| | |

উইলি ওয়াটসন, ১৯২০

৭ মার্চ, ১৯২০ তারিখে ইয়র্কশায়ারের বোল্টন-অন-ডিয়ার্ন এলাকায় জন্মগ্রহণকারী বিখ্যাত ক্রিকেটার, ফুটবলার, প্রশাসক ও কোচ ছিলেন। মূলতঃ ব্যাটিং কর্মে মনোনিবেশ ঘটাতেন। বামহাতে ব্যাটিং করতেন তিনি। এছাড়াও, দক্ষ ফিল্ডার হিসেবেও তাঁর সুনাম ছিল। ১৯৫০-এর দশকে ইংল্যান্ডের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছিলেন।

‘বিল’ কিংবা ‘বিলি’ ডাকনামে ভূষিত হয়েছিলেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে লিচেস্টারশায়ার ও ইয়র্কশায়ার দলের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। ১৯৩৯ থেকে ১৯৬৪ সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন অতিবাহিত করেছেন।

১৯৫১ থেকে ১৯৫৯ সাল পর্যন্ত ইংল্যান্ডের পক্ষে সর্বমোট ২৩ টেস্টে অংশ নিয়েছেন। ২৫.৮৫ গড়ে ৮৭৯ রান পেয়েছেন। ১৯৫১ সালে নিজ দেশে ডাডলি নোর্সের নেতৃত্বাধীন স্প্রিংবকের মুখোমুখি হন। ৭ জুন, ১৯৫১ তারিখে নটিংহামের ট্রেন্ট ব্রিজে অনুষ্ঠিত সফররত দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে তাঁর অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। খেলায় তিনি ৫৭ ও ৫ রান সংগ্রহ করেছিলেন। ঐ খেলায় সফরকারীরা ৭১ রানে জয়লাভ করলে পাঁচ-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে এগিয়ে যায়।

১৯৫৩ সালের লর্ডস টেস্টে সফররত অস্ট্রেলিয়া দলের বিপক্ষে খেলে নিজেকে স্মরণীয় করে রাখেন ও খ্যাতির তুঙ্গে পৌঁছেন। প্রায় ছয় ঘণ্টা ট্রেভর বেইলি’র সাথে ক্রিজে অবস্থান করে ইংল্যান্ড দলের পরাজয় রোধ করেন ও এক সপ্তাহ পর দীর্ঘ প্রতিক্ষিত জয় তুলে নিয়ে অ্যাশেজ সিরিজ জয় করে স্বাগতিক দল। তিনি ১০৯ রান তুলেছিলেন। সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে দুইটিমাত্র টেস্ট শতক হাঁকানোর এটি প্রথম ছিল। দলের সংগ্রহ ১২/৩ থাকা অবস্থায় চূড়ান্ত দিনে ৩ রানে অপরাজিত অবস্থায় মাঠে নামেন। দলের সংগ্রহ ৭৩/৪ হলে ট্রেভর বেইলি তাঁকে সঙ্গ দেন। এ দু’জন চার ঘণ্টা ১৭ মিনিট একত্রে থেকে ১৬৩ রান যোগ করে ইংল্যান্ড দলের সঙ্কট উত্তরণে ভূমিকা রাখেন ও ১৯৩২-৩৩ মৌসুমের পর প্রথমবারের মতো দলের অ্যাশেজ বিজয়ে অংশ নেন।

এর কয়েক মাস পর কিংস্টনে স্বাগতিক ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ৪ ঘণ্টা ২৩ মিনিট সময় নিয়ে ১১৬ রান সংগ্রহ করেছিলেন। প্রথম উইকেটে অধিনায়ক লেন হাটনের সাথে ১৩০ রানের জুটি গড়েন। এবার তিনি শুধু যে ইংল্যান্ড দলকে রক্ষা করেছেন তা নয়; ঐ টেস্টে সফরকারীরা ১৩০ রানে জয় পেয়েছিল।

