২৩ মার্চ, ১৯৪৮ তারিখে সিন্ধু প্রদেশের করাচীতে জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ও প্রশাসক। মূলতঃ উইকেট-রক্ষক হিসেবে খেলতেন। এছাড়াও, ডানহাতে ব্যাটিং করতেন। পাশাপাশি, ডানহাতে বোলিংয়েও পারদর্শী ছিলেন। পাকিস্তানের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন ও দলের নেতৃত্বে ছিলেন।

পাকিস্তানে মানসম্পন্ন উইকেট-রক্ষক না থাকলেও সেরাদের কাতারে অবস্থানে নিজেকে তুলে ধরেছিলেন স্ব-মহিমায়। রডনি মার্শ কিংবা জেফ ডুজনের ন্যায় দর্শনীয় না হলেও দূর্দান্ত ডাইভ ও দৃষ্টিনন্দন ক্যাচ গ্লাভসবন্দীতে তাঁর জুড়ি মেলা ভার ছিল। ব্যতিক্রমী পন্থায় নিজেকে তাঁর যুগের সেরাদের খুব কাছাকাছি অবস্থানে নিয়ে গিয়েছিলেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর পাকিস্তানী ক্রিকেটে করাচী, পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্স ও সিন্ধুর প্রতিনিধিত্ব করেছেন।

১৯৬৭ থেকে ১৯৮৪ সময়কালে পাকিস্তানের পক্ষে সর্বমোট ৮১ টেস্ট ও ৫১টি ওডিআইয়ে অংশ নিয়েছিলেন। ১৯৬৭ সালে হানিফ মোহাম্মদের নেতৃত্বাধীন পাকিস্তানী দলের সাথে ইংল্যান্ড সফর করেন। ২৭ জুলাই, ১৯৬৭ তারিখে লর্ডসে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম টেস্টে অংশ নেন। সেলিম আলতাফের সাথে তাঁর একযোগে টেস্ট অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। ৩/৭৪ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ায় ও তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজটি অমিমাংসিত অবস্থায় অগ্রসর হতে থাকে।

১৯৮৩-৮৪ মৌসুমে ইমরান খানের নেতৃত্বাধীন পাকিস্তানী দলের সদস্যরূপে অস্ট্রেলিয়া সফরে যান। ২ জানুয়ারি, ১৯৮৪ তারিখে সিডনিতে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজের পঞ্চম ও চূড়ান্ত টেস্টে অংশ নেন। ৭ ও ২০ রান সংগ্রহ করেন। এছাড়াও, তিনটি ক্যাচ গ্লাভসবন্দী করেন। তবে, গ্রেগ চ্যাপেলের অসাধারণ শতকের কল্যাণে স্বাগতিকরা ১০ উইকেটে জয় পেলে ২-০ ব্যবধানে সিরিজে জয়লাভ করে। পরবর্তীতে, এটিই তাঁর সর্বশেষ টেস্টে পরিণত হয়।

অধিনায়ক ও দলের একমাত্র প্রকৃত ফাস্ট বোলার হিসেবে ইমরান খান তাঁর যোগ্যতার উপর পরিপূর্ণ আস্থা ব্যক্ত করেছিলেন। খুব কম সময়ই তাঁর উপর ক্ষোভ ঝরিয়েছেন। ইংল্যান্ডের অ্যালান নটের চেয়েও তাঁকে এগিয়ে রেখেছিলেন। সবমিলিয়ে টেস্টগুলো থেকে ২২৮টি ডিসমিসাল ঘটিয়েছেন। তন্মধ্যে, ২৭টিই ছিল স্ট্যাম্পিং থেকে। ক্রিকেট থেকে অবসর নেয়ার দুই দশক পরও পরিসংখ্যানগতভাবে পাকিস্তানী রেকর্ড হিসেবে টিকেছিল।

নীচেরসারির ব্যাটসম্যান হিসেবে বেশ ভালো খেলেছেন। তবে, সংখ্যাগতভাবে স্বীয় নামকে প্রতিষ্ঠিত করতে পারেননি। ১৯বার শূন্য রানের সন্ধান পেয়েছেন। এটি পাকিস্তানের পক্ষে অমর্যাদাকর রেকর্ড হিসেবে রয়ে গেছে। তাসত্ত্বেও, ১১২ ইনিংস থেকে ১৩৬৬ রান পেয়েছেন। ছয়বার পঞ্চাশোর্ধ্ব ইনিংস খেলেছেন।

সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্যে শূন্যতা পূরণে অধিনায়কত্ব করেছেন। ক্যারি প্যাকারের ব্যবস্থাপনায় বিশ্ব সিরিজ ক্রিকেট চলাকালীন ইংল্যান্ডের বিপক্ষে স্বদেশে ও বিদেশে দলকে ছয় টেস্টে নেতৃত্ব দিয়েছেন। নিজ দেশের নিশ্চল উইকেটে কোন জয় কিংবা পরাজয়বরণ করেনি। তবে, বিদেশ সফরে দুই টেস্টে পরাজয় ও বৃষ্টির কারণে তৃতীয়টি ড্রয়ে পরিণত হয়েছিল। সবগুলোতেই দলের প্রতিপক্ষ ছিল ইংল্যান্ড দল।

