৯ জুলাই, ১৯৬৯ তারিখে অন্ধ্রপ্রদেশের আলামুরু এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার, রেফারি ও প্রশাসক। মূলতঃ বোলার হিসেবে দলে ভূমিকা রেখেছিলেন। স্লো লেফট-আর্ম অর্থোডক্স বোলিং করতেন। এছাড়াও, ডানহাতে নিচেরসারিতে ব্যাটিংয়ে নামতেন। ভারতের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন।
বামহাতি স্পিনার ছিলেন। ‘মাসেলস’ ডাকনামে ভূষিত হয়েছিলেন। মনিন্দার সিংয়ের যোগ্য পূর্বসূরী ছিলেন। ১৯৮৫-৮৬ মৌসুম থেকে ২০০৪-০৫ মৌসুম পর্যন্ত সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান রাখেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর ভারতীয় ক্রিকেটে হায়দ্রাবাদের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। ১৯৮৯-৯০ মৌসুমে ঘরোয়া আসরে দারুণ খেলে জাতীয় দলের সদস্যরূপে ঠাঁই পান। ঐ মৌসুমে ৩২ উইকেট দখল করেছিলেন।
১৯৯০ থেকে ২০০১ সময়কালে ভারতের পক্ষে সর্বমোট ২৮ টেস্ট ও ৫৩টি ওডিআইয়ে অংশ নিয়েছেন। ১৯৮৯-৯০ মৌসুমে মোহাম্মদ আজহারউদ্দীনের নেতৃত্বাধীন ভারতীয় দলের সাথে নিউজিল্যান্ড গমন করেন। ২ ফেব্রুয়ারি, ১৯৯০ তারিখে ক্রাইস্টচার্চে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম টেস্টে অংশ নেন। অতুল বসনের সাথে তাঁর একযোগে টেস্ট অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। বল হাতে ৩/৮৬ পান। এরপর, প্রথম ইনিংসে নাইট ওয়াচম্যান হিসেবে ব্যাট হাতে মাঠে নামেন। কিউই বোলারদেরকে দুই ঘণ্টার অধিক সময় হতাশাচ্ছন্ন করে রাখেন। তবে, অপরদিকে ভারত দল ছয় উইকেট খুঁইয়ে ফেলে। দলের সংগৃহীত ১৬৪ রানের মধ্যে তিনি তৃতীয় সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক ছিলেন। জন রাইটের অনবদ্য ব্যাটিংয়ের সুবাদে স্বাগতিক দল ১০ উইকেটে জয়ে পেয়ে তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে যায়। একই সফরের ১ মার্চ, ১৯৯০ তারিখে ডুনেডিনে অনুষ্ঠিত ওডিআইয়ে প্রথমবারের মতো অংশ নেন।
এছাড়াও, ১৯৯০ সালে ভারত দলের সাথে ইংল্যান্ড গমনের সুযোগ পান। কিন্তু, গ্লুচেস্টারশায়ারের বিপক্ষে প্রস্তুতিমূলক খেলায় কোর্টনি ওয়ালশের বল মোকাবেলাকালীন বাম হাতের আঙ্গুলে আঘাত পেলে অনেকটা অসময়েই তাঁর এ সফর শেষ হয়ে যায়।
১৯৯০-৯১ মৌসুমে নিজ দেশে অর্জুনা রানাতুঙ্গা’র নেতৃত্বাধীন শ্রীলঙ্কান দলের মুখোমুখি হন। ২৩ নভেম্বর, ১৯৯০ তারিখে চণ্ডীগড়ে অনুষ্ঠিত নিজস্ব তৃতীয় টেস্ট সফররত শ্রীলঙ্কা দলের বিপক্ষে খেলেন। সফরকারী শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজের একমাত্র টেস্টে অংশ নেন। স্পিন-বান্ধব পিচে বেশ সফল হন। ৬/১২ লাভ করেন তিনি। এক পর্যায়ে মাত্র ২ রান খরচায় ৫ উইকেট পেয়েছিলেন। এরফলে, শ্রীলঙ্কা দল মাত্র ৮২ রানে গুটিয়ে যায়। এছাড়াও, দ্বিতীয় ইনিংসে ২/২৫ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। ভারত দল ইনিংস ও ৮ রানে জয়লাভ করে এবং তিনি ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার লাভ করেন। এ টেস্টে তাঁকে শেষ মুহূর্তে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল ও তিনি বিস্মিত হয়েছিলেন।
