|

ভিক্টর ট্রাম্পার

২ নভেম্বর, ১৮৭৭ তারিখে নিউ সাউথ ওয়েলসের ডার্লিংহার্স্ট এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ছিলেন। মূলতঃ ব্যাটসম্যান হিসেবে দলে ভূমিকা রেখেছিলেন। ডানহাতে ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি ডানহাতে মিডিয়াম বোলিংয়ে পারদর্শী ছিলেন। অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছিলেন।

চার্লস টমাস ট্রাম্পার ও লুই দম্পতির সন্তান ছিলেন। ১৮৯৩ সালে জুনিয়র পাবলিক পরীক্ষায় কৃতকার্য্য না হবার পূর্ব পর্যন্ত ক্রাউন স্ট্রিট সুপারিয়র পাবলিক স্কুলে অধ্যয়ন করেছেন। ট্রেজারিতে কনিষ্ঠ কেরাণী হিসেবে যোগ দেন। ১৯০৪ সালে প্রোবেট এন্ড ইন্টেস্টেট এস্টেটস অফিসে কেরাণী হিসেবে যোগদানের ফলে সরকারী চাকুরী থেকে পদত্যাগ করেন।

১৮৯৪-৯৫ মৌসুম থেকে ১৯১৩-১৪ মৌসুম পর্যন্ত সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন অতিবাহিত করেছেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটে নিউ সাউথ ওয়েলসের প্রতিনিধিত্ব করেছেন।

১৮৯৯ থেকে ১৯১২ সাল পর্যন্ত সময়কালে অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে সর্বমোট ৪৮ টেস্টে অংশ নিয়েছিলেন। ১৮৯৯ সালের অ্যাশেজ সিরিজ খেলতে ইংল্যান্ড গমন করেন। পাঁচ-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। ফ্রাঙ্ক লেভারের সাথে তাঁর একযোগে টেস্ট অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। ১ জুন, ১৮৯৯ তারিখে নটিংহামে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তাঁর টেস্ট অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। লর্ডসে অনুষ্ঠিত ঐ টেস্টে ১৩৫ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেন। তৃতীয় দিন বিকেলেই তাঁর এ শতকের কল্যাণে দল দশ উইকেটের ব্যবধানে জয়লাভ করে। ট্রেন্ট ব্রিজে সিরিজের প্রথম টেস্ট ড্র হবার পর পরবর্তী তিন টেস্টও ড্র হলে এ জয়ের ফলে সিরিজেও বিজয়ী হয়। দারুণ শতরানের সুবাদে লর্ডস অনার্স বোর্ডে তাঁর নাম অন্তর্ভুক্ত হয়।

১৮৯৯ সালে জো ডার্লিংয়ের নেতৃত্বাধীন অজি দলের সদস্যরূপে ইংল্যান্ড সফরে যান। ১ জুন, ১৮৯৯ তারিখে নটিংহামে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। খেলায় তিনি উভয় ইনিংসে ৩ রান করে সংগ্রহ করেছিলেন। খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ালে পাঁচ-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজটি অমিমাংসিত অবস্থায় অগ্রসর হতে থাকে।

১৯০২ সালে জো ডার্লিংয়ের নেতৃত্বাধীন অজি দলের সদস্যরূপে ইংল্যান্ড গমন করেন। ২৪ জুলাই, ১৯০২ তারিখে ম্যানচেস্টারের ওল্ড ট্রাফোর্ডে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের চতুর্থ টেস্টে অংশ নেন। মধ্যাহ্নভোজনের পূর্বেই দূর্দান্ত শতক হাঁকান। খ্যাতনামা ঐ টেস্টে তাঁর দল অজিদের কাছে নাটকীয়ভাবে মাত্র ৩ রানে পরাজয়বরণ করলে স্বাগতিকরা পাঁচ-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে ২-০ ব্যবধানে পিছিয়ে পড়ে। এরফলে, সফরকারীরা অ্যাশেজ করায়ত্ত্ব করে। খেলায় তিনি ১০৪ ও ৪ রান সংগ্রহ করেছিলেন। এছাড়াও, ০/৬ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান।

