Skip to content

শোয়েব আখতার

1 min read

১৩ আগস্ট, ১৯৭৫ তারিখে পাঞ্জাবের রাওয়ালপিন্ডির পার্বত্যসঙ্কুল এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার। মূলতঃ বোলার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। ডানহাতে ফাস্ট বোলিং করতেন। এছাড়াও, ডানহাতে নিচেরসারিতে ব্যাটিংয়ে নামতেন। পাকিস্তানের পক্ষে সকল স্তরের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছিলেন।

নব্বুইয়ের দশকের শেষদিকে আবির্ভাব ঘটে। ক্রিকেটের ইতিহাসের দ্রুততম বোলিং করার কারণে সবিশেষ পরিচিতি পান। আধুনিক যুগে নিঃসন্দেহে দ্রুততম বোলারের মর্যাদাপ্রাপ্ত হয়েছেন। অনেক ব্যাটসম্যানকেই পেস ও মারাত্মক বাউন্সারে সন্ত্রস্ত করে রেখেছিলেন। ইমরান খান, ওয়াসিম আকরাম ও ওয়াকার ইউনুসের সহজাত উত্তরাধিকারী ছিলেন।

শৈশবকালেই দূর্বলতর হাঁটু নিয়ে চলাফেরা করতে বেশ কষ্ট করতে হতো। খেলোয়াড়ী জীবনেও তা বহমান ছিল। পাহাড়ী এলাকায় বোলিং করার ফলে মাংসপেশীর স্ফীতি ঘটে। এরফলে, তা তাঁর শারীরিক গঠনকে শৈশবেই সুগঠিত করে তুলে।

২০০৩ সালের আইসিসি বিশ্বকাপ ক্রিকেট প্রতিযোগিতার গ্রুপ পর্বের খেলায় ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ঘণ্টায় ১৬১.৩ কিলোমিটার গতিবেগে বোলিং করেছিলেন। ঘণ্টাপ্রতি গড়পড়তা ১৪৫ থেকে ১৫০ কিলোমিটার গতিবেগে বোলিং করেছেন। ‘রাওয়ালপিন্ডি এক্সপ্রেস’ ডাকনামে পরিচিতি লাভ করেছেন। কেবলই গতির ঝড় তুলতে দ্রুতগতিতে বোলিং করে গেছেন।

১৯৯৪-৯৫ মৌসুম থেকে ২০০৮-০৯ মৌসুম পর্যন্ত সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান রাখেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর পাকিস্তানী ক্রিকেটে পাকিস্তান এগ্রিকালচার ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক, খান রিসার্চ ল্যাবরেটরিজ, পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্স ও রাওয়ালপিন্ডি; বাংলাদেশী ক্রিকেটে চট্টগ্রাম বিভাগ, ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে ডারহাম, সমারসেট, সারে ও ওরচেস্টারশায়ারের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। এছাড়াও, এশিয়া একাদশ, আইসিসি বিশ্ব একাদশ, ইসলামাবাদ লিওপার্ডস ও কলকাতা নাইট রাইডার্সের পক্ষে খেলেছেন।

১৯৯৭ থেকে ২০১১ সময়কালে পাকিস্তানের পক্ষে সর্বমোট ৪৬ টেস্ট, ১৬৩টি ওডিআই ও ১৫টি টি২০আইয়ে অংশ নিয়েছেন। পাকিস্তানের পক্ষে সব মিলিয়ে তিন স্তরের ক্রিকেটে চৌদ্দ বছর খেলেছেন। ১৯৯৬ সালে টরন্টোয় অনুষ্ঠিত সাহারা কাপে ভারতের বিপক্ষে অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হবার কথা ছিল। তবে, দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গসহ দূর্বল ক্রীড়াশৈলী প্রদর্শনের কারণে তাঁকে দেশে ফেরৎ পাঠিয়ে দেয়া হয়েছিল। এরফলে, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক ঘটার জন্যে এক বছরের অধিক সময় অপেক্ষা করতে হয়।

