১২ ডিসেম্বর, ১৯৮৪ তারিখে পাঞ্জাবের রাওয়ালপিন্ডিতে জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার। মূলতঃ বোলারের ভূমিকায় অবতীর্ণ হতেন। বামহাতে মিডিয়াম-ফাস্ট বোলিং করতেন। এছাড়াও, বামহাতে নিচেরসারিতে কার্যকর ব্যাটিংশৈলী প্রদর্শনে অগ্রসর হতেন। পাকিস্তানের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন।
৬ ফুট ৫ ইঞ্চি (১.৯৬ মিটার) উচ্চতার অধিকারী। পাঁচজন বোলারদের অন্যতম হিসেবে একই খেলায় পেস ও স্পিন বোলিং করেছিলেন। ভারতের বিপক্ষে টেস্টে স্পিন বোলিং করেছিলেন। ভুল পায়ে বোলিংয়ের কারণে পরিচিতি পেয়েছেন। ২০০৪-০৫ মৌসুম থেকে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান রাখছেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর পাকিস্তানী ক্রিকেটে ফেডারেল এরিয়াজ, খান রিসার্চ ল্যাবরেটরিজ, রাওয়ালপিন্ডি ও জারাই তারাকিয়াতি ব্যাংক লিমিটেড, অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটে সাউথ অস্ট্রেলিয়া এবং ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে হ্যাম্পশায়ারের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। এছাড়াও, এডমন্টন রয়্যালস, রাজস্থান রয়্যালস ও সিলেট রয়্যালসের পক্ষে খেলেছেন।
লিস্ট-এ ক্রিকেটে করাচী কিংস, লায়ন্স, রাওয়ালপিন্ডি র্যামস, ফেডারেল এরিয়াজ লিওপার্ডস, ক্যান্ডি তুস্কার্স এবং ক্যারিবীয় প্রিমিয়ার লীগে সেন্ট কিটস ও নেভিস প্যাট্রিয়টস, সেন্ট লুসিয়া জুকস ও গায়ানা আমাজন ওয়ারিয়র্সের পক্ষে খেলেছেন। পাকিস্তান সুপার লীগে কোয়েটা গ্ল্যাডিয়েটর্স ও লাহোর কালান্দার্সের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। এরপর, মুলতান সুলতান্সে চলে যান।
অক্টোবর, ২০০৪ সালে রাওয়ালপিন্ডির সদস্যরূপে পেশাওয়ারের বিপক্ষে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে। ঐ খেলায় তিন উইকেট পেয়েছিলেন। নিজস্ব দ্বিতীয় খেলায় সকলকে আশ্চর্য্যান্বিত করে অপরাজিত ৯৭ রানের পাশাপাশি আবারও তিন উইকেট পেয়েছিলেন। ২০০৭ সালে পাকিস্তান একাডেমির সদস্যরূপে বাংলাদেশ গমন করেন। অল-রাউন্ড ক্রীড়াশৈলীর স্বাক্ষর রাখেন। নিজ দেশে অস্ট্রেলিয়া ‘এ’ দলের বিপক্ষে খেলার জন্যে ওডিআই সিরিজে তাঁকে রাখা হয়। ফলশ্রুতিতে, জাতীয় দল নির্বাচকমণ্ডলীর দৃষ্টি আকর্ষণে সক্ষম হন।
২০০৭ থেকে ২০১৭ সময়কালে পাকিস্তানের পক্ষে দুইটিমাত্র টেস্ট, ৬২টি ওডিআই ও ৫৭টি টি২০আইয়ে অংশ নিয়েছেন। আইসিসি বিশ্ব টি২০ প্রতিযোগিতার উদ্বোধনী আসরে শোয়েব আখতারের পরিবর্তে তাঁকে দলের সদস্য করা হয়। ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০০৭ তারিখে ডারবানে অনুষ্ঠিত ভারতের বিপক্ষে নিজস্ব প্রথম টি২০আই খেলায় অংশ নেন। নির্ধারিত ৪ ওভার থেকে এক উইকেট পান। সব মিলিয়ে ঐ প্রতিযোগিতায় ৬ উইকেট দখল করেছিলেন। ঐ প্রতিযোগিতার পর টেস্ট দলে ঠাঁই না পেলেও দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ওডিআই সিরিজ খেলার জন্যে রাখা হয়। ১৮ অক্টোবর, ২০০৭ তারিখে লাহোরে অনুষ্ঠিত সফররত দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে প্রথমবারের মতো ওডিআই খেলেন। ৫২ রান খরচ করে মাত্র এক উইকেট পেয়েছিলেন।
