Skip to content

জিয়াউর রহমান

1 min read

২ ডিসেম্বর, ১৯৮৬ তারিখে খুলনা বিভাগের বেদবুনিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার। মূলতঃ মারকুটে অল-রাউন্ডারের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিলেন। ডানহাতে ব্যাটিং করতেন। এছাড়াও, ডানহাতে ফাস্ট-মিডিয়াম বোলিং করতেন। বাংলাদেশের পক্ষে সকল স্তরের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন।

কার্যকর পেস বোলার থেকে পরবর্তীতে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ব্যাটসম্যানে পরিণত হন। প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে পাঁচ বছর অংশ নেয়ার পর হাঁটুর আঘাতের কারণে এ পরিবর্তন ঘটে। তাসত্ত্বেও স্বল্প দূরত্ব নিয়ে মিডিয়াম-পেস বোলিং করে থাকেন। তবে, সীমিত সুযোগের কারণে নিজেকে সর্বোচ্চ পর্যায়ের ক্রিকেটে মেলে ধরতে পারেননি। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর বাংলাদেশী ক্রিকেটে বরিশাল বিভাগ, খুলনা বিভাগ ও দক্ষিণাঞ্চলের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। এছাড়াও, বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড একাডেমি, চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স, চিটাগং কিংস, দূরন্ত রাজশাহী ও গাজী গ্রুপ চট্টগ্রামের পক্ষে খেলেছেন।

খুলনার স্থানীয় লীগে খেলোয়াড়ী জীবন শুরু করেন। অল্প কিছুদিন পরই ঢাকায় খেলার সুযোগ পান। কয়েক বছর পর পেস বোলার হিসেবে খেলার পর বাংলাদেশের অনূর্ধ্ব-১৯ দলের সদস্য হন। এরপর, জাতীয় ক্রিকেট লীগে খুলনা বিভাগের পক্ষে যুক্ত হন। ২০০৪-০৫ মৌসুম থেকে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট খেলতে শুরু করেন। ১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০০৫ তারিখে খুলনায় অনুষ্ঠিত খুলনা বিভাগ বনাম রাজশাহী বিভাগের মধ্যকার খেলায় অংশ নেয়ার মাধ্যমে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবনের সূত্রপাত ঘটান।

শুরুর দিনগুলোয় সহজাত ভঙ্গীমায় আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করতেন। তবে, সবসময়ই যে সফল হতেন তা নয়। অনেকসময় শুরুতেই বিদেয় নিতেন। ২০০৫-০৬ মৌসুমে প্রথম খেলতে নেমে ৩০ গড়ে ১৮ উইকেট পেয়েছিলেন। পরবর্তী দুই বছরে খুলনা ও ঢাকা প্রিমিয়ার লীগে বেশ উচ্চমানের ক্রীড়াশৈলী উপহার দেন। ২০০৭ সালের বিশ্ব টি২০ প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশ দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন। তবে, ঐ প্রতিযোগিতায় কোন খেলায় অংশগ্রহণ করার সুযোগ পাননি। ২০০৮-০৯ মৌসুমে ৩৮ উইকেট নিয়ে খেলার মান ধরে রাখতে তৎপর হন।

এক পর্যায়ে ডান হাঁটুতে আঘাত পান। অস্ত্রোপচারসহ দীর্ঘমেয়াদী বিশ্রামের প্রয়োজন পড়ে। এরফলে, ফাস্ট বোলিংয়ের স্বপ্ন দুঃস্বপ্নে পরিণত হয়। ক্রিকেট খেলোয়াড়ী জীবনে স্থবিরতা নেমে আসে। তাসত্ত্বেও, দ্বিতীয়বার সুযোগ নিয়ে ঢাকার লীগে ব্যাটসম্যান হিসেবে যুক্ত হন।

ব্যাটসম্যান হিসেবে মানিয়ে নিতে বেশ সময় নেন। দুই মৌসুম সাধারণমানের খেলেন। পরবর্তীতে, ঢাকা প্রিমিয়ার লীগে ওল্ড ডিওএইচএস এবং বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ টি২০ প্রতিযোগিতায় চিটাগং কিংসের পক্ষে বেশ ভালো খেলেন। এরফলে, জাতীয় পর্যায়ে টি২০ দলে খেলার সুযোগ পান।