১৯০২-০৩ মৌসুমে প্রথমবারের মতো দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে টেস্ট খেলেন। ঐ মৌসুমে জো ডার্লিংয়ের নেতৃত্বাধীন অজি দলের সদস্যরূপে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে যান। ১১ অক্টোবর, ১৯০২ তারিখে জোহানেসবার্গে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। খেলায় তিনি ৬৩ ও ৩৭ রান সংগ্রহ করেছিলেন। পাশাপাশি, বল হাতে নিয়ে ২/৬২ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ালে তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজটি অমিমাংসিত অবস্থায় অগ্রসর হতে থাকে।

এরপর, ১৮ অক্টোবর, ১৯০২ তারিখে জোহানেসবার্গে অনুষ্ঠিত সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে অংশ নেন। ব্যক্তিগত সফলতার সন্ধান পান। দক্ষিণ আফ্রিকার প্রথম ইনিংসে এডব্লিউ নোর্সকে বিদেয় করে ব্যক্তিগত সেরা বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। তাঁর পূর্বেকার সেরা ছিল ২/৩৫। খেলায় তিনি ৩/৬০ ও ০/২৭ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। এছাড়াও, ১৮ ও ১৩ রান সংগ্রহ করেছিলেন। ১৫৯ রানে পরাজিত হলে স্বাগতিকরা তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে ১-০ ব্যবধানে পিছিয়ে পড়ে।

১৯১১-১২ মৌসুমে নিজ দেশে জনি ডগলাসের নেতৃত্বাধীন এমসিসি দলের মুখোমুখি হন। ২৩ ফেব্রুয়ারি, ১৯১২ তারিখে সিডনিতে অনুষ্ঠিত সফররত ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের পঞ্চম ও চূড়ান্ত টেস্টে অংশ নেন। খেলায় তিনি ৫ ও ৫০ রান সংগ্রহ করে উভয় ইনিংসে সিডনি বার্নসের শিকারে পরিণত হন। স্বাগতিকরা ৭০ রানে পরাজিত হলে ৪-১ ব্যবধানে সিরিজ খোঁয়ায়। পরবর্তীতে, এটিই তাঁর সর্বশেষ টেস্টে পরিণত হয়।

এছাড়াও, ১৯১৩-১৪ মৌসুমে আর্থার সিমসের নেতৃত্বাধীন অস্ট্রেলীয় একাদশের সদস্যরূপে নিউজিল্যান্ড গমন করেছিলেন। সন্দেহাতীতভাবে যে-কোন ধরনের মাঠে সেরা অস্ট্রেলীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে পরিচিতি পেয়েছেন। দ্রুততার সাথে রান সংগ্রহে সক্ষম ছিলেন।

ব্যক্তিগত জীবনে বিবাহিত ছিলেন। জে. জে. কেলি’র শ্যালিকা সারাহ অ্যান ব্রিগসের সাথে ৭ জুন, ১৯০৪ তারিখে মেলবোর্নের সেন্ট প্যাট্রিক্স ক্যাথলিক ক্যাথেড্রালে পরিণয়সূত্রে আবদ্ধ হন। এ দম্পতির এক কন্যা ও ভি ট্রাম্পার নামীয় এক পুত্র সন্তান রয়েছে। ১৯১৪ সালের শেষদিকে কিডনি রোগে আক্রান্ত হন। প্রথম আনজাক দিবসে শয্যাশায়ী হয়ে পড়েন। ২১ জুন তাঁকে সেন্ট ভিনসেন্ট হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। ২৮ জুন, ১৯১৫ তারিখে নিউ সাউথ ওয়েলসের ডার্লিংহার্স্ট এলাকায় মাত্র ৩৭ বছর ২৩৮ দিন বয়সে তাঁর দেহাবসান ঘটে। ওয়াভার্লি সিমেট্রির ওয়াভার্লি অংশে তাঁকে সমাহিত করা হয়।

Similar Posts

  • |

    চার্লস হাইম

    ২৪ অক্টোবর, ১৮৬৯ তারিখে বারমুডায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ছিলেন। মূলতঃ বোলার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ডানহাতে কার্যকর মিডিয়াম বোলিংয়ের পাশাপাশি ডানহাতে নিচেরসারিতে বিশ্বস্ত ব্যাটসম্যানের পরিচয় দিতেন। ১৮৯০-এর দশকে দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর দক্ষিণ আফ্রিকান ক্রিকেটে নাটাল দলের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। ১৮৮৯-৯০ মৌসুম থেকে ১৯০৫-০৬ মৌসুম পর্যন্ত সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন অতিবাহিত…

