| |

স্টিভ এলোয়ার্দি

২৩ ফেব্রুয়ারি, ১৯৬৫ তারিখে রোডেশিয়ার বুলাওয়েতে জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ও প্রশাসক। মূলতঃ বোলার হিসেবে দলে ভূমিকা রেখেছিলেন। ডানহাতে ফাস্ট-মিডিয়াম বোলিং করতেন। এছাড়াও, ডানহাতে নিচেরসারিতে ব্যাটিংয়ে নামতেন। দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন।

শৈশবকালে পরিবারের সাথে দক্ষিণ আফ্রিকায় চলে যান। ১৯৮৩-৮৪ মৌসুমে ট্রান্সভাল স্কুলসের পক্ষে খেলেন। ১৯৮৭-৮৮ মৌসুম থেকে ২০০৩ সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান রাখেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর দক্ষিণ আফ্রিকান ক্রিকেটে নর্দার্ন ট্রান্সভাল ও ট্রান্সভাল এবং ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে ল্যাঙ্কাশায়ার ও নটিংহ্যামশায়ারের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। ১৯৮৭-৮৮ মৌসুমে ট্রান্সভাল ‘বি’ দলের সদস্যরূপে নাটাল ‘বি’ দলের বিপক্ষে খেলায় অংশ নেয়ার মাধ্যমে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবনে প্রবেশ করেন। তবে, ১৯৯৮ সালে ইংল্যান্ড সফরের পূর্ব পর্যন্ত দক্ষিণ আফ্রিকার টেস্ট দলে ঠাঁই পাননি।

১৯৯৮ থেকে ২০০২ সাল পর্যন্ত সময়কালে দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে চারটিমাত্র টেস্ট ও ৩৯টি ওডিআইয়ে অংশগ্রহণ করেছিলেন। ৩ এপ্রিল, ১৯৯৮ তারিখে ডারবানে অনুষ্ঠিত সফররত পাকিস্তানের বিপক্ষে ওডিআইয়ে অংশ নেয়ার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট জগতে প্রবেশ করেন।

১৯৯৮ সালে হান্সি ক্রোনিয়ে’র নেতৃত্বাধীন স্প্রিংবকের সদস্যরূপে ইংল্যান্ড গমন করেন। ২৩ জুলাই, ১৯৯৮ তারিখে নটিংহামের ট্রেন্ট ব্রিজে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের চতুর্থ টেস্টে তাঁর অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। খেলায় তিনি ৪৮ ও ১০ রান সংগ্রহ করেন। এছাড়াও, বল হাতে নিয়ে ১/৪১ ও ০/৩৮ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। অ্যাঙ্গাস ফ্রেজারের অপূর্ব বোলিংশৈলীর কল্যাণে সফরকারীরা ৮ উইকেটে পরাজিত হলে পাঁচ-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজটি ১-১ ব্যবধানে অগ্রসর হতে থাকে।

১৯৯৮-৯৯ মৌসুমে প্রথমবারের মতো নিউজিল্যান্ডের মার্টিতে টেস্ট খেলেন। ঐ মৌসুমে হান্সি ক্রোনিয়ে’র নেতৃত্বাধীন স্প্রিংবকের সদস্যরূপে নিউজিল্যান্ড সফরে যান। এ সফরে দ্বিতীয়বারের মতো টেস্টে অংশ নেন। ১৮ মার্চ, ১৯৯৯ তারিখে ওয়েলিংটনে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের তৃতীয় ও চূড়ান্ত টেস্টে অংশ নেন। দূর্দান্ত ক্রীড়া নৈপুণ্যের স্বাক্ষর রাখেন। ব্যক্তিগত সাফল্যের সাথে নিজেকে জড়ান। নিউজিল্যান্ডের প্রথম ইনিংসে রজার টোজকে বিদেয় করে ব্যক্তিগত সেরা বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। তাঁর পূর্বেকার সেরা সাফল্য ছিল ১/৪১। খেলায় তিনি ৪/৬৬ ও ৪/৯৩ লাভ করেন। এছাড়াও, ব্যাট হাতে নিয়ে ৩* রান সংগ্রহ করেছিলেন। তাঁর অসাধারণ বোলিংশৈলীর কল্যাণে সফরকারীরা ৮ উইকেটে জয় পেলে ১-০ ব্যবধানে সিরিজে জয়লাভ করে। খেলায় তিনি ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার লাভ করেন।

