স’ নামে পরিচিতি ঘটান।

Similar Posts

  • | | | |

    বব সিম্পসন

    ৩ ফেব্রুয়ারি, ১৯৩৬ তারিখে নিউ সাউথ ওয়েলসের মারিকভিল এলাকায় জন্মগ্রহণকারী বিখ্যাত ক্রিকেটার, কোচ ও রেফারি ছিলেন। মূলতঃ ব্যাটসম্যান হিসেবে দলে ভূমিকা রেখেছিলেন। ডানহাতে ব্যাটিং করতেন। এছাড়াও, লেগ-ব্রেক ও গুগলি বোলিংয়ের পাশাপাশি মাঝে-মধ্যে উইকেট-রক্ষণে অগ্রসর হতেন। অস্ট্রেলিয়া দলের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেছেন। ১৯৫২-৫৩ মৌসুম থেকে ১৯৭৭-৭৮ মৌসুম পর্যন্ত সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন অতিবাহিত করেন। ঘরোয়া আসরের…

  • | |

    অ্যালান ডোনাল্ড

    ২০ অক্টোবর, ১৯৬৬ তারিখে অরেঞ্জ ফ্রি স্টেটের ব্লোমফন্তেইন এলাকায় জন্মগ্রহণকারী বিখ্যাত ক্রিকেটার ও কোচ। মূলতঃ বোলার হিসেবে দলে ভূমিকা রেখে গেছেন। ডানহাতে ফাস্ট বোলিং করতেন। এছাড়াও, ডানহাতে নিচেরসারিতে ব্যাটিংয়ে নামতেন। দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন। ৬ ফুট ৪ ইঞ্চি (১.৯৩ মিটার) উচ্চতার অধিকারী। ‘হোয়াইট লাইটনিং’ ডাকনামে পরিচিতি পান। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর দক্ষিণ আফ্রিকান…

  • | |

    ফ্রাঙ্ক ইরিডেল

    ১৯ জুন, ১৮৬৭ তারিখে নিউ সাউথ ওয়েলসের সারে হিলস এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার, প্রশাসক ও সাংবাদিক ছিলেন। মূলতঃ ব্যাটসম্যান হিসেবে ভূমিকা রেখেছিলেন। ডানহাতে ব্যাটিং করতেন। ১৮৯০-এর দশকে অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছিলেন। জনৈক আয়রনমোঙ্গার ও আইরিশ বংশোদ্ভূত স্ত্রীর সন্তান ছিলেন। দীর্ঘকায় গড়নের অধিকারী। রক্ষণাত্মক ধাঁচ অবলম্বনসহ চমৎকার মারমুখী ব্যাটিংয়ে পারদর্শী ছিলেন। সতেরো বছর বয়সে সফররত…

  • |

    অলোক কাপালী

    ১ জানুয়ারি, ১৯৮৪ তারিখে সিলেটে জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার। মূলতঃ অল-রাউন্ডার হিসেবে দলে ভূমিকা রেখেছেন। মাঝারিসারিতে ডানহাতে ব্যাটিং করতেন। এছাড়াও, ডানহাতে কার্যকর লেগ-ব্রেক বোলিংয়ে পারদর্শীতা দেখিয়েছেন। বাংলাদেশের পক্ষে সকল স্তরের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন। অনেক উদীয়মান ও প্রতিভাবান বাংলাদেশী ক্রিকেটারদের ভীড়ে তিনিও নিজেকে সর্বোচ্চ পর্যায়ে উপনীত করতে পারেননি। টেস্ট ক্রিকেটে হ্যাট্রিক লাভ ব্যতীত বাংলাদেশ দলে তেমন সাফল্যের…

  • | | |

    জেফ থমসন

    ১৬ আগস্ট, ১৯৫০ নিউ সাউথ ওয়েলসের গ্রীনাক্রে এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার, কোচ ও ধারাভাষ্যকার। মূলতঃ বোলার হিসেবে দলে ভূমিকা রেখে গেছেন। ডানহাতে ফাস্ট বোলিংয়ের পাশাপাশি ডানহাতে নিচেরসারিতে ব্যাটিংয়ে নামতেন। অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছিলেন। ‘থম্মো’ ডাকনামে ভূষিত হয়েছিলেন। ১৯৭২-৭৩ মৌসুম থেকে ১৯৮৫-৮৬ মৌসুম পর্যন্ত সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন সরব রেখেছিলেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটে…

  • | |

    ফ্রান্সিস ম্যাককিনন

    ৯ এপ্রিল, ১৮৪৮ তারিখে লন্ডনের প্যাডিংটন এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ও প্রশাসক ছিলেন। মূলতঃ ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলতেন। ডানহাতে ব্যাটিং কর্মে অগ্রসর হতেন তিনি। ১৮৭০-এর দশকে ইংল্যান্ডের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছিলেন। হ্যারোভিয়ান হিসেবে প্রথম একাদশে খেলার সুযোগ পাননি। এক পর্যায়ে কেমব্রিজের অধীনে সেন্ট জোন্স কলেজে দারুণ খেলে ব্লু আদায় করে নিতে সক্ষম হন। ১৮৭০ সালে অক্সফোর্ডের…