|

যুবরাজ সিং

১২ ডিসেম্বর, ১৯৮১ তারিখে চণ্ডীগড়ে জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার। মূলতঃ মাঝারিসারির ব্যাটসম্যান হিসেবে দলে ভূমিকা রেখেছিলেন। বামহাতে ব্যাটিং করতেন। এছাড়াও, স্লো লেফট-আর্ম অর্থোডক্স বোলিংয়ে পারদর্শী ছিলেন। ভারতের পক্ষে সকল স্তরের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছিলেন।

৬ ফুট (১.৮৩ মিটার) উচ্চতার অধিকারী। শবনম ও সাবেক ভারতীয় বোলার যোগরাজ সিং দম্পতির সন্তান। ১৯৯৬-৯৭ মৌসুম থেকে ২০১৮-১৯ মৌসুম পর্যন্ত সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান রাখেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর ভারতীয় ক্রিকেটে পাঞ্জাব এবং ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে ইয়র্কশায়ারের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। এছাড়াও, এশীয় একাদশ, টরন্টো ন্যাশনালস, দিল্লি ডেয়ারডেভিলস, কিংস ইলাভেন পাঞ্জাব, মুম্বই ইন্ডিয়ান্স, পুনে ওয়ারিয়র্স, রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোর ও সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদের পক্ষে খেলেছেন।

আক্রমণাত্মক ধাঁচে বামহাতে ব্যাটিং করতেন ও স্লো লেফট-আর্ম বোলার হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন। দ্রুততার সাথে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত, দূর্দান্ত ক্যাচ তালুবন্দীকরণসহ ফিল্ডিংয়ে স্বতঃস্ফূর্ততার কারণে তাঁকে সত্যিকারের অল-রাউন্ডারের গুণাবলীতে সমৃদ্ধ হতে দেখা যায়। এক পর্যায়ে তাঁকে ভারতীয় ক্রিকেটে বৃহৎ তারকা হিসেবে পরিগণিত করা হয়েছিল। নিজের সেরা দিনগুলোয় তাঁর ন্যায় স্বতঃস্ফূর্তভাবে খেলতে খুব কমসংখ্যক খেলোয়াড়কে বিশ্ব ক্রিকেট অঙ্গনে দেখা গিয়েছিল।

সন্দেহাতীতভাবেই সাদা-বলের ক্রিকেটে তিনি অন্যতম সেরা খেলা বিজয়ী বীরের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিলেন। দর্শনীয় কভার ড্রাইভ, ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্ট অঞ্চলে কাট ও মিড-উইকেটের উপর দিয়ে বলকে মাটিতে ফেলার প্রয়াস চালিয়ে গেছেন স্ব-মহিমায়। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে বলে নিপুণতার সাথে আঘাত করতেন ও যতদূর সম্ভব দূরে ফেলতেন। তবে, সবকিছুই সীমিত-ওভারের ক্রিকেটে প্রয়োগ করেছেন। কিন্তু, টেস্টে এর ব্যতিক্রম লক্ষ্য করা যায়।

পিতার কঠোর অনুশাসনে থেকে শৈশবকালে প্রশিক্ষণ নিতে থাকেন। মাঝখানে পুত্রের গলা থেকে স্বর্ণপদক কেড়ে নিয়ে গাড়ী থেকে ফেলে দেন ও তাঁকে শুধুমাত্র ক্রিকেটে মনোনিবেশ ঘটানোর কথা বলেন। এরপর থেকে ক্রিকেট খেলতে থাকেন। ১৩ বছর বয়সে পাঞ্জাবের অনূর্ধ্ব-১৬ দলের সদস্যরূপে খেলার সুযোগ পান। পরবর্তীতে, পাঞ্জাবের অনূর্ধ্ব-১৯ দলে খেলেন। ১৯৯৭ সালে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে তাঁর অভিষেক হয়। ১৫ বছর বয়সে ভীড় ঠেলে সাধারণমানের রেলগাড়ীতে সরঞ্জামাদি বহন করে অনুশীলন করতেন। এ পর্যায়ে পাঞ্জাবে পিতা-মাতার সাথে বিলাসবহুল জীবন পরিত্যাগ করতে হয়।

শ্রীলঙ্কার অনূর্ধ্ব-১৯ দলের বিপক্ষে ৫৫ বলের ঝড়োগতির ৮৯ রানের মাধ্যমে প্রথমবারের মতো নিজেকে মেলে ধরার প্রয়াস চালান। জানুয়ারি, ২০০০ সালে শ্রীলঙ্কায় অনুষ্ঠিত আইসিসি অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের শিরোপা বিজয়ী ভারত দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন। অল-রাউন্ডার হিসেবে দারুণ ভূমিকা পালনের স্বীকৃতিস্বরূপ ম্যান অব দ্য টুর্নামেন্টের পুরস্কার পান। ৩৩.৮৩ গড়ে ২০৩ রান ও বামহাতে স্পিন বোলিং করে সকলের মনোযোগ আকর্ষণ করেন। ফলশ্রুতিতে, ঐ বছরই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণের পথ সুগম হয়। এক বছরেরও কম সময়ের মধ্যেই জাতীয় দলের সদস্য হন।

