|

ট্রাভিস হেড

২৯ ডিসেম্বর, ১৯৯৩ তারিখে সাউথ অস্ট্রেলিয়ার অ্যাডিলেডে জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার। মূলতঃ মাঝারিসারির ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলে থাকেন। বামহাতে ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি ডানহাতে অফ-ব্রেক বোলিংয়ে পারদর্শী। এছাড়াও, মাঝে-মধ্যে উইকেট-রক্ষকের দায়িত্ব পালন করে থাকেন। অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে সকল স্তরের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছেন।

৫ ফুট ১০ ইঞ্চি (১.৭৯ মিটার) উচ্চতাসম্পন্ন। চমৎকার নেতৃত্বের গুণাবলীর অধিকারী। পরিচ্ছন্ন মারকুটে ব্যাটসম্যান হিসেবে তাঁর পরিচিতি রয়েছে। স্থানীয় টি ট্রি গালি ক্লাবে খেলেছেন। ২০১২-১৩ মৌসুমে অনূর্ধ্ব-১৯ ন্যাশনাল চ্যাম্পিয়নশীপে সাউথ অস্ট্রেলিয়া দলকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। এছাড়াও, সাউথ অস্ট্রেলিয়ার অনূর্ধ্ব-১৭ দলের পক্ষে খেলেছেন। ২০১২ সালে আইসিসি অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ ক্রিকেট প্রতিযোগিতায় অস্ট্রেলিয়া দলের সদস্য ছিলেন।

২০১১-১২ মৌসুম থেকে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান রাখছেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটে সাউথ অস্ট্রেলিয়া এবং ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে ইয়র্কশায়ারের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। এছাড়াও, অ্যাডিলেড স্ট্রাইকার্স, দিল্লি ডেয়ারডেভিলস ও রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরের পক্ষে খেলেছেন। ১৮ বছর বয়সে ২ ফেব্রুয়ারি, ২০১২ তারিখে অ্যাডিলেডে অনুষ্ঠিত ভিক্টোরিয়া বনাম সাউথ অস্ট্রেলিয়ার মধ্যকার খেলায় অংশ নেয়ার মাধ্যমে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট জীবনের সূত্রপাত ঘটান। এরপর থেকে দলের নিয়মিত সদস্যের মর্যাদা লাভ করেছেন।

ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সালে সাউথ অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক হিসেবে তাঁকে মনোনীত করা হয়। এরফলে, ২১ বছর বয়সে সর্বকনিষ্ঠ ক্রিকেটার হিসেবে রাজ্য দলকে নেতৃত্ব দেয়ার কৃতিত্বের অধিকারী হন। বিগ ব্যাশ লীগে অ্যাডিলেড স্ট্রাইকার্স দলে খেলেছেন ও প্রধান চালিকাশক্তিতে পরিণত হন। এছাড়াও, ইন্ডিয়ান টি২০ লীগে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরের সাথে খেললেও তেমন খেলার সুযোগ পাননি।

২০১৬ সাল থেকে অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে টেস্ট, ওডিআই ও টি২০আইয়ে অংশগ্রহণ করছেন। ২২ বছর বয়সে ভারতের বিপক্ষে টি২০আই সিরিজের মাধ্যমে প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলতে আহুত হন। ২৬ জানুয়ারি, ২০১৬ তারিখে অ্যাডিলেড ওভালে টি২০আই খেলায় অংশ নেয়ার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট জগতে পদার্পণ ঘটান।

১৩ জুন, ২০১৬ তারিখে প্রথমবারের মতো অস্ট্রেলিয়ার সদস্যরূপে ওডিআই খেলেন। বাসেতেরেতে অনুষ্ঠিত ওডিআইয়ে স্বাগতিক ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে খেলায় অংশ নেয়ার পূর্বে ড্যামিয়েন মার্টিন তাঁকে ওডিআই ক্যাপ প্রদান করেন।

২০১৮-১৯ মৌসুমে টিম পেইনের নেতৃত্বে অজি দলের সাথে সংযুক্ত আরব আমিরাত গমন করেন। ৭ অক্টোবর, ২০১৮ তারিখে দুবাইয়ে অপর সফরকারী পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম টেস্টে অংশ নেন। অ্যারন ফিঞ্চ ও মারনাস লাবুশেনের সাথে তাঁর একযোগে টেস্ট অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। ০ ও ৭২ রান তুলে অভিষেক পর্বকে স্মরণীয় করে রাখেন। তবে, উসমান খাজা’র অসামান্য ব্যাটিংশৈলীর কল্যাণে খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ায় ও দুই-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজটি অমিমাংসিত অবস্থায় অগ্রসর হতে থাকে।

