সুনীল গাভাস্কার
১০ জুলাই, ১৯৪৯ তারিখে মহারাষ্ট্রের বোম্বে এলাকায় জন্মগ্রহণকারী বিখ্যাত ক্রিকেটার, ধারাভাষ্যকার, প্রশাসক ও রেফারি। মূলতঃ উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলতেন। ডানহাতে ব্যাটিং করতেন। এছাড়াও, ডানহাতে মিডিয়াম কিংবা ডানহাতে অফ-ব্রেক বোলিংয়ে পারদর্শী ছিলেন। ভারত দলের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেছেন।
ভারতীয় ক্রিকেটের উজ্জ্বল নক্ষত্রগুলোর অন্যতম হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছেন ও সন্দেহাতীতভাবেই সর্বশ্রেষ্ঠ ডানহাতি ভারতীয় ব্যাটসম্যানের মর্যাদা লাভ করছেন। তাঁর সর্বশ্রেষ্ঠ অবস্থানে সমর্থন নিয়ে বিতর্কের অবকাশ নেই। কেননা, ঐ সময়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট অঙ্গনে ফাস্ট বোলারদের প্রবল দাপট ছিল ও আধুনিক যুগের ন্যায় হেলমেটের প্রচলন ছিল না।
১৯৭০ থেকে ১৯৮০-এর দশক পর্যন্ত ভারতীয় ক্রিকেটের অন্যতম মধ্যমণি হিসেবে পরিগণিত হতেন। টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসের সর্বশ্রেষ্ঠ উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছেন। একাগ্রচিত্তে রক্ষণাত্মক খেলার কারণে অধিক জনপ্রিয় ছিলেন। তবে, পাশাপাশি বিশ্বসেরা বোলারদের বিপক্ষে হুক ও পুল মারার ক্ষেত্রেও সবিশেষ খ্যাতি অর্জন করেন। ৫ ফুট ৫ ইঞ্চি (১.৬৫ মিটার) উচ্চতার অধিকারী সুনীল গাভাস্কার ‘সানি’ ডাকনামে পরিচিতি লাভ করেন। এমকে মন্ত্রী সম্পর্কে তাঁর কাকা। সেন্ট জাভিয়ার্স কলেজে অধ্যয়ন শেষে বোম্বে বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়ন করেছেন।
১৭ বছর বয়সে ১৯৬৬ সালে ‘ভারতের বর্ষসেরা বিদ্যালয় বালক ক্রিকেটার’ হিসেবে মনোনীত হন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর ভারতীয় ক্রিকেটে বোম্বে ও ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে সমারসেটের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। ১৯৬৬-৬৭ মৌসুমে সাংবার্ষিক মঈন-উদ-দৌলা গোল্ড কাপ প্রতিযোগিতায় বাজির সুলতান কোল্টস একাদশের সদস্যরূপে দুঙ্গারপুর একাদশের বিপক্ষে খেলায় অংশ নিয়ে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে। খুব দ্রুত বোম্বের রঞ্জী দলে তাঁকে যুক্ত করা হয়। তবে, ১৯৬৭ সালের ইরানী কাপে বাদ-বাকী ভারতের বিপক্ষে দূর্বল খেলার খেসারত গুণতে হয়। ১৯৬৯-৭০ মৌসুমে মহীশূরের বিপক্ষে রঞ্জী ট্রফিতে অভিষেক ঘটে। অভিষেকে শূন্য রানে বিদেয় নিলেও উপর্যুপরী তিন খেলা থেকে শতক হাঁকাতে সক্ষম হন।