২০০০ থেকে ২০১৭ সময়কালে ভারতের পক্ষে সর্বমোট ৪০ টেস্ট, ৩০৪টি ওডিআই ও ৫৮টি টি২০আইয়ে অংশ নিয়েছেন। ৩ অক্টোবর, ২০০০ তারিখে নাইরোবির জিমখানায় অনুষ্ঠিত স্বাগতিক কেনিয়ার বিপক্ষে ওডিআইয়ে অংশ নেয়ার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বর্ণাঢ্যময় খেলোয়াড়ী জীবনে প্রবেশ করেন।

১৮ বছর বয়সে ২০০০ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে নিজস্ব দ্বিতীয় খেলায় সৌরভ গাঙ্গুলী’র অধিনায়কত্বে খেলা গড়াপেটার সংবাদ প্রকাশের প্রচেষ্টাকালীন অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নিজেকে মেলে ধরেন। আইসিসি নক-আউট প্রতিযোগিতার কোয়ার্টার-ফাইনালে ঐ খেলায় ৮০ বলে ৮৪ রান তুলে দলকে স্মরণীয় জয় এনে দেন। শুরু থেকেই অনন্য ক্রীড়াশৈলী প্রদর্শনে সচেষ্ট ছিলেন। ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি দৃষ্টনন্দন তড়িৎগতির ফিল্ডিংয়ের দক্ষতাও সবিশেষ উল্লেখযোগ্যতার দাবী রাখে। ভারতের সাধারণমানের ফিল্ডিংয়ে তিনি অসাধারণ ভূমিকা রাখেন।

ঐ প্রতিযোগিতার পর পর্দার অন্তরালে চলে যান। তাৎক্ষণিক ঝড় তুললেও শারীরিক সুস্থতা ও দায়বদ্ধতার প্রশ্নে নিজেকে মেলে ধরতে পারেননি। তবে, আগস্ট, ২০০১ সালে কলম্বোয় স্বাগতিক শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৯৮ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলে পুণরায় দলে নিজেকে ঠাঁই করে নেন। মিশ্র সফলতার কারণে ক্রমাগত হিমশিম খেতে থাকেন। অবশেষে, মার্চ, ২০০২ সালে নিজ দেশে অনুষ্ঠিত সফররত জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওডিআই সিরিজে নিজের ছন্দ খুঁজে পান। উপর্যুপরী অর্ধ-শতরানের ইনিংস খেলে দলে নিজের স্থান পাকাপোক্ত করেন। পরবর্তী বছরগুলোয় অনেকবার স্ব-মহিমায় নিজেকে তুলে ধরতে সচেষ্ট ছিলেন।

২০০২ সালে বেশ কয়েকটি দারুণ ইনিংস খেলেন। কিন্তু তা ন্যাটওয়েস্ট সিরিজের চূড়ান্ত খেলার বীর মোহাম্মদ কাঈফের চেয়ে বড় ধরনের ছিল না। লর্ডসে অনুষ্ঠিত ওডিআইয়ে ভারতের অন্যতম স্বর্ণালী মুহূর্তের সাথে নিজেকে যুক্ত করেন। ৬৯ রান তুলেন ও মোহাম্মদ কাঈফের সাথে জুটি গড়ে নাটকীয়ভাবে দলকে দুই উইকেটে জয় এনে দেন। স্বাগতিক দলের ৩২৫ রানের জয়ের লক্ষ্যমাত্রা সফলতার সাথে এনে দেন।

২০০১ ও ২০০২ সালে রান খরায় ভোগার কারণে দল থেকে বাদ পড়েন। তবে, একই বছরে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুইটি ঝড়োগতির ইনিংস খেলে পুণরায় দলে ফিরে আসেন। ২০০২ সালের ন্যাটওয়েস্ট সিরিজে ১৯ বলে ৪০ রান তুললেও বৃষ্টিতে খেলাটি পরিত্যক্ত হয়। চূড়ান্ত খেলায় দলীয় সংগ্রহ ১৪৬/৫ থাকা অবস্থায় মোহাম্মদ কাঈফের সাথে ১২১ রানের জুটি গড়ে দলকে খেলায় ফিরিয়ে আনেন। ৬৩ বল থেকে ৬৯ রান তুলে পল কলিংউডের মুঠোবন্দী হলে তাঁকে বিদেয় নিতে হয়।