এরপর, মানুকা ওভালে নিজস্ব প্রথম শতরানের সন্ধান পান। ১৬১ রানের মনোরম শতক হাঁকিয়ে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজ বিজয়ে ভূমিকা রাখেন।

২৩ জুন, ২০২২ তারিখে ট্রাভিস হেড আঘাতের কবলে পড়লে গ্লেন ম্যাক্সওয়েলকে অস্ট্রেলিয়ার টেস্ট দলে যুক্ত করা হয়। ২০২৩-২৪ মৌসুমে প্যাট কামিন্সের নেতৃত্বাধীন অজি দলের সদস্যরূপে নিউজিল্যান্ড সফরে যান। ৮ মার্চ, ২০২৪ তারিখে ক্রাইস্টচার্চে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে অংশ নেন। ব্যাট হাতে নিয়ে ২১ ও ১৮ রান সংগ্রহ করেছিলেন। তবে, অ্যালেক্স কেরি’র অসাধারণ অল-রাউন্ড ক্রীড়াশৈলীর কল্যাণে স্বাগতিকরা ৩ উইকেটে জয় পেলে ২-০ ব্যবধানে সিরিজ খোঁয়ায়।

২০২৪-২৫ মৌসুমে নিজ দেশে রোহিত শর্মা’র নেতৃত্বাধীন ভারতীয় দলের মুখোমুখি হন। ১৪ ডিসেম্বর, ২০২৪ তারিখে ব্রিসবেনে অনুষ্ঠিত সফররত ভারতের বিপক্ষে সিরিজের তৃতীয় টেস্টে অংশ নেন। সুন্দর ক্রীড়া নৈপুণ্যের স্বাক্ষর রাখেন। খেলায় তিনি ১৫২ ও ১৭ রান সংগ্রহ করেছিলেন। এছাড়াও, বল হাতে নিয়ে ১/৩ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। তাঁর অসাধারণ ব্যাটিং দৃঢ়তায় খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ালে পাঁচ-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজটি ১-১ ব্যবধানে অগ্রসর হতে থাকে। খেলায় তিনি ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার লাভ করেন।

একই মৌসুমে স্টিভেন স্মিথের নেতৃত্বাধীন অজি দলের সদস্যরূপে শ্রীলঙ্কা গমন করেন। ৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ তারিখে গলেতে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় ও চূড়ান্ত টেস্টে অংশ নেন। খেলায় তিনি ২১ ও ২০ রান সংগ্রহসহ একটি ক্যাচ তালুবন্দী করেছিলেন। এছাড়াও, বল হাতে নিয়ে ১/৩১ ও ০/৩৩ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। অ্যালেক্স কেরি’র অসাধারণ শতকের কল্যাণে সফরকারীরা ৯ উইকেটে জয় পেলে ২-০ ব্যবধানে সিরিজে বিজয়ী হয়।

২০২৫ সালে প্যাট কামিন্সের নেতৃত্বাধীন অজি দলের সদস্যরূপে ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জ সফরে যান। ২৫ জুন, ২০২৫ তারিখে ব্রিজটাউনে অনুষ্ঠিত সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে স্বাগতিক ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে অংশ নেন। খেলায় তিনি ৫৯ ও ৬১ রান সংগ্রহ করেন। তাঁর অসাধারণ ব্যাটিংশৈলীর কল্যাণে সফরকারীরা ১৫৯ রানে জয় পেলে তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে এগিয়ে যায়। খেলায় তিনি ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার লাভ করেন।

২০২৫-২৬ মৌসুমে নিজ দেশে বেন স্টোকসের নেতৃত্বাধীন ইংরেজ দলের মুখোমুখি হন। ২১ নভেম্বর, ২০২৫ তারিখে পার্থে অনুষ্ঠিত সফররত ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। খেলায় তিনি ২১ ও ১২৩ রান সংগ্রহ করেছিলেন। তবে, মিচেল স্টার্কের অসাধারণ বোলিংশৈলীর কল্যাণে স্বাগতিকরা ৮ উইকেটে জয় পেলে পাঁচ-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে এগিয়ে যায়।

Similar Posts

  • |

    রবিচন্দ্রন অশ্বিন

    ১৭ সেপ্টেম্বর, ১৯৮৬ তারিখে মাদ্রাজের পশ্চিম মাম্বালাম এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার। দলে মূলতঃ অল-রাউন্ডারের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন। ডানহাতে অফ-ব্রেক বোলিং করেন। এছাড়াও, ডানহাতে নিচেরসারিতে ব্যাটিংয়ে নামেন। ভারতের পক্ষে সকল স্তরের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিচ্ছেন। ২০০৬-০৭ মৌসুম থেকে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান রাখছেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর ভারতীয় ক্রিকেটে দক্ষিণাঞ্চল ও তামিলনাড়ু এবং ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে ওরচেস্টারশায়ার ও…

