২৯ নভেম্বর, ১৯৬২ তারিখে কর্ণাটকের ব্যাঙ্গালোরে জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ও আম্পায়ার। মূলতঃ উইকেট-রক্ষক হিসেবে দলে ভূমিকা রেখেছিলেন। ডানহাতে ব্যাটিং করতেন। ১৯৮০-এর দশকে ভারতের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন।
১৯৮০-৮১ মৌসুম থেকে ১৯৮৯-৯০ মৌসুম পর্যন্ত সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান রাখেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর ভারতীয় ক্রিকেটে কর্ণাটকের প্রতিনিধিত্ব করেছেন।
১৯৮৫ থেকে ১৯৮৮ সময়কালে ভারতের পক্ষে তিনটিমাত্র টেস্ট ও ২২টি ওডিআইয়ে অংশ নিয়েছেন। স্ট্যাম্পের পিছনে অবস্থানের পাশাপাশি সামনে থেকে দূর্দান্ত ভূমিকা রেখেছিলেন। ১৯৮০-এর দশকের মাঝামাঝি সময়ে উইকেট-রক্ষক-ব্যাটসম্যান হিসেবে বিশ্ব ক্রিকেটে ভারতের প্রভূত্বকালীন বেশ সফল ছিলেন।
২০ জানুয়ারি, ১৯৮৫ তারিখে বেঙ্গালুরুতে অনুষ্ঠিত সফররত ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ওডিআইয়ে অংশ নেয়ার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট অঙ্গনে প্রবেশ করেন। ১৯৮৫ সালের বেনসন এন্ড হেজেস বিশ্ব ক্রিকেট চ্যাম্পিয়নশীপে অংশ নিয়ে খ্যাতি লাভ করেন। ঐ প্রতিযোগিতায় ভারত দলের স্মরণীয় শিরোপা জয়ে অন্যতম ভূমিকা রাখেন। অধিনায়ক সুনীল গাভাস্কারের কাছ থেকে তাঁর উইকেট-রক্ষণের কুশলতায় উচ্ছ্বসিত প্রশংসা কুড়ান। পাকিস্তানের বিপক্ষে চূড়ান্ত খেলায় জাভেদ মিয়াঁদাদকে স্ট্যাম্পিং করে বিদেয় করেন।
১৯৮৫-৮৬ মৌসুমে কপিল দেবের নেতৃত্বাধীন ভারতীয় দলের সাথে শ্রীলঙ্কা গমন করেন। ৩০ আগস্ট, ১৯৮৫ তারিখে কলম্বোর এসএসসিতে স্বাগতিক শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজের প্রথম টেস্টে অংশ নেন। লালচাঁদ রাজপুতের সাথে তাঁর একযোগে টেস্ট অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। ২০ ও ০ রান সংগ্রহ করেছিলেন। এছাড়াও, তিনটি ক্যাচ গ্লাভসবন্দী করেছিলেন। খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ায় ও তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজটি অমিমাংসিত অবস্থায় অগ্রসর হতে থাকে।
কিন্তু, পরবর্তী বছরগুলোয় তাঁর খেলার মান নিচেরদিকে চলে যেতে থাকে ও দীর্ঘদিন আন্তর্জাতিক খেলোয়াড়ী জীবন চলমান রাখতে পারেননি। ২০ জানুয়ারি, ১৯৮৫ তারিখে বেঙ্গালুরুতে অনুষ্ঠিত সফররত ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সর্বশেষ টেস্ট খেলেন। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ছন্দহীন খেলা প্রদর্শনসহ কিরণ মোরে ও চন্দ্রকান্ত পণ্ডিতের উত্থানে তাঁর খেলোয়াড়ী জীবনে বিরূপ প্রভাব ফেলে। এরফলে, খেলার জগৎ থেকে অবসর গ্রহণ করতে বাধ্য হন।
উপসাগরীয় দেশ ও নিজ শহর ব্যাঙ্গালোরে কয়েকটি চাকুরীর চেষ্টায় থাকাকালীন ১৯৯৫ সালে জীবনে নতুন সম্ভাবনার ক্ষেত্র সৃষ্টি হয়। এ পর্যায়ে বিসিসিআই থেকে সাবেক ভারতীয় খেলোয়াড়দেরকে সেকান্দারাবাদে আম্পায়ার পরীক্ষায় অংশ নেয়ার জন্যে আমন্ত্রণ জানানো হয়। অপর নয়জন সাবেক টেস্ট ক্রিকেটার – যশপাল শর্মা, মনিন্দার সিং, প্রণব রায়, পার্থসারথী শর্মাকে পাশ কাটিয়ে শীর্ষে অবস্থান করেন। এ ক্রীড়ার সাথে নতুন সম্পর্কের ক্ষেত্র তৈরী হয়। তিনি বলেন, ‘এরফলে খেলায় আম্পায়ার হিসেবে আমার ভালোবাসা চলমান থাকবে। আন্তর্জাতিক আম্পায়ার শ্রীনিবাস বেঙ্কটরাঘবন সফলতার সাথে অবসর নিলে আমরা তাঁর অভাব অনুভব করি। একদিন আমরাও মধ্যবিন্দুতে অবস্থান করতে পারবো।’
খেলোয়াড়ী জীবন শেষে ১৯৯৫ সাল থেকে ঘরোয়া ক্রিকেটে আম্পায়ার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। ১৩টি প্রথম-শ্রেণীর খেলা, ১৪টি লিস্ট-এ খেলা ও ১০টি টি২০ খেলায় অংশ নিয়েছেন। এছাড়াও বিসিসিআই ও কর্ণাটক স্টেট ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের অধীনে আরও ১২৮টি খেলার সাথে যুক্ত ছিলেন। তন্মধ্যে, কর্ণাটক প্রিমিয়ার লীগ ও বয়সভিত্তিক প্রতিযোগিতায় খেলা পরিচালনা করেছেন। তারপরও সর্বোচ্চ পর্যায়ে আন্তর্জাতিক আম্পায়ার হিসেবে দায়িত্ব পালনের দিকে যেতে চেয়েছেন। সময়ের সাথে সাথে অন্যান্যরা এ দায়িত্ব থেকে দূরে সরে গেলেও তিনি সাদা পোশাক পরিধান করে দায়িত্ব নিযুক্ত রয়েছেন।
২০০৮ সালে প্রথমবারের মতো বড় ধরনের খেলায় আম্পায়ার হিসেবে দায়িত্ব পালনের সুযোগ পান। ব্যাঙ্গালোরে ভারত ‘এ’ বনাম অস্ট্রেলিয়া ‘এ’ দলের মধ্যকার খেলাটি পরিচালনা করেছিলেন। এছাড়াও, রঞ্জী ট্রফি প্রতিযোগিতার খেলাসহ অগণিত ঘরোয়া পর্যায়ের ক্রিকেটে আম্পায়ারিত্ব করেছেন। প্রতিভাবান ক্ষুদে ক্রিকেটারদের পরিচর্যায় ব্যাঙ্গালোরে সদানন্দ বিশ্বনাথ ক্রিকেট একাডেমি পরিচালনা করছেন।