এ প্রতিযোগিতার পর থেকে দৃশ্যতঃ মাঝারিসারির ব্যাটসম্যান হিসেবে স্বীয় স্থান পাকাপোক্ত করে ফেলেন। ইনিংসের ভিত্তি বিনির্মাণে যতটুকু সম্ভব ছড়িয়ে দিতে অগ্রসর হন। এছাড়াও, কার্যকর বামহাতি স্পিন সীমিত-ওভারের খেলায় তাঁকে পূর্ণাঙ্গতা এনে দেয় ও ভারতের ক্ষুদ্রতর সংস্করণের খেলায় উত্থানে অন্যতম অনুষঙ্গ হিসেবে বিবেচিত হতে থাকে। ২০০৩ সালের বিশ্বকাপ ক্রিকেট প্রতিযোগিতায় দলের রানার্স-আপে তেমন রান তুলতে না পারলেও কিছু গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস খেলেছিলেন।

ওডিআই অভিষেকের তিন বছর পর ২০০৩ সালে ঢাকায় অনুষ্ঠিত স্বাগতিক বাংলাদেশের বিপক্ষে নিজস্ব প্রথম শতক হাঁকান। ঐ বছরই শচীন তেন্ডুলকরের পর দ্বিতীয় ভারতীয় খেলোয়াড় হিসেবে ইয়র্কশায়ারের পক্ষে খেলার জন্যে চুক্তিবদ্ধ হন। ২০০৩-০৪ মৌসুমে নিজ দেশে স্টিফেন ফ্লেমিংয়ের নেতৃত্বাধীন কিউই দলের মুখোমুখি হন। ১৬ অক্টোবর, ২০০৩ তারিখে মোহালিতে অনুষ্ঠিত সফররত নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে তাঁর অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। ২০ ও ৫* রান সংগ্রহ করেছিলেন। খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ায় ও সিরিজটি অমিমাংসিত অবস্থায় শেষ হয়।

সাদা-বলের ক্রিকেটে দারুণ সফল হলেও বিখ্যাত অস্ট্রেলীয় তারকা মাইকেল বেভানের ন্যায় তিনিও টেস্টে একই ধারা অব্যাহত রাখতে পারেননি। কয়েকটি সুন্দর ইনিংস খেললেও লাল-বলের ক্রিকেটে তেমন সুবিধে করতে পারেননি। ঘরোয়া আসরে বেশ কয়েকটি বড় ধরনের ইনিংস খেললে ছন্দে থাকা কিংবা ধারাবাহিকতা রক্ষার বিষয়ে উচ্চ স্তরের ক্রিকেটে পুণরাবৃত্তি ঘটাতে ব্যর্থতার পরিচয় দেন।

টেস্টে তিনি পর্যাপ্ত সফলতার স্বাক্ষর রাখতে পারেননি। সিম ও সুইং এবং মানসম্পন্ন স্পিনের বিপক্ষে রুখে দাঁড়াতে ব্যর্থ হন। কেবলমাত্র তিনটি ইনিংসই এর ব্যতিক্রম ছিল। লাহোরে তড়িৎগতিতে শতক হাঁকানো, পাকিস্তানের বিপক্ষে ৬১ রান খরচায় ৪ উইকেট দখল ও চেন্নাইয়ে ৩৮৭ রানের জয়ের লক্ষ্যমাত্রায় সফলতার সাথে ধাবমানকালে ৮৫ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেছিলেন। শচীন তেন্ডুলকর, রাহুল দ্রাবিড় ও ভিভিএস লক্ষ্মণের ন্যায় ব্যাটিং তারকাদের ভীড়ে দলে ফেরার পথ রুদ্ধ হয়ে আসে। গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত নিজস্ব তৃতীয় টেস্টে শতক হাঁকান। পার্থিব প্যাটেলের সাথে তাঁকে ব্যাটিং উদ্বোধনে নামানো হয়। তবে, নিয়মিতভাবে পর্যাপ্ত রান সংগ্রহে ব্যর্থ হন। খুব শীঘ্রই ভারতের মাঝারিসারিতে ভিত্তি আনেন। শুরুতে রাহুল দ্রাবিড় ও পরবর্তীতে এমএস ধোনি’র সাথে ফলপ্রসূ জুটি গড়েন। উভয় ব্যাটসম্যানই ওডিআইয়ে দূর্দান্ত খেলেছেন। তাঁদের সফলতায় তাঁর অপরিসীম ভূমিকার কথা তুলে ধরেন। ২০১০ সালে ওডিআই দল থেকে বাদ পড়লে তাঁর শূন্যতা ফুঁটে উঠে। ভারত দলে স্বীয় স্থান পাকাপোক্ত করার পর এটিই তাঁর প্রথম দলের বাইরে থাকা ছিল।

