১১ নভেম্বর, ১৯৮৬ তারিখে ময়মনসিংহে জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার। মূলতঃ ব্যাটিংয়ের দিকেই অধিক মনোনিবেশ ঘটান। ডানহাতে ব্যাটিং করেন। পাশাপাশি কার্যকর অফ-ব্রেক বোলিং করে থাকেন। ২০১০-এর দশকে বাংলাদেশের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের সকল স্তরে অংশ নিয়েছেন।
২০০৯-১০ মৌসুম থেকে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান রাখছেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর বাংলাদেশী ক্রিকেটে মধ্যাঞ্চল, ঢাকা বিভাগ ও রাজশাহী বিভাগের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। এছাড়াও, বরিশাল বার্নার্স, ঢাকা প্লাটুন, জেমকন খুলনা ও সিলেট সিক্সার্সের পক্ষে খেলেছেন।
২০০৯-১০ মৌসুমে বাংলাদেশের প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট প্রতিযোগিতায় ঢাকা বিভাগের প্রতিনিধিত্ব করছেন। ২০ জানুয়ারি, ২০১০ তারিখে খুলনায় অনুষ্ঠিত বরিশাল বিভাগ বনাম ঢাকা বিভাগের মধ্যকার খেলায় অংশ নেয়ার মাধ্যমে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবনের সূত্রপাত ঘটান। ফাস্ট বোলিংয়ের বিপক্ষে বেশ রুখে দাঁড়ানোর দক্ষতা প্রদর্শনসহ পাল্টা আক্রমণে সিদ্ধহস্তের পরিচয় দিয়েছেন। ন্যাশনাল ক্রিকেট একাডেমি দলে থাকাকালীন এ বিষয়ে উত্তরণ ঘটান।
ক্ষুদে শহরগুলো থেকে আসা বেশ কয়েকজন ক্রিকেটারের অন্যতম। কয়েক বছর ময়মনসিংহ ও কিশোরগঞ্জের লীগে খেলেন। এরপর, জনৈক স্কাউটের মাধ্যমে ঢাকায় ২০০৪-০৫ মৌসুমে খেলতে আসেন। এরপর, ঢাকার প্রথম বিভাগের দল ক্রিকেট কোচিং স্কুলের (সিসিএস) পক্ষে তিন নম্বরে ব্যাটিংয়ে নামতেন। বড় ধরনের প্রস্তাবনা পেলেও সিসিএসের পক্ষেই খেলতে থাকেন। ঢাকার প্রিমিয়ার ক্রিকেট লীগে দলের উত্তরণে অন্যতম ভূমিকা পালন করেছেন।
২০০৯ থেকে ২০১১ সালের মধ্যে বেশ কিছু উল্লেখযোগ্য ইনিংস উপহার দিয়েছেন। তন্মধ্যে, জাতীয় ক্রিকেট লীগ টি২০ প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত খেলায় খুলনার বিপক্ষে দূর্দান্ত খেলেন। শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে ৬৫ বলে ৬২ রানের ইনিংস খেলেছিলেন। এরফলে, জাতীয় দলে খেলার পথ সুগম হয়। মার্চ, ২০১০ সালে বাংলাদেশ ‘এ’ দলের সদস্যরূপে প্রস্তুতিমূলক খেলায় ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৩০ বলে ৯১ রানের মারকুটে ইনিংস উপহার দেন। খেলাটি ড্রয়ে পরিণত হয়েছিল।
২০১১ সাল থেকে ২০১৬ সময়কালে বাংলাদেশের পক্ষে টেস্ট, ওডিআই ও টি২০আই ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন। ২০১১ সালের বিশ্বকাপ ক্রিকেট প্রতিযোগিতায় ৩০-সদস্যের প্রাথমিক তালিকায় ঠাঁই পেয়েছিলেন। ঐ প্রতিযোগিতার শুরুতেই বাংলাদেশ দলের বিদায়ের পর জাতীয় দলে তাঁকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এপ্রিল, ২০১১ সালে নিজ দেশে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ওডিআই সিরিজে তাঁকে দলে রাখা হয়। এরপর, আগস্ট, ২০১১ সালে জিম্বাবুয়ে সফরে যান। সেখানে কিছু দূর্দান্ত ক্রীড়াশৈলীর স্বাক্ষর রাখেন। ১৬ আগস্ট, ২০১১ তারিখে হারারেতে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওডিআইয়ে অংশ নেয়ার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট অঙ্গনে প্রবেশ করেন। তিন খেলা থেকে ৭০ রান তুলেন। অক্টোবর, ২০১১ সালে চট্টগ্রামে অনুষ্ঠিত সফররত ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে একটি খেলায় অংশ নেয়ার পর দল থেকে বাদ পড়েন।
২০১৪-১৫ মৌসুমে মুশফিকুর রহিমের অধিনায়কত্বে বাংলাদেশ দলের সাথে ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জ সফরে যান। ৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৪ তারিখে কিংসটাউনে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে তাঁর টেস্ট অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। ১/১০৪ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। বিখ্যাত ক্রিকেটার ক্রিস গেইলকে এলবিডব্লিউ’র মাধ্যমে বিদেয় করেন। এছাড়াও, ব্যাট হাতে ১৬ ও ০ রান সংগ্রহের পাশাপাশি একটি ক্যাচ তালুবন্দী করেছিলেন। ঐ টেস্টে তাঁর দল ১০ উইকেটে পরাজয়বরণ করে।
১৪ জানুয়ারি, ২০১৬ তারিখে খুলনায় অনুষ্ঠিত সফররত জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে প্রথমবারের মতো টি২০আইয়ে অংশ নেন। এরপর থেকে মাঠের বাইরে অবস্থান করেন। ২০১৬-১৭ মৌসুমে নিজ দেশে ইংরেজ দলের মুখোমুখি হন। ২৮ অক্টোবর, ২০১৬ তারিখে ঢাকায় অনুষ্ঠিত সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে ৬ ও ২৫* রান সংগ্রহ করেন। এছাড়াও, তিনটি ক্যাচ তালুবন্দী করেন। তবে, বল হাতে নিয়ে ৩৩ রান খরচ করলেও কোন উইকেটের সন্ধান পাননি। ঐ টেস্টে মেহেদী হাসান মিরাজের অসামান্য বোলিং নৈপুণ্যে তাঁর দল ১০৮ রানে জয় তুলে নেয় ও দুই টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে ১-১ ব্যবধানে ড্র করে।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে উপেক্ষিত হলেও প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে কিছু উল্লেখযোগ্য ক্রীড়াশৈলী প্রদর্শনে অগ্রসর হন। ২৪ নভেম্বর, ২০১৮ তারিখে আবু হায়দারকে সাথে নিয়ে মধ্যাঞ্চলের ৭৭ রানের বিজয়ে অংশ নেন। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগে বরিশাল বার্নার্সের পক্ষে খেলেছেন।