১৯৯৭ সালে পাকিস্তান ‘এ’ দলের সদস্যরূপে ইংল্যান্ড গমন করেন। মাঠ ও মাঠের বাইরে প্রভাব ফেলেন। ঐ সফরে শেষে পাকিস্তানের ব্যবস্থাপক বিশৃঙ্খলাজনিত ভূমিকার কথা প্রতিবেদন আকারে প্রকাশ করেন। অবশেষে ১৯৯৭-৯৮ মৌসুমে নিজ দেশে কোর্টনি ওয়ালশের নেতৃত্বাধীন ক্যারিবীয় দলের বিপক্ষে খেলার জন্যে তাঁকে পুণরায় দলে ফিরিয়ে আনা হয়। ২৯ নভেম্বর, ১৯৯৭ তারিখে নিজ শহর রাওয়ালপিন্ডিতে অনুষ্ঠিত সফররত ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে তাঁর অভিষেক ঘটে। অভিষেক পর্বটি তেমন ভালো হয়নি। সাধারণমানের ক্রীড়াশৈলী প্রদর্শন করেন ও মাত্র দুই উইকেট দখল করেছিলেন। তবে, ইনজামাম-উল-হকের অসাধারণ শতকের কল্যাণে স্বাগতিকরা ইনিংস ও ২৯ রানের ব্যবধানে জয় পেয়ে তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে যায়।

১৯৯৮ সালে পাকিস্তান দলের সাথে দক্ষিণ আফ্রিকা গমন করেন। এ সফরেই নিজেকে প্রথম মেলে ধরার প্রয়াস চালান ও বড় ধরনের ভূমিকা রাখেন। হাঁটুতে আঘাত নিয়েই খেলতে নামেন। দারুণ পেস বোলিং করেন। ফেব্রুয়ারি, ১৯৯৮ সালে অনুষ্ঠিত ঐ টেস্টে ৫/৪৩ বোলিং পরিসংখ্যান গড়ে দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে প্রথম জয়ে বিরাট ভূমিকা রাখেন।

১৯৯৯ সালের শুরুতে বিশ্বকাপ ক্রিকেট প্রতিযোগিতার পূর্বে ভারতের বিপক্ষে উৎসাহব্যঞ্জক অবদান রাখেন। স্বাগতিক ভারতের বিপক্ষে নিজস্ব নবম টেস্টে প্রথমবারের মতো নিজেকে মেলে ধরতে সচেষ্ট হন। কলকাতার ইডেন গার্ডেন্সে অনুষ্ঠিত এশিয়ান টেস্ট চ্যাম্পিয়নশীপে আট উইকেট দখল করেন। এক পর্যায়ে স্বাগতিক দলের সংগ্রহ ১৪৭/২ থাকা অবস্থায় আকস্মিকভাবে রিভার্স সুইং করতে থাকেন। তন্মধ্যে, ইয়র্কারে রাহুল দ্রাবিড়কে ফেরৎ পাঠান। প্রথম বলেই শচীন তেন্ডুলকরকে বিদেয় করেছিলেন। ১৯৯৯ সালের বিশ্বকাপ ক্রিকেট ও ২০০২ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে অনুষ্ঠিত সিরিজেও বেশ সফল হয়েছিলেন।

১৯৯৯ সালের বিশ্বকাপে পাকিস্তানের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উইকেট শিকারীতে পরিণত হয়েছিলেন। সাকলাইন মুশতাকের পর ১০ খেলা থেকে ২৪.৪৪ গড়ে ১৬ উইকেট দখল করেছিলেন। এছাড়াও, তারকা ক্রিকেটারে পরিণত হন। ওল্ড ট্রাফোর্ডে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে দূর্দান্ত বোলিং করেন। এর পরপরই নটিংহ্যামশায়ারের সাথে খেলার জন্যে চুক্তিবদ্ধ হন। বছরের শেষদিকে অস্ট্রেলিয়ায় আম্পায়ারদ্বয়–পিটার উইলি ও ড্যারেল হেয়ার এবং ম্যাচ রেফারি জন রিডের কাছ থেকে প্রথমবারের মতো সতর্ক বার্তা পান। ২০০০ সালের শুরুতে বোলিং ভঙ্গীমা সংশোধন করে। তবে, আঘাতের কারণে কাউন্টি মৌসুমের শুরুতে খেলতে পারেননি। এরপর, পুণরায় আঘাত পেলে মৌসুমের বাদ-বাকী সময়ে খেলা থেকে দূরে থাকেন। পরবর্তীতে, কাঁধের আঘাতের ফলে ঐ বছরের শীতকালে ইংল্যান্ড সফরে দলের সাথে যেতে পারেননি। এছাড়াও, হাঁটু ও গোড়ালীর আঘাতও এতে যুক্ত হয়।