২০০১-০২ মৌসুমে শন পোলকের নেতৃত্বাধীন স্প্রিংবকের সদস্যরূপে অস্ট্রেলিয়া সফরে যান। ২ জানুয়ারি, ২০০২ তারিখে সিডনিতে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজের তৃতীয় ও চূড়ান্ত টেস্টে অংশ নেন। খেলায় তিনি দ্বাদশ খেলোয়াড়ের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিলেন। জাস্টিন ল্যাঙ্গার ও ম্যাথু হেইডেনের অসাধারণ ব্যাটিংয়ের কল্যাণে সফরকারীরা ১০ উইকেটের বিরাট ব্যবধানে পরাভূত হলে ৩-০ ব্যবধানে সিরিজ খোঁয়ায়।

২০০২-০৩ মৌসুমে নিজ দেশে মারভান আতাপাত্তু’র নেতৃত্বাধীন শ্রীলঙ্কান দলের মুখোমুখি হন। ১৫ নভেম্বর, ২০০২ তারিখে সেঞ্চুরিয়নে অনুষ্ঠিত সফররত শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় ও চূড়ান্ত টেস্টে অংশ নেন। খেলায় তিনি একবার ব্যাটিংয়ে নেমে ৫ রান সংগ্রহ করেছিলেন। এছাড়াও, বল হাতে নিয়ে ০/৭১ ও ১/৫৪ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। তবে, দলীয় অধিনায়ক শন পোলকের অসাধারণ অল-রাউন্ড ক্রীড়া নৈপুণ্যের কল্যাণে স্বাগতিকরা ৩ উইকেটে জয় পেলে দুই-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে ২-০ ব্যবধানে সিরিজে বিজয়ী হয়। পরবর্তীতে, এটিই তাঁর সর্বশেষ টেস্টে পরিণত হয়।

ইংল্যান্ডে অনুষ্ঠিত ১৯৯৯ সালের বিশ্বকাপ ক্রিকেট প্রতিযোগিতায় অংশ নেন। এ প্রতিযোগিতায় নিজের সেরা অবদান রাখেন। জুন, ২০১৯ সালে দক্ষিণ আফ্রিকা দল সেমি-ফাইনালে পৌঁছে। তবে, টাই হওয়া ঐ খেলায় রান গড়ে পিছিয়ে থাকায় তাঁর দল চূড়ান্ত খেলায় অবতীর্ণ হতে পারেনি।

২০০৩ সালের শুরুতে বিদেশী খেলোয়াড় হিসেবে স্টুয়ার্ট ম্যাকগিল কিংবা ক্রিস কেয়ার্নসের অংশগ্রহণের সম্ভাবনা একেবারেই ক্ষীণ হয়ে আসার পর শূন্যতা পূরণে নটিংহ্যামশায়ারে তাঁকে যুক্ত করা হয়। প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে নটিংহ্যামশায়ারের ৫৭২ নম্বরধারী খেলোয়াড় ছিলেন। সর্বাপেক্ষা কার্যকর অতিরিক্ত খেলোয়াড় হিসেবে নিজেকে প্রমাণ করে ছাড়েন। পাঁচটি প্রথম-শ্রেণীর খেলায় অংশ নিয়ে ২২.৩৭ গড়ে ১৭৯ রান ও ৩১.৩৫ গড়ে ২০ উইকেট দখল করেন। পাশাপাশি সানডে লীগের তিন খেলায় অংশগ্রহণ করে ১৯.১৪ গড়ে সাত উইকেট পান। তন্মধ্যে, ট্রেন্ট ব্রিজে ডার্বিশায়ারের বিপক্ষে ৪/৪১ লাভ করেছিলেন। এছাড়াও, ১৯৯৬ সালে ল্যাঙ্কাশায়ারের পক্ষে এক মৌসুম খেলেন।

২০০৩ সালে ক্রিকেট খেলা থেকে অবসর গ্রহণের পর প্রশাসনের দিকে ঝুঁকে পড়েন। ২০১৮ সালে ক্রিকেটে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ এমবিই উপাধীতে ভূষিত হন। এরপর, ২০১৯ সালে ইংল্যান্ড ও ওয়েলসে যৌথভাবে আয়োজিত বিশ্বকাপ ক্রিকেট প্রতিযোগিতায় ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে সফল আয়োজনের সাথে যুক্ত ছিলেন। ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২১ তারিখে সারের প্রধান নির্বাহী হিসেবে রিচার্ড গোল্ডের স্থলাভিষিক্ত হন। ব্যক্তিগত জীবনে বিবাহিত। এমজে এলওয়ার্দি নামীয় সন্তানের জনক।

