৬ জুলাই, ১৯৩৮ তারিখে ওয়েলসের আপল্যান্ডস এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ও ধারাভাষ্যকার। মূলতঃ ব্যাটিংয়ে পারদর্শী ছিলেন। ডানহাতে ব্যাটিং কর্মে অগ্রসর হবার পাশাপাশি লেগ-ব্রেক বোলিংয়ে দক্ষ ছিলেন। ইংল্যান্ডের সর্বশেষ অধিনায়ক হিসেবে অভিষেক খেলায় নেতৃত্ব দেয়ার কৃতিত্ব রয়েছে তাঁর। অপরিসীম আনন্দে উদ্বেলিত থাকলেও ক্রিকেটার হিসেবে সীমিত সাফল্য পেয়েছেন।
১৯৫৫ থেকে ১৯৭৪ সাল পর্যন্ত প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে সরব ছিলেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে গ্ল্যামারগনের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। এছাড়াও, কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে খেলেছেন তিনি। ১৯৬৬ সালের গ্রীষ্মে দুই সহস্রাধিক রান তুলে শীর্ষস্থানে ছিলেন। তবে, ইংল্যান্ড দলের মাঝারিসারিতে খেলোয়াড়দের পূর্ণাঙ্গতায় আমন্ত্রণ বার্তা পাননি। গ্ল্যামারগন দলের নেতৃত্বে থেকে আরও দৃষ্টিনন্দন ক্রীড়াশৈলী প্রদর্শনে নিজেকে কার্যকর কাউন্টি ক্রিকেটারের পরিণত করেন। কেবলমাত্র ভারত ও পাকিস্তান সফরে রে ইলিংওয়ার্থ স্বেচ্ছায় নিজেকে প্রত্যাহার করে নিলে অধিনায়ক হিসেবে তাঁকে ইংরেজ দলে রাখা হয়।
গ্ল্যামারগনে থাকাকালীন স্পিন উপযোগী পিচে অনুশীলন করতেন। পাশাপাশি, ১৯৬৭-৬৮ মৌসুমে রিচি বেনো’র নেতৃত্বাধীন কমনওয়েলথ দলে থেকে পাকিস্তান গমন করেন। এ সফরে ৬৮.১৪ গড়ে ৪৭৭ রান সংগ্রহ করেছিলেন।
১৯৭২ থেকে ১৯৭৩ সময়কালে ইংল্যান্ডের পক্ষে নয়টিমাত্র টেস্টে অংশগ্রহণের সুযোগ পেয়েছিলেন। ১৯৭২-৭৩ মৌসুমে এমসিসি দলের সাথে ভারত গমন করেন। ২০ ডিসেম্বর, ১৯৭২ তারিখে দিল্লিতে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক ভারতের বিপক্ষে তাঁর টেস্ট অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। বড়দিনের পূর্বে স্মরণীয় অভিষেক ঘটে তাঁর। দ্বিতীয় ইনিংসে মাঠে নামাকালীন দলের সঙ্কটময় পরিবেশ বিরাজ করে। চতুর্থ ইনিংসে স্বাগতিক ভারতের বিপক্ষে ২০৭ রানের জয়ের লক্ষ্যমাত্রায় সফরকারীদের সংগ্রহ ৭৬/৩ ছিল। বিষেন সিং বেদী ও ভাগবত চন্দ্রশেখরের বল মোকাবেলায় নিপুণতার স্বাক্ষর রেখে চলেন। তন্মধ্যে, বিষেন সিং বেদী সবেমাত্র ১০০তম টেস্ট উইকেট শিকার করেন ও ভাগবত চন্দ্রশেখর প্রথম ইনিংসে আট উইকেট পেয়েছিলেন। পুরো পরিস্থিতি সামাল দিতে তিনি অনবদ্য ভূমিকা রাখেন। সর্বোপরি তিনি দলের নেতৃত্বে ছিলেন।
এরপর, ৩০ ডিসেম্বর, ১৯৭২ তারিখে কলকাতায় অনুষ্ঠিত সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে অংশ নেন। অধিনায়কের দায়িত্বে থেকে খেলায় তিনি ব্যাট হাতে নিয়ে ৪ ও ৩ রান সংগ্রহ করে উভয় ইনিংসে বিষেন বেদী’র শিকারে পরিণত হয়েছিলেন। স্বাগতিকরা ২৮ রানে জয় পেয়ে পাঁচ-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে সমতায় চলে আসে।
ঐ টেস্টে অংশ নেয়ার পূর্বে তাঁর খেলায় অংশগ্রহণ অনিশ্চিত ছিল। ইন্দোরে প্রস্তুতিমূলক খেলায় মাংসপেশীতে টান পড়ে। ফিজিও বার্নার্ড থমাসের কল্যাণে নিজেকে খেলার উপযোগী করে তুললেও সহঃঅধিনায়ক মাইক ডেনিসকে প্রস্তুত থাকার কথা বলা হয়েছিল। প্রথম ইনিংসের দ্বিতীয় বলে শূন্য রানে বিদেয় নেন। ভাগবত চন্দ্রশেখরের গুগলি বলকে সুইপ করার চেষ্টাকালে অফ-স্ট্যাম্পে আঘাত হানে। দ্বিতীয় ইনিংসে ৭০ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলে দলকে জয় এনে দেন। স্মর্তব্য যে, ১৯৫১ সালের পর ভারতের মাটিতে এটিই ইংল্যান্ডের প্রথম জয় ছিল।
১৯৭৩ সালে নিজ দেশে বেভান কংডনের নেতৃত্বাধীন কিউই দলের মুখোমুখি হন। ৭ জুন, ১৯৭৩ তারিখে নটিংহামে অনুষ্ঠিত সফররত নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। খেলায় তিনি উভয় ইনিংসে ২ রান করে উভয় ক্ষেত্রে ব্রুস টেলরের শিকারে পরিণত হন। স্বাগতিকরা ৩৮ রানে জয় পেলে তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে এগিয়ে যায়। পরবর্তীতে, এটিই তাঁর সর্বশেষ টেস্টে পরিণত হয়।
২০০৪ সালে ক্রিকেট, সম্প্রচার ও ওয়েলসে ক্রিকেট সম্প্রসারণে অসামান্য ভূমিকার স্বীকৃতিস্বরূপ সিবিই উপাধিতে ভূষিত হন।
