স্টুয়ার্ট ল’
১৮ অক্টোবর, ১৯৬৮ তারিখে কুইন্সল্যান্ডের হার্স্টন এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ও কোচ। মূলতঃ শীর্ষসারির ব্যাটসম্যানের দায়িত্ব পালন করেছেন। ডানহাতে ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি ডানহাতে মিডিয়াম কিংবা লেগ-ব্রেক গুগলি বোলিংয়ে পারদর্শী ছিলেন। ১৯৯০-এর দশকে অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন।
‘লম্যান’ কিংবা ‘দ্য জাজ’ ডাকনামে ভূষিত স্টুয়ার্ট ল’ ব্রিসবেনভিত্তিক ক্রেগসলি স্টেট হাই স্কুলে অধ্যয়ন করেছেন। করেছেন। ১৯৮৮-৮৯ মৌসুম থেকে ২০০৯ সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবনে সরব ছিলেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটে কুইন্সল্যান্ড এবং ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে ডার্বিশায়ার, এসেক্স ও ল্যাঙ্কাশায়ারের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। এছাড়াও, মেরিলেবোন ক্রিকেট ক্লাব ও চেন্নাই সুপারস্টার্সের পক্ষে খেলেছেন।
১৯৯৪ থেকে ১৯৯৯ সাল পর্যন্ত সময়কালে অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে একটিমাত্র টেস্ট ও ৫৪টি ওডিআইয়ে অংশ নিয়েছিলেন। ২ ডিসেম্বর, ১৯৯৪ তারিখে পার্থে অনুষ্ঠিত সফররত জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওডিআইয়ে অংশ নেয়ার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট অঙ্গনে প্রবেশ করেন।
১৯৯৫-৯৬ মৌসুমে নিজ দেশে অর্জুনা রানাতুঙ্গা’র নেতৃত্বাধীন শ্রীলঙ্কান দলের মুখোমুখি হন। ৮ ডিসেম্বর, ১৯৯৫ তারিখে পার্থে অনুষ্ঠিত সফররত শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। রিকি পন্টিংয়ের সাথে তাঁর একযোগে টেস্ট অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। খেলায় তিনি দলের একমাত্র ইনিংসে ৫৪* রান সংগ্রহসহ একটি ক্যাচ তালুবন্দী করেছিলেন। এছাড়াও, বল হাতে নিয়ে ০/৯ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। তবে, মাইকেল স্ল্যাটারের অনবদ্য দ্বি-শতকের কল্যাণে সফরকারীরা ইনিংস ও ৩৬ রানে পরাভূত হলে তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে এগিয়ে যায়।
এরপর থেকে মাঝে-মধ্যে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণের সুযোগ পেতেন। তবে, শেফিল্ড শীল্ড ও কাউন্টি ক্রিকেটে রানের ফুলঝুড়ি ছোটাতেন। এছাড়াও, ইংল্যান্ডে স্বীয় নামকে প্রতিষ্ঠিত করেন। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে দল পরিবর্তনের বিষয়টি সম্ভাব্য হিসেবে চলে আসেন। কিন্তু, তা আর হয়ে উঠেনি। অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটার হিসেবেই থেকে যান ও দলের নিয়মিত খেলোয়াড় হবার স্বপ্ন দেখতেন। দলে স্বীয় অবস্থান বজায় রাখতে তাঁকে অসম্ভব প্রতিযোগিতায় অবতীর্ণ হতে হয়। ওডিআইয়ে ধারাবাহিকতা রক্ষা করতে পারেননি ও অনিশ্চিত ব্যাটিং অবস্থান এতে বাঁধ সাধে। ১৯৯৮-৯৯ মৌসুমে তাঁর ছন্দ হারাতে শুরু করে। এক পর্যায়ে ইংল্যান্ডে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপ ক্রিকেট প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের পূর্বে দল থেকে বাদ পড়েন। এরপর, আর তাঁকে দলে রাখা হয়নি।
অধুনা বিলুপ্ত ইন্ডিয়ান ক্রিকেট লীগে অংশ নেন। সেখানে তাঁর অংশগ্রহণের ফলে এসেক্স থেকে বাদ পড়েন। ২০০৯ মৌসুমের পূর্বে ডার্বিশায়ারের সাথে খেলার জন্যে চুক্তিবদ্ধ হন। ক্রিকেটার হিসেবে অবসর গ্রহণ করেন।
ক্রিকেট খেলা থেকে অবসর গ্রহণের পর কোচিং জগতের দিকে ধাবিত হন। বিভিন্ন স্তরের ক্রিকেটে প্রশিক্ষকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হন। তন্মধ্যে, অস্ট্রেলিয়া দলের ব্যাটিং পরামর্শকের দায়িত্ব অন্যতম ছিল। ২০১৪ সালে সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্যে বাংলাদেশ দলের কোচ ছিলেন। ২০১৭ সালের শুরুতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের কোচ হিসেবে মনোনীত হন। সেপ্টেম্বর, ২০২১ সালে পারস্পরিক সমঝোতায় ল্যান্স ক্লুজনার আফগানিস্তানের কোচ থেকে অব্যাহতি নিলে ১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ তারিখে বাংলাদেশ সফরকে ঘিরে অন্তর্বর্তীকালীন প্রধান কোচ হিসেবে তাঁকে মনোনয়ন দেয়া হয়। এরপূর্বে ওয়েস্ট ইন্ডিজের কোচের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিলেন। এছাড়াও, মিডলসেক্সের কোচ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।