১৯৭১ থেকে ১৯৮৭ সময়কালে ভারতের পক্ষে সর্বমোট ১২৫ টেস্ট ও ১০৮ টেস্টে অংশ নিয়েছিলেন। সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবন শেষে সর্বাধিকসংখ্যক টেস্ট রান ও সর্বোচ্চসংখ্যক টেস্ট শতক হাঁকান। অবসর গ্রহণকালীন ৩৪টি টেস্ট শতরান করেছিলেন। ২০০৫ সালে শচীন তেন্ডুলকরের টপকিয়ে যাবার পূর্ব পর্যন্ত প্রায় দশ বছর তাঁর এ কীর্তিগাঁথা অক্ষত ছিল। ৩০টি শতক হাঁকিয়ে তৎকালীন বিশ্বরেকর্ড গড়েছিলেন। তন্মধ্যে, তেরোটিই করেছিলেন ঐ সময়ের সেরা বোলারদের নিয়ে গড়া ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে। ফাস্ট বোলিংয়ের বিপক্ষে তাঁর দূর্দান্ত ভূমিকা গ্রহণ বিশ্বব্যাপী প্রশংসিত হয়। ক্রমশঃ ভয়ঙ্কর হয়ে উঠা চারজনের ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান পেস আক্রমণ সামাল দিয়ে ৬৫.৪৫ গড়ে রান তুলেছেন।
২১ বছর বয়সে ১৯৭০-৭১ মৌসুমে অজিত ওয়াড়েকরের নেতৃত্বাধীন ভারতীয় দলের সাথে ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জ সফরে যান। ১৯৭১ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে নিজস্ব প্রথম টেস্ট সিরিজে চার খেলা থেকে ৭৭৪ রানের বিশাল সংগ্রহ করেছিলেন। ৬ মার্চ, ১৯৭১ তারিখে নিজের প্রতিভা বিকাশে সোচ্চার হন। পোর্ট অব স্পেনে অনুষ্ঠিত সিরিজের প্রথম টেস্টে ৬৫ ও ৬৭ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ভারতের সাত উইকেটের প্রথম জয়ে বিরাট ভূমিকা রাখেন। পরবর্তী তিন টেস্টের প্রত্যেকটিতে শতক হাঁকান। তন্মধ্যে, পোর্ট অব স্পেনের উভয় ইনিংস থেকে ১২৪ ও ২২০ রান তুলে নিজের অভিষেক সিরিজকে স্মরণীয় করে রাখেন। ১৫৪.৮০ গড়ে রান সংগ্রহের রেকর্ডটি অভিষেকে যে-কোন ব্যাটসম্যানের পক্ষে সর্বোচ্চ। ঐ সিরিজে ভারত দল ১-০ ব্যবধানে ঐতিহাসিক জয় পায়।
এছাড়াও, মাঠের বাইরে থেকে ভারতীয় ক্রিকেটেও সপ্রতিভ পদচারণ ঘটিয়েছেন। তিনি যখন ভারত দলে যুক্ত হন, তখন খেলোয়াড়েরা টেস্ট প্রতি ₹৭৫০ রূপী লাভ করতো। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষেই অধিক সফলতার স্বাক্ষর রেখেছিলেন। এক সিরিজ থেকেই চারটি শতক হাঁকান। ১৯৮৩ সালে চেন্নাইয়ে সফরকারী ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ২৩৬ রান সংগ্রহ করেছিলেন।
টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাস চতুর্থ ইনিংসের অনেকগুলোয় প্রধান খেলোয়াড়ে পরিণত হয়েছিলেন। এপ্রিল, ১৯৭৬ সালে দূরূহ লক্ষ্যমাত্রায় অগ্রসর হন। পোর্ট অব স্পেনে দলের ৪০৬/৪ সংগ্রহের মধ্যে তিনি ১০২ রান তুলেন। এটি তৎকালীন সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহ ছিল। এ শতকের কল্যাণে চতুর্থ ইনিংসে ভারত দল ৪০৩ রানের লক্ষ্যমাত্রা মাত্র চার উইকেট খুঁইয়ে অর্জন করে। এ পর্যায়ে টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে এটিই সর্বোচ্চ জয়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের ঘটনা ছিল। এছাড়াও, একই মাঠে সমসংখ্যক টেস্ট খেলে চারটি শতক হাঁকান।
১৯৭৯ সালে শ্রীনিবাস বেঙ্কটরাঘবনের নেতৃত্বাধীন ভারতীয় দলের সাথে ইংল্যান্ড গমন করেন। ৪ সেপ্টেম্বর, ১৯৭৯ তারিখে ওভালে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের চতুর্থ টেস্টে অংশ নেন। রোমাঞ্চপূর্ণ ড্র হওয়া টেস্টে দলের ৪২৯/৯ রানের মধ্যে একাই ২২১ রান সংযুক্ত করেছিলেন। স্বাগতিকরা চার-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে ১-০ ব্যবধানে জয়লাভ করে। খেলায় তিনি ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার লাভ করেন।
