Skip to content

শেন থমসন

1 min read

২৭ জানুয়ারি, ১৯৬৯ তারিখে ওয়াইকাটোর হ্যামিল্টনে জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার। মূলতঃ অল-রাউন্ডার হিসেবে খেলতেন। ডানহাতে ব্যাটিং কর্মে অগ্রসর হতেন। এছাড়াও, ডানহাতে স্লো মিডিয়াম কিংবা ডানহাতে অফ-ব্রেক বোলিংয়ে পারদর্শী ছিলেন। ১৯৯০-এর দশকে নিউজিল্যান্ডের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছিলেন।

প্রকৃত মানসম্পন্ন অল-রাউন্ডার হিসেবে ক্রিকেট জগতে প্রবেশ করেন। এক পর্যায়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটেও একই ধারা প্রবাহমান রাখতে সমর্থ হন। কিন্তু, দীর্ঘ সংস্করণের খেলায় এ ধারা বহমান থাকেনি। বলে সপাটে আঘাত হানতে পারতেন। কার্যকর অফ-স্পিন বোলিং করতেন। বলকে তেমন বাঁক খাওয়াতে না পারলেও নিখুঁতভাব বজায় রাখতেন ও ব্যাটসম্যানদের সমীহের পাত্রে পরিণত হন। বিশেষতঃ ৫০-ওভারের ক্রিকেটে দারুণ ও কার্যকর সহায়ক বোলারের মর্যাদা পান।

১৯৮৭-৮৮ মৌসুম থেকে ১৯৯৬-৯৭ মৌসুম পর্যন্ত প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান রাখেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর নিউজিল্যান্ডীয় ক্রিকেটে নর্দার্ন ডিস্ট্রিক্টসের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। তবে, তাঁর খেলার ধরনের কারণে সর্বদা ধারাবাহিকতা রক্ষার নিশ্চয়তা ছিল না। কিন্তু, ছন্দ ফিরে পেলে খেলার বাঁক ঘুরিয়ে ফেলতেন।

১৯৯০ থেকে ১৯৯৬ সময়কালে নিউজিল্যান্ডের পক্ষে সর্বমোট ১৯ টেস্ট ও ৫৬টি ওডিআইয়ে অংশ নিয়েছিলেন। ১৯৮৯-৯০ মৌসুমে নিজ দেশে মোহাম্মদ আজহারউদ্দীনের নেতৃত্বাধীন সফরকারী ভারতের বিপক্ষে দারুণ খেলেছিলেন। ২২ ফেব্রুয়ারি, ১৯৯০ তারিখে অকল্যান্ডে অনুষ্ঠিত সিরিজের তৃতীয় ও চূড়ান্ত টেস্টে তাঁর অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। বেশ সাড়া জাগিয়েছিলেন। খেলায় তিনি ২২ ও ৪৩* রান সংগ্রহ করেছিলেন। এছাড়াও, বল হাতে নিয়ে ২/৯২ ও ০/৩০ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। ইয়ান স্মিথের অসাধারণ শতকের কল্যাণে খেলাটি ড্র হলেও স্বাগতিকরা ১-০ ব্যবধানে সিরিজ জয় করে নেয়। প্রকৃতপক্ষে সাত বছরের খেলোয়াড়ী জীবনে নিজেকে কখনো মেলে ধরতে পারেননি। একই সফরের ১ মার্চ, ১৯৯০ তারিখে ডুনেডিনে ওডিআইয়ে প্রথমবারের মতো অংশগ্রহণ করেন।

