| |

সেলিম মালিক

১৬ এপ্রিল, ১৯৬৩ তারিখে পাঞ্জাবের লাহোরে জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার। মূলতঃ মাঝারিসারিতে আক্রমণধর্মী ব্যাটসম্যানের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিলেন। ডানহাতে ব্যাটিং করতেন। এছাড়াও, মাঝে-মধ্যে ডানহাতে স্লো-মিডিয়াম কিংবা ডানহাতে অফ-ব্রেক বোলিংয়ে অংশ নিতেন। পাকিস্তানের অধিনায়কের মর্যাদা লাভ করেছিলেন।

সহজাত প্রকৃতির প্রতিভাবান ডানহাতি ব্যাটসম্যান ছিলেন। বর্ণাঢ্যময় চরিত্রের অধিকারী থেকে ব্যাটকে বেশ উঁচুতে তুলে ধরতেন। অফ-সাইডে স্কয়ার অঞ্চলে খেলতেই অধিক স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করতেন। আশি ও নব্বুইয়ের দশকে তিনি তাঁর সময়কালের অন্যতম ধ্রুপদীশৈলীর ব্যাটসম্যান হিসেবে বৈশ্বিকভাবে পরিচিতি পেয়েছিলেন।

জহির আব্বাস ও জাভেদ মিয়াঁদাদের ন্যায় খেলোয়াড়ের যোগ্য উত্তরসূরী হিসেবে দেখা গেলেও কিছুক্ষেত্রে আরও বেশী ছিলেন। জহির আব্বাস বলকে কভার পয়েন্ট অঞ্চলে ও জাভেদ মিয়াঁদাদ মিড-উইকেট বরাবর বলকে ফেললেও তিনি সবটুকুই করতেন; এমনকি পয়েন্ট অঞ্চল দিয়ে ছক্কাও আদায় করে নিতেন। অন্যেরা বিদেয় নিলেও তিনি সুদৃঢ় অবস্থায় ক্রিজে টিকে থাকতেন। অনেকগুলো খেলায় পাকিস্তানের বিপর্যয় দারুণভাবে রুখে দিয়েছিলেন। কিন্তু, খেলোয়াড়ী জীবনের শেষদিকে খেলা গড়াপেটায় কালিমালিপ্ত হয়ে পড়েন ও জুয়াড়ী হিসেবেই নিজেকে স্মরণীয় করে রেখেছেন।

লাহোরের ইকবাল পার্কে ভিক্টোরিয়াস ক্লাবের পক্ষে ১২ বছর বয়সে ভাইকে সঙ্গ দিতেন। এ পর্যায়ে তিনি লেগ-স্পিন বোলিং করতে থাকেন। ক্লাবের কোচ রব নওয়াজ বোলিংয়ের তুলনায় তাঁর ব্যাটিংয়ের মান অনেক গুণ এগিয়ে যাবার বিষয়টিতে নজর রাখেন।

১৯৭৮-৭৯ মৌসুম থেকে ১৯৯৯-২০০০ মৌসুম পর্যন্ত সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান রাখেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর পাকিস্তানী ক্রিকেটে হাবিব ব্যাংক লিমিটেড, লাহোর ও সারগোদা এবং ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে এসেক্সের প্রতিনিধিত্ব করেছেন।

১৯৭৮-৭৯ মৌসুমে ঘরোয়া ক্রিকেটে প্রথম পদচারণ করেন। হাবিব ব্যাংক লিমিটেড ক্রিকেট দলের পক্ষে খেলতেন। কব্জির কারুকাজ ও আগ্রাসী মনোভাব দল নির্বাচকমণ্ডলীর সবিশেষ দৃষ্টি আকর্ষণে সক্ষম হয়। ১৬ বছর বয়সে লাহোরের পক্ষে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে নিজস্ব দ্বিতীয় খেলা শতক হাঁকান। সফরকারী অস্ট্রেলিয়ার অনূর্ধ্ব-১৮ দলের বিপক্ষে পাকিস্তানের অনূর্ধ্ব-১৯ দলের সদস্যরূপে দলের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক হন। খেলাটি টেলিভিশনে সরাসরি সম্প্রচারিত হয়েছিল ও খুব দ্রুত ভবিষ্যতের তারকা ব্যাটসম্যানরূপে চিত্রিত হতে থাকেন। ১৯৯১-৯২ মৌসুমে ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে এসেক্সের পক্ষে খেলার জন্যে চুক্তিবদ্ধ হন। এ সময়েই ব্যাটসম্যান হিসেবে তাঁর উত্তরণ ঘটতে শুরু করে। ১৯৯৩ সাল পর্যন্ত ক্লাবটির পক্ষে খেলেন। প্রথম মৌসুমেই ৬০.৭০ গড়ে প্রায় দুই হাজার রান সংগ্রহ করেছিলেন।