দশ মাস পর মার্চ, ২০০১ সালে অকল্যান্ডে স্বাগতিক নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম আন্তর্জাতিকে অংশ নেয়ার মাধ্যমে পদার্পণ করেন। পাঁচ উইকেট নিয়ে দৃশ্যতঃ খেলার জগতে ফিরে আসার কথা ঘোষণা করলেও পরের খেলাতেই নয় বল করার পর আঘাতে জর্জড়িত হন এবং পুণরায় আম্পায়ার স্টিভ ডান ও ডগ কাউয়ি’র কাছ থেকে নো-বলের ডাক শুনেন। ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিবেদনে শারীরিক ত্রুটির কথা তুলে ধরা হয়। পাকিস্তানী কর্মকর্তারা ঐ প্রতিবেদন প্রকাশের ফলে সন্দেহ থেকে মুক্তির কথা জানানো হয়। গ্রীষ্মকালীন ইংরেজ সফরে অধিকাংশ সময়ই আঘাত ও দূর্বল স্বাস্থ্যের কারণে অংশ নিতে পারেননি। নভেম্বরে শারজায় পুণরায় নো-বলের ডাক শুনেন। ডিসেম্বরে পুণরায় ঐ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ছাড়পত্র পান।

২০০১-০২ মৌসুমে ওয়াকার ইউনুসের নেতৃত্বাধীন পাকিস্তানী দলের সাথে সংযুক্ত আরব আমিরাত গমন করেন। ৩১ জানুয়ারি, ২০০২ তারিখে শারজায় অনুষ্ঠিত ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম টেস্টে অংশ নেন। অসাধারণ ক্রীড়া নৈপুণ্যের স্বাক্ষর রাখেন। ০/৬৮ ও ৫/২৪ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। এছাড়াও, একবার ব্যাটিং করার সুযোগ পেয়ে ২০ রান সংগ্রহ করেছিলেন। তাঁর অল-রাউন্ড ক্রীড়াশৈলীর কল্যাণে তাঁর দল ১৭০ রানে জয় পেলে দুই-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে এগিয়ে যায়। খেলায় তিনি ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার লাভ করেন।

জানুয়ারি, ২০০২ সালে ঢাকায় দর্শকদের ছোঁড়া ইটের টুকরোয় আঘাত পান। ফলশ্রুতিতে, ঐ সফরের শেষদিকে খেলেননি। সুস্থ হবার পর নিজ দেশে নিউজিল্যান্ডকে দুইবার গুড়িয়ে দেন। এ পর্যায়ে নিজেকে ঘণ্টাপ্রতি ১০০ মাইলে বেগে বোলিংয়ের দিকে ধাবিত করতে থাকেন। করাচীতে অনুষ্ঠিত ওডিআইয়ে ৬/১৬ পান।

২০০১-০২ মৌসুমে নিজ দেশে স্টিফেন ফ্লেমিংয়ের নেতৃত্বাধীন কিউই দলের মুখোমুখি হন। ১ মে, ২০০২ তারিখে লাহোরে অনুষ্ঠিত সফররত নিউজিল্যান্ড দলের বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। কয়েকটি ব্যক্তিগত সাফল্যের সাথে নিজেকে জড়ান। প্রথম ইনিংসে ২৭ রানে পৌঁছানোকালে টেস্টে ব্যক্তিগত পূর্বতন সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড ভঙ্গ করেন। দলের একমাত্র ইনিংসে ৩৭ রান সংগ্রহ করেছিলেন। এছাড়াও, নিউজিল্যান্ডের প্রথম ইনিংসে ক্রিস মার্টিনের উইকেট লাভ করে ব্যক্তিগত সেরা বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান।

ঐ টেস্টের ৩ মে, ২০০২ তারিখে দ্বিতীয় পাকিস্তানী হিসেবে হানিফ মোহাম্মদের ৩৩৭ রানের অসাধারণ ইনিংসের পর ইনজামাম-উল-হকের ত্রি-শতক এবং তাঁর ৬/১১ বোলিং পরিসংখ্যানের কারণে ইনিংস ও ৩২৪ রানের ব্যবধানে জয় পায় পাকিস্তান দল। তাঁর পূর্বতন সেরা বোলিং ছিল ৫/২৪। এরফলে, টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসের পঞ্চম বড় ধরনের জয়ের সাথে তাঁর দল যুক্ত হয়। ইনজামাম-উল-হক সাড়ে নয় ঘণ্টা ক্রিজে আঁকড়ে ৩২৯ রান সংগ্রহ করেন ও তিনি তাঁর ব্যক্তিগত সেরা বোলিং পরিসংখ্যান গড়েছিলেন। একই মাঠে প্রতিপক্ষকে মাত্র ৭৩ রানে গুটিয়ে দেন ও দ্বিতীয় ইনিংসে ২৪৬ রান তুলতে পারলেও তিনদিনের মধ্যেই পাকিস্তান দল জয় পায়। স্বাগতিকরা ইনিংস ও ৩২৪ রানে জয় পেলে দুই-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে এগিয়ে যায়।

