২১ এপ্রিল, ১৯৭৬ তারিখে পাঞ্জাবের খানেওয়াল এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার। মূলতঃ বোলার হিসেবে দলে ভূমিকা রেখেছিলেন। ডানহাতে ফাস্ট-মিডিয়াম বোলিং করতেন। এছাড়াও, ডানহাতে নিচেরসারিতে ব্যাটিংয়ে নামতেন। পাকিস্তানের পক্ষে সকল স্তরের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন।
৬ ফুট ৫ ইঞ্চি উচ্চতার অধিকারী ফাস্ট-মিডিয়াম বোলার ছিলেন। অন্যান্য পাকিস্তানী ফাস্ট বোলারের তুলনায় তিনি ব্যতিক্রম ছিলেন। প্রাণহীন উইকেটেও সজীব বোলিং করতেন। স্ট্যাম্পের কাছাকাছি বল ফেলতেন। অনেকাংশেই তাঁর বোলিং বিখ্যাত অস্ট্রেলীয় বোলার গ্লেন ম্যাকগ্রা’র অনুরূপ ছিল। সুইংয়ের চেয়ে সিম আনয়ণ ও কাটের দিকেই অধিক মনোনিবেশ ঘটাতেন। বলকে উভয় দিক দিয়েই ফেলতে পারতেন ও রিভার্স সুইংয়েও দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন। খেলোয়াড়ী জীবনের সূচনা করেছিলেন ব্যাটসম্যান হিসেবে।
১৯৯৭-৯৮ মৌসুম থেকে ২০১২-১৩ মৌসুম পর্যন্ত সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান রাখেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর পাকিস্তানী ক্রিকেটে বাহাওয়ালপুর, মুলতান, পাকিস্তান ন্যাশনাল ব্যাংক, পাকিস্তান রিজার্ভস, রেডকো পাকিস্তান লিমিটেড ও ওয়াটার এন্ড পাওয়ার ডেভেলপম্যান্ট অথরিটি এবং ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে গ্লুচেস্টারশায়ারের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। এছাড়াও, চেন্নাই সুপারস্টার্স, আইসিএল পাকিস্তান একাদশের পক্ষে খেলেছেন।
১৯৯৯ থেকে ২০০৭ সময়কালে পাকিস্তানের পক্ষে সর্বমোট ১০ টেস্ট, ৩২টি ওডিআই ও একটিমাত্র টি২০আইয়ে অংশ নিয়েছিলেন। ১৯ সেপ্টেম্বর, ১৯৯৯ তারিখে টরন্টোয় ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ওডিআইয়ের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট জীবনের সূত্রপাত ঘটান। অভিষেক ওডিআইয়ে তিন উইকেট লাভের পরপরই তার বিপক্ষে প্রতিবেদন জমা দেয়া হয়। এরপর থেকে তিনি তার পেস বেশ কমিয়ে দিয়েছিলেন।
টেস্ট খেলোয়াড়ী জীবনও দূর্দান্তভাবে শুরু করেছিলেন। ২০০৩ সালে নিজ দেশে খালেদ মাহমুদের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশী দলের মুখোমুখি হন। ২০ আগস্ট, ২০০৩ তারিখে করাচীতে অনুষ্ঠিত সফররত বাংলাদেশের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম টেস্টে অংশ নেন। মোহাম্মদ হাফিজ, উমর গুল ও ইয়াসির হামিদের সাথে তাঁর একযোগে টেস্ট অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। খেলায় ১০৯ রান খরচায় আট উইকেট দখল করেছিলেন। তবে, অপর অভিষেকধারী ইয়াসির হামিদের জোড়া শতকের কল্যাণে সফরকারীরা ৭ উইকেটে পরাজিত হলে তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে পিছিয়ে পড়ে।
ঐ পিচে পেস বোলারদের সহায়ক ছিল না ও বিশ্বের সর্বত্র দক্ষতার স্বাক্ষর রাখতে থাকেন। উইকেট লাভের পাশাপাশি রানের স্রোতধারা আটকাতে সহায়ক ভূমিকা পালন করতেন। ডিসেম্বর, ২০০৫ সালে সন্দেহজনক বোলিং ভঙ্গীমার কারণে এক বছরের নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়েন। এরফলে, সম্ভাবনাময় খেলোয়াড়ী জীবনে স্বাভাবিক ক্রীড়াশৈলী প্রদর্শনে বিঘ্নের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
মুলতানে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম টেস্টের পর তাঁকে খেলা থেকে বিরত থাকতে হয়। এটি এক বছরের মধ্যে দ্বিতীয় ঘটনা ছিল। চারবার অবৈধ বোলিংয়ের দায়ে তাঁকে বোলিং করা থেকে বিরত রাখা হলে স্বল্পকালীন খেলোয়াড়ী জীবনের অকাল সমাপ্তি ঘটে।
২০০৫-০৬ মৌসুমে নিজ দেশে মার্কাস ট্রেস্কোথিকের নেতৃত্বাধীন ইংরেজ দলের মুখোমুখি হন। ১২ নভেম্বর, ২০০৫ তারিখে মুলতানে অনুষ্ঠিত সফররত ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম টেস্টে অংশ নেন। ৪/৫৪ ও ১/২৫ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। তবে, সালমান বাটের অসাধারণ ব্যাটিংশৈলীর কল্যাণে স্বাগতিকরা ২২ রানে জয় পেয়ে তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে এগিয়ে যায়। পরবর্তীতে, এটিই তাঁর সর্বশেষ টেস্টে পরিণত হয়।
ওয়াকার ইউনুসের সাথে ১০ টেস্টে ৫০ টেস্ট উইকেট নিয়ে যৌথভাবে দ্রুত মাইলফলকের ভাগীদার হন। ডিসেম্বর, ২০০৫ সালে এক বছরের জন্যে তাঁকে বোলিং করা থেকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়। ডিসেম্বর, ২০০৬ সালে ক্রিকেট জগতে ফিরে আসেন। এছাড়াও, পাকিস্তানের পক্ষে খেলতে থাকেন।