১৯৯২ ও ১৯৯৬ সালের বিশ্বকাপ ক্রিকেট প্রতিযোগিতায় ভারত দলের প্রতিনিধিত্ব করার সুযোগ পেয়েছিলেন। পূর্ববর্তী বছরগুলোয় বেশ ভালোমানের ক্রীড়াশৈলী প্রদর্শন করলেও কখনো তাঁকে জাতীয় দলে নিয়মিতভাবে খেলতে দেখা যায়নি। নিজ দেশে অত্যন্ত কার্যকর বোলার হিসেবে পরিচিত করে তুললেও বিদেশের মাটিতে এর অভাব পরিলক্ষিত হয়েছেন। ভারতে ১৬ টেস্টে অংশ নিয়ে ৭১ উইকেট দখল করেন। এর বিপরীতে বিদেশের মাটিতে ১২ টেস্ট থেকে মাত্র ২২ উইকেট দখল করতে সমর্থ হয়েছিলেন।
১৯৯৪ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ব্যক্তিগত সেরা টেস্ট সিরিজে অংশ নিয়েছিলেন। তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজ থেকে ২০ উইকেট পেয়েছিলেন। তন্মধ্যে, দুইবার পাঁচ-উইকেটের সন্ধান পান। কিন্তু, এর পরপরই তাঁর খেলার গতিধারা নিচেরদিকে চলে যেতে থাকে। পরবর্তী ৭ টেস্ট থেকে মাত্র ১২ উইকেট পেয়েছিলেন।
২০০০-০১ মৌসুমে নিজ দেশে স্টিভ ওয়াহ’র নেতৃত্বাধীন অজি দলের মুখোমুখি হন। ১১ মার্চ, ২০০১ তারিখে কলকাতায় অনুষ্ঠিত প্রসিদ্ধ টেস্টে সফরকারী অস্ট্রেলিয়া দলের বিপক্ষে সর্বশেষ অংশ নেন। ০/৫৮ ও ১/৫৮ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। তবে, ভিভিএস লক্ষ্মণের অবিস্মরণীয় ক্রীড়াশৈলীর কল্যাণে স্বাগতিকরা ১৭১ রানে জয় পায় ও তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে ১-১ ব্যবধানে সমতায় আসে।
এছাড়াও, ওডিআই খেলোয়াড়ী জীবনে ৬৩ উইকেট দখল করেছিলেন। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে প্রত্যাখ্যাত হলেও ঘরোয়া আসরের ক্রিকেটে দারুণ খেলতে থাকেন। ১৯৯৯-২০০০ মৌসুমের রঞ্জী ট্রফিতে স্বর্ণালী সময় অতিবাহিত করেন। ৫২ উইকেট নিয়ে হায়দ্রাবাদকে প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত খেলায় নিয়ে যান। ২০০৪ সালে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট থেকে অবসর গ্রহণ করেন।
বিশ্ব টি২০ প্রতিযোগিতার উদ্বোধনী আসরের শিরোপা বিজয়ী ভারত দলের নির্বাচকমণ্ডলীর সদস্য থেকে দক্ষিণাঞ্চলের দায়িত্বে ছিলেন। এছাড়াও, হায়দ্রাবাদ ক্রিকেট সংস্থার সহঃসভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। নেপাল ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের ন্যায় দেশগুলোর স্পিন পরামর্শক হিসেবে কাজ করেছেন।
