১১ জুন, ১৯৪২ তারিখে গল এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার, কোচ ও প্রশাসক। মূলতঃ অল-রাউন্ডার হিসেবে দলে ভূমিকা রেখেছিলেন। ডানহাতে ব্যাটিং করতেন। এছাড়াও, লেগ-ব্রেক গুগলি বোলিংয়ে পারদর্শী ছিলেন। শ্রীলঙ্কা দলের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেছেন।

‘ডি. এস.’ নামে অধিক পরিচিত ছিলেন। সেরা অল-রাউন্ডারের মর্যাদাপ্রাপ্ত হন। ডানহাতে প্রকৃত মানসম্পন্ন লেগ-স্পিন ও ডানহাতে প্রতিদ্বন্দ্বিতাধর্মী ব্যাটিংয়ে লিপ্ত হতেন। খেলোয়াড়ী জীবনের যাত্রা শুরু করেন ব্যাটসম্যান হিসেবে। তবে, পরবর্তীকালে লেগ-স্পিন বোলিংয়ের দিকে ঝুঁকে পড়েন।

১৯৬৬-৬৭ মৌসুম থেকে ১৯৯৪-৯৫ মৌসুম পর্যন্ত সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান রাখেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর শ্রীলঙ্কান ক্রিকেটে মোরাতুয়া এবং ব্লুমফিল্ড ক্রিকেট ও অ্যাথলেটিক ক্লাবের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। এছাড়াও, শ্রপশায়ার দলের পক্ষে খেলতেন।

১৯৭৫ থেকে ১৯৮৫ সময়কালে শ্রীলঙ্কার পক্ষে সর্বমোট ১২ টেস্ট ও ৪১টি ওডিআইয়ে অংশ নিয়েছেন। ইংল্যান্ডে অনুষ্ঠিত ১৯৭৫ সালের বিশ্বকাপ ক্রিকেট প্রতিযোগিতার উদ্বোধনী আসরে অংশ নেন। ৭ জুন, ১৯৭৫ তারিখে ম্যানচেস্টারে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ওডিআইয়ে অংশ নেয়ার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট অঙ্গনে প্রবেশ করেন।

১৯৮১-৮২ মৌসুমে নিজ দেশে কিথ ফ্লেচারের নেতৃত্বাধীন এমসিসি দলের মুখোমুখি হন। ১৭ ফেব্রুয়ারি, ১৯৮২ তারিখে কলম্বোর পিএসএসে অনুষ্ঠিত সফররত ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের একমাত্র টেস্টে অংশ নেন। অন্য সকলের সাথে তাঁর একযোগে টেস্ট অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। এরফলে, শ্রীলঙ্কার টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেয়ার গৌরব অর্জন করেন। ৩৯ বছর বয়সে টেস্টে প্রতিনিধিত্ব করে শ্রীলঙ্কার বয়োজ্যেষ্ঠ টেস্ট ক্রিকেটারের সম্মাননা লাভ করেন। ৩ ও ১ রান সংগ্রহ করেছিলেন। এছাড়াও, ৩/৫৪ ও ০/৩৮ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। তবে, জন এম্বুরি’র অসাধারণ বোলিংয়ের কল্যাণে সফরকারীরা ৭ উইকেটে জয় তুলে নেয়।

১৯৮২ সালে ফয়সালাবাদে স্বাগতিক পাকিস্তানের বিপক্ষে শ্রীলঙ্কার প্রথম বোলার হিসেবে পাঁচ-উইকেট লাভের কৃতিত্ব প্রদর্শন করেন। খেলায় সবমিলিয়ে নয় উইকেট দখল করেছিলেন। দলের নিয়মিত অধিনায়ক দিলীপ মেন্ডিস আঘাতের কারণে ১৯৮২-৮৩ মৌসুমে নিউজিল্যান্ড গমনে অপারগতা প্রকাশ করেন। ফলশ্রুতিতে, দুই-টেস্ট নিয়ে গঠিত সিরিজে দলের অধিনায়কত্ব করেছিলেন। এ সফরে দুইটি অর্ধ-শতরানের ইনিংস খেলেন। এছাড়াও, আঁটোসাটো বোলিং করেন। পিচে তাঁর বোলিং কার্যকর না হলেও তিন উইকেট লাভ করেছিলেন।

