২ অক্টোবর, ১৯৬৫ তারিখে সাউথ অস্ট্রেলিয়ার অ্যাডিলেডে জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার, কোচ ও ধারাভাষ্যকার। মূলতঃ শীর্ষসারির ব্যাটসম্যান হিসেবে দলে ভূমিকা রেখে গেছেন। ডানহাতে ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি ডানহাতে মিডিয়াম বোলিংয়ে পারদর্শীতা দেখিয়েছেন।

৬ ফুট ৬ ইঞ্চি (১.৯৮ মিটার) উচ্চতার অধিকারী টম মুডি ‘মুনশাইন’ ডাকনামে ভূষিত হয়েছিলেন। স্বল্প দূরত্ব দৌড়ে এসে সাধারণমানের মিডিয়াম পেস বোলিং করেন। বলে সহজাত সুইং আনয়ণ করতে পারেন। এছাড়াও, মাঝারিসারিতে নিচেরদিকে ব্যাটিংয়ে সক্ষমতা দেখিয়েছেন। ক্ষুদে সংস্করণের খেলায় নিজেকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে অল-রাউন্ডার হিসেবে পরিচিতি ঘটিয়েছেন। ১৯৮৫-৮৬ মৌসুম থেকে ২০০০-০১ মৌসুম পর্যন্ত সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান রাখেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটে ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়া এবং ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে ওয়ারউইকশায়ার ও ওরচেস্টারশায়ারের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। ১৯৮৮-৮৯ মৌসুমে শেফিল্ড শীল্ডে সর্বাধিক রান সংগ্রাহক হন। তন্মধ্যে, উভয় ইনিংসে শতক হাঁকিয়ে ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়ার শিরোপা বিজয়ে বিরাট ভূমিকা রাখেন।

১৯৮৭ থেকে ১৯৯৯ সাল পর্যন্ত সময়কালে অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে আটটিমাত্র টেস্ট ও ৭৬টি ওডিআইয়ে অংশ নিয়েছিলেন। ১৯৮৯-৯০ মৌসুমে নিজ দেশে জন রাইটের নেতৃত্বাধীন কিউই দলের মুখোমুখি হন। টেস্ট ক্রিকেটের শুরুটা দারুণ করেছিলেন। ২৪ নভেম্বর, ১৯৮৯ তারিখে পার্থের ওয়াকা গ্রাউন্ডে অনুষ্ঠিত সফররত নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের একমাত্র টেস্টে তাঁর অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। অভিষেকে অর্ধ-শতরানের ইনিংস খেলেন। দলের একমাত্র ইনিংসে ৬১ রান সংগ্রহ করেছিলেন। এছাড়াও, বল হাতে নিয়ে ০/৬ ও ১/২৩ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। অবশ্য, মার্ক গ্রেটব্যাচের অসাধারণ ব্যাটিং দৃঢ়তায় খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ায়।

পরের খেলায় ব্রিসবেনে মনোমুগ্ধকর শতক হাঁকান। একই মৌসুমে নিজ দেশে অর্জুনা রানাতুঙ্গা’র নেতৃত্বাধীন শ্রীলঙ্কান দলের মুখোমুখি হন। ৮ ডিসেম্বর, ১৯৮৯ তারিখে ব্রিসবেনের গাব্বায় সফররত শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। ১০৬ ও ৩০ রান সংগ্রহ করেছিলেন। এছাড়াও, ০/১৫ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করানোসহ একটি ক্যাচ তালুবন্দী করেছিলেন। তবে, অরবিন্দ ডি সিলভা’র অসাধারণ অল-রাউন্ড ক্রীড়াশৈলীর কল্যাণে খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ালে দুই-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজটি অমিমাংসিত অবস্থায় অগ্রসর হতে থাকে।

