৫ মে, ১৯২৭ তারিখে কেপ প্রভিন্সের অটশুর্ন এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ছিলেন। মূলতঃ উইকেট-রক্ষকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হতেন। এছাড়াও, বামহাতে উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলতেন। ১৯৬০-এর দশকে দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছিলেন।
জন্মসনদে তাঁকে সিডনি ও’লিনস্কি নামে পরিচিতি ঘটানো হয়েছিল। ১৯৪৫-৪৬ মৌসুম থেকে ১৯৬৫-৬৬ মৌসুম পর্যন্ত সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন অতিবাহিত করেছেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর দক্ষিণ আফ্রিকান ক্রিকেটে ট্রান্সভাল ও ওয়েস্টার্ন প্রভিন্স এবং ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে কেন্টের প্রতিনিধিত্ব করেছেন।
দ্বিতীয় একাদশে দারুণ খেলে ১৯৫১ থেকে ১৯৫৪ সাল পর্যন্ত কেন্টের পক্ষে চার মৌসুম খেলেন। তন্মধ্যে, ১৯৫২ সালে সহস্র রানের মাইলফলক স্পর্শ করেন। ঐ মৌসুমেই নিজের সেরা ইনিংস খেলেন। বেডসার যমজ ভ্রাতৃদ্বয়, টনি লক, জিম লেকার ও স্টুয়ার্ট সারিজের বল মোকাবেলা করে ১১১ রানে অপরাজিত ছিলেন। তাঁর উইকেট পেতে অ্যালেক বেডসার প্রথমবারের মতো রাউন্ড দি উইকেট বরাবর বোলিং করেছিলেন। দলটিতে ২৭ খেলায় অংশ নিয়ে আটটি অর্ধ-শতক ও একটি শতক হাঁকিয়েছিলেন। ১৯৫১ সালে দক্ষিণ আফ্রিকায় ফিরে এসে ট্রান্সভালের সাথে যুক্ত হন ও ১৯৬৫-৬৬ মৌসুম পর্যন্ত খেলেন। দূর্দান্ত গ্রীষ্মকাল অতিবাহিত করার স্বীকৃতিস্বরূপ ১৯৬০ সালে সাউথ আফ্রিকান ক্রিকেট কর্তৃক বর্ষসেরা ক্রিকেটারের সম্মাননাপ্রাপ্ত হন।
১৯৬০ থেকে ১৯৬১ সাল পর্যন্ত সময়কালে দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে সাতটিমাত্র টেস্টে অংশ নিয়েছিলেন। ১৯৬০ সালে জ্যাকি ম্যাকগ্লিউ’র নেতৃত্বাধীন স্প্রিংবকের সাথে ইংল্যান্ড গমনের সুযোগ পান। পাঁচ-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজের প্রত্যেকটিতে অংশ নিয়ে দুইটি অর্ধ-শতরানের ইনিংস খেলেন। তন্মধ্যে, ফ্রেড ট্রুম্যান ও ব্রায়ান স্ট্যাদামের বোলিং মোকাবেলা করে সাড়ে পাঁচ ঘণ্টা সময় নিয়ে ৯৮ রান তুলেছিলেন। এছাড়াও, নিয়মিত উইকেট-রক্ষক জন ওয়েট আঙ্গুলে আঘাত পেলে তিনি উইকেট-রক্ষণে অগ্রসর হয়েছিলেন।
৯ জুন, ১৯৬০ তারিখে বার্মিংহামে অনুষ্ঠিত সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। পম পম ফেলোজ-স্মিথ ও জিওফ গ্রিফিনের সাথে তাঁর একযোগে টেস্ট অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। খেলায় তিনি ৪২ ও ১২ রান সংগ্রহসহ একটি ক্যাচ তালুবন্দী করেছিলেন। সফরকারীরা ১০০ রানে পরাজিত হলে পাঁচ-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে পিছিয়ে পড়ে।
একই সফরের ৭ জুলাই, ১৯৬০ তারিখে নটিংহামের ট্রেন্ট ব্রিজে অনুষ্ঠিত সিরিজের তৃতীয় টেস্টে অংশ নেন। ব্যক্তিগত সফলতার ছাঁপ রাখেন। দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যক্তিগত পূর্বতন সর্বোচ্চ ৪২ রান অতিক্রম করেন। খেলায় তিনি ১ ও ৯৮ রান সংগ্রহসহ দুইটি ক্যাচ তালুবন্দী করেছিলেন। স্বাগতিকরা ৮ উইকেটে জয়লাভ করলে পাঁচ-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে ৩-০ ব্যবধানে এগিয়ে যায়।
ঐ সফরটি বাদে বাকী দুই টেস্ট ১৯৬১-৬২ মৌসুমে নিজ দেশে জন রিডের নেতৃত্বাধীন কিউই দলের বিপক্ষে খেলেছিলেন। ৮ ডিসেম্বর, ১৯৬১ তারিখে ডারবানে অনুষ্ঠিত সফররত নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। খেলায় তিনি ব্যাট হাতে নিয়ে ৮ ও ৬ রান সংগ্রহ করেন। এছাড়াও, একটি ক্যাচ তালুবন্দী করেছিলেন। সফরকারী দল ৩০ রানে পরাজিত হলে পাঁচ-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে পিছিয়ে পড়ে।
একই সফরের ২৬ ডিসেম্বর, ১৯৬১ তারিখে জোহানেসবার্গে অনুষ্ঠিত সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে অংশ নেন। ব্যাট হাতে নিয়ে ১৭ ও ৫* রান সংগ্রহ করেছিলেন। খেলাটি ড্রয়ে পরিণত হলে পাঁচ-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে স্বাগতিকরা ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে যায়। পরবর্তীতে, এটিই তাঁর সর্বশেষ টেস্টে পরিণত হয়।
খুব সম্ভবতঃ হুমকির কারণে তাঁর খেলোয়াড়ী জীবন ব্যাহত হয়েছিল। দলের সদস্যরূপে মনোনয়নের পর বিবাহ-বিচ্ছেদ ঘটে। টেস্টগুলো থেকে ২৭ গড়ে ২৯৭ রান তুলেছিলেন। তবে, প্রথম-শ্রেণীর খেলাগুলোয় চার শতক সহযোগে ৩৫.৬২ গড়ে ৪৫২৫ রান সংগ্রহ করেছিলেন।
ক্রিকেটের পাশাপাশি ফুটবল খেলায়ও দক্ষতার স্বাক্ষর রাখেন। ১৯৪৭ সালে দক্ষিণ আফ্রিকা ফুটবল দলের সদস্যরূপে স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে একটি খেলায় অংশ নিয়ে সংবাদ শিরোনামে চলে আসেন। এছাড়াও, শৌখিন গল্ফার ছিলেন। ঐ সফরে ব্রিসবেনের ভিক্টোরিয়া পার্কে গল্ফ খেলেন। দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে আসা চার্লটন অ্যাথলেটিকের ব্যবস্থাপক জিমি সিড তাঁকে পেশাদার ফুটবলার হিসেবে যুক্ত করেন। এক দশক দলটিতে খেলে ১৯৪ খেলা থেকে ৩৩ গোল করেছিলেন।
১১ ডিসেম্বর, ২০১৬ তারিখে র্যান্ডবার্গে প্রায় একাকীত্বে ভুগে ৮৯ বছর ২২০ দিন বয়সে তাঁর দেহাবসান ঘটে।
