৭ জানুয়ারি, ১৯২৮ তারিখে তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের পাঞ্জাবের অমৃতসরে জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ছিলেন। মূলতঃ উইকেট-রক্ষক হিসেবে দলে ভূমিকা রেখে গেছেন। এছাড়াও, ডানহাতে ব্যাটিং কর্মে অগ্রসর হতেন। ১৯৫০-এর দশকে ভারতের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছিলেন।
৫ ফুট ৮ ইঞ্চির দীর্ঘকায় শারীরিক গড়নের অধিকারী ছিলেন। সম্ভবতঃ গড়পড়তা ভারতীয় উইকেট-রক্ষকদের তুলনায় তিনি কিছুটা লম্বাটে ছিলেন। ১৯৪৩-৪৪ মৌসুম থেকে ১৯৫৮-৫৯ মৌসুম পর্যন্ত সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন অতিবাহিত করেছেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর ভারতীয় ক্রিকেটে বিহার, বোম্বে, নর্দার্ন ইন্ডিয়া, ইস্টার্ন পাঞ্জাব ও সাউদার্ন পাঞ্জাবের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। কিশোর অবস্থায় আচমকা বেইল পতনে বিরাট সুনাম কুড়িয়েছিলেন। প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে ২৮ খেলা থেকে প্রাপ্ত ৫৯টি ডিসমিসালের মধ্যে ২৪টিই স্ট্যাম্পিং ছিল।
প্রতিদ্বন্দ্বিতামুখর ব্যাটসম্যান ও মাঝে-মধ্যে উইকেট-রক্ষকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হওয়া বিশ্বনাথ হুনের সন্তান ছিলেন। ১৫ বছর বয়সে পাঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয়ের সদস্যরূপে পাঞ্জাব গভর্নর একাদশের বিপক্ষে অনানুষ্ঠানিক খেলায় প্রথম খেলেন। দিলাবর হোসেনের বলে স্ট্যাম্পিং হলেও পরবর্তীতে দিলাবর হোসেনকে স্ট্যাম্পিং করেছিলেন। ঐ খেলায় একটি ক্যাচ ও তিনটি স্ট্যাম্পিং করেছিলেন।
রঞ্জী ট্রফির খেলায় নর্দার্ন ইন্ডিয়ার বিপক্ষে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে। পরের মৌসুমে ইউনাইটেড প্রভিন্সেসের প্রতিনিধিত্ব করেন। অস্ট্রেলিয়ান সার্ভিসেস দলের বিপক্ষে বড় ধরনের অঘটন ঘটান। বিএইচইউ’র ছাত্র থাকাকালীন ভারতের বিশ্ববিদ্যালয়ের সদস্যরূপে খেলেন। দুইটি ক্যাচ গ্লাভসবন্দী করেছিলেন।
দারুণ ব্যাটসম্যান ছিলেন। কাট ও পুলে দক্ষতা প্রদর্শন করেছেন। পিছনের পায়ে ভর রেখে অফের দিকে বলকে ঠেলে দিতেন। ২২.২১ গড়ে ৮৪৪ রান তুলেছেন। ১৯৪৮-৪৯ মৌসুমে ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান একাদশের বিপক্ষে দারুণ খেলেছিলেন। লালা অমরনাথের সাথে ৯২ মিনিট ক্রিজ আঁকড়ে দলকে সমূহ পরাজয়ের হাত থেকে রক্ষা করেন। দুই মৌসুম পর ৩৭ গড়ে ৩৬৬ রান সংগ্রহ করেছিলেন। এ পর্যায়ে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে ব্যক্তিগত একমাত্র শতরানের ইনিংস খেলেন। এছাড়াও, ১৫টি ডিসমিসাল ঘটিয়েছিলেন। বিহারের পক্ষে রঞ্জী ট্রফিতে খেলে এ সফলতা পান।
১৯৫২ সালে ভারতের পক্ষে একটিমাত্র টেস্টে অংশগ্রহণের সুযোগ পেয়েছিলেন। মাত্র এক টেস্টে অংশগ্রহণের সুযোগ পেলেও সাধারণ জ্ঞানের বহিতে ঠিকই নিজেকে চিত্রিত করে রেখেছেন। ১৯৫২-৫৩ মৌসুমে নিজ দেশে আব্দুল কারদারের নেতৃত্বাধীন পাকিস্তান দল তাঁদের টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে উদ্বোধনী টেস্ট খেলতে ভারত সফরে আসে। ১৩ নভেম্বর, ১৯৫২ তারিখে বোম্বের ব্রাবোর্ন স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত সিরিজের তৃতীয় টেস্টে অংশ নেন। বাল দানি ও মাধব আপ্তে’র সাথে তাঁর একযোগে টেস্ট অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। বিস্ময়করভাবে তাঁদের প্রত্যেকেরই খেলোয়াড়ী জীবন সংক্ষিপ্ত ছিল। ব্যাট হাতে নেয়ার সুযোগ পাননি কিংবা কোন ক্যাচ গ্লাভসবন্দী করেননি। তাসত্ত্বেও চারটি স্ট্যাম্পিং করেছিলেন। তন্মধ্যে, সুভাষ গুপ্তে’র বলে তিনটি ও বিনু মানকড়ের বলে একটি স্ট্যাম্পিং করেছেন। ক্যাচ গ্লাভসবন্দী না করেই সর্বাধিক স্ট্যাম্পিংয়ের বিশ্বরেকর্ড গড়েন। সুভাষ গুপ্তে, বিনু মানকড় ও গুলাম আহমেদ – স্পিনারত্রয়ের কল্যাণে ঐ টেস্টে ভারত দল ১০ উইকেটে জয় পায় ও পাঁচ-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে ২-১ ব্যবধানে এগিয়ে যায়।
১৯৫০-এর দশকের সূচনালগ্নে ভারত দলে খেলার জন্যে কয়েকজন উইকেট-রক্ষকদের অন্যতম ছিলেন। একমাত্র টেস্টে কোনরূপ ভুল করেননি। তাসত্ত্বেও দল থেকে চীরতরে বাদ পড়েন। দূর্ভাগ্যজনকভাবে উইকেট-রক্ষণের বিষয়ে মাধব মন্ত্রী, ইব্রাহিম মাকা ও নানা জোশী’র সাথে তাঁকে জোড়ালো প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে হয়েছিল। পাশাপাশি প্রবীর সেনের আবির্ভাবের ফলে তাঁকে আর কোন খেলায় অংশগ্রহণের জন্যে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি।
ভারতের ঘরোয়া আসরের ক্রিকেটে বেশ কয়েকটি দলের পক্ষে খেলেছেন। রঞ্জী ট্রফিতে মাত্র ১৫ খেলায় অংশ নিলেও নর্দার্ন ইন্ডিয়া, ইউনাইটেড প্রভিন্সেস, সাউদার্ন পাঞ্জাব, বিহার ও ইস্টার্ন পাঞ্জাব – এ পাঁচ দলের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। স্নাতকধারী ছিলেন। বার্মা শেল ইন্দো-নিপ্পন ব্যাটারিজে চাকুরী করতেন। ২২ নভেম্বর, ১৯৮৯ তারিখে তামিলনাড়ুর মাদ্রাজে ৬১ বছর ৩১৯ দিন বয়সে তাঁর জীবনাবসান ঘটে।