তবে, ১৯৯২ সালে অ্যালান বর্ডারের নেতৃত্বাধীন অজি দলের অন্যতম সদস্যরূপে শ্রীলঙ্কা সফরে উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান হিসেবে নেমে একেবারেই সুবিধে করতে পারেননি। ৮ সেপ্টেম্বর, ১৯৯২ তারিখে মোরাতুয়ায় অনুষ্ঠিত স্বাগতিক শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজের তৃতীয় ও চূড়ান্ত টেস্টে অংশ নেন। খেলায় তিনি ০ ও ২ রান সংগ্রহ করে উভয় ক্ষেত্রে চম্পকা রামানায়েকে’র শিকারে পরিণত হন। এছাড়াও, একটি ক্যাচ তালুবন্দীসহ ০/৮ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। তবে, দলনায়কের অসাধারণ ব্যাটিং কৃতিত্ব প্রদর্শন সত্ত্বেও খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ালে সফরকারীরা ১-০ ব্যবধানে সিরিজ জয় করে নেয়। পরবর্তীতে, এটিই তাঁর সর্বশেষ টেস্টে পরিণত হয়।

টেস্টগুলো থেকে দুই শতক সহযোগে ৪৬.৪৩ গড়ে ৪৫৬ রান সংগ্রহ করেছিলেন। টেস্টে তেমন সুবিধে করতে না পারলেও ওডিআইয়ে নিজেকে বেশ মেলে ধরেছিলেন। দলে ফিরে অল-ক্রীড়াশৈলী প্রদর্শনে অগ্রসর হন। ১৯৯৯ সালে ইংল্যান্ডে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপ ক্রিকেট প্রতিযোগিতায় দলের শিরোপা বিজয়ে দারুণ ভূমিকা রাখেন। স্টিভ ওয়াহ’র সাথে অস্ট্রেলিয়ার প্রথম দুই বিশ্বকাপের শিরোপা বিজয়ী দলের দুইজন অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটারের অন্যতম ছিলেন। এরপূর্বে তিনি ১৯৮৭ সালের বিশ্বকাপ ক্রিকেট প্রতিযোগিতার শিরোপা বিজয়ে অংশ নেন।

ক্রমাগত আঘাতের কারণে ২০০০-০১ মৌসুমে অবসর গ্রহণ করতে বাধ্য হন। প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট থেকে প্রায় নয় হাজার রান এবং ২৮ গড়ে দুই শতাধিক উইকেট দখল করেছেন।

২০১৯ সালে রোর গুরু মাঠ তাঁকে ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়া দলের সেরা ক্রিকেটার হিসেবে মনোনীত করে।

ক্রিকেট খেলা থেকে অবসর গ্রহণের পর ধারাভাষ্য কর্মের সাথে জড়িয়ে পড়েন। এক পর্যায়ে কোচিং জগতের দিকে ধাবিত হন। রংপুর রাইডার্স ও সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদের প্রধান কোচের দায়িত্ব পালন করেন।

Similar Posts

  • |

    মোহাম্মদ আইয়ুব

    ১৩ সেপ্টেম্বর, ১৯৭৯ তারিখে পাঞ্জাবের নানকানা সাহিব এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার। মূলতঃ মাঝারিসারির ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলতেন। ডানহাতে ব্যাটিং করতেন। এছাড়াও, ডানহাতে অফ-ব্রেক বোলিংয়ে পারদর্শী ছিলেন। ২০১০-এর দশকে পাকিস্তানের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন। ২০০১-০২ মৌসুম থেকে ২০১৩-১৪ মৌসুম পর্যন্ত সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান রাখেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর পাকিস্তানী ক্রিকেটে পাঞ্জাব, শেখুপুরা ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন ও শিয়ালকোটের…