১৯৮২ থেকে ১৯৯৯ সময়কালে পাকিস্তানের পক্ষে সর্বমোট ১০৩ টেস্ট ও ২৮৩টি ওডিআইয়ে অংশ নিয়েছিলেন। ১৯৮১-৮২ মৌসুমে পাকিস্তান দলের সাথে অস্ট্রেলিয়া গমনের সুযোগ পান। তবে, দলটিতে জ্যেষ্ঠ ব্যাটসম্যানদের প্রাচুর্য্যতায় মাত্র তিনটি প্রস্তুতিমূলক খেলায় অংশ নেয়ার সুযোগ পান। ১৯৮২ সালে টেস্ট ও ওডিআইয়ে অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। ১২ জানুয়ারি, ১৯৮২ তারিখে সিডনিতে অনুষ্ঠিত বেনসন এন্ড হেজেস বিশ্ব সিরিজে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ওডিআইয়ে প্রথম খেলেন। খেলায় তেমন সুবিধে করতে পারেননি। তবে, বিপর্যয়কর ফলাফলের কারণে টেস্ট অভিষেকে প্রথম কাতারে ছিলেন।

জাভেদ মিয়াঁদাদের অধিনায়কত্বে কয়েকজন অভিজ্ঞতাপুষ্ট ক্রিকেটারদের বিদ্রোহের কারণে টেস্ট দলে ঠাঁই পান। ১৯৮১-৮২ মৌসুমে নিজ দেশে বান্দুলা বর্ণাপুরা’র নেতৃত্বাধীন শ্রীলঙ্কান দলের মুখোমুখি হন। ৫ মার্চ, ১৯৮২ তারিখে করাচীতে অনুষ্ঠিত সফররত শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজের প্রথম টেস্টে অংশ নেন। রশীদ খান, সেলিম ইউসুফ ও তাহির নাক্কাসের সাথে তাঁর একযোগে টেস্ট অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। দারুণ সূচনা করেন। প্রথম ইনিংসে তিন নম্বরে ব্যাটিং নেমে ১২ রান তুললেও দ্বিতীয় ইনিংসে চার নম্বরে ইনিংস ঘোষণার আভাষে দ্রুততার সাথে অপরাজিত ১০০ রানের মনোরম শতরানের ইনিংস খেলেন। এরফলে, টেস্ট অভিষেকে শতক হাঁকানোর গৌরব অর্জন করেন। ১৮ বছর ৩২৮ দিন বয়সে শতক হাঁকানোয় পাকিস্তানের সর্বকনিষ্ঠ ব্যাটসম্যানের মর্যাদা পান। ২০৪ রানে জয় পেয়ে স্বাগতিকরা তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে এগিয়ে যায়।

দলে জ্যেষ্ঠ খেলোয়াড়দের ফিরে আসার ফলে তাৎক্ষণিকভাবে দলের নিয়মিত খেলোয়াড়ের মর্যাদাপ্রাপ্ত হননি। তাঁর উত্তরণ সবিশেষ লক্ষ্যণীয় ছিল। সুযোগের পরিপূর্ণ সদ্ব্যবহারে তৎপরতা দেখান। সফররত ভারত ও ইংল্যান্ড দলের বিপক্ষে শতক হাঁকান। অস্ট্রেলিয়া সফরেও একই ধারা অব্যাহত রাখতে থাকেন। ধ্রুপদীশৈলীর স্ট্রোকপ্লে খেলে মাঝারিসারিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে শুরু করেন।

১৯৮৩-৮৪ মৌসুমে নিজ দেশে ডেভিড গাওয়ারের নেতৃত্বাধীন ইংরেজ দলের মুখোমুখি হন। পুরো সিরিজে অসাধারণ ক্রীড়াশৈলী প্রদর্শনে অগ্রসর হন। ১৯ মার্চ, ১৯৮৪ তারিখে লাহোরে অনুষ্ঠিত সফররত ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের তৃতীয় টেস্টে অংশ নেন। ৩৮ ও ৭ রান সংগ্রহ করেছিলেন। এছাড়াও, তিনটি ক্যাচ তালুবন্দী করেছিলেন। তবে, সরফরাজ নওয়াজের অনবদ্য অল-রাউন্ড ক্রীড়াশৈলীর কল্যাণে খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ালেও স্বাগতিকরা তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে ১-০ ব্যবধানে জয়লাভ করে। ৩২২ রান সংগ্রহ করে প্রতিপক্ষীয় অধিনায়ক ডেভিড গাওয়ারের সাথে যৌথভাবে ম্যান অব দ্য সিরিজের পুরস্কার লাভ করেন।