১৯৯৭ সালে দেশের স্বাধীনতা লাভের সূবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষ্যে পিসিবি কর্তৃক আজীবন সম্মাননা পুরস্কারে ভূষিত হন। স্ট্যাম্পের পিছনে কিংবা সামনে থেকে তেমন সফলতা না পেলেও ১৯৭০ ও ১৯৮০-এর দশকে দলের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ ছিলেন। এ পর্যায়ে দল কিছু সফলতা পায় ও সমসাময়িক ক্রিকেটারদের চেয়েও নিজেকে এগিয়ে রেখেছিলেন। ক্রিকেট খেলা থেকে অবসর গ্রহণের পর প্রশাসনের দিকে ধাবিত হন। পাকিস্তান দলের নির্বাচকমণ্ডলীর নেতৃত্বে ছিলেন। ৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৬ তারিখে ইন্তিখাব আলমের পরিবর্তে পাকিস্তান দলের ব্যবস্থাপক হিসেবে মনোনীত হন।

Similar Posts

  • | |

    উইয়ান মুল্ডার

    ১৯ ফেব্রুয়ারি, ১৯৯৮ তারিখে গটেংয়ে জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার। মূলতঃ অল-রাউন্ডার হিসেবে দলে ভূমিকা রাখছেন। ডানহাতে ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি ডানহাতে মিডিয়াম বোলিংয়ে পারদর্শীতা প্রদর্শন করে চলছেন। দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে সকল স্তরের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন ও অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেছেন। ‘উইয়ান’ ডাকনামে পরিচিত। সেন্ট স্টিথিয়ান্সে অধ্যয়ন করেছেন। কলেজে অধ্যয়নকালে ক্রিকেট খেলতে শুরু করেন। কিশোর অবস্থায় যুবদের ক্রিকেটে অংশ…

  • |

    গাই ডি অলউইস

    ১৫ ফেব্রুয়ারি, ১৯৬০ তারিখে কলম্বোয় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ছিলেন। মূলতঃ উইকেট-রক্ষক হিসেবে দলে ভূমিকা রেখেছিলেন। এছাড়াও, ডানহাতে ব্যাটিং করতেন। ১৯৮০-এর দশকে শ্রীলঙ্কার পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন। ১৯৮২-৮৩ মৌসুম থেকে ১৯৯৪-৯৫ মৌসুম পর্যন্ত সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন অতিবাহিত করেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর শ্রীলঙ্কান ক্রিকেটে সিংহলীজ স্পোর্টস ক্লাবের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। কিছুটা দীর্ঘদেহী ও চটপটে উইকেট-রক্ষক হিসেবে স্ট্যাম্পের…

  • |

    উইলিয়াম ব্রুস

    ২২ মে, ১৮৬৪ তারিখে ভিক্টোরিয়ার সাউথ ইয়ারা এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ছিলেন। মূলতঃ মাঝারিসারির ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলতেন। বামহাতে ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি বামহাতে কার্যকর মিডিয়াম বোলিং করতেন। অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন। সাউথ ইয়ারা এলাকায় জন্মগ্রহণ করলেও শৈশবকাল ক্রোমওয়েল স্ট্রিটে অতিবাহিত করেছেন। স্কচ কলেজে অধ্যয়ন করেছেন। ১৮৮০ ও ১৮৮১ সালে বিদ্যালয়ের প্রথম একাদশের সদস্য ছিলেন। আকর্ষণীয় বামহাতি…

  • |

    রড ল্যাথাম

    ১২ জুন, ১৯৬১ তারিখে ক্যান্টারবারির ক্রাইস্টচার্চে জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার। মূলতঃ শীর্ষসারির ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলেছেন। ডানহাতে ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি ডানহাতে মিডিয়াম বোলিংয়ে পারদর্শীতা দেখান। ১৯৯০-এর দশকে নিউজিল্যান্ডের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন। ১৯৮০-৮১ মৌসুম থেকে ১৯৯৪-৯৫ মৌসুম পর্যন্ত প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট জীবন চলমান রাখেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর নিউজিল্যান্ডীয় ক্রিকেটে ক্যান্টারবারির পক্ষে খেলেছেন। ১৯৯০ থেকে ১৯৯৪ সময়কালে সব মিলিয়ে চারটিমাত্র…

  • |

    সোহাগ গাজী

    ৫ আগস্ট, ১৯৯১ তারিখে বরিশালে জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার। মূলতঃ বোলার হিসেবে দলে ভূমিকা রেখেছিলেন। ডানহাতে অফ-ব্রেক বোলিং করেন। এছাড়াও, ডানহাতে কার্যকর ব্যাটিংশৈলী প্রদর্শন করেছেন। ২০১০-এর দশকে বাংলাদেশের পক্ষে সকল স্তরের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন। প্রকৃত মানসম্পন্ন অফ-স্পিনার হিসেবে বরিশালের দক্ষিণাঞ্চলীয় জেলা পটুয়াখালী থেকে এসে বাংলাদেশের ক্রিকেট অঙ্গনে যুক্ত হয়েছিলেন। বাংলাদেশের অন্যতম উদীয়মান ধীর গতিসম্পন্ন বোলাররূপে স্বীকৃতি…

  • | |

    মার্ক ওয়াহ

    ২ জুন, ১৯৬৫ তারিখে নিউ সাউথ ওয়েলসের ক্যান্টারবারি এলাকায় জন্মগ্রহণকারী বিখ্যাত ক্রিকেটার ও প্রশাসক। মূলতঃ অল-রাউন্ডারের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিলেন। ডানহাতে ব্যাটিং করতেন। এছাড়াও, ডানহাতে মিডিয়াম কিংবা ডানহাতে অফ-ব্রেক বোলিংয়ে পারদর্শী ছিলেন। অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছিলেন। পিতা ব্যাংক কর্মকর্তা ও মাতা নিউ সাউথ ওয়েলসের শিক্ষা বিভাগের অধীন শিক্ষক ছিলেন। স্টিভ ওয়াহ ছাড়াও ডিন ও…