  • |

    যশস্বী যশওয়াল

    ২৮ ডিসেম্বর, ২০০১ তারিখে উত্তরপ্রদেশের ভাদোহির সূর্য্যবন এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার। মূলতঃ উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলছেন। বামহাতে ব্যাটিং করেন। এছাড়াও, লেগ-ব্রেক বোলিংয়ে পারদর্শী। ভারতের পক্ষে সকল স্তরের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর ভারতীয় ক্রিকেটে মুম্বই ও বহিঃভারতের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। এছাড়াও, রাজস্থান রয়্যালস, ভারত ‘এ’ অনূর্ধ্ব-১৯, ভারত ‘বি’, ভারত অনূর্ধ্ব-২৩ দলের পক্ষে খেলেছেন। অনূর্ধ্ব-১৯ দলে…

  • | |

    রবি হার্ট

    ২ ডিসেম্বর, ১৯৭৪ তারিখে ওয়াইকাতোর হ্যামিল্টনে জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ও প্রশাসক। দলে তিনি মূলতঃ উইকেট-রক্ষক হিসেবে খেলতেন। এছাড়াও, ডানহাতে ব্যাটিং করতেন। ২০০০-এর দশকে নিউজিল্যান্ডের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন। সহোদর ও নিউজিল্যান্ডীয় টেস্ট স্পিনার ম্যাথু হার্টের চেয়ে দুই বছরের ছোট তিনি। ১৯৯২-৯৩ মৌসুম থেকে ২০০৩-০৪ মৌসুম পর্যন্ত সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান রাখেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর…

  • | | |

    লাসিথ মালিঙ্গা

    ২৮ আগস্ট, ১৯৮৩ তারিখে গল এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ও কোচ। মূলতঃ বোলার হিসেবে দলে ভূমিকা রেখেছিলেন। ডানহাতে ফাস্ট-মিডিয়াম বোলিং করতেন। মাঝে-মধ্যে ডানহাতে অফ-ব্রেক বোলিংয়েও পারদর্শীতা দেখিয়েছেন। এছাড়াও, ডানহাতে নিচেরসারিতে ব্যাটিংয়ে নামতেন। শ্রীলঙ্কার পক্ষে সকল স্তরের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন। দলের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেছেন। সেপারমাডু মিল্টন ও স্বর্ণা থিনুয়ারা দম্পতির সন্তান। ৫ ফুট ৮ ইঞ্চি…

  • | |

    মোহাম্মদ হাফিজ

    ১৭ অক্টোবর, ১৯৮০ তারিখে পাঞ্জাবের সারগোদায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার। মূলতঃ অল-রাউন্ডারের দায়িত্ব পালন করেছেন। ডানহাতে ব্যাটিং করতেন। এছাড়াও, মাঝে-মধ্যে ডানহাতে অফ-ব্রেক বোলিং কর্মে অগ্রসর হন। পাকিস্তান দলের পক্ষে সকল স্তরের ক্রিকেটে অংশ নেয়াসহ অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেছেন। সচরাচর আগ্রাসী ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি কৌশলগতভাবে প্রয়োজনমাফিক রক্ষণাত্মক ঢংয়েও অগ্রসর হয়ে থাকেন। পাকিস্তান দলের অন্যতম অনুসঙ্গ তিনি। বেশ কয়েকবার বোলিং…

  • |

    সিএস নায়ড়ু

    ১৮ এপ্রিল, ১৯১৪ তারিখে তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের মহারাষ্ট্রের নাগপুরে জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ছিলেন। মূলতঃ বোলার হিসেবে দলে ভূমিকা রেখেছিলেন। লেগ-ব্রেক গুগলি বোলিং করতেন। এছাড়াও, ডানহাতে নিচেরসারিতে ব্যাটিংয়ে নামতেন। ভারতের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন। প্রতিযোগীধর্মী বোলার ছিলেন। ঘরোয়া পর্যায়ের ক্রিকেটে লেগ-স্পিনার হিসেবে তারকা খ্যাতি লাভ করেন। বিখ্যাত ক্রিকেটার সিকে নায়ড়ু’র বর্ণাঢ্যময় খ্যাতির পিছনে থেকে নিজেকে স্ব-মহিমায়…