১৪ অক্টোবর, ১৯৮৯ তারিখে কুয়েতে জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার। মূলতঃ উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলছেন। বামহাতে ব্যাটিং করেন। এছাড়াও, ডানহাতে মিডিয়াম-ফাস্ট বোলিংয়ে পারদর্শী। পাকিস্তানের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন ও দলের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেছেন।
‘শানি’ ডাকনামে পরিচিতি লাভ করেন। অভিজাত পরিবারে জন্ম। পিতা পিসিবি’র পরিচালনা পরিষদের সদস্য। খাঁটিমানসম্পন্ন ও কৌশলগতভাবে দক্ষ বামহাতি উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান। কিশোর পর্যায়ের ক্রিকেটে ক্রমাগত সফলতা লাভের স্বীকৃতিস্বরূপ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নেয়ার সুযোগ পান। কিন্তু, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এ ধারাবাহিকতা রক্ষার্থে তাঁকে বেশ হিমশিম খেতে হয়।
২০০৭-০৮ মৌসুম থেকে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান রাখছেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর পাকিস্তানী ক্রিকেটে মধ্য পাঞ্জাব, ফেডারেল এরিয়াজ, হাবিব ব্যাংক লিমিটেড, ইসলামাবাদ, ইসলামাবাদ রিজিওন, পাকিস্তান ন্যাশনাল ব্যাংক, নর্থ ওয়েস্ট ফ্রন্টিয়ার প্রভিন্স-বালুচিস্তান, পাঞ্জাব ও ইউনাইটেড ব্যাংক লিমিটেডের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। এছাড়াও, ডারহাম এমসিসিইউ, করাচী হোয়াইটস, করাচী জেব্রাস, লিওপার্ডস, মুলতান সুলতান্সের পক্ষে খেলেছেন।
অনেকটা বেশ আগেভাগেই পাকিস্তানের প্রতিভা অন্বেষণে নিয়োজিত আকিব জাভেদের সুনজরে পড়েন। ফলশ্রুতিতে, ২০০২ সালে ১৩ বছর বয়সী শান মাসুদকে অনূর্ধ্ব-১৫ এশিয়া কাপ প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়ার সুযোগ দেয়া হয়। ২০০৭ সালে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে। করাচীর পক্ষে ৫৪ রান তুলেন। এ পর্যায়ে আসাদ শফিকের সাথে উদ্বোধনী জুটিতে ১৫৪ রান তুলেছিলেন।
এছাড়াও, ইংল্যান্ডে বেশ ভালো খেলেছিলেন। বিশেষতঃ ২০০৯ সালে স্টামফোর্ড স্কুলের পক্ষে সুন্দর খেলা উপহার দেন। ঐ বছর ১০৩ গড়ে ১২৩৭ রান সংগ্রহ করে বিদ্যালয় রেকর্ড গড়েন। এছাড়াও, ডারহাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে তিনটি প্রথম-শ্রেণীর খেলায় অংশ নেন। এ পর্যায়ে লিয়াম প্লাঙ্কেট, গ্রাহাম অনিয়ন্স ও আজমল শেহজাদের ন্যায় বোলারদের বিপক্ষে রুখে দাঁড়ান। পাকিস্তানে ফিরে দূর্দান্ত সময় অতিবাহিত করেন। ২০১২-১৩ মৌসুমে ৫৪.৩০ গড়ে ৫৪৩ রান পেয়েছেন। ফলশ্রুতিতে, দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ খেলার উদ্দেশ্যে তাঁকে জাতীয় দলে আমন্ত্রণ জানানো হয়। ২০২০ সালে ন্যাশনাল টি২০ কাপে সাউদার্ন পাঞ্জাব দলের অধিনায়কের দায়িত্বে ছিলেন।
২০১৩ সাল থেকে পাকিস্তানের পক্ষে টেস্ট ও ওডিআইয়ে অংশ নিচ্ছেন। ২০১৩-১৪ মৌসুমে মিসবাহ-উল-হকের নেতৃত্বাধীন পাকিস্তানী দলের সদস্যরূপে সংযুক্ত আরব আমিরাত গমন করেন। ইনিংস উদ্বোধনে পাকিস্তান দলের নাজুক অবস্থায় সংযুক্ত আরব আমিরাতে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে তাঁকে এ অবস্থানে নেয়া হয়। ১৪ অক্টোবর, ২০১৩ তারিখে আবুধাবিতে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজের প্রথম টেস্টে অংশ নেন। জুলফিকার বাবরের সাথে তাঁর একযোগে টেস্ট অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। ডেল স্টেইন, মর্নে মরকেল ও ভার্নন ফিল্যান্ডারের ন্যায় বোলারদের মোকাবেলা করে ৭৫ রানের মনোমুগ্ধকর ইনিংস উপহার দেন। অ্যালাস্টার কুক তাঁর ভূমিকার প্রশংসা করেন। মন্তব্য করেন যে, এ ধরনের ব্যাটসম্যানকেই তিনি চান। তবে, খুররম মঞ্জুরের শতকের কল্যাণে পাকিস্তান দল ৭ উইকেটে জয়লাভ করলে দুই-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে এগিয়ে যায়।
২০১৫ সালে দলের সাথে শ্রীলঙ্কা গমন করেন। প্রথম দুই টেস্টে একাদশের বাইরে থাকেন। জুলাই, ২০১৫ সালে পল্লেকেলেতে স্বাগতিক শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজের তৃতীয় টেস্টে দারুণ শতক হাঁকিয়ে সংবাদ শিরোনামে চলে আসেন। ইউনুসকে সাথে নিয়ে ৩৭৭ রানের জয়ের লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছুতে বিরাট ভূমিকা রাখেন। কিন্তু, মানসিক ও কৌশলগত ত্রুটির কারণে দলে সর্বদাই আসা-যাবার পালায় থাকেন।
২০২৩-২৪ মৌসুমে দলের অধিনায়কের দায়িত্বে থেকে পাকিস্তানী দলকে সাথে নিয়ে অস্ট্রেলিয়া সফরে যান। ৩ জানুয়ারি, ২০২৪ তারিখে সিডনিতে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজের তৃতীয় টেস্টে অংশ নেন। খেলায় তিনি ৩৫ ও ০ সংগ্রহ করেছিলেন। ঐ টেস্টে তাঁর দল আট উইকেটে পরাজয়বরণ করলে ৩-০ ব্যবধানে ধবল ধোলাইয়ের শিকার হয়।
২০২৫-২৬ মৌসুমে নিজ দেশে এইডেন মার্করামের নেতৃত্বাধীন স্প্রিংবকের মুখোমুখি হন। ২০ অক্টোবর, ২০২৫ তারিখে রাওয়ালপিন্ডিতে অনুষ্ঠিত সফররত দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় ও চূড়ান্ত টেস্টে অংশ নেন। অধিনায়কের দায়িত্বে থেকে খেলায় তিনি ৮৭ ও ০ রান সংগ্রহ করেছিলেন। কেশব মহারাজের দূর্দান্ত অল-রাউন্ড কৃতিত্বে সফরকারীরা ৮ উইকেটে জয় পেলে সিরিজটি ড্র করতে সমর্থ হয়।
