|

চার্লি গ্রিফিথ

১৪ ডিসেম্বর, ১৯৩৮ তারিখে বার্বাডোসের পাই কর্নার এলাকায় জন্মগ্রহণকারী বিখ্যাত ক্রিকেটার। মূলতঃ বোলার হিসেবে দলে ভূমিকা রেখে গেছেন। ডানহাতে ফাস্ট বোলিংয়ের পাশাপাশি ডানহাতে নিচেরসারিতে কার্যকর ব্যাটিংশৈলী প্রদর্শন করেছেন। ১৯৬০-এর দশকে ওয়েস্ট ইন্ডিজের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছিলেন।

দীর্ঘকায় গড়ন, পেশীবহুল ও অপরিসীম শক্তিমত্তার অধিকারী হিসেবে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ফাস্ট বোলারদের প্রতিমূর্তি ছিলেন। পা বরাবর ইয়র্কার কিংবা ভয়ঙ্কর প্রকৃতির বাউন্সারে নিজের সাফল্য ছিনিয়ে আনতেন। সর্বকালের অন্যতম ভীতিদায়ক বোলার হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন। ওয়েস হলের সাথে ফাস্ট বোলিং জুটি গড়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের টেস্ট জয়ে বিরাট ভূমিকা রেখেছিলেন। কৈশোরের দিনগুলোয় উইকেট-রক্ষকের দায়িত্ব পালন করতেন। পরবর্তীতে, অফ-স্পিন বোলিং করতে অগ্রসর হলেও দ্রুতগতির বোলিং কর্মে মনোনিবেশ ঘটান। পরীক্ষামূলকভাবে বোলিং পরিবর্তন করে ৭/১ লাভ করার পর বোলিংয়ের ধরন পাল্টে ফেলেন। স্মর্তব্য যে, তাঁর কারণে নরি কন্ট্রাক্টরের খেলোয়াড়ী জীবন অনেকটা অকালেই শেষ হয়ে গিয়েছিল।

ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান ক্রিকেটে বার্বাডোসের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। ১৯৫৯-৬০ মৌসুম থেকে ১৯৬৮-৬৯ মৌসুম পর্যন্ত সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান রাখেন। প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটের প্রথম খেলায় কলিন কাউড্রে, মাইক স্মিথ, পিটার মে, কেন ব্যারিংটন ও টেড ডেক্সটারকে বিদেয় করে তাৎক্ষণিকভাবে নিজের পরিচিতি ঘটান।

১৯৬০ থেকে ১৯৬৯ সাল পর্যন্ত ওয়েস্ট ইন্ডিজের পক্ষে সর্বমোট ২৮ টেস্টে অংশগ্রহণ করেছিলেন। টেস্টগুলো থেকে ২৮.৫৪ গড়ে ৯৪ উইকেট দখল করেছিলেন। ১৯৫৯-৬০ মৌসুমে নিজ দেশে কলিন কাউড্রে’র নেতৃত্বাধীন এমসিসি দলের মুখোমুখি হন। ২৫ মার্চ, ১৯৬০ তারিখে পোর্ট অব স্পেনে অনুষ্ঠিত সফররত ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের পঞ্চম ও চূড়ান্ত টেস্টে তাঁর অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। খেলায় তিনি ১/৬২ ও ০/৪০ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। এছাড়াও, ব্যাট হাতে নিয়ে ৫ রানে অপরাজিত ছিলেন। খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ালে স্বাগতিকরা ১-০ ব্যবধানে সিরিজ খোঁয়ায়।

১৯৬৬ সালে ইংল্যান্ড সফরে ল্যাঙ্কাশায়ারের বিপক্ষে প্রস্তুতিমূলক খেলায় আর্থার ফাগের কাছ থেকে ঢিলাকৃতিতে বল ছোড়ার অভিযোগ আসে। ১৯৬৮-৬৯ মৌসুমে দলের সাথে অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড সফরে যান। এ সিরিজে তিনি পূর্বেকার সাফল্যের ছায়ামূর্তিতে পরিণত হয়েছিলেন। দ্রুত পর্দার অন্তরালে চলে যেতে বাধ্য হন। অ্যাডিলেড টেস্টে স্ট্রাইকবিহীন অবস্থায় থাকা ইয়ান রেডপাথকে বিদেয় করেছিলেন।

১৯৬৮-৬৯ মৌসুমে গ্যারি সোবার্সের নেতৃত্বাধীন ক্যারিবীয় দলের অন্যতম সদস্যরূপে নিউজিল্যান্ড গমন করেন। ১৩ মার্চ, ১৯৬৯ তারিখে ক্রাইস্টচার্চে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের তৃতীয় ও চূড়ান্ত টেস্টে অংশ নেন। খেলায় তিনি ০/১৫ ও ১/৫৫ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। এছাড়াও, একবার ব্যাটিংয়ে নেমে ৮ রান সংগ্রহ করেছিলেন। খেলাটি ড্রয়ে পরিণত হলে ১-১ ব্যবধানে সিরিজের সমাপ্তি ঘটে। পরবর্তীতে, এটিই তাঁর সর্বশেষ টেস্টে পরিণত হয়।

