১৪ ফেব্রুয়ারি, ১৯৭৩ তারিখে কেপ প্রভিন্সের কেপটাউনে জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার, কোচ ও ধারাভাষ্যকার। মূলতঃ শীর্ষসারির ব্যাটসম্যান হিসেবে দলে ভূমিকা রেখেছিলেন। ডানহাতে ব্যাটিং করতেন। এছাড়াও, ডানহাতে মিডিয়াম বোলিংয়ে পারদর্শী ছিলেন। ১৯৯০-এর দশকে দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন।
৫ ফুট ১১ ইঞ্চি উচ্চতার অধিকারী। শীর্ষসারির প্রভাববিস্তারকারী ব্যাটসম্যান ছিলেন। বেশ প্রতিভাবান খেলোয়াড় হলেও দূর্দান্ত সূচনা করলেও নিজের উইকেট বিলিয়ে দেয়ার প্রবণতা তাঁর মাঝে বিদ্যমান। ১৯৯৩-৯৪ মৌসুম থেকে ২০০৯-১০ মৌসুম পর্যন্ত সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান রাখেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর দক্ষিণ আফ্রিকান ক্রিকেটে কেপ কোবরাজ, ডলফিন্স, গটেং, লায়ন্স, ওয়ারিয়র্স ও ওয়েস্টার্ন প্রভিন্স এবং ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে লিচেস্টারশায়ারের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। ১৯৯৩-৯৪ মৌসুম থেকে ২০০২-০৩ মৌসুম পর্যন্ত ওয়েস্টার্ন প্রভিন্স, ২০০৩-০৪ মৌসুমে গটেং, ২০০৪-০৫ মৌসুমে লায়ন্স, ২০০৫-০৬ মৌসুমে কেপ কোবরাজ, ২০০৬-০৭ মৌসুম থেকে ২০০৭-০৮ মৌসুম পর্যন্ত ওয়ারিয়র্স, ২০০৮-০৯ মৌসুমে ডলফিন্সের পক্ষে খেলেন।
১৯৯৫-৯৬ মৌসুমের ঘরোয়া ক্রিকেটে ব্যাপক রানের সন্ধান পান। ফলশ্রুতিতে, ইংল্যান্ড সফরে দক্ষিণ আফ্রিকা ‘এ’ দলের পক্ষে খেলার জন্যে তাঁকে মনোনীত করা হয়। এ সিরিজে দারুণ খেলে জাতীয় দলে খেলার জন্যে আমন্ত্রণ বার্তা লাভ করেন।
১৯৯৮ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে চারটিমাত্র টেস্টে অংশগ্রহণের সুযোগ পেয়েছিলেন। ১৯৯৭-৯৮ মৌসুমে নিজ দেশে আমির সোহেলের নেতৃত্বাধীন পাকিস্তানী দলের মুখোমুখি হন। ২৬ ফেব্রুয়ারি, ১৯৯৮ তারিখে ডারবানে অনুষ্ঠিত সফররত পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে তাঁর অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। প্রথম ইনিংসে ৫৭ রানের ইনিংস খেলেন। এছাড়াও, দ্বিতীয় ইনিংসে ১১ রান সংগ্রহ করেছিলেন। তবে, মুশতাক আহমেদের অসামান্য বোলিংনৈপুণ্যে ঐ খেলায় তাঁর দল ২৯ রানে পরাজিত হলে তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে সফরকারীরা এগিয়ে যায়।
১৯৯৭-৯৮ মৌসুমে নিজ দেশে অর্জুনা রানাতুঙ্গা’র নেতৃত্বাধীন শ্রীলঙ্কান দলের মুখোমুখি হন। ২৭ মার্চ, ১৯৯৮ তারিখে সেঞ্চুরিয়নে অনুষ্ঠিত সফররত শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় ও চূড়ান্ত টেস্ট খেলেন। ঘটনাবহুল এ টেস্টের তৃতীয় দিনে শূন্য রানে থাকা এমএস আতাপাত্তু’র ক্যাচ সেকেন্ড স্লিপ অঞ্চলে অবস্থান করে মুঠোয় পুরতে পারেননি। খেলায় তিনি ৭ ও ২ রান সংগ্রহ করতে পেরেছিলেন। তবে, অ্যালান ডোনাল্ডের অসাধারণ বোলিং নৈপুণ্যে স্বাগতিকরা ৬ উইকেটে জয়লাভ করলে ২-০ ব্যবধানে সিরিজে জয়লাভ করে। পরবর্তীতে, এটিই তাঁর সর্বশেষ টেস্টে পরিণত হয়।
স্পিন বোলিংয়ের বিপক্ষে বেশ হিমশিম খেতে দেখা যায়। মুশতাক আহমেদ ও মুত্তিয়া মুরালিধরনের বলে টেস্টগুলোয় কাবু হয়ে পড়েন। টেস্টগুলো থেকে ২০.১২ গড়ে ১৬১ রান তুলেন।
২০০৫ সালে লিচেস্টারশায়ারের পক্ষে খেলার জন্যে চুক্তিবদ্ধ হন। ২০০৯ সাল পর্যন্ত দলটির প্রতিনিধিত্ব করেন। ২০০৫ সালে ক্যাপ লাভের পাশাপাশি অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে দলের অধিনায়কত্ব করেন। এরফলে, ব্যাটিংয়ে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। ফলশ্রুতিতে, দলীয় ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ ২০০৬ সালে নেতৃত্ব থেকে প্রত্যাহার করে। এ মৌসুমে কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশীপে ১৮০০ রান তুলেন। তন্মধ্যে, ৩০৯ রানে অপরাজিত ও ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ রানের ইনিংস খেলেন। সব মিলিয়ে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে ৪৩.৬৫ গড়ে ১৪৬২৫ রান সংগ্রহ করেছেন। ক্রিকেট খেলা থেকে অবসর গ্রহণের পর ধারাভাষ্যকর্মের দিকে ঝুঁকে পড়েন। টেলিভিশনে ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লীগে ধারাভাষ্য দেন। সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সালে অস্ট্রেলিয়ায় অভিবাসনের ঘোষণা দিলে তাঁকে বার্ষিক পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানের বাইরে রাখা হয়। জানুয়ারি, ২০২০ সালে আফগানিস্তানের ব্যাটিং কোচ হিসেবে মনোনীত হন।