১৯৮৪-৮৫ মৌসুমে নিজ দেশে জেরেমি কোনি’র নেতৃত্বাধীন কিউই দলের মুখোমুখি হন। ১০ ডিসেম্বর, ১৯৮৪ তারিখে করাচীতে অনুষ্ঠিত সিরিজের তৃতীয় ও চূড়ান্ত টেস্টে অংশ নেন। কয়েকটি ব্যক্তিগত সফলতার সন্ধান পান। প্রথম ইনিংসে ৪৩ রানে পৌঁছানোকালে টেস্টে ১০০০ রানের মাইলফলক স্পর্শ করেন। এছাড়াও, দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যক্তিগত পূর্বতন সর্বোচ্চ ১১৬ রান অতিক্রম করেন। খেলায় তিনি ৫০ ও ১১৯* রান সংগ্রহসহ একটি ক্যাচ তালুবন্দী করেছিলেন। তাঁর অসাধারণ ব্যাটিং দৃঢ়তায় খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ালে স্বাগতিকরা ২-০ ব্যবধানে সিরিজ জয় করে নেয়। খেলায় তিনি ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার লাভ করেন।

১৯৮৬ সালে সফররত ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম টেস্টে কোর্টনি ওয়ালশের বলে প্রথম ইনিংসে কব্জীতে আঘাত পান। ৮৯ রানে পিছিয়ে থাকা অবস্থায় দ্বিতীয় ইনিংসে এগারো নম্বরে ব্যাটিংয়ে নেমেছিলেন। বামহাতে ব্যাটিং করে ওয়াসিম আকরামের সাথে ৩২ রান যুক্ত করেছিলেন। ৪১ মিনিট ক্রিজে অবস্থান করে ৩ রানে অপরাজিত ছিলেন। পরবর্তীতে, ইমরান খান ও আব্দুল কাদিরের দূর্দান্ত নৈপুণ্যে প্রতিপক্ষকে ৫৩ রানে গুটিয়ে দেন।

এ আঘাত নিয়েই ভারত সফরে যান ও টেস্টে খুব কমই প্রভাব রাখতে পেরেছিলেন। তাসত্ত্বেও, ১৯৮৭ সালে কলকাতায় স্বাগতিক ভারতের বিপক্ষে অন্যতম স্মরণীয় খেলা উপহার দেন। প্রায় একাকী অসম্ভব জয়ের লক্ষ্যমাত্রায় পাকিস্তানকে পৌঁছে দিয়েছিলেন। জুটিতে সংগৃহীত ৮১ রানের মধ্যে ৭২ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলেন। ৩৬ বল মোকাবেলায় এ ঝড়ো ইনিংসের কল্যাণে নিশ্চিত পরাজয়ের বৃত্তে থাকা পাকিস্তান দল নাটকীয়ভাবে ২ বল বাকী থাকতে লক্ষ্যে পৌঁছে যায়।

এরপর, ১৯৮৭ সালের রিলায়েন্স বিশ্বকাপ ক্রিকেট প্রতিযোগিতায় ইমরান খান তাঁকে তিন নম্বরে ব্যাটিং করার জন্যে মাঠে নামান। বেশ ভালো খেলেন। তন্মধ্যে, শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৯৫ বলে শতরানের ইনিংস খেলেছিলেন। ১৯৮৭ সালে ইংল্যান্ডের মাটিতে পাকিস্তানের বিজয়ে অন্যতম তারকা খেলোয়াড় ছিলেন। এ সফরে নিজেকে ক্রিকেট বিশ্বে নিজের স্থানকে অনন্য উচ্চতায় তুলে ধরেন। লিডসে স্বাগতিক ইংল্যান্ড দল খুব সহজেই গুটিয়ে গেলে পাকিস্তানী ব্যাটসম্যানেরাও হিমশিম খেতে থাকেন। ইনিংসের ভিত্তি আনয়ণে ধ্রুপদীশৈলীর কৌশল প্রদর্শনে স্বীয় দক্ষতার বহিঃপ্রকাশ ঘটান। দিনের শেষ ওভারে ৯৯ রানে বিদেয় নিয়েছিলেন। গত ১৮ টেস্টে তিন অঙ্কের কোটা স্পর্শে বেশ স্নায়ুবিক বৈকল্যে ভুগেন। অথচ, প্রথম ২১ টেস্ট থেকে ৫টি শতরান করেছিলেন। এ টেস্টে জয় পেলে ৫-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজের ভাগ্য নির্ধারণ করে দেয়। অবশেষে ওভালে সিরিজের চূড়ান্ত টেস্টে ষষ্ঠ শতক হাঁকান ও দলের ৭০৮ রানের পর্বতসময় ইনিংসে ভূমিকা রাখেন। ফলশ্রুতিতে, ১৯৮৮ সালে উইজডেন কর্তৃক অন্যতম বর্ষসেরা ক্রিকেটারের সম্মাননায় ভূষিত হন।