  • |

    ব্রাইস ম্যাকগেইন

    ২৫ মার্চ, ১৯৭২ তারিখে ভিক্টোরিয়ার মর্নিংটন এলাকায় জন্মগ্রহণকারী পেশাদার ক্রিকেটার। মূলতঃ বোলার হিসেবে দলে ভূমিকা রেখেছেন। লেগ-ব্রেক গুগলি বোলিংয়ের পাশাপাশি নিচেরসারিতে ডানহাতে কার্যকর ব্যাটিং কর্মে অগ্রসর হতেন। ২০০০-এর দশকে অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন। ১.৮২ মিটার উচ্চতার অধিকারী। ১৯৯৩-৯৪ মৌসুম থেকে ২০১৬-১৭ মৌসুম পর্যন্ত সময়কালে ক্লাব পর্যায়ের ক্রিকেটে ফ্রাঙ্কস্টন পেনিনসুলা ও প্রাহরানের পক্ষে ২৮৪…

  • | |

    আজহার খান

    ৭ সেপ্টেম্বর, ১৯৫৫ তারিখে পাঞ্জাবের গুজরানওয়ালায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ও রেফারি। মূলতঃ অল-রাউন্ডারের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিলেন। ডানহাতে ব্যাটিং করতেন। এছাড়াও, ডানহাতে কার্যকর অফ-ব্রেক বোলিংয়ে পারদর্শী ছিলেন। ১৯৮০-এর দশকে পাকিস্তানের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছিলেন। দক্ষ অফ-স্পিন অল-রাউন্ডার ছিলেন আজহার খান। তবে, দীর্ঘ ২২ বছরের প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবনে দূর্ভাগ্যজনকভাবে একটিমাত্র টেস্টে খেলার সুযোগ পেয়েছিলেন। ১৯৭১-৭২ মৌসুম থেকে…

  • |

    জিম ক্রিস্টি

    ১২ ডিসেম্বর, ১৯০৪ তারিখে ট্রান্সভালের প্রিটোরিয়ায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ছিলেন। মূলতঃ উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান হিসেবে দলে ভূমিকা রেখে গেছেন। ডানহাতে ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি ডানহাতে মিডিয়াম বোলিং করতেন। দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন। বেশ দীর্ঘকায় ও শক্ত-মজবুত গড়নের অধিকারী ছিলেন। জেপ হাই স্কুলে অধ্যয়ন করতেন। ইনিংস উদ্বোধনে নামতেন ও ফাস্ট বোলিংয়ের বিপক্ষে রুখে দাঁড়াতেন। সময়ের সাথে সাথে…

  • | |

    অ্যান্ড্রু হাডসন

    ১৭ মার্চ, ১৯৬৫ তারিখে নাটালের এশোই এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ও প্রশাসক। মূলতঃ উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলেছিলেন। ডানহাতে ব্যাটিং করতেন। এছাড়াও, ডানহাতে মিডিয়াম বোলিংয়ে পারদর্শী ছিলেন। ১৯৯০-এর দশকে দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছিলেন। কিয়ার্সনি কলেজে অধ্যয়ন করতেন। সেখানে অবস্থানকালে বিশ্বমানসম্পন্ন সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত ক্রীড়ায় অংশগ্রহণ সুযোগ থেকে মোটেই বঞ্চিত করেননি। প্রচণ্ড চাপ সামলে নেয়ার ক্ষমতা…

  • | |

    ল্যান্স ক্লুজনার

    ৪ সেপ্টেম্বর, ১৯৭১ তারিখে নাটালের ডারবানে জন্মগ্রহণকারী বিখ্যাত ক্রিকেটার ও কোচ। মূলতঃ অল-রাউন্ডার হিসেবে দলে ভূমিকা পালন করেছিলেন। বামহাতে ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি ডানহাতে ফাস্ট-মিডিয়াম বোলিংয়ে পারদর্শীতা দেখিয়েছেন। দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন। জুলু ও খোসা ভাষায় সহজাত দক্ষতা থাকায় তিনি ‘জুলু’ ডাকনামে ভূষিত হন। ১৯৯৩-৯৪ মৌসুম থেকে ২০০৮-০৯ মৌসুম পর্যন্ত সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন…