১৬ নভেম্বর, ১৮৬২ তারিখে নিউ সাউথ ওয়েলসের বাথহার্স্ট এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ছিলেন। মূলতঃ বোলার হিসেবে ভূমিকা রেখে নিজেকে স্মরণীয় করে রেখেছেন। ডানহাতে মিডিয়াম-ফাস্ট বোলিং করতেন। এছাড়াও, নিচেরসারিতে ডানহাতে ব্যাটিংয়ে নামতেন। অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছিলেন।
চার্লস বায়াস টার্ন ও মেরি অ্যান দম্পতির সন্তান ছিলেন। ৫ ফুট ৯ ইঞ্চি (১.৭৫ মিটার) উচ্চতার অধিকারী ছিলেন। বাথহার্স্ট গ্রামার ও কমার্শিয়াল স্কুলে অধ্যয়ন করেছেন। বিদ্যালয়ের প্রথম একাদশে ঠাঁই পাননি। কব এন্ড কোম্পানিতে কাজ করতেন। সকালে কোচদের বিদেয় নেবার পর উইকেটে বোলিং অনুশীলন করতেন। ডিসেম্বর, ১৮৮১ সালে বাথহার্স্ট দ্বাবিংশতিতম দলের সদস্যরূপে এ. শ’য়ের নেতৃত্বাধীন ইংরেজ একাদশের বিপক্ষে খেলেন। খেলায় তিনি ৬৯ রান খরচায় ১৭ উইকেট দখল করেন। তন্মধ্যে, দ্বিতীয় ইনিংসে ১০/৩৬ পান।
‘টেরর’ ডাকনামে ভূষিত হয়েছিলেন। নিজের সময়কালে সেরা বোলারের মর্যাদাপ্রাপ্ত হয়েছিলেন। ১৮৮২-৮৩ মৌসুম থেকে ১৯০৯-১০ মৌসুম পর্যন্ত সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন অতিবাহিত করেছেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটে নিউ সাউথ ওয়েলসের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। ১৮৮২-৮৩ মৌসুমে নিউ সাউথ ওয়েলসের সদস্যরূপে ইভো ব্লাইয়ের নেতৃত্বাধীন ইংরেজ দলের বিপক্ষে প্রথমবারের মতো অংশ নেন। ঐ মৌসুম শেষে সিডনিতে চলে যান। কার্লটন ক্রিকেট ক্লাবের পক্ষে খেলেন।
১৮৮৭ থেকে ১৮৯৫ সাল পর্যন্ত সময়কালে অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে সর্বমোট ১৭ টেস্টে অংশ নিয়েছিলেন। ১৮৮৬-৮৭ মৌসুমে নিজ দেশে আর্থার শ্রিউসবারি’র নেতৃত্বাধীন এমসিসি দলের মুখোমুখি হন। ২৮ জানুয়ারি, ১৮৮৭ তারিখে সিডনিতে অনুষ্ঠিত সফররত ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। হ্যারি মোজেস ও জে.জে. ফেরিসের সাথে তাঁর একযোগে টেস্ট অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। খেলায় তিনি ৬/১৫ ও ২/৫৩ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। এছাড়াও, ব্যাট হাতে নিয়ে ৩ ও ৭ রান সংগ্রহ করেছিলেন। সফরকারী দল ১৩ রানে জয় পেয়ে দুই-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে এগিয়ে যায়।
১৮৮৭-৮৮ মৌসুমে নিজ দেশে আলফ্রেড শ’ ও আর্থার শ্রিউসবারি’র নেতৃত্বাধীন এমসিসি দলের মুখোমুখি হন। ১০ ফেব্রুয়ারি, ১৮৮৮ তারিখে সিডনিতে অনুষ্ঠিত সফররত ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের একমাত্র টেস্টে অংশ নেন। অসাধারণ ক্রীড়া নৈপুণ্য প্রদর্শনে অগ্রসর হন। খেলায় তিনি বল হাতে নিয়ে ৫/৪৪ ও ৭/৪৩ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। এছাড়াও, ব্যাট হাতে নিয়ে ৮* ও ১২ রান সংগ্রহসহ একটি ক্যাচ তালুবন্দী করেছিলেন। তাসত্ত্বেও, স্বাগতিকরা ১২৬ রানে পরাভূত হয়।