১১ মার্চ, ১৯৮৩ তারিখে ওয়েলিংটনে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় ও চূড়ান্ত টেস্টে অংশ নেন। অধিনায়কের দায়িত্বে থেকে ব্যক্তিগত সফলতার ছাঁপ রাখেন। প্রথম ইনিংসে ব্যক্তিগত পূর্বতন সর্বোচ্চ ৫২ রান অতিক্রম করেন। ব্যাট হাতে নিয়ে ৬১ ও ০ রান সংগ্রহ করেন। এছাড়াও, ১/১৩ ও ১/২০ বোলিং বিশ্লেষণসহ দুইটি ক্যাচ তালুবন্দী করেছিলেন। সফরকারীরা ৬ উইকেটে পরাজিত হলে ২-০ ব্যবধানে সিরিজ খোঁয়ায়। প্রসঙ্গতঃ এটিই নিউজিল্যান্ডের প্রথমবারের মতো উপর্যুপরী দ্বিতীয় টেস্ট জয় ছিল।

১৯৮৪ সালে দিলীপ মেন্ডিসের নেতৃত্বাধীন শ্রীলঙ্কান দলের সদস্যরূপে ইংল্যান্ড গমন করেন। ২৩ আগস্ট, ১৯৮৪ তারিখে লর্ডসে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের একমাত্র টেস্টে অংশ নেন। ২/৮৫ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। তবে, সিদাথ ওয়েতিমুনি’র অসাধারণ ব্যাটিং দৃঢ়তায় খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ায়। পরবর্তীতে, এটিই তাঁর সর্বশেষ টেস্টে পরিণত হয়।

সবমিলিয়ে বিশ্বকাপ ক্রিকেট প্রতিযোগিতার তিনটি আসরের সাথে জড়িত ছিলেন। বিশ্বকাপ ক্রিকেট প্রতিযোগিতার পর ইংল্যান্ডের মাইনর কাউন্টিজ চ্যাম্পিয়নশীপে পেশাদারী পর্যায়ে খেলার পথ সুগম হয়। লিঙ্কনশায়ার ও শ্রপশায়ারের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। সেন্ট্রাল ল্যাঙ্কাশায়ার লীগে মিডলস্টোনের পক্ষে ১৯৮২ সালে ১১৪ উইকেট ও ৯৫১ রান সংগ্রহ করেছিলেন।

এছাড়াও, ইংল্যান্ডে অনুষ্ঠিত ১৯৭৯ সালের বিশ্বকাপ ক্রিকেট প্রতিযোগিতার দ্বিতীয় আসরে অংশ খেলেন। এ প্রতিযোগিতায় ভারতের বিপক্ষে ৪৭ রানের দলের বিজয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। দিলীপ বেঙ্গসরকার ও মহিন্দর অমরনাথের উইকেটসহ ৩/২৯ বোলিং পরিসংখ্যান গড়েছিলেন। ১৯৭৯ সালে গিল্ডফোর্ডে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বিপক্ষে শ্রীলঙ্কা একাদশের সদস্যরূপে ব্যক্তিগত সেরা ৮/৪৬ বোলিং পরিসংখ্যান গড়েন।

১৯৮৫ সালে অস্ট্রেলিয়া গমন করেন। এ সফরের পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর গ্রহণের কথা ঘোষণা করেন। তবে, ৪৯ বছর বয়স অবদি গ্রেড ক্রিকেটে খেলা চালিয়ে যান। ক্রিকেট ও প্রশাসনের বিভিন্ন অবস্থানে থাকেন। ২০০৯ থেকে ২০১১ সময়কালে শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এ পর্যায়ে স্বজনপ্রীতি ও দূর্নীতির অভিযোগে বিতর্কের কবলে পড়েন। ২০১৫ সালের বিশ্বকাপ ক্রিকেট প্রতিযোগিতার আয়োজনকে ঘিরে হাম্বানতোতা ও পাল্লেকেলে স্টেডিয়ামের অবকাঠামো নির্মাণে বড় অঙ্কের আর্থিক অসঙ্গতির চিত্র লক্ষ্য করা যায়। এ প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নে বোর্ডকে ব্যাপক অর্থ ঋণ গ্রহণ করতে হয়। পোল্যান্ডে রাষ্ট্রদূত হিসেবে নিযুক্তি লাভ করেন।