অক্টোবর, ২০০২ সালে কলম্বোয় অজিদের বিপক্ষে খেলার ধারা পরিবর্তনসূচক বোলিং করেন। তবে, শেষ হাসি প্রতিপক্ষের মাঝেই দেখা যায়। নভেম্বর, ২০০২ সালে জিম্বাবুয়ের মাটিতে দর্শকদের উদ্দেশ্যে বোতল ছুঁড়ে মারা অভিযোগে একটি ওডিআইয়ে অংশ নিতে পারেননি। এরপর প্রথম টেস্টে বলে আঁচড় দেয়ার অভিযোগ আসে। হাঁটুর আঘাতের কারণে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে অংশ নিতে পারেননি।

ঐ সময়ে ব্রেট লি’র সাথে গতির শিরোপা নিয়ে স্নায়ুযুদ্ধ চলতে থাকে। টর্পেডোর ন্যায় ২০০৩ সালের বিশ্বকাপে নিক নাইটের বিপক্ষে বলে ছুঁড়েছিলেন। বলটি ক্রিকেটের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ১০০ মাইলের মাইলফলক স্পর্শ করে। এরফলে মুখেমুখে তাঁর নাম ছড়িয়ে পড়ে। টেস্টে অস্ট্রেলিয়া ও ভারতের বিপক্ষে সেরা বোলিং করতে না পারলেও অন্যান্য দলের বিপক্ষে ৩০-এর কম গড়ে সফল হয়েছিলেন। তন্মধ্যে, নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে তাঁর গড় ছিল ৫.২৪।

ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন। ২০০১ সালে সমারসেট, ২০০৩ ও ২০০৪ সালে ডারহাম এবং ২০০৫ সালে ওরচেস্টারশায়ারের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। ঐ তিনটি ক্লাবে কিছু খেলার দূর্দান্ত ক্রীড়াশৈলী প্রদর্শন সত্ত্বেও পুরোপুরি নিজেকে মেলে না ধরার কারণে সমালোচিত হন। ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লীগে কলকাতা নাইট রাইডার্সের পক্ষে খেলেছেন।

২০০৩ সালে দুইবার নিজ নামের পার্শ্বে টেস্টে দশ উইকেট দখলের কৃতিত্ব প্রদর্শন করেছেন। নিজ দেশে বাংলাদেশ ও স্বাগতিক নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে এ সাফল্য পান। টেস্টে দুইবার ও সীমিত-ওভারের ক্রিকেটে দশবার ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার লাভ করেছেন। প্রথম বোলার হিসেবে ঘণ্টাপ্রতি ১০০ মাইল গতিবেগে বোলিং করার গৌরব অর্জন করেন। সব মিলিয়ে দুইবার এ মাইলফলকে পৌঁছেন। তবে, অনেক ক্রিকেট বিশ্লেষকেরই অভিমত, পরিসংখ্যান ও রেকর্ড গড়ার সাথে বর্ণাঢ্যময় খেলোয়াড়ী জীবনের প্রতি সুবিচার করতে পারেননি।