১৯৯০-৯১ মৌসুমে নিজ দেশে ডেসমন্ড হেইন্সের নেতৃত্বাধীন ক্যারিবীয় দলের মুখোমুখি হন। ১৫ নভেম্বর, ১৯৯০ তারিখে করাচীতে অনুষ্ঠিত সফররত ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম টেস্টে অংশ নেন। দূর্দান্ত ক্রীড়াশৈলী প্রদর্শন করেন। ১০২ ও ৩০* রান সংগ্রহ করেছিলেন। তাঁর অসামান্য ব্যাটিংশৈলীর কল্যাণে খেলায় স্বাগতিকরা ৮ উইকেটে জয় পায় ও তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে এগিয়ে যায়। তিনি ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার পান।

১৯৯১-৯২ মৌসুমে নিজ দেশে অরবিন্দ ডি সিলভা’র নেতৃত্বাধীন শ্রীলঙ্কান দলের মুখোমুখি হন। ১২ ডিসেম্বর, ১৯৯১ তারিখে শিয়ালকোটে অনুষ্ঠিত সফররত শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। দূর্দান্ত খেলেন। ১০১ রান সংগ্রহ করেন। খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ালে তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজটি অমিমাংসিত অবস্থায় অগ্রসর হতে থাকে। খেলায় তিনি ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার লাভ করেন।

পরবর্তী বছরগুলোয় রানের ধারা সাধারণমানের হলেও ১৯৯২ সালে পুণরায় নিজের শ্রেষ্ঠত্ব প্রদর্শনে সচেষ্ট হন। পূর্বেকার মৌসুমে এসেক্সের কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশীপের শিরোপা বিজয়ে প্রায় দুই হাজার রান তুলেন। এজবাস্টনের মাধ্যমে টেস্ট সিরিজ শুরু করেন। ১৬৫ রানের ইনিংস খেলাকালীন জাভেদ মিয়াঁদাদের সাথে ৩৩২ রান তুলেন। এরপর, লর্ডসে স্ট্রোকের প্রাচুর্যতায় ৫৫ রান তুলে পাকিস্তানকে নাটকীয়ভাবে ২ উইকেটের বিজয়ে বিরাট ভূমিকা রাখেন। ওল্ড ট্রাফোর্ডে উল্লেখ করার মতো তেমন কিছু করে দেখাতে পারেননি। তবে, আকিব জাভেদকে বোলিংয়ে সতর্ক বার্তা দেয়া হলে পরিস্থিতি বেশ ভালোভাবে সামলান। হেডিংলিতে আবারও নিজের প্রতিভা প্রদর্শনে সোচ্চার হন। সিম বোলিং উপযোগী পিচে একের পর এক ব্যাটসম্যানের ব্যর্থতায় কেবল তিনিই রুখে দাঁড়ান। পাকিস্তান দল পরাজিত হলেও তিনি অপরাজিত ৮২ ও অপরাজিত ৮৪ রান তুলে স্বীয় দক্ষতার বিকাশ ঘটান। ওভালে সিরিজের চূড়ান্ত টেস্টে ৪০ রান তুলে পাকিস্তানের সিরিজ বিজয়ে অংশ নেন।

১৯৯৪ সালে অধিনায়কের দায়িত্বে থেকে পাকিস্তানী দলকে নিয়ে শ্রীলঙ্কা সফরে যান। ৯ আগস্ট, ১৯৯৪ তারিখে কলম্বোর পিএসএসে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। ১ ও ৫০* রান সংগ্রহ করেন। এ পর্যায়ে তিনি চতুর্থ পাকিস্তানী হিসেবে টেস্টে চার হাজার রানের মাইলফলক স্পর্শ করেন। তবে, সাঈদ আনোয়ারের অনিন্দ্য সুন্দর ব্যাটিং সাফল্যে সফরকারীরা ৩০১ রানে জয় পেলে তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে এগিয়ে যায়।

১৯৯৪-৯৫ মৌসুমে নিজ দেশে মার্ক টেলরের নেতৃত্বাধীন অজি দলের মুখোমুখি হন। এ সফরে শেন ওয়ার্নের বল মোকাবেলায় প্রথম সিদ্ধহস্তের অধিকারী ছিলেন। অধিনায়কের দায়িত্বে থেকে পুরো সিরিজে অসাধারণ ক্রীড়াশৈলী প্রদর্শন করেছিলেন। ৫ অক্টোবর, ১৯৯৪ তারিখে রাওয়ালপিন্ডিতে অনুষ্ঠিত সফররত অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে অংশ নেন। দূর্দান্ত ক্রীড়া নৈপুণ্যের স্বাক্ষর রাখেন। ৩৩ ও ২৩৭ রান সংগ্রহ করেছিলেন। তাঁর অসাধারণ ব্যাটিংয়ের কল্যাণে খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ায় ও তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে স্বাগতিকরা এগিয়ে যায়। খেলায় তিনি ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার লাভ করেন।