সেপ্টেম্বর, ১৯৮৬ সালে টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসের দ্বিতীয় টাই টেস্টেও তাঁর ভূমিকা ছিল। মাদ্রাজে অনুষ্ঠিত ঐ টেস্টে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে দলের ৩৪৭ রানের মধ্যে ৯০ রান সংগ্রহ করেন। ৩৪৮ রানের জয়ের লক্ষ্যমাত্রায় ভারত দল ৩৪৭ রানে গুটিয়ে যায়।
ডেনিস লিলি, জেফ থমসন, অ্যান্ডি রবার্টস, মাইকেল হোল্ডিং, ম্যালকম মার্শাল, ইমরান খানের ন্যায় ফাস্ট বোলারদের স্বর্ণযুগে সাহসী ভূমিকায় দৃঢ়প্রতিজ্ঞাবদ্ধ চিত্তে ব্যাটিং করেছেন ও ব্যাটসম্যানদের চালিকাশক্তি ছিলেন। ভারতের নিষ্প্রাণ পিচে সাফল্যের পর বিদেশের মাটিতে বোলারদের দাপটে হিমশিম খাবার বিপরীতে তাঁর উপস্থিতি বেশ সপ্রতিভ ও তাৎপর্য্যপূর্ণ ছিল। ব্যাট হাতে তেমন আগ্রাসী ভূমিকায় নিজেকে নিয়ে যেতেন না। তাসত্ত্বেও, ম্যালকম মার্শাল ও মাইকেল হোল্ডিংয়ের বোলিং মোকাবেলা করে ৯৪ বলে শতক হাঁকিয়েছেন। ১৯৮৭ সালের বিশ্বকাপ ক্রিকেট প্রতিযোগিতায় নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ৮৫ বলে শতরান করেন।
২৭ জুলাই, ১৯৭১ তারিখে অপ্রত্যাশিত ঘটনার কবলে পড়েন। মিড-উইকেটে বল থামানোর চেষ্টা ব্যর্থ হলে জন স্নো তাঁর দিকে তেড়ে আসেন। এ ঘটনায় ইংল্যান্ডের ক্রিকেট অঙ্গনে যথেষ্ট সমালোচিত হয় ও পরের টেস্ট থেকে জন স্নোকে বাদ দেয়া হয়।
প্রথম আট টেস্ট ইনিংস থেকে চারটি শতক হাঁকালেও পরের ষোল টেস্ট থেকে কোন শতরানের সন্ধান পাননি। অবশেষে, ৮ জুন, ১৯৭৪ তারিখে শতকের খরা ঘোঁচান। ওল্ড ট্রাফোর্ডে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ১০১ রান তুলেন। তাসত্ত্বেও, সফরকারী ভারত দল ১১৩ রানে পরাজিত হয়।
১৯৭৫-৭৬ মৌসুমে প্রথমবারের মতো নিউজিল্যান্ডের মাটিতে টেস্ট খেলেন। ঐ মৌসুমে ভারতীয় দলকে প্রথমবারের মতো নেতৃত্ব দিয়ে নিউজিল্যান্ড সফরে যান। ২৪ জানুয়ারি, ১৯৭৬ তারিখে অকল্যান্ডে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। অধিনায়কের দায়িত্বে থেকে ব্যক্তিগত সফলতার সন্ধান পান। প্রথম ইনিংসে ৩৩ রানে পৌঁছানোকালে টেস্টে ১৫০০ রানের মাইলফলক স্পর্শ করেন। ব্যাট হাতে নিয়ে ১১৬ ও ৩৫* রান সংগ্রহসহ তিনটি ক্যাচ তালুবন্দী করে নিউজিল্যান্ড দলকে পরাজিত করতে সবিশেষ ভূমিকা রাখেন। সফরকারীরা ৮ উইকেটে জয়লাভ করলে তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে এগিয়ে যায়।