১৯৯০-৯১ মৌসুমে নিজ দেশে অর্জুনা রানাতুঙ্গা’র নেতৃত্বাধীন শ্রীলঙ্কান দলের মুখোমুখি হন। ১ মার্চ, ১৯৯১ তারিখে অকল্যান্ডে অনুষ্ঠিত সফররত শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজের তৃতীয় ও চূড়ান্ত টেস্টে অংশ নেন। কয়েকবার ব্যক্তিগত সফলতার ছাঁপ রাখেন। দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যক্তিগত পূর্বতন সর্বোচ্চ ৫৫ রান অতিক্রম করেন। খেলায় তিনি ১ ও ৮০* রান সংগ্রহ করেছিলেন। এছাড়াও, শ্রীলঙ্কার দ্বিতীয় ইনিংসে ইএআর ডি সিলভাকে বিদেয় করে ব্যক্তিগত সেরা বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। তাঁর পূর্বেকার সেরা ছিল ২/৯২। বল হাতে নিয়ে ০/২২ ও ৩/৬৩ লাভসহ একটি ক্যাচ তালুবন্দী করেছিলেন। অরবিন্দ ডি সিলভা’র অসাধারণ ব্যাটিং দৃঢ়তায় খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ালে সিরিজটি ফলাফলবিহীন অবস্থায় শেষ হয়।

১৯৯৩-৯৪ মৌসুমে নিজ দেশে সেলিম মালিকের নেতৃত্বাধীন পাকিস্তানী দলের মুখোমুখি হন। ২৪ ফেব্রুয়ারি, ১৯৯৪ তারিখে ক্রাইস্টচার্চে অনুষ্ঠিত সফররত পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজের তৃতীয় ও চূড়ান্ত টেস্টে অংশ নেন। দূর্দান্ত ক্রীড়া নৈপুণ্যের স্বাক্ষর রাখেন ও কয়েকটি ব্যক্তিগত সফলতার সন্ধান পান। দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যক্তিগত পূর্বতন সর্বোচ্চ ৮০ রান অতিক্রম করেন। এ পর্যায়ে টেস্টে নিজস্ব প্রথম ও খেলোয়াড়ী জীবনের একমাত্র টেস্ট শতক হাঁকিয়ে স্বর্ণালী মুহূর্ত অতিবাহিত করেন। প্রথম ইনিংসে ৩ রান সংগ্রহ করলেও দ্বিতীয় ইনিংসে ১২০ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলে দলকে জয়ের লক্ষ্যমাত্রায় নিজেকে জড়িয়ে রাখেন। এছাড়াও, ১/২০ ও ০/১২ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। সফরকারীরা ৫ উইকেটে পরাজিত হলেও ২-১ ব্যবধানে সিরিজ জয় করে নেয়। ব্রায়ান ইয়ংয়ের সাথে তিনি যৌথভাবে ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার লাভ করেন।

১৯৯৪ সালে কেন রাদারফোর্ডের নেতৃত্বাধীন কিউই দলের সদস্যরূপে প্রথমবারের মতো ইংল্যান্ড গমন করেন। ২ জুন, ১৯৯৪ তারিখে নটিংহামে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। ব্যক্তিগত সফলতার সন্ধান পান। প্রথম ইনিংসে ১৪ রানে পৌঁছানোকালে টেস্টে ৫০০ রানের মাইলফলক স্পর্শ করেন। খেলায় তিনি ১৪ ও ৬ রান সংগ্রহ করেছিলেন। এছাড়াও, বল হাতে নিয়ে ১/৭৩ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করানোসহ একটি ক্যাচ তালুবন্দী করেছিলেন। গ্রাহাম গুচের দ্বি-শতকের কল্যাণে সফরকারীরা ইনিংস ও ৯০ রানে পরাজিত হলে তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে পিছিয়ে পড়ে।