১৯৫৮-৫৯ মৌসুমে প্রথমবারের মতো নিউজিল্যান্ডের মাটিতে টেস্ট খেলেন। ঐ মৌসুমে পিটার মে’র নেতৃত্বাধীন এমসিসি দলের সদস্যরূপে নিউজিল্যান্ড সফরে যান। ২৭ ফেব্রুয়ারি, ১৯৫৯ তারিখে ক্রাইস্টচার্চে স্বাগতিক নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। খেলায় তিনি দলের একমাত্র ইনিংসে ১০ রান সংগ্রহ করেছিলেন। ঐ টেস্টে স্বাগতিকরা ইনিংস ও ৯৯ রানে পরাজয়বরণ করলে দুই-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে পিছিয়ে পড়ে।

একই সফরের ১৪ মার্চ, ১৯৫৯ তারিখে অকল্যান্ডে অনুষ্ঠিত বৃষ্টিবিঘ্নিত সিরিজের দ্বিতীয় খেলায় অংশ নেন। খেলায় তিনি দলের একমাত্র ইনিংসে ১১ রান সংগ্রহ করেছিলেন। খেলাটি ড্রয়ে পরিণত হলে সফরকারীরা ১-০ ব্যবধানে সিরিজ জয় করে নেয়। পরবর্তীতে, এটিই তাঁর সর্বশেষ টেস্টে পরিণত হয়।

১৯৫৪ সালে উইজডেন কর্তৃক অন্যতম বর্ষসেরা ক্রিকেটারের মর্যাদাপ্রাপ্ত হন। ক্রিকেট খেলা থেকে অবসর গ্রহণের পর কোচিং জগতের দিকে ধাবিত হন। ১৯৬২ সালে তিন বছরের জন্যে টেস্ট দল নির্বাচকের দায়িত্ব পালন করেছেন।

ক্রিকেটের পাশাপাশি ফুটবল খেলায়ও দক্ষ ছিলেন। ক্রিকেটে মনোনিবেশ ঘটানোর পূর্বে ফুটবল খেলতেন। স্বল্পসংখ্যক খেলোয়াড়ের অন্যতম হিসেবে উভয় খেলায় ইংল্যান্ডের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। ইংল্যান্ডের পক্ষে চারটি ফুটবল খেলায় অংশ নিয়েছিলেন। টেস্ট ক্রিকেটারদের মধ্যে তিনি সেরা ফুটবলারের পরিচিতি ঘটান। এছাড়াও, সান্ডারল্যান্ড এএফসি’র রাইট-উইং হাফ অঞ্চলে অবস্থান করে ২১১টি লীগ খেলায় অংশ নিয়েছিলেন। ১৯৫০ সালে ব্রাজিলে অনুষ্ঠিত ফিফা বিশ্বকাপ ফুটবল প্রতিযোগিতায় ইংল্যান্ড দলের সদস্য ছিলেন। তবে, কোন খেলায় অংশ নেননি। ১৯৬৮ সালে আবারও ক্রিকেটের দিকে ঝুঁকে পড়েন। জোহানেসবার্গে অভিবাসিত হন। ওয়ান্ডারার্স ক্লাবের কোচ ও প্রশাসকের দায়িত্ব পালন করেন।

২৪ এপ্রিল, ২০০৪ তারিখে দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গে ৮৪ বছর ৪৮ দিন বয়সে তাঁর দেহাবসান ঘটে।

Similar Posts

  • | |

    গ্রায়েম হিক

    ২৩ মে, ১৯৬৬ তারিখে রোডেশিয়ার সলসবারিতে জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ও কোচ। মূলতঃ ব্যাটসম্যান হিসেবে দলে ভূমিকা রেখেছিলেন। ডানহাতে মাঝারিসারিতে ব্যাটিং করতেন। পাশাপাশি ডানহাতে অফ-ব্রেক বোলিংয়ে পারদর্শী ছিলেন। ইংল্যান্ডের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন। ক্রিকেটের অন্যতম অবমূল্যায়িত খেলোয়াড়ের পরিচিতি পান। ইংল্যান্ডের ঘরোয়া আসরের ক্রিকেটে রানের ফুলঝুড়ি ছোটান ও দৃশ্যতঃ ইংরেজদের আশার আলো দেখিয়েছিলেন। ঘরোয়া পর্যায়ের কাউন্টি ক্রিকেটে…