টি২০-এর ন্যায় ক্ষুদ্রতর সংস্করণের খেলায়ও ব্যাট হাতে বেশ ভালোমানের ক্রীড়াশৈলী প্রদর্শন করেন। অনেকগুলো দূর্দান্ত ক্রীড়াশৈলী প্রদর্শনের কারণে ২০০৭ সালের বিশ্ব টি২০ প্রতিযোগিতায় এমএস ধোনি’র সহকারী হিসেবে মনোনীত হন। তাঁর স্ট্রোকপ্লেগুলো ক্রিকেটের ইতিহাসের অন্যতম সেরা হিসেবে বিবেচিত হয়। পুরো মাত্রায় নিজের উপর আস্থা রেখে খেলাকালীন তাঁর ন্যায় বিশ্ব ক্রিকেট অঙ্গনে খুব স্বল্পসংখ্যক খেলোয়াড়কে বিনোদনধর্মী খেলা উপহার দিতে দেখা যেতো। সময়ের উপর নিয়ন্ত্রণ রেখে মাঠের সর্বত্র স্ট্রোক খেলতেন কিংবা কভার বা মিড-উইকেট বরাবর বল ফেলতেন। ২০০৭ সালের বিশ্ব টি২০ প্রতিযোগিতায় স্টুয়ার্ট ব্রডের বল থেকে প্রথম ভারতীয় ক্রিকেটার হিসেবে এক ওভারে ছয়টি ছক্কা হাঁকান। মাত্র ১২ বলে অর্ধ-শতকে পৌঁছেন। যে-কোন ধরনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এটিই যে-কোন ব্যাটসম্যানের দ্রুততম সাফল্য ছিল। শক্তিধর অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৩০ বল খেলে ৭০ রান তুলে দলকে চূড়ান্ত খেলায় নিয়ে যান। কয়েকটি খেলায় দূর্বলতর খেলা প্রদর্শন করলেও তাঁর স্বর্ণালী সময় তখনও বাকী ছিল।

২০০৮-০৯ মৌসুমে এমএস ধোনি’র নেতৃত্বাধীন ভারতীয় দলের সদস্যরূপে প্রথমবারের মতো নিউজিল্যান্ড গমন করেন। ৮ মার্চ, ২০০৯ তারিখে হ্যামিল্টনে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। খেলায় তিনি একবার ব্যাট হাতে নিয়ে ৬ রান সংগ্রহসহ একটি ক্যাচ তালুবন্দী করেছিলেন। এছাড়াও, ১/১১ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। তবে, শচীন তেন্ডুলকরের অসামান্য ব্যাটিং দৃঢ়তায় সফরকারীরা ১০ উইকেটে জয়লাভ করলে তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে এগিয়ে যায়।

তাঁর ওডিআই খেলোয়াড়ী জীবনের পুরোটাই পটছবিতে আঁকা ছিল। বিশ্বকাপের শিরোপা বিজয়ে বড় ধরনের ভূমিকা রাখেন। ২০১০-১১ মৌসুমে বড় ধরনের রান সংগ্রহে তাঁকে বেশ হিমশিম খেতে দেখা যায়। ওডিআই বিশ্বকাপের পূর্বে দলে থাকবেন কি থাকবেন না তা নিয়েই যথেষ্ট সন্দীহান ছিল। তবে, অধিনায়ক এমএস ধোনি তাঁর উপর পূর্ণাঙ্গ আস্থা ও বিশ্বাস রাখেন। ২৮ বছর পর ২০১১ সালের আইসিসি বিশ্বকাপ ক্রিকেট প্রতিযোগিতায় দলের শিরোপা বিজয়ে অংশ নেন ও সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে তাঁর স্বর্ণালী মুহূর্ত ছিল। ম্যান অব দ্য টুর্নামেন্টের পুরস্কার পান তিনি। খুব কমসংখ্যক খেলোয়াড়ই এ বিশ্বকাপে তাঁর তুলনায় প্রভাব বিস্তার করেছিলেন। গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে অসামান্য ভূমিকা রাখার পাশাপাশি দলের পঞ্চম বোলার হিসেবে বোলিংয়ে নেমে বিস্ময়কর সফলতা পান। চূড়ান্ত খেলায় দারুণ ভূমিকা প্রদর্শনসহ ঐ প্রতিযোগিতায় ৩৬২ রান সংগ্রহের পাশাপাশি ১৫ উইকেট দখল করেছিলেন। চারটি খেলায় ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার পেয়েছিলেন। এ ধরনের সফলতায় ২০০৭ সালের বিশ্ব টি২০ প্রতিযোগিতার শিরোপা বিজয়ী দলের সদস্য থেকে স্টুয়ার্ট ব্রডের এক ওভার থেকে ছয়টি ছক্কা হাঁকানোর কৃতিত্ব ম্লান হয়ে পড়ে।