এরপর, ১ নভেম্বর, ১৯৯৪ তারিখে লাহোরে অনুষ্ঠিত সিরিজের তৃতীয় টেস্টে অংশ নেন। ৭৫ ও ১৪৩ রান সংগ্রহ করেছিলেন। খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ালে স্বাগতিকরা ১-০ ব্যবধানে সিরিজে বিজয়ী হয়। খেলায় তিনি ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার পান। এছাড়াও, ৫৫৭ রান সংগ্রহ করে শেন ওয়ার্নের সাথে যৌথভাবে ম্যান অব দ্য সিরিজের পুরস্কার লাভ করেন।

একই মৌসুমে প্রথমবারের মতো দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে টেস্ট খেলেন। পাকিস্তান দলকে নেতৃত্ব দিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে যান। ১৯ জানুয়ারি, ১৯৯৫ তারিখে জোহানেসবার্গে অনুষ্ঠিত সিরিজের একমাত্র টেস্টে স্বাগতিক দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে খেলেন। অধিনায়কের দায়িত্বে থেকে খেলায় তিনি ৯৯ ও ১ রান সংগ্রহসহ একটি ক্যাচ তালুবন্দী করেছিলেন। এছাড়াও, বল হাতে নিয়ে ০/৪৯ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। ফ্যানি ডি ভিলিয়ার্সের অসাধারণ অল-রাউন্ড ক্রীড়া নৈপুণ্যের কল্যাণে স্বাগতিকরা ৩২৪ রানে বিশাল ব্যবধানে জয় পায়।

দেশের বাইরেও কিছু দূরন্ত ক্রীড়াশৈলী প্রদর্শন করেছিলেন। ১৯৯৪ সালে ওয়েলিংটনে স্বাগতিক নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে দ্রুতগতিতে ১৪০ রানের ইনিংস খেলেছিলেন।

একদিনের আন্তর্জাতিকে ফিল্ডার হিসেবে জন্টি রোডসের ৫টি ক্যাচ তালুবন্দী করার পর আরও অনেকের সাথে এবং পাকিস্তানের প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে ওডিআইয়ে ৪টি ক্যাচ তালুবন্দী করে দ্বিতীয় স্থানে অবস্থান করছেন। ২ ডিসেম্বর, ১৯৮৪ তারিখে শিয়ালকোটে অনুষ্ঠিত সফররত নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে এ কৃতিত্বের সাথে নিজেকে জড়িত করেন।

১৯৯১ সালে এসেক্সের চমৎকার বিদেশী খেলোয়াড়ের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিলেন। এ পর্যায়ে তিনি ‘স্লিম’ ডাকনামে পরিচিতি লাভ করেন। পরবর্তীকালে পাকিস্তান দলের অধিনায়ক হিসেবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। দূর্ভাগ্যজনকভাবে ক্রিকেটে তাঁর ভূমিকা এখানেই শেষ হয়ে যায়নি। ক্রিকেটের ইতিহাসের প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে খেলা গড়াপেটায় ভূমিকা রাখায় সকল স্তরের ক্রিকেট থেকে নিষিদ্ধ ঘোষিত হন।

১৯৯২ সালের বিশ্বকাপ ক্রিকেট প্রতিযোগিতার শিরোপা বিজয়ী পাকিস্তান দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন। তবে, ব্যাট হাতে তেমন ভালো খেলা প্রদর্শন করতে পারনেনি। কেবলমাত্র শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে একটি অর্ধ-শতরানের ইনিংস খেলেছিলেন। বিশ্বকাপের পর অধিনায়ক ইমরান খান অবসর গ্রহণ করলে কিছু সময়ের জন্যে তাঁকে অধিনায়ক হিসেবে মনোনীত করা হয়।

১৯৯৩-৯৪ মৌসুমে নিউজিল্যান্ড সফরে পাকিস্তানের অধিনায়ক হিসেবে তাঁকে দায়িত্ব দেয়া হয়। এক বছর পাঁচ দিন এ দায়িত্বে ছিলেন। এ দায়িত্বে থেকে পাকিস্তান দলকে ১২ টেস্টে নেতৃত্ব দেন ও সাতটিতে তাঁর দল জয় পায়। কেবলমাত্র তিন টেস্টে পাকিস্তান দল পরাজয়বরণ করেছিল। এ সময়েই বিতর্কের দানা বাঁধতে শুরু করে।

অকল্যান্ড ও ওয়েলিংটনে স্বাগতিক নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে জয়লাভের মধ্য দিয়ে তাঁর সময় শুরু করেন। এরপর, ক্রাইস্টচার্চে তাঁর দল পরাজিত হয়। পরবর্তীতে, ক্রাইস্টচার্চে টেস্ট ও ওডিআই খেলা আয়োজনের পর পাতানো খেলার অভিযোগ আনা হয়। নিউজিল্যান্ডে সফলতা পাবার পর শ্রীলঙ্কায়ও দলকে জয় এনে দেন।

