২৩ মে, ১৯৬৫ তারিখে তামিলনাড়ুর মাদ্রাজে জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ও কোচ। মূলতঃ উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান হিসেবে দলে ভূমিকা রেখেছিলেন। বামহাতে ব্যাটিং করতেন। এছাড়াও, স্লো লেফট-আর্ম অর্থোডক্স বোলিংয়ে পারদর্শী ছিলেন। ভারতের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন।
১৯৮২-৮৩ মৌসুম থেকে ১৯৯৮-৯৯ মৌসুম পর্যন্ত সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান রাখেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর ভারতীয় ক্রিকেটে তামিলনাড়ুর প্রতিনিধিত্ব করেছেন। এক মৌসুমে সর্বাধিক রান সংগ্রহের দীর্ঘদিনের রেকর্ড নিজের করে নেন। ১৯৮৮-৮৯ মৌসুমে এ কৃতিত্ব গড়েন। এ পর্যায়ে তামিলনাড়ুর সদস্যরূপে গোয়ার বিপক্ষে ৩১৩ রান তুলেন। এর পূর্বে আরও দুইটি দ্বি-শতক হাঁকান। ঐ বছর ১৪৫.৪২ গড়ে ১০১৮ রানের সন্ধান পান।
১৯৮৮ থেকে ১৯৯৭ সময়কালে ভারতের পক্ষে সর্বমোট ১১ টেস্ট ও ২৭টি ওডিআইয়ে অংশ নিয়েছিলেন। ১৯৮৭-৮৮ মৌসুমে নিজ দেশে ভিভ রিচার্ডসের নেতৃত্বাধীন ক্যারিবীয় দলের মুখোমুখি হন। ২ জানুয়ারি, ১৯৮৮ তারিখে সফরকারী ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ওডিআইয়ে অংশ নেয়ার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট অঙ্গনে প্রবেশ করেন। এরপর, একই সফরের ১১ জানুয়ারি, ১৯৮৮ তারিখে মাদ্রাজে অনুষ্ঠিত সিরিজের চতুর্থ ও চূড়ান্ত টেস্টে অংশ নেন। অজয় শর্মা ও নরেন্দ্র হিরবাণী’র সাথে তাঁর একযোগে টেস্ট অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। দিলীপ বেঙ্গসরকারের আঘাতের কারণে তিনি স্থলাভিষিক্ত হয়েছিলেন। দ্বিতীয় ইনিংসে বেশ দৃঢ়চেতা মনোভাবের পরিচয় দেন। প্যাট্রিক প্যাটারসন, উইনস্টন ডেভিস ও কোর্টনি ওয়ালশের বল মোকাবেলা করে ৮৩ রানের নিখুঁত ইনিংস খেলেন। তবে, নরেন্দ্র হিরবাণী’র ১৬-উইকেট লাভের ন্যায় অবিস্মরণীয় সাফল্যে তাঁর এ কৃতিত্ব ম্লান হয়ে পড়ে। ঐ টেস্টে তাঁর দল ২৫৫ রানে জয়লাভ করে ও ১-১ ব্যবধানে সিরিজটি অমিমাংসিত অবস্থায় শেষ হয়। এরপর থেকে মাঝে-মধ্যে খেলার সুযোগ পেতেন।
স্বল্পকালীন খেলোয়াড়ী জীবনে দুই বা ততোধিকবার তিন অঙ্কের কোটা স্পর্শ করতে পারেননি। ১১ টেস্টে অংশ নিলেও ১৯৯০ সালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ক্রাইস্টচার্চ টেস্টে ৯৬ ও অকল্যান্ড টেস্টে অপরাজিত ৭২ রানের ইনিংস খেলেছিলেন। তবে, দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সেঞ্চুরিয়নে পাঁচ-ওডিআই নিয়ে গড়া প্রথমটিতে স্বর্ণালী মুহূর্তে অবস্থান করেছিলেন। ১১৪ রানের মনোরম ইনিংস খেলেন। এ পর্যায়ে প্রথম ভারতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে শতক হাঁকানোর গৌরব অর্জন করেন।
তাসত্ত্বেও, এ স্তরের ক্রিকেট থেকেও প্রতিভাবান ক্রিকেটারদেরকে সুযোগ দিতে বাদ দেয়া হয়। ফলশ্রুতিতে, এটিই তাঁর উচ্চ আসরের ক্রিকেটে একমাত্র শতরানের ইনিংস ছিল। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে প্রত্যাখ্যাত হলেও ঘরোয়া আসরের ক্রিকেটে ঠিকই সরব রেখেছিলেন নিজেকে। রানের ফুলঝুড়ি ছোটাতে থাকেন। ঘরোয়া পর্যায়ের সফলতাকে জাতীয় দলে থেকে ধরে রাখতে পারেননি। ১৩২টি প্রথম-শ্রেণীর খেলা থেকে ৪৫ ঊর্ধ্ব গড়ে রান তুললেও টেস্ট ও ওডিআইয়ে যথাক্রমে ২৫ ও ২৪ গড়ে রান তুলেছেন। প্রায় নয় বছর দলে আসা-যাবার পালায় অবস্থান করে অবশেষে ১৯৯৭ সালে ক্রিকেট জগতকে বিদেয় জানান।
১৯৯৬-৯৭ মৌসুমে শচীন তেন্ডুলকরের নেতৃত্বে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে যান। ২ জানুয়ারি, ১৯৯৭ তারিখে কেপটাউনে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে অংশ নেন। ৫ ও ১৬ রান সংগ্রহ করেন। এছাড়াও, বল হাতে নিয়ে ০/১৮ ও ০/৪৫ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। স্বাগতিকরা ইনিংস ও ২৮২ রানে জয় পেয়ে তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে যায়। পরবর্তীতে, এটিই তাঁর সর্বশেষ টেস্টে পরিণত হয়।
যথেষ্ট প্রতিভাবান হওয়া সত্ত্বেও আন্তর্জাতিক খেলোয়াড়ী জীবনে কখনো নিজেকে মেলে ধরতে পারেননি। তবে, বামহাতে ব্যাট হাতে নিয়ে তাঁর দক্ষতার কমতি লক্ষ্য করা যায়নি। ক্রিকেট খেলা থেকে অবসর গ্রহণের পর খ্যাতিসম্পন্ন কোচ হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন ও সংবাদ প্রতিবেদক হয়েছিলেন। ২৮ ডিসেম্বর, ২০১৫ তারিখে ন্যাশনাল ক্রিকেট একাডেমিতে ব্যাটিং কোচ হিসেবে নিযুক্তি লাভ করেন।