  • |

    রমন লাম্বা

    ২ জানুয়ারি, ১৯৬০ তারিখে উত্তর প্রদেশের মীরাটে জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ছিলেন। মূলতঃ ব্যাটসম্যান হিসেবে দলে ভূমিকা রেখেছিলেন। ডানহাতে ব্যাটিং করতেন। এছাড়াও, ডানহাতে মিডিয়াম বোলিংয়ে পারদর্শী ছিলেন। ১৯৮০-এর দশকে ভারতের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন। ১৯৭৮-৭৯ মৌসুম থেকে ১৯৯৭-৯৮ মৌসুম পর্যন্ত সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন অতিবাহিত করেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর ভারতীয় ক্রিকেটে দিল্লির প্রতিনিধিত্ব করেছেন। এছাড়াও, আয়ারল্যান্ড…

  • | |

    ভার্নন ফিল্যান্ডার

    ২৪ জুন, ১৯৮৫ তারিখে বেলভিল এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ও কোচ। মূলতঃ অল-রাউন্ডারের দায়িত্ব পালন করতেন। ডানহাতে ফাস্ট-মিডিয়াম বোলিংয়ের পাশাপাশি ডানহাতে নিচেরসারিতে কার্যকর ব্যাটিংয়ে পারঙ্গমতা প্রদর্শন করেছেন। দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে সকল স্তরের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন। ‘প্রো’ কিংবা ‘দ্য সার্জন’ ডাকনামে ভূষিত হয়েছিলেন। দ্রুততম বোলার না হলেও উপযোগী পরিবেশে সর্বাপেক্ষা বিপজ্জ্বনক বোলারে পরিণত হতেন। বলে নিখুঁতভাব…

  • | |

    তিলকরত্নে দিলশান

    ১৪ অক্টোবর, ১৯৭৬ তারিখে কালুতারায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার। মূলতঃ অল-রাউন্ডারের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিলেন। ডানহাতে ব্যাটিং করতেন। এছাড়াও, ডানহাতে অফ-ব্রেক বোলিংয়ে পারদর্শী ছিলেন। পাশাপাশি উইকেট-রক্ষণে অগ্রসর হতেন। শ্রীলঙ্কার পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের সকল স্তরে অংশ নিয়েছেন। শ্রীলঙ্কা দলের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেছেন। আক্রমণাত্মক ভঙ্গীমা প্রদর্শন, শক্তিশালী কব্জির গড়ন ও সহজাত সময় নিয়ন্ত্রণে অন্যতম সেরা বিনোদনধর্মী ক্রিকেটারে পরিণত হয়েছিলেন।…

  • |

    জ্যাক হবস

    ১৬ ডিসেম্বর, ১৮৮২ তারিখে কেমব্রিজে জন্মগ্রহণকারী বিখ্যাত ক্রিকেটার ছিলেন। ইংরেজ ক্রিকেটের ইতিহাসে অন্যতম শীর্ষসারির ব্যাটসম্যান ছিলেন। প্রথম পেশাদার ক্রিকেটার হিসেবে ১৯৫৩ সালে নাইট উপাধীতে ভূষিত হয়েছিলেন। প্রায় ত্রিশ বছর পেশাদারী পর্যায়ে ক্রিকেট খেলেছেন। হার্বার্ট সাটক্লিফ ও লেন হাটনের সাথে তাঁকেও বৈশ্বিকভাবে সেরা উদ্বোধনী ব্যাটসম্যানের মর্যাদা দেয়া হয়। ‘দ্য মাস্টার’ নামে পরিচিত ছিলেন। দীর্ঘ খেলোয়াড়ী জীবনে…

  • | | |

    জন আর্নল্ড

    ৩০ নভেম্বর, ১৯০৭ তারিখে অক্সফোর্ডের কাউলি এলাকায় জন্মগ্রহণকারী পেশাদার ক্রিকেটার, আম্পায়ার ও রেফারি ছিলেন। মূলতঃ উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলতেন। ডানহাতে ব্যাটিং করতেন। পাশাপাশি, ডানহাতে স্লো বোলিংয়ে পারদর্শী ছিলেন। ১৯৩০-এর দশকে ইংল্যান্ডের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন। ১৯২৯ থেকে ১৯৫০ সময়কাল পর্যন্ত প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন অতিবাহিত করেছিলেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে হ্যাম্পশায়ারের প্রতিনিধিত্ব করেছেন।…