দেশে ফিরে ১৯৯৪-৯৫ মৌসুমে মার্ক টেলরের নেতৃত্বাধীন অজি দলের মুখোমুখি হন। পাকিস্তান দল করাচী টেস্টে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে অবিশ্বাস্য জয় পায়। এক উইকেটে জয়লাভকালীন ইয়ান হিলি, শেন ওয়ার্নের বল থেকে স্ট্যাম্পিং করতে ব্যর্থ হন ও বলটি চারটি বাই-রানে পরিণত হয়। এ খেলাকে কেন্দ্র করেই পরবর্তীতে শেন ওয়ার্ন, টিম মে ও মার্ক ওয়াহ তাঁকে শেষদিনে বাজে বোলিং করার কারণে অর্থ দেয়ার চেষ্টার বিষয়ে অভিযোগ করেন।

৫ অক্টোবর, ১৯৯৪ তারিখে রাওয়ালপিন্ডিতে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে তিনি তাঁর সেরা ব্যক্তিগত ইনিংস খেলেন। দূর্দান্ত ব্যাটিং নৈপুণ্যের স্বাক্ষর রাখেন। ফলো-অনের কবলে পড়ে ২৩৭ রান তুলে খেলাকে রক্ষা করেন। এছাড়াও, প্রথম ইনিংসে ৩৩ রান সংগ্রহ করেছিলেন। তাঁর অসাধারণ ব্যাটিংয়ের কল্যাণে খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ায় ও তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে স্বাগতিকরা এগিয়ে যায়। ঐ টেস্টে তিনি ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার পান।

লাহোরে সিরিজের চূড়ান্ত টেস্টে ৭৫ ও ১৪৩ রান তুলে দলকে স্মরণীয় সিরিজ জয় এনে দেন। এরপর, দক্ষিণ আফ্রিকায় অনুষ্ঠিত একমাত্র টেস্টে পাকিস্তান দল পরাজিত হয়। প্রথম ইনিংসে ৯৯ রান তুলেন। তবে, ফ্যানি ডি ভিলিয়ার্সের পেস বল মোকাবেলা করতে তাঁকে বেশ বেগ পেতে হয়েছিল।

এরপর, হারারেতে জিম্বাবুয়ের কাছে পাকিস্তান দল পরাজিত হয়। তাসত্ত্বেও, পাকিস্তান সিরিজে ফিরে আসে ও সিরিজ জয় করে। তবে, তিনি তেমন রান করতে পারেননি। খেলা গড়াপেটা ও জুয়াকে কেন্দ্র করে অভিযুক্ত হন ও নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়েন। অধিনায়কত্ব খোঁয়ান ও আর তাঁকে দলে ফিরিয়ে আনা হয়নি।

খেলা গড়াপেটার অভিযোগের বিষয়ের তদন্ত শেষ না হলেও অক্টোবর, ১৯৯৫ সালে বিচারপতি ফখরুদ্দীন জি. ইব্রাহিম সকল অভিযোগ থেকে তাঁকে মুক্তি দেন ও খেলোয়াড়ী জীবন চলমান রাখার সুযোগ করে দেন।

১৯৯৬ সালে ওয়াসিম আকরামের নেতৃত্বাধীন পাকিস্তানী দলের সদস্যরূপে ইংল্যান্ড সফরে যান। এ সফরে রানের ফুলঝুড়ি ছোঁটান। ৮ আগস্ট, ১৯৯৬ তারিখে লিডসে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে অংশ নেন। ৫৫ ও ৬ রান সংগ্রহ করেছিলেন। এ টেস্টে অ্যান্ডি ক্যাডিকের বলে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে পাঁচ হাজার রানের মাইলফলক স্পর্শ করেন। এরফলে, জহির আব্বাস ও জাভেদ মিয়াঁদাদের পর তৃতীয় পাকিস্তানী ব্যাটসম্যান হিসেবে তালিকায় যুক্ত হন। খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ায় ও তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে সফরকারীরা ১-০ ব্যবধানে অগ্রসর হতে থাকে। এরপর, ওভালে ১০০ রানের অপরাজিত শতক হাঁকিয়ে ২-০ ব্যবধানে দলকে সিরিজ জয় এনে দেন।

পরের বছর কলম্বোয় সর্বশেষ শতরানের ইনিংস খেলেন। সাড়ে ছয় ঘণ্টা ক্রিজে অবস্থান করে ১৫৫ রান তুলেছিলেন। এরপর, তিনি আরও সাত টেস্টে অংশ নিয়েছিলেন। কেবলমাত্র একটি অর্ধ-শতরানের কোটা অতিক্রম করতে পেরেছিলেন। শেষের দিনগুলোয় যে-কেউ তাঁকে দেখলে ভেঙ্গে পরবেন এ ধরনের অবস্থায় ছিলেন। অভিযোগগুলো বাতাসে ভেসে বেড়াতে থাকে। উইকেট-রক্ষক রশীদ লতিফ এক স্বাক্ষাৎকারে তাঁকে অভিযুক্ত করেন এবং ওয়াসিম আকরামসহ অন্যান্য তারকা খেলোয়াড়দের নাম বলেন। অনেকগুলো প্রমাণ দাখিল করা হয় ও তদন্ত কার্য শেষে তাঁর জড়িত থাকার কথা ঘোষণা করা হয়। পাশাপাশি বয়সের ভারে ন্যূহ হয়ে পড়েন।