১৯৭৯ সালে দলের সাথে ইংল্যান্ড গমন করেন। ওভালে ২২১ রানের অসাধারণ ইনিংস খেলেন। ১৯৮১ সালে মেলবোর্নে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ভারতের জয়ে নেতৃত্ব দেন। টেস্ট অধিনায়কত্ব লাভের পর এটিই তাঁর স্বর্ণালী মুহূর্ত ছিল। সব মিলিয়ে ভারত দলকে ৪৭ টেস্টে নেতৃত্ব দিয়ে নয়টিতে জয় ও আটটিতে পরাজয়বরণ করে। ডিসেম্বর, ১৯৮০ সালে ওডিআইয়ে অধিনায়কত্ব করার সুযোগ পান। ১৯৮৫ সালে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশীপ ক্রিকেট প্রতিযোগিতায় দলের শিরোপা বিজয়ে নেতৃত্ব দেন। এটিই তাঁর ৩৮ খেলায় অধিনায়কত্ব করার প্রধান সাফল্য ছিল। ১৪ জয় ও ১৯ পরাজয়ের সাথে নিজেকে যুক্ত রাখেন।
ডিসেম্বর, ১৯৭৭ সালে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে শতরানের ফুলঝুড়ি ছোটান। ক্যারি প্যাকারের পরিচালনায় বিশ্ব সিরিজ ক্রিকেটে অংশ নেয়ার ফলে তারকা খেলোয়াড়বিহীন অজি দলটির বিপক্ষে তিনটি শতক হাঁকান। সবকটিই ছিল দ্বিতীয় ইনিংসে। তাসত্ত্বেও, ৩-২ ব্যবধানে ভারত দল পরাজিত হয়েছিল। নভেম্বর, ১৯৭৮ সালে প্রথমবারের মতো উভয় ইনিংসে শতরানের সন্ধান পান। করাচীতে স্বাগতিক পাকিস্তানের বিপক্ষে ১১১ ও ১৩৭ রান তুলেন। তাসত্ত্বেও তাঁর দল আট উইকেটে পরাজয়বরণ করে। তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া ঐ সিরিজে ২-০ ব্যবধানে ভারত দল পরাজিত হয়েছিল।
১৯৭৮ সালে দ্বিতীয়বারের মতো উভয় ইনিংসে শতক হাঁকান। ১৯৭৮-৭৯ মৌসুমে নিজ দেশে আলভিন কালীচরণের নেতৃত্বাধীন ক্যারিবীয় দলের মুখোমুখি হন। অধিনায়কের দায়িত্বে থেকে সিরিজের তৃতীয় টেস্টে অপূর্ব ক্রীড়াশৈলী প্রদর্শন করেন। ২৯ ডিসেম্বর, ১৯৭৯ তারিখে কলকাতার ইডেন গার্ডেন্সে অনুষ্ঠিত অভিজ্ঞতাহীন ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান বোলিং আক্রমণ যথোচিত মোকাবেলা করে ১০৭ ও ১৮২ রানের অপরাজিত ইনিংস উপহার দেন। তাঁর জোড়া শতক স্বত্ত্বেও শিবু শিবনারায়ণের অসম্ভব ব্যাটিং দৃঢ়তায় সফরকারীরা পরাজয় এড়াতে সক্ষম হয়। খেলাটি ড্রয়ে পরিণত হলে ছয়-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজটি অমিমাংসিত অবস্থায় অগ্রসর হতে থাকে।
সেপ্টেম্বর, ১৯৭৯ সালে ওভালে ব্যাটিংয়ের অপূর্ব ক্রীড়াশৈলী প্রদর্শন করেন। চতুর্থ ইনিংসে ইংরেজ বোলিং আক্রমণ প্রতিহত করে ২২১ রান তুলেন। ৪৩৮ রানের জয়ের লক্ষ্যমাত্রায় নেমে সফরকারী দল ৪২৯/৮ তুললে খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ায়।
জানুয়ারি, ১৯৮০ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে অপূর্ব খেলেন। মাদ্রাজে অনুষ্ঠিত ঐ টেস্টে তাঁর ১৬৬ রানের কল্যাণে স্বাগতিক ভারত দল খুব সহজেই দশ-উইকেটের জয় পায়। ঐ টেস্টে গাভাস্কার-কপিল দারুণ ভূমিকার স্বাক্ষর রাখেন। সব মিলিয়ে ঐ খেলায় তিনি ১৯৫ রান এবং কপিল দেব ৮৪ রানসহ ১১ উইকেট দখল করেন।
১০ ফেব্রুয়ারি, ১৯৮১ তারিখে মেলবোর্ন টেস্ট প্রায় পণ্ড হতে চলেছিল। অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজের পাঁচ ইনিংস থেকে মাত্র ৪৮ রান তোলার পর দৃশ্যতঃ ছন্দহীনতায় ভুগছিলেন। তবে, চূড়ান্ত টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে ডেনিস লিলি’র বলে ৭০ রানে এলবিডব্লিউ’র শিকার হলে ক্ষুদ্ধ হন। উইকেটের অপর প্রান্তে অবস্থান করা চেতন চৌহানকে নিয়ে মাঠ ত্যাগ করার সিদ্ধান্ত নেন। পরিস্থিতি শান্ত হয় ও ভারত দল শেষ পর্যন্ত ৫৯ রানে বিজয়ী হয়েছিল।