Similar Posts

  • | |

    অ্যান্ড্রু গ্রীনউড

    ২০ আগস্ট, ১৮৪৭ তারিখে ইয়র্কশায়ারের কাউমস এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ও আম্পায়ার ছিলেন। মূলতঃ ব্যাটসম্যান হিসেবে দলে ভূমিকা রেখে গেছেন। ডানহাতে ব্যাটিং কর্মে অগ্রসর হতেন। এছাড়াও, ডিপ অঞ্চলে দূর্দান্ত ফিল্ডারের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিলেন। ১৮৭০-এর দশকে ইংল্যান্ডের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছিলেন। লড়াকু মানসিকতার অধিকারী ব্যাটসম্যান হিসেবে তাঁর বেশ সুনাম ছিল। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে…

  • | |

    ফাফ ডু প্লিসি

    ১৩ জুলাই, ১৯৮৪ তারিখে প্রিটোরিয়ায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার। মূলতঃ মাঝারিসারির ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলছেন। ডানহাতে ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি লেগ-ব্রেক বোলিংয়ে পারদর্শী। দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে সকল স্তরের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন। দক্ষিণ আফ্রিকা দলের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেছেন। ৫ ফুট ১১ ইঞ্চি উচ্চতার অধিকারী ফাফ ডু প্লিসি প্রিটোরিয়াভিত্তিক অ্যাফিস বয়েজ স্কুলে অধ্যয়ন করেছেন। ২০০৩-০৪ মৌসুম থেকে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন…

  • | |

    রবি হার্ট

    ২ ডিসেম্বর, ১৯৭৪ তারিখে ওয়াইকাতোর হ্যামিল্টনে জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ও প্রশাসক। দলে তিনি মূলতঃ উইকেট-রক্ষক হিসেবে খেলতেন। এছাড়াও, ডানহাতে ব্যাটিং করতেন। ২০০০-এর দশকে নিউজিল্যান্ডের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন। সহোদর ও নিউজিল্যান্ডীয় টেস্ট স্পিনার ম্যাথু হার্টের চেয়ে দুই বছরের ছোট তিনি। ১৯৯২-৯৩ মৌসুম থেকে ২০০৩-০৪ মৌসুম পর্যন্ত সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান রাখেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর…

  • |

    জেপি ডুমিনি

    ১৪ এপ্রিল, ১৯৮৪ তারিখে কেপ প্রভিন্সের স্ট্রান্ডফন্তেইন এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার। মূলতঃ অল-রাউন্ডার হিসেবে খেলেছেন। বামহাতে ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি ডানহাতে অফ-ব্রেক বোলিংয়ে পারদর্শীতা দেখিয়েছেন। দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে সকল স্তরের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন। ‘জেপি’ ডাকনামে পরিচিতি পান। ১.৭০ মিটার উচ্চতার অধিকারী। জন ডুমিনি ও জুনিটা বার্গম্যান দম্পতির সন্তান তিনি। কিশোর বয়সেই প্রতিশ্রুতিশীলতার স্বাক্ষর রাখেন। মাঠের সর্বত্র শট…

  • | |

    উইয়ান মুল্ডার

    ১৯ ফেব্রুয়ারি, ১৯৯৮ তারিখে গটেংয়ে জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার। মূলতঃ অল-রাউন্ডার হিসেবে দলে ভূমিকা রাখছেন। ডানহাতে ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি ডানহাতে মিডিয়াম বোলিংয়ে পারদর্শীতা প্রদর্শন করে চলছেন। দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে সকল স্তরের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন ও অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেছেন। ‘উইয়ান’ ডাকনামে পরিচিত। সেন্ট স্টিথিয়ান্সে অধ্যয়ন করেছেন। কলেজে অধ্যয়নকালে ক্রিকেট খেলতে শুরু করেন। কিশোর অবস্থায় যুবদের ক্রিকেটে অংশ…

  • |

    মার্কো জানসেন

    ১ মে, ২০০০ তারিখে ক্লার্কসডর্প এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার। মূলতঃ বোলিংয়ের দিকেই অধিক জোর দিয়ে থাকেন। বামহাতে মিডিয়াম-ফাস্ট বোলিংয়ের পাশাপাশি ডানহাতে কার্যকর ব্যাটিংশৈলী প্রদর্শনে অগ্রসর হন। দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে সকল স্তরের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন। লায়েরস্কুল গুডকপে অধ্যয়ন করেছেন। ৬ ফুট ৮ ইঞ্চি (২.০৩ মিটার) উচ্চতার অধিকারী। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট জগতে নয় মাসের মধ্যে অবিশ্বাস্যভাবে তাঁর উত্থান…