বিশ্বকাপের পর কিছুদিন তাঁকে দলের বাইরে রাখা হয়। মে, ২০০৩ সালে শ্রীলঙ্কায় অনুষ্ঠিত ত্রি-দেশীয় প্রতিযোগিতায় খেলার উদ্দেশ্যে পুণরায় দলে যুক্ত করা হয়। এ পর্যায়ে দ্বিতীয় খেলোয়াড় হিসেবে বলে আঁচড়ের ঘটনায় নিষিদ্ধতার কবলে পড়েন। দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে টেস্ট দলের সহঃঅধিনায়ক হিসেবে মনোনীত হন। প্রথম টেস্টে পল অ্যাডামসকে উত্ত্যক্ত করলে এক টেস্ট ও দুই ওডিআইয়ে অংশগ্রহণের উপর নিষিদ্ধ ঘোষিত হন। নিউজিল্যান্ডে আঘাতের কারণে টেস্টে খেলতে পারেননি। তবে, পূর্বদিন জেট-স্কাই চালিয়ে আনন্দ উপভোগ করেন ও ব্যবস্থাপনামণ্ডলীর বিরক্তির কারণ হয়ে দাঁড়ান। দ্বিতীয় টেস্টে দলে ফিরে আসেন। সাত-উইকেট নিয়ে পাকিস্তানকে জয়লাভ করান। ঐ খেলায় ১১ উইকেট দখল করেছিলেন। তবে, ওডিআই সিরিজেও আঘাতে জর্জড়িত ছিলেন।

২০০৩-০৪ মৌসুমে ইনজামাম-উল-হকের নেতৃত্বাধীন পাকিস্তানী দলের সদস্যরূপে প্রথমবারের মতো নিউজিল্যান্ড সফরে যান। ২৬ ডিসেম্বর, ২০০৩ তারিখে ওয়েলিংটনে অনুষ্ঠিত সিরিজের দ্বিতীয় ও চূড়ান্ত টেস্টে স্বাগতিক নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে খেলেন। দূর্দান্ত ক্রীড়শৈলী প্রদর্শনে অগ্রসর হন। খেলায় তিনি ৫/৪৮ ও ৬/৩০ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। এছাড়াও, একবার ব্যাটিংয়ে নেমে ইয়ান বাটলারের বলে শূন্য রানে বিদেয় নিয়েছিলেন। তাঁর অসাধারণ বোলিং নৈপুণ্যের কল্যাণে সফরকারীরা ৭ উইকেটে জয়লাভ করলে ১-০ ব্যবধানে সিরিজে বিজয়ী হয়। খেলায় তিনি ম্যান অব দ্য ম্যাচ পুরস্কার লাভ করেন।

১৯৯৯ থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত ওডিআইয়ে স্বর্ণালী সময় অতিবাহিত করেছিলেন। এ পর্যায়ে শুধুই যে উইকেট পেয়েছিলেন তা নয়, বরঞ্চ চমৎকার স্ট্রাইক রেট বজায় রেখেছিলেন। ১৯৯৯ সালে সফলতম বছর উদযাপন করেন। ১৭ খেলা থেকে ১৮.৬৮ গড়ে ৩৮ উইকেট পেয়েছিলেন। ২০০৫-০৬ মৌসুমে নিজ দেশে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজে ১৭ উইকেট দখল করেছিলেন।

এপ্রিল, ২০০৪ আঘাতপ্রাপ্তির বিষয়ে প্রশ্নের মুখোমুখি হন। ভারতের বিপক্ষে সিরিজে তেমন একটা সুবিধে করতে পারেননি। চূড়ান্ত টেস্টে পিঠের আঘাতপ্রাপ্তির মাধ্যমে সিরিজ শেষ করেন। পুরো খেলায় তিনি বোলিং করতে পারেননি। তবে, ব্যাট হাতে মাঠে নেমেছিলেন। বেশ কয়েকটি বাউন্ডারি হাঁকিয়ে ১৪ বলে ২৮ রান তুলেন। ইনজামাম-উল-হক প্রকাশ্যে আঘাতের বিষয়ে সন্দীহান ছিলেন। চিকিৎসকদের জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হন ও একপর্যায়ে আঘাতের সত্যতা উন্মোচিত হয়। ডিসেম্বর, ২০০৪ সালে অস্ট্রেলিয়া সফরে যান। প্রথম দুই টেস্টে মূলতঃ একাকী অস্ট্রেলীয় ব্যাটসম্যানদের বিপক্ষে লড়াই করেন। ম্যাথু হেইডেনের বিদায়ে ম্যাচ রেফারির কাছে শৃঙ্খলাভঙ্গ ও পার্থে কাঁধে আঘাত পান। সিডনিতে শেষ টেস্টে দলীয় ব্যবস্থাপনায় ক্ষোভ প্রকাশ করতেই সরব ছিলেন।