কিন্তু, টেস্ট দলে সর্বদাই আসা-যাবার পালায় ছিলেন। তবে, নিউজিল্যান্ডের অল-রাউন্ডার হিসেবে তিনি প্রতিশ্রুতিশীলতার বেশ স্বাক্ষর রেখেছিলেন। ১৯৯৪-৯৫ মৌসুমে কেন রাদারফোর্ডের নেতৃত্বাধীন কিউই দলের সদস্যরূপে প্রথমবারের মতো দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে যান। ২৫ নভেম্বর, ১৯৯৪ তারিখে জোহানেসবার্গে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক দক্ষিণ আফ্রিকা দলের বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। খেলায় তিনি ৮৪ ও ২৯ রান সংগ্রহ করেছিলেন। এছাড়াও, বল হাতে নিয়ে ০/১৮ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। সায়মন ডৌলের অল-রাউন্ড নৈপুণ্যে সফরকারীরা ১৩৭ রানে জয় পেলে তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে এগিয়ে যায়।

একই সফরের ২৬ ডিসেম্বর, ১৯৯৪ তারিখে ডারবানে অনুষ্ঠিত সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে অংশ নেন। খেলায় তিনি ৮২ ও ৩৫ রান সংগ্রহসহ একটি ক্যাচ তালুবন্দী করেন। এছাড়াও, ০/১০ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। তন্মধ্যে, খেলার প্রথম দিন ড্যানি মরিসনের সাথে নবম উইকেটে ৬৬ রানের জুটি গড়েন। ফ্যানি ডি ভিলিয়ার্সের চমৎকার অল-রাউন্ড ক্রীড়া নৈপুণ্যের কল্যাণে সফরকারীরা ৮ উইকেটে পরাজিত হলে তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজটি অমিমাংসিত অবস্থায় অগ্রসর হতে থাকে।

১৯৯৫-৯৬ মৌসুমে লি জার্মনের নেতৃত্বাধীন কিউই দলের সদস্যরূপে প্রথমবারের মতো ভারত গমন করেন। ১৮ অক্টোবর, ১৯৯৫ তারিখে ব্যাঙ্গালোরে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক ভারতের বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। খেলায় তিনি ১৭ ও ৬ রান সংগ্রহ করেন। এছাড়াও, বল হাতে নিয়ে ০/৩৭ ও ০/৪১ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। ঐ টেস্টে তাঁর দল ৮ উইকেটে পরাজয়বরণ করলে তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে পিছিয়ে পড়ে।

একই সফরের ২৫ অক্টোবর, ১৯৯৫ তারিখে চেন্নাইয়ে অনুষ্ঠিত সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে অংশ নেন। বৃষ্টিবিঘ্নিত ঐ টেস্টে ০/১৯ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করিয়েছিলেন। খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ালে সফরকারীরা ১-০ ব্যবধানে সিরিজে পিছিয়ে পড়ে। পরবর্তীতে, এটিই তাঁর সর্বশেষ টেস্টে পরিণত হয়।

শেষ ছয় টেস্টের নয় ইনিংস থেকে মাত্র ৮৫ রান তুলতে পেরেছিলেন। টেস্টের তুলনায় ওডিআইয়ে অধিক অংশ নিয়েছিলেন। এক পর্যায়ে ছন্দ হারিয়ে ফেলেন ও ১৯৯৬ সালের বিশ্বকাপ ক্রিকেট প্রতিযোগিতার পর দল থেকে বাদ পড়েন। তুলনামূলকভাবে বেশ কম বয়সে ২৭ বছর বয়সে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে বাদ পড়েন ও ১৯৯৭ সাল শেষে ঘরোয়া ক্রিকেট থেকে অবসর গ্রহণ করেন। ১৯৯৪ সালে নিষিদ্ধ ঘোষিত কানাবিস গ্রহণের কারণে নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়েছিলেন। হ্যামিল্টন থেকে পিতা-মাতার কাছে তাওপোয় চলে আসেন। তাওপো, তৌরঙ্গা, টি পুকে ও হ্যামিল্টনে আবাসন ব্যবসায়ে জড়িত আছেন। ব্যক্তিগত জীবনে বিবাহিত। দুই সন্তান লন্ডনে অবস্থান করছেন। ক্রিকেটের বাইরে টেনিসে দক্ষতা প্রদর্শন করেছেন।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।