২০১১ সালের বিশ্বকাপ ক্রিকেট প্রতিযোগিতার পর মর্মান্তিক সংবাদ জানা যায়। এ প্রতিযোগিতার পূর্বেই ক্যান্সারের প্রাথমিক লক্ষণ তাঁর মাঝে ছড়িয়ে পড়ে। বামপাশের ফুসফুসে টিউমার ধরা পড়ে। আড়াই মাস মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে চিকিৎসাধীন ছিলেন ও সঙ্কটময় সময় অতিবাহিত করেন। পুরো দেশই স্তব্ধ হয়ে পড়ে। ঐ মৌসুমে আর কোন খেলায় অংশ নেননি ও অসীম সময়ের জন্যে চিকিৎসাধীন থাকেন। তবে, ক্যান্সারের বিরুদ্ধে জয়ী হন। এপ্রিল, ২০১২ সালে কেমিওথেরাপি সম্পন্ন করে দেশে ফিরে আসেন। পূর্ণাঙ্গ আত্মবিশ্বাস নিয়ে মাঠে নামেন। আগস্টে শ্রীলঙ্কায় অনুষ্ঠিত বিশ্ব টি২০ প্রতিযোগিতায় ভারত দলের সদস্যরূপে মনোনীত হন। তবে, ২০১৩-১৪ মৌসুমে পূর্বেকার খেলাগুলোর ধারে-কাছেও ছিলেন না।

২০১২-১৩ মৌসুমে নিজ দেশে অ্যালেস্টেয়ার ক্যাম্পবেলের নেতৃত্বাধীন ইংরেজ দলের মুখোমুখি হন। ৫ ডিসেম্বর, ২০১২ তারিখে কলকাতায় অনুষ্ঠিত সফররত ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের তৃতীয় টেস্টে অংশ নেন। ৩২ ও ১১ রান সংগ্রহ করেছিলেন। সফরকারীরা ৭ উইকেটে জয় পায় ও চার-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে ২-১ ব্যবধানে এগিয়ে যায়। পরবর্তীতে, এটিই তাঁর সর্বশেষ টেস্টে পরিণত হন।

২০১৪ সালের বিশ্ব টি২০ প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত খেলায় তাঁকে বেশ হিমশিম খেতে দেখা যায়। চূড়ান্ত খেলায় ২১ বলে মাত্র ১১ রান তুলতে সক্ষম হন ও শিরোপা শ্রীলঙ্কা দলের অনুকূলে চলে যায়। এ প্রতিযোগিতা শেষে ভারতের সীমিত-ওভারের দল থেকে বাদ পড়েন। এছাড়াও, তিনি পূর্ণাঙ্গভাবে সুস্থ ছিলেন না।

পরবর্তী কয়েক বছর ওডিআইয়ে এমএস ধোনি’র সাথে দক্ষতার সাথে ভারতের মাঝারিসারি সামলাতেন। এ দু’জন প্রায়শঃই প্রতিপক্ষের লক্ষ্যমাত্রা অবলীলাক্রমে অতিক্রম করতেন। এক পর্যায়ে সফলতার সাথে জয়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ভারত দল রেকর্ড সৃষ্টি করেছিল। বড় ধরনের প্রতিযোগিতা কিংবা খেলাগুলোয় নিজেকে সর্বশক্তি নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়তেন। অনেক সময়ই বড় ধরনের সফলতা না পেলেও আইসিসি প্রতিযোগিতায় ঠিকই নিজেকে মেলে ধরতেন। বড় আসরের খেলায় সাধারণভাবে চাপ সামলে নেয়ার ক্ষমতা ছিল।

পরের কয়েক মৌসুম শারীরিক সুস্থতা আনয়ণে প্রচণ্ড পরিশ্রম করলেও ২০১৫ সালের বিশ্বকাপ ক্রিকেট প্রতিযোগিতা ও ২০১৬ সালের বিশ্ব টি২০ প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে পারেননি। জানুয়ারি, ২০১৬ সালে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে আরও একবার আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পদার্পণ করেন। কিন্তু, গোড়ালীর আঘাতের কারণে তাঁকে প্রতিযোগিতা থেকে আগেভাগে চলে আসতে হয়। এ প্রতিযোগিতায় ১০০ স্ট্রাইক-রেটে ১৩.০০ গড়ে ৫২ রান তুলেন। এ পর্যায়ে তাঁর বয়স ছিল ৩৪ বছর ও ভবিষ্যতে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরে আসা নিয়ে সন্দীহান হয়ে পড়ে।