তাসত্ত্বেও শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে সচেষ্ট ছিলেন। ১৯৯৮-৯৯ মৌসুমের এশিয়ান টেস্ট চ্যাম্পিয়নশীপের উদ্বোধনী আসরে অংশ নিতে ওয়াসিম আকরামের নেতৃত্বাধীন পাকিস্তানী দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন। কলকাতায় ভারতের বিপক্ষে প্রথম খেলায় অংশ নেন। ১৬ ফেব্রুয়ারি, ১৯৯৯ তারিখে ইডেন গার্ডেন্সের সবুজ উইকেটে জবাগল শ্রীনাথ ও বেঙ্কটেশ প্রসাদের বোলিং তোপে পড়ে পাকিস্তান দলের সংগ্রহ ২৫/৬ হলে মঈন খানকে সাথে নিয়ে সঙ্কটময় পরিস্থিতি সামাল দেন। ৮৫ রানের জুটি গড়েন। পরবর্তীতে এ ইনিংসটিই খেলার মোড় ঘুরিয়ে দেয়। সাঈদ আনোয়ারের অসাধারণ শতকের কল্যাণে পাকিস্তান দল ৪৬ রানে জয় পায়। পরবর্তীতে, এটিই তাঁর শেষ টেস্টে অংশগ্রহণ ছিল।

বিশ্বকাপ ক্রিকেট প্রতিযোগিতায় পাকিস্তানের শোচনীয় ফলাফলের পর তাঁর খেলোয়াড়ী জীবনের সমাপ্তি ঘটে। চারটি খেলায় অংশ নিলেও কোনটিতেই দুই অঙ্কের কোটা স্পর্শ করতে পারেননি। চতুর্থবারের ন্যায় বিশ্বকাপ ক্রিকেট প্রতিযোগিতায় অংশ নেন।

সব মিলিয়ে টেস্টগুলো থেকে ৪৩.৬৯ গড়ে ১৫ শতক সহযোগে ৫৭৬৮ রান সংগ্রহের পাশাপাশি ওডিআইয়ে ৫টি শতক এবং ৪৭টি অর্ধ-শতক সহযোগে ৭১৭০ রান ও ৮৯ উইকেট পেয়েছেন। মাঝে-মধ্যে ধীরগতিসম্পন্ন ইন-সুইং বোলিং করে টেস্টে ৫ উইকেট দখল করেছেন।

তরুণ বয়সে কভার অঞ্চলে দূর্দান্ত ফিল্ডিং করতেন। পাশাপাশি আউটফিল্ডে অবস্থান করে দারুণভাবে বলকে উইকেটের কাছে ফেলতেন। পরবর্তীতে, স্লিপ অঞ্চলে অবস্থান করতেন।

২০০০ সালে প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে খেলা গড়াপেটায় ভূমিকা রাখায় সকল স্তরের ক্রিকেট থেকে নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়েন। বিচারপতি কাইয়ুমের নেতৃত্বে তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। এরফলে, দুর্ভাগ্যজনকভাবে ও কার্যতঃ তাঁর খেলোয়াড়ী জীবনের সমাপ্তি ঘটে। ১৯৯৪-৯৫ মৌসুমের করাচী টেস্টে অস্ট্রেলিয়াকে পরাজিত হবার জন্যে শেন ওয়ার্ন ও মার্ক ওয়াহকে ঘুষ দিতে চেয়েছিলেন। ২০০০ সালে তিনজন শীর্ষস্থানীয় অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটার তাঁর বিপক্ষে এ কথা বলার অভিযোগ আনেন। ঐ টেস্টে অবশ্য অস্ট্রেলিয়া দল এক উইকেটে পরাজিত হয়েছিল। তিনি এর প্রতিবাদ জানান, ২০০১ সালে এ নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে আবেদন করেন। তবে, লাহোর হাইকোর্ট তা প্রত্যাখান করে। সুপ্রিম কোর্টেও তিনি আবেদন করেন। অতঃপর, সাত বছর অপেক্ষার পর ২৩ অক্টোবর, ২০০৮ তারিখে নিম্ন আদালত থেকে তাঁর উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নেয়া হয়। ২৫ অক্টোবর, ২০১২ তারিখে লাহোরে পাকিস্তানের ব্যাটিং কোচ হিসেবে আবেদন করেন।