ওডিআই অভিষেকের পর ২০০৭-০৮ মৌসুমে শোয়েব মালিকের নেতৃত্বাধীন পাকিস্তানী দলের সদস্যরূপে ভারত গমনার্থে মনোনীত হন। আট উইকেট দখল করেন। ২২ নভেম্বর, ২০০৭ তারিখে দিল্লির ফিরোজ শাহ কোটলায় অনুষ্ঠিত স্বাগতিক ভারতের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম টেস্টে তাঁর অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। খেলায় তিনি তিন উইকেট পেলেও স্বাগতিক দল অনিল কুম্বলে’র অসাধারণ অল-রাউন্ড ক্রীড়া নৈপুণ্যে ৬ উইকেটে জয়লাভ করে।
একই সফরের ৩০ নভেম্বর, ২০০৭ তারিখে কলকাতার ইডেন গার্ডেন্সে অনুষ্ঠিত সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে অংশ নেন। পিচ ফাস্ট বোলারদের প্রতিকূলে চলে যায়। ফলশ্রুতিতে, তিনি নতুন কিছু করার সিদ্ধান্ত নেন। কয়েক ওভার বোলিংয়ের পর লেফট-আর্ম অর্থোডক্স স্পিন করেন ও বোলিংয়ে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করতে থাকেন। ২/১৬৬ ও ০/৪১ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। এছাড়াও, একবার ব্যাটিং করার সুযোগ পেয়ে অনিল কুম্বলে’র বলে রাহুল দ্রাবিড়ের হাতে শূন্য রানে বিদেয় নেন। পাশাপাশি একটি ক্যাচ তালুবন্দী করেছেন। ওয়াসিম জাফরের ব্যাটিংশৈলীতে খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ালে তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে স্বাগতিকরা এগিয়ে যায়। দুই টেস্টে অংশ নিয়ে ঐ সিরিজে সব মিলিয়ে ৫ উইকেট পেয়েছিলেন। পরবর্তীতে, এটিই তাঁর সর্বশেষ টেস্টে পরিণত হয়।
জুন, ২০০৮ সালে এশিয়া কাপ প্রতিযোগিতায় হংকংয়ের বিপক্ষে পাকিস্তানের প্রথম খেলায় অংশ নেন। অষ্টম উইকেট জুটিতে ফায়াদ আলমের সাথে ১০০ রানের জুটি গড়েছিলেন। ৮৯ বল মোকাবেলান্তে ৫৫ রান তুলে নিজস্ব প্রথম অর্ধ-শতকের সন্ধান পান। পরের খেলায় শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে নিজস্ব প্রথম পাঁচ-উইকেট লাভ করেন। খেলায় তিনি নির্ধারিত ১০ ওভার থেকে ৫/৪৮ বোলিং পরিসংখ্যান দাঁড় করিয়েছিলেন।
২০০৮ সালে আইপিএলের উদ্বোধনী আসরে রাজস্থান রয়্যালসের পক্ষে অভিষেক ঘটে। সোয়াই মানসিংহ স্টেডিয়ামে চেন্নাই সুপার কিংসের বিপক্ষে তৎকালীন সেরা ৬/১৪ বোলিং পরিসংখ্যান গড়েন। পরবর্তীতে, তাঁর এ রেকর্ডটুকু ২০১১ সালে মালয়েশীয় অরুল সুপ্পিয়া ৬/৫ বোলিং পরিসংখ্যান গড়ে নিজের করে নেন। দূর্দান্ত ক্রীড়া নৈপুণ্য প্রদর্শনের স্বীকৃতিস্বরূপ পার্পল ক্যাপ লাভ করেন। এছাড়াও, ২০০৯ সালের ইংরেজ কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশীপে সারে দলের প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন।
২০০৯ সালের আইসিসি টি২০ বিশ্বকাপ প্রতিযোগিতার পর আঘাতের কবলে পড়েন। তবে, পুণঃপুণঃ হাঁটুর আঘাতের কারণে অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন পড়ে। হাঁটুর আঘাতের কারণে এক বছর ক্রিকেট খেলায় অংশগ্রহণ করা থেকে বিরত থাকেন। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে খেলায় ফিরে আসেন। তবে, পুরোপুরিভাবে সুস্থ না হবার ফলে দল নির্বাচকমণ্ডলী তাঁকে বাদ দেয়। দূর্ভাগ্যজনকভাবে প্রতিশ্রুতিশীল খেলোয়াড়ী জীবন শুরু করলেও আঘাতের কারণে তাঁর এ সম্ভাবনা তিরোহিত হয়ে পড়ে। ব্যক্তিগত জীবনে বিবাহিত। কমল খান নাম্নী এক রমণীর পাণিগ্রহণ করেন।