২০১২ থেকে ২০১৪ সময়কালে বাংলাদেশের পক্ষে একটিমাত্র টেস্ট, ১৩টি ওডিআই ও ১৪টি টি২০আইয়ে অংশ নিয়েছেন। ২০১২ সালের গ্রীষ্মে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে টি২০আইয়ে অভিষেক হয়। ১৮ জুলাই, ২০১২ তারিখে বেলফাস্টে অনুষ্ঠিত ঐ খেলায় ১৭ বল থেকে ৪০ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেন। ঐ বছরের শেষদিকে শ্রীলঙ্কায় অনুষ্ঠিত বিশ্ব টি২০ প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশ দলে খেলার জন্যে মনোনীত হন। তবে, মাঝারিসারিতে স্থান করে নিতে কিছুটা সময় নেন। সুযোগ পেলেও নিজেকে বিকশিত করতে পারেননি।

সীমিত-ওভারের খেলায় শীর্ষসারির কার্যকরী ব্যাটসম্যান হিসেবে নামতেন। এ পর্যায়ে পাওয়ার প্লে’র ওভারগুলোয় সুযোগের সদ্ব্যবহারে তৎপর হন। তবে, প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে পুরনো বলের বিপক্ষেই মেলে ধরতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করতেন। কখনোবা দ্বিতীয় নতুন বলের বিপক্ষে নামতেন। বাংলাদেশ ক্রিকেট লীগে মধ্য অঞ্চলের বিপক্ষে প্রথমবারের মতো প্রথম-শ্রেণীর শতক হাঁকান। পনেরোটি ছক্কা সহযোগে মাত্র ১৪৩ বলে ১৫২ রান তুলেছিলেন।

ঘরোয়া ক্রিকেটে সুন্দর ক্রীড়া নৈপুণ্য প্রদর্শনের স্বীকৃতিস্বরূপ ২৩ মার্চ, ২০১৩ তারিখে হাম্বানতোতায় অনুষ্ঠিত স্বাগতিক শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ওডিআইয়ে অভিষেক ঘটে। আঘাতপ্রাপ্ত আবুল হাসানের পরিবর্তে তাঁকে দলে নেয়া হয়েছিল। তবে, অভিষেক খেলাটি বিভীষিকাময় ছিল। প্রথম বলেই শূন্য রানে বিদেয় নিয়েছিলেন। দ্বিতীয় খেলায়ও এর পুণরাবৃত্তি ঘটে।

এক মাস পর ২০১৩ সালে মুশফিকুর রহিমের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশী দলের সদস্যরূপে জিম্বাবুয়ে সফরে যান। ২৫ এপ্রিল, ২০১৩ তারিখে হারারেতে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় ও চূড়ান্ত টেস্ট খেলেন। বাংলাদেশের ৬৮তম ক্রিকেটার হিসেবে টেস্টে অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। ২৫ এপ্রিল, ২০১৩ তারিখ থেকে শুরু হওয়া ঐ টেস্টে ১৪ ও ০ রান তুলেন। দ্বিতীয় ইনিংসে ৪/৬৩ নিয়ে দলের বিজয়ে অংশ নেন। দলীয় অধিনায়ক মুশফিকুর রহিমের অসাধারণ ও দায়িত্বশীল ব্যাটিংশৈলীর কল্যাণে সফরকারীরা ১৪৩ রানে জয় পেলে সিরিজে সমতা আনতে সমর্থ হন। তাসত্ত্বেও তাঁকে দল থেকে বাদ দেয়া হয়। তুলনামূলকভাবে ওডিআইয়ে অধিক সফল ছিলেন। ২০১৩ সালে বুলাওয়েতে পাঁচ-উইকেট নিয়ে দলকে ১২১ রানের বিশাল জয়ে বিরাট ভূমিকা রাখেন। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগে বিভিন্ন প্রাধিকারপ্রাপ্ত দলে খেলেছেন।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।