১৮ জুলাই, ১৯২৭ তারিখে ক্যান্টারবারির ক্রাইস্টচার্চে জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ছিলেন। মূলতঃ ব্যাটসম্যান হিসেবে দলে ভূমিকা রেখে গেছেন। ডানহাতে ব্যাটিং করতেন। এছাড়াও, ডানহাতে মিডিয়াম বোলিংয়ে পারদর্শী ছিলেন। নিউজিল্যান্ডের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন।
নিউজিল্যান্ডীয় অল-রাউন্ডার ক্রিস হ্যারিসের পিতা হিসেবে অধিক পরিচিতি লাভ করেন। ১৯৪৯-৫০ মৌসুম থেকে ১৯৬৪-৬৫ মৌসুম পর্যন্ত সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান রাখেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর নিউজিল্যান্ডীয় ক্রিকেটে ক্যান্টারবারির প্রতিনিধিত্ব করেছেন। ডানহাতি ব্যাটসম্যান হিসেবে সকল খেলাই ক্যান্টারবারির সদস্যরূপে খেলেছেন। তবে, ঘরোয়া ক্রিকেটের সফলতাকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নিয়ে যেতে পারেননি।
১৯৫৫ থেকে ১৯৬৫ সময়কালে দশ বছরের অধিক সময় নিয়ে নিউজিল্যান্ডের পক্ষে নয়টিমাত্র টেস্টে অংশগ্রহণের সুযোগ পেয়েছিলেন। ১৯৫৫-৫৬ মৌসুমে হ্যারি কেভের অধিনায়কত্বে পাকিস্তান ও ভারত সফরে যান। ১৩ অক্টোবর, ১৯৫৫ তারিখে করাচীতে অনুষ্ঠিত তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজের প্রথমটিতে স্বাগতিক পাকিস্তানের বিপক্ষে অংশ নেন। জ্যাক অ্যালাব্যাস্টার ও ট্রেভর ম্যাকমাহোনের সাথে তাঁর একযোগে টেস্ট অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। ৭ ও ২১* রান সংগ্রহ করতে পেরেছিলেন। ঐ টেস্টে তাঁর দল ইনিংস ও ১ রানের ব্যবধানে পরাজয়বরণ করলে সিরিজে পিছিয়ে পড়ে।
১৯৬১-৬২ মৌসুমে প্রথমবারের মতো দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে টেস্ট খেলেন। ঐ মৌসুমে জন রিডের নেতৃত্বাধীন কিউই দলের সদস্যরূপে দক্ষিণ আফ্রিকা গমন করেন। সেখানেই তিনি স্বর্ণালী সময় অতিবাহিত করেন। প্রোটীয়দের বিপক্ষে ঐ সিরিজে দুইবার পঞ্চাশোর্ধ্ব ইনিংস খেলেন। এগুলোই তাঁর সেরা সাফল্য ছিল। তন্মধ্যে, সিরিজের তৃতীয় টেস্টে ১০১ রান তুলেন।
এ সফরের ৮ ডিসেম্বর, ১৯৬১ তারিখে ডারবানে অনুষ্ঠিত সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। ব্যক্তিগত সফলতার সাথে নিজেকে জড়ান। প্রথম ইনিংসে ব্যক্তিগত পূর্বতন সর্বোচ্চ ২৮ রান অতিক্রম করেন। খেলায় তিনি ব্যাট হাতে ৭৪ ও ০ রান সংগ্রহ করেন। স্বাগতিকরা ৩০ রানে জয় পেলে পাঁচ-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে এগিয়ে যায়।
এরপর, ১ জানুয়ারি, ১৯৬২ তারিখে কেপটাউনে অনুষ্ঠিত সিরিজের তৃতীয় টেস্টে অংশ নেন। কয়েকবার ব্যক্তিগত সাফল্যের ছাঁপ রাখেন। দক্ষিণ আফ্রিকার প্রথম ইনিংসে ব্যক্তিগত পূর্বতন সর্বোচ্চ ৭৪ রান অতিক্রম করেন। এ পর্যায়ে টেস্টে নিজস্ব প্রথম শতক হাঁকান। খেলায় তিনি ১০১ ও ৩০ রান সংগ্রহসহ চারটি ক্যাচ তালুবন্দী করেছিলেন। স্বাগতিকরা ৭২ রানে পরাজিত হলে সিরিজটি ১-১ ব্যবধানে অগ্রসর হতে থাকে। প্রসঙ্গতঃ এটিই নিউজিল্যান্ডের দ্বিতীয় ও বিদেশের মাটিতে প্রথম জয় ছিল।
১৯৬৪-৬৫ মৌসুমে নিজ দেশে প্রথমবারের মতো টেস্ট ক্রিকেট খেলেন। এ মৌসুমে হানিফ মোহাম্মদের নেতৃত্বাধীন পাকিস্তানী দলের মুখোমুখি হন। ২৯ জানুয়ারি, ১৯৬৫ তারিখে অকল্যান্ডে অনু্ষ্ঠিত সফরকারী পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে অংশ নেন। খেলায় তিনি ১ ও ০ রান সংগ্রহ করেছিলেন। এছাড়াও, বল হাতে নিয়ে ১৪ রান খরচ করলেও কোন উইকেটের সন্ধান পাননি। খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ালে তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজটি অমিমাংসিত অবস্থায় অগ্রসর হতে থাকে। পরবর্তীতে, এটিই তাঁর সর্বশেষ টেস্টে পরিণত হয়। সব মিলিয়ে টেস্টগুলোর ১৮ ইনিংস থেকে ২২.২৩ গড়ে ৩৭৮ রান তুলতে পেরেছিলেন।
ব্যক্তিগত জীবনে বিবাহিত ছিলেন। দুই সন্তান – বেন ও ক্রিস হ্যারিস রয়েছে। তন্মধ্যে, ক্রিস হ্যারিস নিউজিল্যান্ড দলের সদস্যরূপে টেস্ট ও ওডিআইয়ে অংশ নিয়েছে। ১ ডিসেম্বর, ১৯৯১ তারিখে ক্যান্টারবারির ক্রাইস্টচার্চে ৬৪ বছর ১৩৬ দিন বয়সে তাঁর দেহাবসান ঘটে।