২০০৫ সালের শুরুতে আঘাতের কবলে পড়েন। ফলশ্রুতিতে, ভিবি সিরিজের অধিকাংশ খেলাতেই অংশ নিতে পারেননি। এছাড়াও, ভারত সফরে যেতে পারেননি ও শারীরিক সুস্থতার প্রশ্নে ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জ সফরে যাননি। দলের অন্যতম তারকা খেলোয়াড় হিসেবে বলিউডে অভিনয়ের প্রস্তাবনা পান। ইনজামাম-উল-হক ও বব উলমারের সাথে সুসম্পর্ক গড়ে তুলেন। প্রশিক্ষণ শিবিরে শারীরিক সুস্থতার পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হবার ফলে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজে অংশ নেয়ার মাধ্যমে খেলায় ফিরে আসেন। ১৭ উইকেট দখল করে সমালোচকদের মুখ বন্ধ করে দেন। তবে, লাহোরের শেষ টেস্টে গোড়ালীতে আঘাত পান।

২০০৫ সাল থেকে তাঁর খেলায় ভাটা পড়তে শুরু করে। ৮ খেলা থেকে ৩৫-এর অধিক গড়ে ১৩ উইকেট দখল করেন। ২০০৬ ও ২০০৭ সালে কিছুটা খেলার জগতে ফিরে এসেছিলেন। এরপর থেকে তাঁর খেলার মান আবারও দূর্বলতর হতে থাকে। মার্চ, ২০১১ সালে দল নির্বাচকমণ্ডলী তাঁর উপর আস্থাজ্ঞাপন করে দলে রাখেন। পাকিস্তান বোর্ড প্রণীত ১৯জন খেলোয়াড়ের কেন্দ্রীয় চুক্তির নতুন তালিকায় তাঁকে সর্বাধিক সুযোগ প্রদান করে। পূর্বেকার বছর চুক্তিতে আসেননি। তবে, সাতজন শীর্ষ খেলোয়াড়ের অন্যতম হিসেবে জানুয়ারি, ২০১১ সাল থেকে ছয় মাস মেয়াদে চুক্তিতে রাখা হয়।

জানুয়ারি, ২০০৬ সালে বোলিং ভঙ্গীমা নিয়ে পুণরায় প্রশ্নের মুখোমুখি হন। ফয়সালাবাদ টেস্টে ভারতের বিপক্ষে খেলা শেষে গ্রেগ চ্যাপেলের কাছ থেকে এ প্রশ্ন আসে। গোড়ালীর আঘাত পরবর্তীতে হাঁড়ে ফাটলে পরিণত হয় ও ওডিআই সিরিজে অংশ নেয়া থেকে বিরত থাকেন। আইসিসি তাঁর বোলিং ভঙ্গীমায় নজর রাখার প্রশ্নে গুজব ছড়িয়ে পড়লেও আনুষ্ঠানিকভাবে কোন পদক্ষেপ গ্রহণ কিংবা বক্তব্য প্রদান করেনি। আঘাতের কারণে শ্রীলঙ্কা গমন করতে পারেননি ও চিকিৎসকেরা তাঁর হাঁটুর অবস্থা বিবেচনান্তে খেলোয়াড়ী জীবন শেষ হয়ে যাবার ইঙ্গিত দেন। অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন পড়ে। বোলিং ভঙ্গীমা কিংবা আঘাতের কারণে খেলা থেকে সড়ে আসার বিষয়ে সিদ্ধান্তের দিকে চলে যাবার সম্ভাবনা দেখা দেয়। কার্ডিফে ২০০তম ওডিআই উইকেট লাভ করেন।

নভেম্বর, ২০০৬ সালে নিষিদ্ধ ঘোষিত নান্ডোলোন পরীক্ষায় নেতিবাচক ফলাফল আসলে দুই বছরের নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়েন। ফলশ্রুতিতে, পাকিস্তানে ফেরৎ পাঠানো হয় ও চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে পারেননি। তবে, এক মাস পরই তিন-সদস্য বিচারকমণ্ডলী এ সিদ্ধান্ত থেকে সড়ে আসেন।