Similar Posts

  • | |

    বিরাট কোহলি

    ৫ নভেম্বর, ১৯৮৮ তারিখে দিল্লিতে জন্মগ্রহণকারী বিখ্যাত ক্রিকেটার। মূলতঃ শীর্ষসারির ব্যাটসম্যান হিসেবে ভূমিকা রাখছেন। ডানহাতে ব্যাটিং করেন। এছাড়াও, ডানহাতে মিডিয়াম বোলিংয়ে পারদর্শী। ভারতের পক্ষে সকল স্তরের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন ও দলের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেছেন। ভীতিহীন, মারকুটে প্রতিভাবান ডানহাতি ব্যাটসম্যান। নিজ প্রজন্মের সময়কালে সেরা ব্যাটসম্যান হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছেন। সন্দেহাতীতভাবে ভারতের অন্যতম সেরা ক্রিকেটারদের…

  • |

    লাল সিং

    ১৬ ডিসেম্বর, ১৯০৯ তারিখে মালয়ের কুয়ালালামপুরে জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ছিলেন। মূলতঃ ব্যাটসম্যান হিসেবে দলে ভূমিকা রেখেছিলেন। ডানহাতে ব্যাটিং করতেন। ১৯৩০-এর দশকে ভারতের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছিলেন। ৫ ফুট ৭ ইঞ্চি উচ্চতার অধিকারী ছিলেন। ১৯৩১-৩২ মৌসুম থেকে ১৯৩৫-৩৬ মৌসুম পর্যন্ত সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন অতিবাহিত করেছিলেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর ভারতীয় ক্রিকেটে হিন্দু ও সাউদার্ন পাঞ্জাবের প্রতিনিধিত্ব…

  • |

    চার্লস ম্যারিয়ট

    ১৪ সেপ্টেম্বর, ১৮৯৫ তারিখে ল্যাঙ্কাশায়ারের হিটন মুর এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ছিলেন। মূলতঃ বোলার হিসেবে খেলতেন। লেগ-ব্রেক গুগলি বোলিংয়ের পাশাপাশি ডানহাতে নিচেরসারিতে ব্যাটিং করতেন। ১৯৩০-এর দশকে ইংল্যান্ডের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছিলেন। জন্ম নিবন্ধনে তিনি চার্লি স্টোওয়েল ম্যারিয়ট নামে পরিচিত। ‘ফাদার’ ডাকনামে পরিচিতি লাভ করেন। নিজের সময়কালে অন্যতম সেরা লেগ-ব্রেক ও গুগলি বোলার হিসেবে পরিচিতি লাভ…

  • | | | | |

    অজিত ওয়াড়েকর

    ১ এপ্রিল, ১৯৪১ তারিখে তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের মহারাষ্ট্রের বোম্বেতে জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার, কোচ, রেফারি ও প্রশাসক ছিলেন। মূলতঃ ব্যাটসম্যান হিসেবে দলে ভূমিকা রেখেছিলেন। বামহাতে ব্যাটিং করতেন। এছাড়াও, বামহাতে মিডিয়াম কিংবা স্লো লেফট-আর্ম অর্থোডক্স বোলিংয়ে পারদর্শী ছিলেন। ভারত দলের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেন। লিকলিকে গড়নের অধিকারী হলেও বলে সপাটে আঘাত করতে পারতেন। নিজস্ব ব্যাটিং কৌশল গ্রহণে অগ্রসর…

  • | |

    কেন মিউলম্যান

    ৫ সেপ্টেম্বর, ১৯২৩ তারিখে ভিক্টোরিয়ার মেলবোর্নে জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ও কোচ ছিলেন। মূলতঃ উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলতেন। ডানহাতে ইনিংস উদ্বোধনের পাশাপাশি লেগ-ব্রেক বোলিং করতে পারতেন। ১৯৪০-এর দশকে অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন। ১৯৪৫-৪৬ মৌসুম থেকে ১৯৬০-৬১ মৌসুম পর্যন্ত সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন অতিবাহিত করেছেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটে ভিক্টোরিয়া ও ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়া দলের প্রতিনিধিত্ব…

  • |

    কেএল রাহুল

    ১৮ এপ্রিল, ১৯৯২ তারিখে কর্ণাটকের ব্যাঙ্গালোরে জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার। মূলতঃ উইকেট-রক্ষক-ব্যাটসম্যান হিসেবে দলে ভূমিকা রাখছেন। ডানহাতে ব্যাটিং উদ্বোধনে নামেন। ভারতের পক্ষে সকল স্তরের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন। ৫ ফুট ১১ ইঞ্চি (১.৮০ মিটার) উচ্চতার অধিকারী। ২০১০-১১ মৌসুম থেকে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান রাখছেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর ভারতীয় ক্রিকেটে কর্ণাটক ও দক্ষিণাঞ্চলের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। এছাড়াও, ব্যাঙ্গালোর ব্রিগেডিয়ার্স,…