তবে, ঘরোয়া ক্রিকেটে দূর্দান্ত খেলা উপহার দিলে ২০১৭ সালের শুরুতে পুণরায় দলে ফিরে আসেন। ২০১৬-১৭ মৌসুমের রঞ্জী ট্রফির আসরে বিস্ময়কর ৮৪.০০ গড়ে ৬৭২ রান তুলে নিজের উপস্থিতির কথা জানান দেন। এরফলে, দল নির্বাচকমণ্ডলী তাঁকে পুণরায় দলে ফিরে আসার আমন্ত্রণ জানান। ডিসেম্বর, ২০১৩ সালের পর নিজ দেশে ২০১৭ সালের শুরুরদিকে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে খেলেন। চার নম্বর অবস্থানে খেলেছিলেন তিনি। ২০১৭ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি প্রতিযোগিতায় ভারত দল রানার্স-আপ হয়। এ প্রতিযোগিতা শেষে স্বল্প কয়েকজন জ্যেষ্ঠ খেলোয়াড়দের অন্যতম হিসেবে দল থেকে বাদ পড়েন। তাঁর ফিল্ডিংও তথৈবাচৈ ছিল। এক দশক পূর্বেও যা অচিন্ত্যনীয় ছিল। শুরুতে অবশ্য তাঁকে বিশ্রামের কথা উল্লেখ করা হলেও মূলতঃ ২০১৯ সালের বিশ্বকাপ ক্রিকেট প্রতিযোগিতাকে ঘিরে দল নির্বাচকমণ্ডলী অগ্রসর হয়েছিল। তবে, ঘরোয়া ক্রিকেটে তিনি খেলা চলমান রাখেন ও আরও একবার আন্তর্জাতিক পর্যায়ে খেলার প্রত্যাশা করতে থাকেন।

কিছু সময় তাঁর পেস ও শর্ট বলের উপর দক্ষতা আনয়ণে বিষয়টি নজরে পড়লেও স্পিনারদের বিপক্ষে তাঁর দূর্বলতা ধরা পড়ে। কিন্তু, ছন্দে থাকাকালে তাঁকে আটকানো বেশ কঠিন ছিল। ২০০৮ সালে নিজের স্বর্ণালী সময়ে তারকা খেলোয়াড় হিসেবে আইপিএলে খেলেন। ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লীগের প্রথম দুই আসরে কিংস ইলাভেন পাঞ্জাবের প্রতিনিধিত্ব করেন। প্রথম কয়েক মৌসুমে দলটির অধিনায়কত্ব করেন। দলের প্রথম বছরে নেতৃত্বে থেকে দলটি প্লে-অফ খেলায় অংশ নিতে হয়েছিল। বিস্ময়করভাবে ভারতের পক্ষে বীরত্বসূচক খেলা উপহার দিলেও আইপিএলে তেমন সাড়া জাগাতে পারেননি। ব্যাটিংয়ে বেশ ভালো করলেও ধারাবাহিকতার অভাব লক্ষ্য করা যায়। প্রথম মৌসুমে কেবলমাত্র একটি অর্ধ-শতক করেছিলেন। তবে, ১৬২.৫০ স্ট্রাইক-রেটে রান সংগ্রহ করেছিলেন। ২০০৯ সালে সাদামাটা মৌসুম অতিবাহিত করেন। ব্যক্তিগত সমস্যা ও দলীয় ফলাফলে তাঁর পরিবর্তে কুমার সাঙ্গাকারাকে দলের নেতৃত্ব ভার প্রদান করা হয়। দলে অনুকূল প্রভাব না পড়লেও তাঁর আত্মবিশ্বাসে চিড় ধরে। বেশ কয়েকটি দলে খেলে শুরুতে এর বিরূপ প্রভাব পড়েছিল।

এরপর, ২০১১ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত পুনে ওয়ারিয়র্সের পক্ষে খেলেন। ২০১১ সালের বিশ্বকাপে ভারতের শিরোপা বিজয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনের এক সপ্তাহ পরই পুনে ওয়ারিয়র্সের নেতৃত্ব পান। দলটির সাথে $১.৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের বিনিময়ে চুক্তিবদ্ধ হয়েছিলেন। এ মৌসুমেই আইপিএলে স্বর্ণালী সময় অতিবাহিত করেন। ৩৪৩ রান তুলে দলের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকে পরিণত হয়েছিলেন। তাসত্ত্বেও দলটি পয়েন্ট তালিকায় দ্বিতীয় সর্বনিম্ন স্থান দখল করে।