জানুয়ারি, ২০০৭ সালে বিশ্বকাপ ক্রিকেট প্রতিযোগিতায় ৩০-সদস্যের প্রাথমিক তালিকায় তাঁকে পাকিস্তান দলে রাখা হয়। কিন্তু, বব উলমারের সাথে তাঁর বাদানুবাদের ঘটনা টেলিভিশনে প্রচারিত হবার প্রেক্ষিতে বোর্ড থেকে জরিমানার মুখোমুখি হন। পরবর্তীতে, শেষ মুহূর্তে বিশ্বকাপ দল থেকে শারীরিক সুস্থতার প্রশ্নে আঘাতের কারণে তাঁকে বিরত রাখা হয়। ধারনা করা হয় যে, আইসিসি’র মাদক পরীক্ষায় অকৃতকার্যকতার ভয়েই তাঁকে বাদ দেয়া হয়। এছাড়াও, ঐ সময়ে তাঁর শরীরে নান্ডোলোনের অস্তিত্ব ছিল।

জুলাই, ২০০৭ সালে সুস্থ হলে তাঁকে এশিয়া একাদশে রাখা হয়। তবে, আবুধাবিতে পাকিস্তানের সফরে যেতে অস্বীকার করলে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড আফ্রিকা একাদশের বিপক্ষে খেলা থেকে তাঁকে প্রত্যাহার করে নেয়া হয়। স্কটল্যান্ডের মুখোমুখি হবার উদ্দেশ্যে দলে যুক্ত হন। এরপর, আইসিসি বিশ্ব টি২০ প্রতিযোগিতার উদ্বোধনী আসরে খেলার জন্যে পাকিস্তান দলে রাখা হয়। কিন্তু, করাচীতে কর্তৃপক্ষের অনুমতি ব্যতিরেকেই প্রশিক্ষণ শিবির ত্যাগের ঘটনায় শৃঙ্খলাবিষয়ক শুনানীতে জরিমানার কবলে পড়েন। পুনঃবিবেচনার প্রশ্নে দ্বিতীয় শুনানীতে জরিমানা স্থগিত করা হয় ও ছয় সপ্তাহের নজরদারীতে থাকেন।

সেপ্টেম্বর, ২০০৭ সালে দক্ষিণ আফ্রিকায় অবস্থানকালে সাজঘরে মোহাম্মদ আসিফের সাথে বাদানুবাদ ঘটে। ফলশ্রুতিতে, বিশ্ব টি২০ প্রতিযোগিতার পূর্বে তাঁকে দেশে ফেরৎ পাঠিয়ে দেয়া হয়। বেশ কয়েকটি শৃঙ্খলাভঙ্গের কারণে ১৩ খেলায় অংশগ্রহণের উপর নিষেধাজ্ঞা ও প্রায় $৫৭,০০০ মার্কিন ডলার জরিমানা করা হয়। এছাড়াও, দুই বছরের নজরদারীর কবলে পড়েন ও এ সময়ে আবারও শৃঙ্খলাভঙ্গ করলে আজীবন নিষেধাজ্ঞার কথা জানানো হয়।

জানুয়ারি, ২০০৮ সালে চুক্তিগত সমস্যায় জড়িয়ে পড়েন। বোর্ডের ঘোষিত নতুন কেন্দ্রীয় চুক্তির আওতায় শীর্ষ স্তর থেকে নিচেরদিকে চলে যান। পাঁচ বছরের নিষেধাজ্ঞার মুখোমুখি হন। আপিলেট ট্রাইবুনালে নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ এক মাসে নিয়ে আসা হয়। ফলশ্রুতিতে আইপিএলে কলকাতা নাইট রাইডার্সের পক্ষে খেলার সুযোগ পান। জানুয়ারি, ২০০৯ সালে নতুন প্রশাসন ও দল ব্যবস্থাপকমণ্ডলী পুণরায় তাঁকে শীর্ষ শ্রেণীতে ফিরিয়ে আনে। এ পর্যায়ে তিনি পাকিস্তানের বোর্ডের সাথে চুক্তিতে থাকা অধিকাংশ বিষয় থেকে নিজেকে দূরে সরিয়ে রাখেন ও কানাডায় চারদেশীয় প্রতিযোগিতায় মাত্র তিনটি টি২০ খেলায় অংশ নিয়েছিলেন।