১৯৮২-৮৩ মৌসুমে নিজ দেশে বান্দুলা বর্ণাপুরা’র নেতৃত্বাধীন শ্রীলঙ্কান দলের মুখোমুখি হন। ১৭ সেপ্টেম্বর, ১৯৮২ তারিখে মাদ্রাজে অনুষ্ঠিত সফররত শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজের একমাত্র টেস্টে অংশ নেন। অধিনায়কের দায়িত্বে থেকে ১৫৫ ও ৪* রান সংগ্রহ করেছিলেন। এছাড়াও, দুইটি ক্যাচ তালুবন্দী করেছিলেন। তবে, দিলীপ মেন্ডিসের জোড়া শতকের কল্যাণে খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ায়।
২৯ অক্টোবর, ১৯৮৩ তারিখে বিখ্যাত অস্ট্রেলীয় ব্যাটিং কিংবদন্তী ডন ব্র্যাডম্যানের সংগৃহীত ২৯টি শতরানের পার্শ্বে নিজের নাম অন্তর্ভুক্ত করেন। বিখ্যাত ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান বোলিং তারকা ম্যালকম মার্শাল ও তাঁর সঙ্গীদেরকে রুখে দিয়ে ৯৪ বলে শতক হাঁকিয়েছিলেন। দিল্লির ফিরোজ শাহ কোটলা মাঠে এ রেকর্ডের সাথে যুক্ত করেন। সংগৃহীত ৩৪টি শতরানের মধ্যে এ ইনিংসটিতে ১২৮ বলে ১২১ রান তুলে দ্রুততম ব্যক্তিগত সংগ্রহের অধিকারী হন। ১৩ নভেম্বর, ১৯৮৩ তারিখে টেস্টে সর্বাধিক রান সংগ্রহের কৃতিত্বের সাথে নিজেকে নিয়ে যান। আহমেদাবাদের অবিশ্বাসী পিচে ভারতের সংগৃহীত ২৪১ রানের মধ্যে নিজে করেন ৯০ রান। এ পর্যায়ে বিখ্যাত ইংরেজ তারকা জিওফ বয়কটের সংগৃহীত ৮১১৪ রানকে অতিক্রম করে টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকে পরিণত করেন। ২৮ ডিসেম্বর, ১৯৮৩ তারিখে ৩০তম টেস্ট শতক হাঁকান। মাদ্রাজ টেস্টে দলীয় সংগ্রহ ০/২ থাকাকালীন চার নম্বরে ব্যাটিংয়ে নেমে ৬৪৪ মিনিট ক্রিজে অবস্থান করে ২৩৬ রানে অপরাজিত অবস্থায় মাঠ ত্যাগ করেন। এ পর্যায়ে ৩০তম শতক হাঁকিয়ে সর্বাধিক শতরান করার নতুন রেকর্ড গড়েন। এছাড়াও, এ সংগ্রহটি তাঁর ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ টেস্ট রান ছিল ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ১৩টি শতরানের মধ্যে সর্বশেষ ছিল।
১৯৮৩-৮৪ মৌসুমে নিজ দেশে জহির আব্বাসের নেতৃত্বাধীন পাকিস্তানী দলের মুখোমুখি হন। ১৪ সেপ্টেম্বর, ১৯৮৩ তারিখে ব্যাঙ্গালোরে অনুষ্ঠিত সফররত পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম টেস্টে অংশ নেন। ৪২ ও ১০৩* রান সংগ্রহ করেছিলেন। তাঁর এ শতকটি ২৮তম ছিল। তবে, মদন লালের দৃঢ়তাপূর্ণ অল-রাউন্ড নৈপুণ্যে খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ালে তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজটি অমিমাংসিত অবস্থায় অগ্রসর হতে থাকে।