৯৬টি প্রথম-শ্রেণীর খেলায় অংশ নিয়ে ২১.৬০ গড়ে ৩৩২ উইকেট পেয়েছিলেন। ১৯৬৪ সালে উইজডেন কর্তৃক অন্যতম বর্ষসেরা ক্রিকেটারের সম্মাননায় ভূষিত হন। ১৭ সেপ্টেম্বর, ১৯৮৩ তারিখে ওভালে বয়ষ্ক বিশ্ব একাদশের সদস্যরূপে বয়ষ্ক ইংরেজ একাদশের বিপক্ষে খেলায় অংশ নেন। তাঁর সম্মানার্থে স্যার ওয়েস হলের সাথে ব্রিজটাউনের কেনসিংটন ওভালের একটি ছাউনি দ্য হল এন্ড গ্রিফিথ স্ট্যান্ড নামে নামকরণ করা হয়।

Similar Posts

  • |

    নোমান আলী

    ৭ অক্টোবর, ১৯৮৬ তারিখে সিন্ধু প্রদেশের সংহার এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার। মূলতঃ বোলার হিসেবে খেলছেন। স্লো লেফট-আর্ম অর্থোডক্স বোলিং করেন। এছাড়াও, নিচেরসারিতে বামহাতে ব্যাটিংয়ে নামেন। পাকিস্তানের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন। ২০০৬-০৭ মৌসুম থেকে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান রাখছেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর পাকিস্তানী ক্রিকেটে হায়দ্রাবাদ ও খান রিসার্চ ল্যাবরেটরিজের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। এছাড়াও, হায়দ্রাবাদ হকস ও মুলতান…

  • | |

    ফাফ ডু প্লিসি

    ১৩ জুলাই, ১৯৮৪ তারিখে প্রিটোরিয়ায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার। মূলতঃ মাঝারিসারির ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলছেন। ডানহাতে ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি লেগ-ব্রেক বোলিংয়ে পারদর্শী। দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে সকল স্তরের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন। দক্ষিণ আফ্রিকা দলের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেছেন। ৫ ফুট ১১ ইঞ্চি উচ্চতার অধিকারী ফাফ ডু প্লিসি প্রিটোরিয়াভিত্তিক অ্যাফিস বয়েজ স্কুলে অধ্যয়ন করেছেন। ২০০৩-০৪ মৌসুম থেকে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন…

  • |

    এজি মিল্খা সিং

    ৩১ ডিসেম্বর, ১৯৪১ তারিখে তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের মাদ্রাজে জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ছিলেন। মূলতঃ ব্যাটসম্যান হিসেবে দলে ভূমিকা রেখেছিলেন। বামহাতে ব্যাটিং কর্মে অগ্রসর হতেন। এছাড়াও, ডানহাতে মিডিয়াম বোলিংয়ে পারদর্শী ছিলেন। ১৯৬০-এর দশকে ভারতের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছিলেন। ১৯৫৮-৫৯ মৌসুম থেকে ১৯৬৮-৬৯ মৌসুম পর্যন্ত সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন অতিবাহিত করেছেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর ভারতীয় ক্রিকেটে মাদ্রাজের প্রতিনিধিত্ব…

  • |

    বিল প্লেল

    ১ ডিসেম্বর, ১৯৩৮ তারিখে মানাওয়াতুর পালমারস্টোন নর্থ এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ছিলেন। মূলতঃ ডানহাতি ব্যাটসম্যান ছিলেন। এছাড়াও, ডানহাতে অফ-ব্রেক বোলিংয়ে পারদর্শী ছিলেন। নিউজিল্যান্ডের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন। ১৯৫৬-৫৭ মৌসুম থেকে ১৯৬৭-৬৮ মৌসুম পর্যন্ত প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন অতিবাহিত করেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর নিউজিল্যান্ডীয় ক্রিকেটে অকল্যান্ড ও অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটে ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়ার প্রতিনিধিত্ব করেছেন। খেলোয়াড়ী জীবনের শুরুতে অকল্যান্ড…

  • | | |

    ডন ব্র্যাডম্যান

    ২৭ আগস্ট, ১৯০৮ তারিখে জন্মগ্রহণকারী নিউ সাউথ ওয়েলসের ছোট্ট, অপরিচিত শহর কুটামুন্ড্রা এলাকায় জন্মগ্রহণকারী বিখ্যাত ক্রিকেটার, লেখক ও প্রশাসক ছিলেন। মূলতঃ ব্যাটসম্যান হিসেবে দলে ভূমিকা রেখেছিলেন। ডানহাতে ব্যাটিং করতেন। এছাড়াও, লেগ-ব্রেক বোলিংয়ে দক্ষ ছিলেন। পাশাপাশি মাঝে-মধ্যে উইকেট-রক্ষণে অগ্রসর হতেন। অস্ট্রেলিয়া দলের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেছেন। কুটামুন্ড্রায় জন্মগ্রহণ করলেও শৈশবকাল বাউরেলে অতিবাহিত করেন। বাউরেল ইন্টারমিডিয়েট হাই…

  • | |

    গুলাম পার্কার

    ২৫ অক্টোবর, ১৯৫৫ তারিখে মহারাষ্ট্রের কালুস্তে এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার, কোচ ও রাজনীতিবিদ। মূলতঃ ব্যাটসম্যান হিসেবে দলে ভূমিকা রেখেছিলেন। ডানহাতে ব্যাটিং করতেন। এছাড়াও, ডানহাতে মিডিয়াম বোলিংয়ে পারদর্শী ছিলেন। ১৯৮০-এর দশকে ভারতের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন। ১৯৭৮-৭৯ মৌসুম থেকে ১৯৮৫-৮৬ মৌসুম পর্যন্ত সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান রাখেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর ভারতীয় ক্রিকেটে বোম্বের প্রতিনিধিত্ব করেছেন।…