মে, ২০০৯ সালে চিকিৎসার লক্ষ্যে বিশ্ব টি২০ দল থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করে নেন। পরবর্তীতে তিনি মন্তব্য করেন যে, পিসিবি প্রকাশ্যে তাঁর চামড়ার অবস্থা নিয়ে মন্তব্য করেছিলেন। এর জবাবে বোর্ড থেকে চুক্তির বরখেলাপের বিষয়ে কারণ দর্শাও নোটিশ প্রেরণ করা হয়। অক্টোবর, ২০০৯ সালে আরও একবার আঘাত ও অস্ত্রোপচারের মুখোমুখি হন। নভেম্বরে অনুষ্ঠিত নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ওডিআই সিরিজ থেকে নিজেকে সড়িয়ে আনেন। ইংল্যান্ডে হাঁটু অস্ত্রোপচারের জন্যে গমন করবেন। ছয় সপ্তাহের মধ্যে সুস্থ হবার সম্ভাবনা ব্যক্ত করেন। এছাড়াও, পাকিস্তানের প্রথম-শ্রেণীর প্রতিযোগিতার শুরুরদিকের খেলাগুলো থেকেও অনুপস্থিত থাকবেন।

মার্চ, ২০১১ সালে বর্ণাঢ্যময় খেলোয়াড়ী জীবনের ইতি ঘটান। বিশ্বকাপ ক্রিকেট প্রতিযোগিতার পূর্বেই ঘোষণা দিয়েছিলেন যে, বিশ্বকাপ শেষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর গ্রহণ করবেন। শারীরিক সুস্থতা ধরে রাখতে না পারাই অবসর গ্রহণের কারণ হিসেবে চিত্রিত করেছিলেন।

বেশ কয়েকটি বিতর্কিত ঘটনায় নিজেকে জড়িয়ে ফেলেন ও খেলোয়াড়ী জীবনে বিরূপ প্রভাব ফেলে। ২০০৪ সালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে আঘাতের কারণে মাঠ ত্যাগের বিষয়টি অধিনায়ক ইনজামাম-উল-হক ও পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের কাছে সন্দেহের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

২০০৩ সালের বিশ্বকাপ ক্রিকেট প্রতিযোগিতায় দূর্বল ফলাফলের পর পাকিস্তানের সাবেক অধিনায়ক ও ফাস্ট বোলার ওয়াকার ইউনুসের সাথে বাদানুবাদে জড়িয়ে পড়েন। পিসিবি প্রধান তৌকির জিয়া মন্তব্য করেন যে, আচরণ সংশোধন করতে হবে, নতুবা দল থেকে একেবারে বাদ দেয়া হবে। এছাড়াও, বলে আঁচড়ের ঘটনায়ও তাঁর সম্পৃক্ততা ছিল। ১৬ অক্টোবর, ২০০৬ তারিখে নিষিদ্ধ মাদক ন্যানড্রোলোন গ্রহণের দায়ে মোহাম্মদ আসিফের সাথে তাঁকেও পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। এছাড়াও, বোলিং ভঙ্গীমায় সন্দেহজনক ভূমিকা, দলীয় সঙ্গীদের সাথে মারপিট, বোর্ডের বিরুদ্ধে আদালতে যুদ্ধ, দীর্ঘকাল নিষিদ্ধতার কবলে পড়া ও ব্যাপক জরিমানা, গুরুতর আঘাতে খেলোয়াড়ী জীবনে হুমকি, নিষিদ্ধ মাদক গ্রহণের অভিযোগ রয়েছে। দলে থাকাকালীন অর্ধেকেরও বেশী টেস্টে অংশগ্রহণ করতে পারেননি।

২০০৭-০৮ মৌসুমে ইউনুস খানের অধিনায়কত্বে ভারত সফরে যান। ৮ ডিসেম্বর, ২০০৭ তারিখে বেঙ্গালুরুতে স্বাগতিক ভারতের বিপক্ষে সিরিজের তৃতীয় টেস্টে অংশ নেন। ০/২৩ ও ১/৪৩ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। তবে, সৌরভ গাঙ্গুলী’র অসাধারণ ক্রীড়াশৈলী প্রদর্শন স্বত্ত্বেও খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ালেও স্বাগতিকরা ১-০ ব্যবধানে সিরিজ জয় করে নেয়। পরবর্তীতে, এটিই তাঁর সর্বশেষ টেস্টে অংশগ্রহণ ছিল।

সেপ্টেম্বর, ২০১১ সালে ‘কন্ট্রোভার্সিয়ালি ইউরস্‌’ শীর্ষক আত্মজীবনী প্রকাশ করেন। ভারত ও পাকিস্তানে বিভিন্ন টেলিভিশন অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছেন। তন্মধ্যে, গেম ওন হেই, জিও খেলো পাকিস্তান, মাজাক মাজাক হেই এবং কমেডি নাইটস উইদ কপিল অন্যতম।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।