নভেম্বর, ১৯৮৪ সাল থেকে জানুয়ারি, ১৯৮৫ সাল পর্যন্ত সময়কালে ব্যাপক ছন্দপতনের মুখোমুখি হন। ১৯৮৪-৮৫ মৌসুমে খেলোয়াড়ী জীবনের অন্যতম রান খরায় ভুগেন। কঠিন সময় অতিবাহিত করেন। ১৯৮৪ সালে সফরকারী ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তেমন সুবিধে করতে পারেন। আট ইনিংস থেকে মাত্র ১৪০ রান সংগ্রহ করতে পেরেছিলেন। ৩১ ডিসেম্বর, ১৯৮৪ তারিখে একাধারে সর্বাধিকসংখ্যক টেস্টে অংশগ্রহণের কৃতিত্বের অধিকারী হন। কলকাতায় সিরিজের তৃতীয় টেস্টে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ধারাবাহিকভাবে ৮৮তম টেস্টে অংশ নিয়ে নতুন বিশ্বরেকর্ড গড়েন। এরফলে, গুণ্ডাপ্পা বিশ্বনাথের ৮৭টি টেস্ট খেলার রেকর্ড ম্লান হয়ে যায়। পরবর্তীতে, ১০৬টি টেস্ট একাধারের খেলার পর অ্যালান বর্ডার এ রেকর্ডটি নিজের করে নেন। কলকাতায় তাঁর রক্ষণাত্মক ধাঁচের অধিনায়কত্ব করায় দর্শকের বিদ্রুপের শিকার হন। ১-০ ব্যবধানে সিরিজে এগিয়ে থেকেও পরবর্তীতে ২-১ ব্যবধানে সিরিজ খোঁয়ায়।
৩ জুলাই, ১৯৮৬ তারিখে সর্বাধিকসংখ্যক টেস্টে অংশগ্রহণের কৃতিত্ব গড়েন। এজবাস্টনে সিরিজের তৃতীয় টেস্টে স্বাগতিক ইংল্যান্ডের বিপক্ষে অংশগ্রহণ করে বিখ্যাত ইংরেজ ক্রিকেটার কলিন কাউড্রে’র ১১৪ টেস্টের অংশগ্রহণের রেকর্ড ভঙ্গ করতে সমর্থ হন।
১৯৮৬-৮৭ মৌসুমে নিজ দেশে দিলীপ মেন্ডিসের নেতৃত্বাধীন শ্রীলঙ্কান দলের মুখোমুখি হন। ১৭ ডিসেম্বর, ১৯৮৬ তারিখে কানপুরে অনুষ্ঠিত সফররত শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। দলের একমাত্র ইনিংসে ১৭৬ রান সংগ্রহ করেছিলেন। খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ালে তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজটি অমিমাংসিত অবস্থায় অগ্রসর হতে থাকে। খেলায় তিনি ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার লাভ করেন।
ফেব্রুয়ারি, ১৯৮৭ সালে প্রথমবারের মতো টেস্টে অংশগ্রহণ করা থেকে বিরত থাকেন। একাধারে ১০৬টি টেস্টে অংশ নিয়ে ঐ সময়ে সহজেই রেকর্ডের অধিকারী হন। তবে, ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে ইডেন গার্ডেন্সে সফরকারী পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে অংশ নেননি। প্রচলিত রয়েছে যে, ১৯৮৪-৮৫ মৌসুমে এ মাঠে তাঁর পূর্বেকার টেস্টে দর্শকদের বিদ্রুপের জবাব দিতে তিনি এ পথ বেছে নেন।
১৯৮৬-৮৭ মৌসুমে নিজ দেশে ইমরান খানের নেতৃত্বাধীন পাকিস্তানী দলের মুখোমুখি হন। ৭ মার্চ, ১৯৮৭ তারিখে টেস্টে ১০০০০ রান সংগ্রহ করেন। আহমেদাবাদের মোতেরায় ইতোমধ্যে টেস্টে সর্বাধিক রান সংগ্রাহকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হবার পর প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে ১০০০০ রানের মাইলফলক স্পর্শ করেন।