  • |

    জেমস সাউদার্টন

    ১৬ নভেম্বর, ১৮২৭ তারিখে সাসেক্সের পেটওর্থ এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ছিলেন। মূলতঃ ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলতেন। ডানহাতে ব্যাটিং করতেন তিনি। ১৮৭০-এর দশকে ইংল্যান্ডের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন। সাসেক্সের পেটওর্থ এলাকায় জন্মগ্রহণের পরের বছরই তাঁর পরিবার মিচামে চলে যায়। পিতা ১৮৪১ সালে মারা যান ও সেন্ট পিটার এন্ড পল চার্চে তাঁকে সমাহিত করা হয়। মাতা শার্লট ১৮৫১…

  • | | | |

    ইনজামাম-উল-হক

    ৩ মার্চ, ১৯৭০ তারিখে পাঞ্জাবের মুলতানে জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার, কোচ ও প্রশাসক। মূখ্যতঃ ব্যাটসম্যান ছিলেন। ডানহাতে ব্যাটিং করতেন। মাঝে-মধ্যে স্লো লেফট-আর্ম অর্থোডক্স বোলিংয়ে পারদর্শী ছিলেন। পাকিস্তানের পক্ষে সকল স্তরের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন। পাশাপাশি, পাকিস্তান দলের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেছেন। উইকেটের চতুস্পার্শ্বে শট খেলতেন। লেগ অঞ্চলে খেলতেই অধিক স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করতেন। ভয়ঙ্কর প্রকৃতির পুল ও উঁচু হয়ে…

  • |

    ক্রেগ ইভান্স

    ২৯ নভেম্বর, ১৯৬৯ তারিখে সলসবারিতে জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার। মূলতঃ অল-রাউন্ডার হিসেবে খেলেছেন। ডানহাতে ব্যাটিং করতেন। এছাড়াও, ডানহাতে মিডিয়াম পেস বোলিংয়ে দক্ষতার স্বাক্ষর রেখেছেন। জিম্বাবুয়ের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর জিম্বাবুয়ীয় ক্রিকেটে ম্যাশোনাল্যান্ড, মাতাবেলেল্যান্ড ও ম্যাশোনাল্যান্ড কান্ট্রি ডিস্ট্রিক্টসের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। এছাড়াও, হারারেভিত্তিক ওল্ড গ্রিগোরিয়ান্সের পক্ষে খেলেছেন। ১৯৯০-৯১ মৌসুম থেকে ২০০৩-০৪ মৌসুম পর্যন্ত প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী…

  • |

    অজিত পাই

    ২৮ এপ্রিল, ১৯৪৫ তারিখে তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের বোম্বেতে জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার। মূলতঃ বোলার হিসেবে দলে ভূমিকা রেখেছিলেন। ডানহাতে ফাস্ট-মিডিয়াম বোলিং করতেন। এছাড়াও, বামহাতে নিচেরসারিতে ব্যাটিংয়ে নামতেন। ১৯৬০-এর দশকে ভারতের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছিলেন। কেবলমাত্র সিমার হবার সুবাদেই তিনি তাঁর সময়কালে ভারত দলে খেলার সুযোগ পেয়েছিলেন। প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে ২৫ গড়ে ৮৫ উইকেট ও ১১ গড়ে ৩৯২…

  • | |

    ফ্রান্সিস ম্যাককিনন

    ৯ এপ্রিল, ১৮৪৮ তারিখে লন্ডনের প্যাডিংটন এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ও প্রশাসক ছিলেন। মূলতঃ ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলতেন। ডানহাতে ব্যাটিং কর্মে অগ্রসর হতেন তিনি। ১৮৭০-এর দশকে ইংল্যান্ডের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছিলেন। হ্যারোভিয়ান হিসেবে প্রথম একাদশে খেলার সুযোগ পাননি। এক পর্যায়ে কেমব্রিজের অধীনে সেন্ট জোন্স কলেজে দারুণ খেলে ব্লু আদায় করে নিতে সক্ষম হন। ১৮৭০ সালে অক্সফোর্ডের…