২২ নভেম্বর, ১৯২৬ তারিখে তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের পাঞ্জাবের লাহোরে জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ও আম্পায়ার ছিলেন। মূলতঃ বোলার হিসেবে দলে ভূমিকা রেখে গেছেন। ডানহাতে অফ-ব্রেক বোলিং করতেন। এছাড়াও, ডানহাতে নিচেরসারিতে কার্যকর ব্যাটিং করতেন। ১৯৫০-এর দশকে পাকিস্তানের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছিলেন।
লখনউ দলের পক্ষে খেলোয়াড়ী জীবনের সূত্রপাত ঘটে। ১৯৪৭-৪৮ মৌসুম থেকে ১৯৬৪-৬৫ মৌসুম পর্যন্ত সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন অতিবাহিত করেছেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর পাকিস্তানী ক্রিকেটে বাহাওয়ালপুর, পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্স ও পাঞ্জাবের প্রতিনিধিত্ব করেছেন।
১৯৫২ সাল থেকে ১৯৫৬ সময়কালে পাকিস্তানের পক্ষে নয়টিমাত্র টেস্টে অংশগ্রহণের সুযোগ পেয়েছিলেন। ১৯৫২-৫৩ মৌসুমে আব্দুল কারদারের নেতৃত্বাধীন পাকিস্তানী দলের সালে ভারত সফরে যান। পাকিস্তানের ইতিহাসের উদ্বোধনী টেস্ট দলের সদস্য ছিলেন। ২৩ অক্টোবর, ১৯৫২ তারিখে লখনউয়ে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক ভারতের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে অংশ নেন। মাহমুদ হোসেনের সাথে তাঁর একযোগে টেস্ট অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। একমাত্র ইনিংসে ৩৪ রান সংগ্রহ করেন। এছাড়াও, একটি ক্যাচ তালুবন্দীসহ ০/১৭ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। সফরকারীরা ইনিংস ও ৪৩ রানে জয় পেলে পাঁচ-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজটি অমিমাংসিত অবস্থায় অগ্রসর হতে থাকে।
১৯৫৪ সালে পাকিস্তান দলের সদস্যরূপে ইংল্যান্ড গমন করেন। ১৯৫৫-৫৬ মৌসুমে নিউজিল্যান্ড ও ১৯৫৬-৫৭ মৌসুমে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে নিজ দেশে অনুষ্ঠিত সিরিজগুলোয় অংশ নেন।
ওভালে পাকিস্তানের প্রথম বিজয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার স্বাক্ষর রেখেছিলেন। দশ নম্বরে ব্যাটিংয়ে নেমে ৩৪ রান সংগ্রহ করেছিলেন।
১৯৫৫-৫৬ মৌসুমে নিজ দেশে হ্যারি কেভের নেতৃত্বাধীন কিউই দলের মুখোমুখি হন। ১৩ অক্টোবর, ১৯৫৫ তারিখে করাচীতে অনুষ্ঠিত সফররত নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। নিজ দেশে এটিই তাঁর প্রথম টেস্টে অংশগ্রহণ ছিল। ব্যক্তিগত সাফল্যের সাথে নিজেকে জড়ান। নিউজিল্যান্ডের প্রথম ইনিংসে ম্যাট পুরকে বিদেয় করে ব্যক্তিগত সেরা বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। তাঁর পূর্বতন সেরা ছিল ১/৩৫। খেলোয়াড়ী জীবনের উল্লেখযোগ্য ঘটনা ছিল এক টেস্টে ১১ উইকেট দখল করা। উইকেটগুলো লাভের জন্যে তাঁকে ৭৯ রান খরচ করতে হয়েছিল। ৫/৩৭ ও ৬/৪২ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। এগুলোই তাঁর প্রথম পাঁচ-উইকেট লাভের ঘটনা ছিল। এছাড়াও, দলের একমাত্র ইনিংসে ১০ রান সংগ্রহ করেছিলেন। ঐ খেলায় স্বাগতিকরা ইনিংস ও ১ রানে জয় পেলে তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে এগিয়ে যায়।
এছাড়াও, পাকিস্তানের নিচেরসারির চার উইকেটে রেকর্ডসংখ্যক ৪৫০ রান যুক্ত করতে প্রয়োজনীয় ভূমিকা পালন করেছিলেন। দলের সংগ্রহ ১১১/৬ থেকে ৫৬১ রানে ইনিংস শেষ হয়। ৪৮২/৮ থাকা অবস্থায় স্বীয় ইনিংস শুরু করেন ও অপরাজিত ২১ রান তুলে মাঠ ত্যাগ করেছিলেন।
১৯৫৬-৫৭ মৌসুমে নিজ দেশে ইয়ান জনসনের নেতৃত্বাধীন অজি দলের মুখোমুখি হন। ১১ অক্টোবর, ১৯৫৬ তারিখে করাচীতে অনুষ্ঠিত সফররত অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজের একমাত্র টেস্টে অংশ নেন। স্বাগতিকরা ৯ উইকেটে জয় পায়। একমাত্র ইনিংসে শূন্য রানে বিদেয় নেন। এছাড়াও, ০/১৮ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। পরবর্তীতে, এটিই তাঁর সর্বশেষ টেস্টে পরিণত হয়। সবমিলিয়ে টেস্টগুলো থেকে ২০০ রান সংগ্রহ করেন ও ২০ উইকেট দখল করেছিলেন।
১৯ সেপ্টেম্বর, ২০০৩ তারিখে ইসলামাবাদে টেস্ট ক্রিকেট গালা সূবর্ণ জয়ন্তী অনুষ্ঠানে পাকিস্তানের রাষ্ট্রপতির কাছ থেকে পদক লাভ করেন। ৩ অক্টোবর, ২০০৮ তারিখে ৮১ বছর ৩১৬ দিন বয়সে লাহোরের সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে হৃদযন্ত্রের ক্রীয়ায় আক্রান্ত হলে তাঁর দেহাবসান ঘটে। মৃত্যুকালীন মোহাম্মদ আসলামের পর পাকিস্তানের দ্বিতীয় বয়োজ্যেষ্ঠ ক্রিকেটারের সম্মাননা লাভ করেছিলেন।