ক্যান্সার মোকাবেলায় ২০১২ সালে পুরোপুরি নিষ্ক্রীয় ছিলেন। ২০১৩ সালে খেলার জগতে ফিরে আসেন। তবে, নিজের সেরা সময়ের কাছাকাছি পর্যায়েও নিজেকে নিয়ে যেতে পারেননি। পুনে দলের ভরাডুবিতে তেমন কোন ভূমিকাই রাখতে পারেননি। খেলায় ছন্দ তেমন ধরে রাখতে না পারলেও ২০১৪ সালের আইপিএল নিলামে সর্বাধিক দামী খেলোয়াড়ের মর্যাদা পান। রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরের পক্ষে ১৪ কোটি রূপীর বিনিময়ে খেলেন। ২০১৫ সালে দিল্লি ডেয়ারডেভিলসে ₹১৬ কোটি রূপীর বিনিময়ে চুক্তিবদ্ধ হন।

২০১৬ সালে ₹৭ কোটি রূপীর বিনিময়ে সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদের সাথে যুক্ত হন। মৌসুমের মাঝামাঝি সময়ে কিছুটা মেলে ধরতে প্রয়াস চালান। কিন্তু, ২০১৯ সালের আইপিএলের নিলামের প্রথম রাউন্ডে কোন দলই তাঁর প্রতি আগ্রহ প্রকাশ করেনি। এর পূর্বে ২০১৮ সালে কিংস ইলাভেন পাঞ্জাবের পক্ষে ₹২ কোটি রূপীতে খেলেন। তিনি নিজেকে পূর্বেকার ছায়া হিসেবেই তুলে ধরেছিলেন। ৬ ইনিংস থেকে মাত্র ৬৫ রান তুলতে পেরেছিলেন।

ক্যান্সার টিউমারে আক্রান্ত হলে তাঁকে চিকিৎসকের স্মরণাপন্ন হতে হয়। ২০১১ সালের বিশ্বকাপ ক্রিকেট প্রতিযোগিতা চলাকালীন এ রোগ ধরা পড়ে। রক্ত বমি করেছিলেন তিনি। ফেব্রুয়ারি থেকে এপ্রিল, ২০১২ সাল পর্যন্ত ক্যান্সারের চিকিৎসা করেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কেমিওথেরাপিতে আরোগ্য লাভ করেন ও এপ্রিল, ২০১২ সালে ফিরে আসেন। তবে, পূর্বেকার সতেজতা ও চটপটে অ্যাথলেটের মনোভাব অনুপস্থিত ছিল। খুবই কম সময় ছন্দে ছিলেন ও শারীরিক সুস্থতার প্রশ্নে দলে ফিরে আসতে হিমশিম খান। ৩০ জুন, ২০১৭ তারিখে নর্থ সাউন্ডে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সর্বশেষ ওডিআইয়ে অংশ নেন।

জানুয়ারি, ২০১৩ সালে দূর্বল ক্রীড়াশৈলী ও শারীরিক সুস্থতার অভাবে দল থেকে বাতিলের তালিকায় চলে যান। কিন্তু, অক্টোবরে ফ্রান্সে প্রশিক্ষণ শেষে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টি২০আইয়ে ৩৫ বলে ৭৭ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলে নিজের সক্ষমতার কথা তুলে ধরেন। কিন্তু, ধারাবাহিকতা রক্ষা করতে না পারায় ডিসেম্বর, ২০১৩ সালে দক্ষিণ আফ্রিকায় ওডিআইয়ে মিশ্র সফলতা পেলে বাদ পড়েন।

একদা তড়িৎগতিসম্পন্ন ফিল্ডার হিসেবে পয়েন্ট কিংবা কভার-পয়েন্ট অঞ্চলে সর্বদা দণ্ডায়মান থেকে ভারতীয় ক্রিকেটের ইতিহাসে তুমুল জনপ্রিয়তা অর্জনের পর বয়সের ভারে ন্যূহ হয়ে পড়েন। কেভিন পিটারসন একমত পোষণ করেছিলেন যে, তাঁর বামহাতের স্পিন বোলিং আরও দূর্দান্ত ছিল।

২০০৮ সালে আইসিসি বর্ষসেরা টি২০ আন্তর্জাতিক ক্রীড়াশৈলী পুরস্কারে ভূষিত হন। ১০ জুন, ২০১৯ তারিখে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের সকল স্তর থেকে অবসর গ্রহণের কথা ঘোষণা করেন।

ব্যক্তিগত জীবনে বিবাহিত ছিলেন। হাজেল কিচ নাম্নী এক রমণীর পাণিগ্রহণ করেন।

Similar Posts

  • | |

    মোহাম্মদ আজহারউদ্দীন

    ৮ ফেব্রুয়ারি, ১৯৬৩ তারিখে অন্ধ্রপ্রদেশের হায়দ্রাবাদে জন্মগ্রহণকারী বিখ্যাত ক্রিকেটার ও রাজনীতিবিদ। মূলতঃ মাঝারিসারির ব্যাটসম্যান হিসেবে দলে ভূমিকা রেখে গেছেন। ডানহাতে ব্যাটিং করতেন। এছাড়াও, ডানহাতে মিডিয়াম বোলিংয়ে পারদর্শী ছিলেন। ভারত দলের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেছেন। আগ্রাসী ব্যাটিংয়ের কারণে স্মরণীয় হয়ে থাকবেন ও অন-সাইডে দৃষ্টিনন্দন কব্জীর মোচড়ে রান সংগ্রহে তৎপরতা চালাতেন। অসাধারণ ফিল্ডিং ও নেতৃত্বের গুণাবলী তাঁর…