১৮৮৮ ও ১৮৯৩ সালে অস্ট্রেলিয়া দলের সদস্যরূপে ইংল্যান্ড গমন করেন। ১৮৮৮ সালে পার্সি ম্যাকডোনেলের নেতৃত্বাধীন অজি দলের সদস্যরূপে ইংল্যান্ড সফরে যান। ১৬ জুলাই, ১৮৮৮ তারিখে লন্ডনের লর্ডসে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। অসাধারণ ক্রীড়াশৈলী উপহার দেন। খেলায় তিনি বল হাতে নিয়ে ৫/২৭ ও ৫/৩৬ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। এছাড়াও, ৩ ও ১২ রান সংগ্রহ করেন। ৬১ রানে জয় পেলে স্বাগতিকরা তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে এগিয়ে যায়।
এরপর, ১৩ আগস্ট, ১৮৮৮ তারিখে লন্ডনের ওভালে অনুষ্ঠিত সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে অংশ নেন। খেলায় তিনি বল হাতে নিয়ে ৬/১১২ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। এছাড়াও, ০ ও ১৮ রান সংগ্রহ করেছিলেন। ইনিংস ও ১৩৭ রানে জয়লাভ করলে স্বাগতিকরা তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে সমতা আনতে সমর্থ হয়।
১৮৯৪-৯৫ মৌসুমে নিজ দেশে অ্যান্ড্রু স্টডার্টের নেতৃত্বাধীন এমসিসি দলের মুখোমুখি হন। ১ ফেব্রুয়ারি, ১৮৯৫ তারিখে সিডনিতে অনুষ্ঠিত সফররত ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের চতুর্থ টেস্টে অংশ নেন। খেলায় তিনি একবার ব্যাটিংয়ে নেমে ২২ রান সংগ্রহ করেছিলেন। এছাড়াও, বল হাতে নিয়ে ৩/১৮ ও ৪/৩৩ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। ইনিংস ও ১৪৭ রানে জয় পেলে স্বাগতিকরা পাঁচ-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে ২-২ ব্যবধানে সমতায় আনতে সমর্থ হয়। পরবর্তীতে, এটিই তাঁর সর্বশেষ টেস্টে পরিণত হয়।
ব্যক্তিগত জীবনে বিবাহিত ছিলেন। ১৯ জুলাই, ১৮৮২ তারিখে এনমোরভিত্তিক ক্রাইস্ট চার্চে সারাহ এমিলি ম্যাথুজের সাথে পরিণয়সূত্রে আবদ্ধ হন। ২৮ অক্টোবর, ১৮৯১ তারিখে সিডনির রেজিস্ট্রারার-জেনারেলস ডিপার্টম্যান্টে হ্যারিয়েট এমিলি নাম্নী রমণীকে দ্বিতীয় বিবাহ করেন। এ সংসারে এক কন্যা ছিল। এরপর, এডিথ রেবেকা সুসানের সাথে বৈবাহিক সম্পর্ক স্থাপন করেন। ১ জানুয়ারি, ১৯৪৪ তারিখে নিউ সাউথ ওয়েলসের ম্যানলি এলাকায় ৮১ বছর ৪৬ দিন বয়সে তাঁর দেহাবসান ঘটে। মৃত্যুকালীন £২০২ পাউন্ড-স্টার্লিং মূল্যমানের সম্পদ রেখে যান। ১৯৭২ সালে বাথহার্স্টে তাঁর ভস্ম ফিরিয়ে আনা হয়।
২০০৭ সালে ক্রিকেট নিউ সাউথ ওয়েলস কর্তৃপক্ষ সার্ধ্বশতবার্ষিকী উপলক্ষ্যে তাঁকে সর্বকালের ব্যাগি ব্লু দ্বাদশে তাঁকে অন্তর্ভুক্ত করে। পরবর্তীতে, ৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ তারিখে গ্লেন ম্যাকগ্রা’র সাথে অস্ট্রেলীয় ক্রিকেট হল অব ফেমে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