এরপর, ১৩ মার্চ, ১৯৮৭ তারিখে সিরিজের পঞ্চম ও চূড়ান্ত টেস্টে শেষবারের মতো নিজেকে তুলে ধরতে সচেষ্ট হন। আবারও তিনি ব্যাটিংয়ে দ্যূতি ছড়ান ও কেন তিনি সেরা ব্যাটসম্যান তাঁর বহিঃপ্রকাশ ঘটান। ব্যাঙ্গালোরের নড়বড়ে পিচ ও মানসম্পন্ন স্পিন বোলারদের রুখে চতুর্থ ইনিংসে সফরকারী পাকিস্তানের বিপক্ষে বীরত্বপূর্ণ ৯৬ রান তুললেও স্বাগতিক দল স্বল্প ব্যবধানে পরাজয়বরণ করে। ২২১ রানের জয়ের লক্ষ্যমাত্রায় থেকে দলের অন্য কোন ব্যাটসম্যানই ২৬ রানের বেশী তুলতে পারেননি ও ভারত দল ১৬ রানের নাটকীয় পরাজয়ের কবলে পড়ে। ফলশ্রুতিতে, পাঁচ-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে ১-০ ব্যবধানে সফরকারীরা জয়লাভ করে নেয়। ঐ টেস্টে তিনি ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার লাভ করেন। পরবর্তীতে, এটিই তাঁর সর্বশেষ টেস্টে পরিণত হয়।
টেস্ট ক্রিকেটে একাধিপত্য বিস্তার করলেও ওডিআইয়ে তেমন সফলতার স্বাক্ষর রাখতে পারেননি। জুলাই, ১৯৭৪ সালে হেডিংলিতে স্বাগতিক ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ওডিআইয়ে অভিষেক ঘটে। এ খেলায় ২৮ রান সংগ্রহ করেছিলেন তিনি। এ সময় থেকেই টেস্টের সাথে তুলনান্তে সংক্ষিপ্ত সংস্করণের খেলায় বৈসাদৃশ্য লক্ষ্য করেন। ৭ জুন, ১৯৭৫ তারিখে কুখ্যাতি অর্জনের সাথে নিজেকে জড়ান। বিশ্বকাপ ক্রিকেট প্রতিযোগিতার উদ্বোধনী আসরে স্বাগতিক ইংল্যান্ডের বিপক্ষে মাত্র ৩৬ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেন। নিজস্ব তৃতীয় ওডিআইয়ে ১৭৪ বল মোকাবেলা করে ইংল্যান্ডের ৩৩৪ রানের জয়ের লক্ষ্যমাত্রা তাড়া করে দলকে ১৩২/৩ সংগ্রহ করে বেশ দুর্নাম কুড়ান।
তাসত্ত্বেও, ওডিআইয়ে খেলা চালিয়ে যেতে থাকেন। অবশেষে ৩১ অক্টোবর, ১৯৮৭ তারিখে প্রচণ্ড গরমের মধ্যে খেলেও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে শতক হাঁকাতে পেরেছিলেন। এ পর্যায়ে যে-কোন ভারতীয় ব্যাটসম্যানের বিশ্বকাপে দ্রুততম শতরানের ইনিংস ছিল। এছাড়াও, এটিই তাঁর একমাত্র ওডিআই শতক ছিল। নিজস্ব ১০১তম ওডিআইয়ে এ সফলতা লাভকালীন ৮৮ বল খেলে ১০৩ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেন ও দলকে সেমি-ফাইনালে নিয়ে যান। কিন্তু, নিজ শহরে ইংল্যান্ডের কাছে ৩৫ রানে পরাজিত হয় ভারত দল ও নিজে করেন ৪ রান। এটিই তাঁর সর্বশেষ ওডিআইয়ে পরিণত হয়।
১৯৭৬, ১৯৭৮, ১৯৭৯ ও ১৯৮৩ সালে মোট চারবার টেস্টে সহস্র রানের সন্ধান পান। টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসের প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে ১০০০০ রানের মাইলফলকে পৌঁছেন। অবসর গ্রহণকালীন সর্বাধিকসংখ্যক ৩৪ শতকের তৎকালীন রেকর্ড গড়েছিলেন। দুইজন খেলোয়াড়ের অন্যতম হিসেবে টেস্টের উভয় ইনিংসে তিনবার শতরান করার গৌরব অর্জন করেন।
চারটি বিশ্বকাপ ক্রিকেট প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছিলেন। তন্মধ্যে, ১৯৮৩ সালে ইংল্যান্ডে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপ ক্রিকেট প্রতিযোগিতার তৃতীয় আসরে ভারতের শিরোপা বিজয়ী দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন। দুই বছর পর অস্ট্রেলিয়ায় অনুষ্ঠিত বিশ্ব ক্রিকেট চ্যাম্পিয়নশীপের শিরোপা জয়ে ভারত দলকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন।