  • |

    সেলিম দুরানি

    ১১ ডিসেম্বর, ১৯৩৪ তারিখে আফগানিস্তানের কাবুলে জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ছিলেন। মূলতঃ ব্যাটসম্যান হিসেবে দলে ভূমিকা রেখে গেছেন। বামহাতে ব্যাটিং করতেন। এছাড়াও, কার্যকর স্লো লেফট-আর্ম অর্থোডক্স বোলিং করতেন। ভারতের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন। কাবুলে জন্মগ্রহণ করলেও ভারতে শৈশবকাল অতিবাহিত করেন। ক্রিকেট বিশ্বে তিনি ‘প্রিন্স সেলিম’ হিসেবে পরিচিত ছিলেন। আফগানিস্তানী পাঠান হিসেবে চমৎকার চেহারার লম্বাটে গড়নের অধিকারী…

  • | | |

    সাবা করিম

    ১৪ নভেম্বর, ১৯৬৭ তারিখে বিহারের পাটনায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার, ধারাভাষ্যকার ও প্রশাসক। মূলতঃ উইকেট-রক্ষক হিসেবে দলে ভূমিকা রেখেছিলেন। এছাড়াও, ডানহাতে ব্যাটিং করতেন। ভারতের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন। ১৯৮২-৮৩ মৌসুম থেকে ১৯৯৯-২০০০ মৌসুম পর্যন্ত সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান রাখেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর ভারতীয় ক্রিকেটে বাংলা ও বিহারের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। ১৯৮৮-৮৯ মৌসুমে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে বিস্ময়করভাবে…

  • | | |

    আমিনুল ইসলাম

    ২ ফেব্রুয়ারি, ১৯৬৮ তারিখে ঢাকায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার, কোচ ও রেফারি। মূলতঃ মাঝারিসারির ব্যাটসম্যান হিসেবে দলে ভূমিকা রেখেছেন। ডানহাতে ব্যাটিং করতেন। এছাড়াও, ডানহাতে অফ-ব্রেক বোলিংয়ে পারদর্শী ছিলেন। বাংলাদেশ দলের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেছেন। ‘বুলবুল’ ডাকনামে পরিচিত ছিলেন। ১৯৯৭-৯৮ মৌসুম থেকে ২০০২-০৩ মৌসুম পর্যন্ত সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান রাখেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর বাংলাদেশী ক্রিকেটে ঢাকা বিভাগের…

  • |

    ইয়ান সিনক্লেয়ার

    ১ জুন, ১৯৩৩ তারিখে ক্যান্টারবারির র‍্যাঙ্গিওরা এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ছিলেন। মূলতঃ ডানহাতি অফ-ব্রেক বোলিং করতেন। এছাড়াও, বামহাতে নিচেরসারিতে ব্যাটিংয়ে নামতেন। ১৯৫০-এর দশকে নিউজিল্যান্ডের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছিলেন। ১৯৫৩-৫৪ মৌসুম থেকে ১৯৫৬-৫৭ মৌসুম পর্যন্ত প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান রেখেছিলেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর নিউজিল্যান্ডীয় ক্রিকেটে ক্যান্টারবারির প্রতিনিধিত্ব করেছেন। তিন মৌসুম জুড়ে মাত্র ১৫টি প্রথম-শ্রেণীর খেলায় অংশ…

  • | | |

    স্টিফেন ফ্লেমিং

    ১ এপ্রিল, ১৯৭৩ তারিখে ক্যান্টারবারির ক্রাইস্টচার্চে জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ও কোচ। মূলতঃ শীর্ষসারির ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলতেন। বামহাতে ব্যাটিং করতেন। এছাড়াও, ডানহাতে অফ-ব্রেক বোলিংয়ে পারদর্শী। নিউজিল্যান্ডের পক্ষে সকল স্তরের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন। পাশাপাশি, নিউজিল্যান্ড দলকে সকল স্তরের ক্রিকেটে নেতৃত্ব দিয়েছেন। বর্ণাঢ্যময় ও দৃঢ় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ চিত্তে খেলায় অংশ নিতেন। নিউজিল্যান্ডের ক্রিকেটের ইতিহাসের সফলতম অধিনায়ক হিসেবে পরিচিতি লাভ…