Similar Posts

  • | |

    ব্রুস টেলর

    ১২ জুলাই, ১৯৪৩ তারিখে ক্যান্টারবারির তিমারু এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ও প্রশাসক ছিলেন। মূলতঃ অল-রাউন্ডার হিসেবে খেলতেন। ডানহাতে ফাস্ট-মিডিয়াম বোলিং করতেন। পাশাপাশি, বামহাতে কার্যকর ব্যাটিং করতেন। ১৯৬০-এর দশকের মাঝামাঝি সময় থেকে ১৯৭০-এর দশকের সূচনাকাল পর্যন্ত নিউজিল্যান্ড দলে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন। ৬ ফুট ৩ ইঞ্চি উচ্চতার অধিকারী ছিলেন। বল হাতে নিয়ে উভয় দিক দিয়ে বোলিং আক্রমণে…

  • | |

    রমেশ কালুবিতরানা

    ২৪ নভেম্বর, ১৯৬৯ তারিখে কলম্বোয় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ও কোচ। মূলতঃ উইকেট-রক্ষক হিসেবে খেলছেন। এছাড়াও, ডানহাতে ব্যাটিং করতেন। শ্রীলঙ্কার পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন। ক্ষুদ্রাকায় গড়নের অধিকারী তিনি। ‘কালু’ ডাকনামে পরিচিতি পান। সীমিত-ওভারের খেলায় ব্যাটিং উদ্বোধনে নেমে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনয়ণে নিজেকে স্মরণীয় করে রেখেছেন। এ পর্যায়ে বোলারদের উপর চড়াও হতেন, সর্বশক্তি প্রয়োগে দলের রানকে স্ফীততর করার…

  • |

    নিকোলাস থিউনিসেন

    ৪ মে, ১৮৬৭ তারিখে কেপ কলোনির কোলসবার্গ এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ছিলেন। মূলতঃ বোলার হিসেবে দলে ভূমিকা রেখেছিলেন। ডানহাতে ফাস্ট বোলিং করতেন। এছাড়াও, ডানহাতে নিচেরসারিতে ব্যাটিংয়ে নামতেন। ১৮৮০-এর দশকে দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন। কার্যকর অফ-কাটার প্রয়োগ করতেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর দক্ষিণ আফ্রিকান ক্রিকেটে ওয়েস্টার্ন প্রভিন্সের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। ১৮৮৮-৮৯ মৌসুম থেকে ১৮৮৯-৯০ মৌসুম পর্যন্ত…

  • |

    মেহেদী হাসান মিরাজ

    ২৫ অক্টোবর, ১৯৯৭ তারিখে খুলনায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার। মূলতঃ অল-রাউন্ডার হিসেবে দলে ভূমিকা রাখছেন। ডানহাতে অফ-ব্রেক বোলিং করেন। এছাড়াও, ডানহাতে নিচেরসারিতে কার্যকর ব্যাটিংশৈলী প্রদর্শন করে থাকেন। বাংলাদেশের পক্ষে সকল স্তরের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন। বাংলাদেশের ক্রিকেটে অন্যতম উদীয়মান তরুণ হিসেবে আবির্ভুত হয়েছিলেন। লাল-বলের ক্রিকেটে বীরোচিত ভূমিকার কারণে খ্যাতি পেয়েছেন। ক্রিকেটের ক্ষুদ্রতর সংস্করণের তুলনায় লাল-বলের ক্রিকেটেই অধিক…

  • |

    বিজয় মাঞ্জরেকর

    ২৬ সেপ্টেম্বর, ১৯৩১ তারিখে তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের মহারাষ্ট্রের বোম্বেতে জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ছিলেন। মূলতঃ ব্যাটসম্যান হিসেবে দলে ভূমিকা রেখেছিলেন। ডানহাতে ব্যাটিং করতেন। এছাড়াও, ডানহাতে অফ-ব্রেক বোলিংয়ে পারদর্শী ছিলেন। ভারতের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন। ‘ট্যাট’ ডাকনামে পরিচিতি লাভ করেন। ভীতিহীন অবস্থায় হুক এবং কাট মারতেন ও বেশ দক্ষতার পরিচয় দেন। বোম্বে স্কুল থেকে আগত অন্যতম সেরা…

  • | |

    সদানন্দ বিশ্বনাথ

    ২৯ নভেম্বর, ১৯৬২ তারিখে কর্ণাটকের ব্যাঙ্গালোরে জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ও আম্পায়ার। মূলতঃ উইকেট-রক্ষক হিসেবে দলে ভূমিকা রেখেছিলেন। ডানহাতে ব্যাটিং করতেন। ১৯৮০-এর দশকে ভারতের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন। ১৯৮০-৮১ মৌসুম থেকে ১৯৮৯-৯০ মৌসুম পর্যন্ত সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান রাখেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর ভারতীয় ক্রিকেটে কর্ণাটকের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। ১৯৮৫ থেকে ১৯৮৮ সময়কালে ভারতের পক্ষে তিনটিমাত্র টেস্ট…