আগস্ট, ১৯৮৭ সালে লর্ডসে অনুষ্ঠিত নিজস্ব সর্বশেষ প্রথম-শ্রেণীর খেলায় বিশ্ব একাদশের সদস্যরূপে এমসিসি’র বিপক্ষে ১৮৮ রান তুলেন। এরফলে, ঐতিহ্যবাহী অনার্স বোর্ডসে নিজেকে ঠাঁই করে নেন। এরপূর্বে লর্ডসে তিনি ১০টি টেস্ট ইনিংসে অংশ নিয়ে সর্বোচ্চ ৫৯ রান তুলেছিলেন। এমসিসি’র দ্বি-শতবার্ষিকী উদযাপনের অংশ হিসেবে বিশ্বসেরা বাইশজন খেলোয়াড়ের সম্মিলন ঘটে। এমসিসি’র পক্ষে গ্রাহাম গুচ ও মাইক গ্যাটিং শতরান করার পর ডেসমন্ড হেইন্সের সাথে তিনি ব্যাটিং উদ্বোধন করেন। কয়েকজন সেরা বোলারের বিপক্ষে খেলে নিজের পরিচিতি মেলে ধরেন। ডেসমন্ড হেইন্সের পতনের পর প্রথম ইনিংসে স্বীয় প্রাধান্য ধরে রাখেন। উইকেট থেকে বিদেয় নেয়ার পূর্বে ৩৫১ বল মোকাবেলায় ২৩টি চারের মারে ১৮৮ রান তুলেন। সতীর্থ ভারতীয় বোলার রবি শাস্ত্রী’র বলে কট এন্ড বোল্ড হন। দ্বিতীয় ইনিংসে এমসিসি দল ৩১৮/৬ তুলে ইনিংস ঘোষণা করে ও নিষ্প্রাণ খেলাটি ড্রয়ে পরিণত হয়।
১৯৮৭ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর গ্রহণ করেন। এ সময়ে ৫১.১২ গড়ে ১০১২২ রান সংগ্রহ করেছিলেন। খেলোয়াড়ী জীবনের মাঝে অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেন। তবে, এ দায়িত্বে থেকে তেমন সফলতা পাননি। ভারতীয় ক্রিকেটে বিরাট সম্মানের পাত্রে পরিণত হন। দলীয় সঙ্গীদেরকে পেশাদারীত্বের ভাগ্যবরণের শিক্ষা দেন। তাঁর ভূমিকায় ভারতীয় ক্রিকেটে আত্মবিশ্বাস আনয়ণের ক্ষেত্র সৃষ্টি হয়।
ক্রিকেট খেলা থেকে অবসর গ্রহণের পর মুম্বইয়ের শেরিফ, এমসিএ’র সহ-সভাপতি, আইসিসি ম্যাচ রেফারি, বিসিসিআই সভাপতি, আইসিসি ক্রিকেট কমিটির সভাপতি, ধারাভাষ্যকার ও ক্রিকেট বিশ্লেষকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিলেন। একটি টেস্ট ও পাঁচটি ওডিআইয়ে ম্যাচ রেফারির দায়িত্বে ছিলেন। এরপর, টেলিভিশনে ধারাভাষ্যকার হিসেবে উপস্থিত হন ও ক্রীড়া প্রতিবেদকের দায়িত্ব পালন করেন। কিছু বিতর্কিত মন্তব্যের কারণে তাঁকে বাদ দেয়া হয়। পরবর্তীতে অবশ্য পুণরায় গণমাধ্যমে সাংবাদিক ও ধারাভাষ্যকার হিসেবে যুক্ত হন। বিসিসিআইয়ের বিভিন্ন দায়িত্বে অগ্রসর হন ও আইসিসি ক্রিকেট কমিটির সভাপতি হিসেবে মনোনীত হন।
এছাড়াও, লেখক, গায়ক ও অভিনেতা ছিলেন। এক পর্যায়ে চলচ্চিত্র জগতের সাথেও জড়িয়ে পড়েন। তবে, তেমন সফল হননি। মারাঠী চলচ্চিত্র ‘সাভলি প্রেমাচিতে’ কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করে সাড়া জাগান। এছাড়াও, হিন্দী চলচ্চিত্র ‘মালামালে’ অতিথি শিল্পী হিসেবে অংশ নেন। ব্যক্তিগত জীবনে বিবাহিত ছিলেন। মার্শনীল গাভাস্কার নাম্নী রমণীর সাথে পরিণয়সূত্রে আবদ্ধ হন। এ দম্পতির রোহন গাভাস্কার নামীয় পুত্রসন্তান রয়েছেন। স্বীয় ভগ্নী কবিতা বিশ্বনাথের সাথে গুণ্ডাপ্পা বিশ্বনাথের বৈবাহিক সম্পর্ক স্থাপন করান।