|

সদাগোপান রমেশ

১৩ অক্টোবর, ১৯৭৫ তারিখে তামিলনাড়ুর মাদ্রাজে জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার। মূলতঃ ব্যাটসম্যান হিসেবে দলে ভূমিকা রেখেছিলেন। বামহাতে ব্যাটিং করতেন। এছাড়াও, ডানহাতে অফ-ব্রেক বোলিংয়ে পারদর্শী ছিলেন। ভারতের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন।

পায়ের কারুকাজে তেমন অংশ নিতেন না। তবে, সময়কে নিয়ন্ত্রণ করে বল মোকাবেলাপূর্বক ব্যাটিং কর্মে অগ্রসর হতেন। ছন্দে থাকাকালে দৃষ্টিনন্দন ক্রীড়াশৈলী প্রদর্শন করতেন। নতুন বলের বিপক্ষে দর্শনীয়তা প্রদর্শন অলস ভাব বজায় রাখতেন ও অনীহা প্রকাশ করতেন। ১৯৯৫-৯৬ মৌসুম থেকে ২০০৭-০৮ মৌসুম পর্যন্ত সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান রাখেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর ভারতীয় ক্রিকেটে তামিলনাড়ুর প্রতিনিধিত্ব করেছেন।

১৯৯৯ থেকে ২০০১ সময়কালে ভারতের পক্ষে সর্বমোট ১৯ টেস্ট ও ২৪টি ওডিআইয়ে অংশ নিয়েছেন। ১৯৯৮-৯৯ মৌসুমে নিজ দেশে ওয়াসিম আকরামের নেতৃত্বাধীন সফররত পাকিস্তানের বিপক্ষে স্ট্রোক প্লে’র অপূর্ব নিদর্শন রাখেন। ৩১ জানুয়ারি, ১৯৯৯ তারিখে চেন্নাইয়ে তাঁর টেস্ট অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। ৪৩ ও ৫ রান সংগ্রহ করেন। এছাড়াও, একটি ক্যাচ তালুবন্দী করেছিলেন। তবে, শচীন তেন্ডুলকরের চমৎকার অল-রাউন্ড ক্রীড়াশৈলী প্রদর্শন সত্ত্বেও ১২ রানে জয় পেয়ে সফরকারীরা দুই-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে যায়।

অভিষেক ঘটা ঐ সিরিজে ওয়াসিম আকরাম, ওয়াকার ইউনুস, শোয়েব আখতার, সাকলাইন মুশতাক, মুশতাক আহমেদের ন্যায় খ্যাতনামা বোলারদের রুখে দিয়ে নিজের প্রতিভা বিকাশে সোচ্চার হন। অপরাপর ব্যাটসম্যানেরা হিমশিম খেলেও তিনি ৪৩, ৬০, ৯৬, ৭৯ ও ৪০ রান তুলেন। দৃশ্যতঃ ভারতীয় ক্রিকেটে দীর্ঘদিন খেলার উপযোগী হিসেবে চিত্রিত হয়েছিলেন।

অবশেষে শতরানের সন্ধান পান। প্রথমে শ্রীলঙ্কা ও পরবর্তীতে নিজ দেশে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে শতক হাঁকান। ৭ টেস্ট থেকে ৫৫.৯২ গড়ে ৭৮৩ রান তুলেন। এরপর, অস্ট্রেলিয়া সফরে যান। তেমন সফলতার স্বাক্ষর রাখতে না পারলেও এ সফরে শচীন তেন্ডুলকরের পর রাহুল দ্রাবিড়ের ন্যায় ব্যাটসম্যানকে পাশ কাটিয়ে অধিকতর রান তুলেন। তবে, মেলবোর্ন টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে ব্রেট লি’র বলে আঘাত পেলে তাঁকে রিটায়ার হার্ট হতে হয়। সিডনিতে তিনি খেলেননি। এরফলে, তাঁর ক্রীড়াশৈলীর বিষয়ে প্রশ্নবিদ্ধতার পরিবেশ সৃষ্টি করে।

আক্রমণাত্মক ব্যাটসম্যান হওয়া সত্ত্বেও, সীমিত-ওভারের খেলায় তেমন অংশগ্রহণের সুযোগ পাননি। তাসত্ত্বেও, ওডিআইয়ে প্রথমবারের মতো বোলিংয়ে নেমে প্রথম বলেই উইকেট লাভের গৌরব অর্জন করেন। এটিই ভারতের কোন ক্রিকেটারের প্রথম বলে থেকে উইকেট নেয়ার প্রথম কৃতিত্ব ছিল।

পরের বছর দলে নিয়মিতভাবে খেলেন। কিন্তু ছন্দহীনতার কবলে পড়েন। কয়েকটি আকর্ষণীয় ইনিংস উপহার দিলেও গড় হার নিচেরদিকে যেতে থাকে। তাসত্ত্বেও, ইডেনে অবিশ্বাস্য ডাইভে হরভজন সিংয়ের হ্যাট্রিক লাভে নিজেকে যুক্ত করতে পেরেছিলেন।

শ্রীলঙ্কায় ইতিবাচক ব্যাটিংয়ে অগ্রসর হন ও কিছু সফলতা পান। কলম্বোয় সিরিজের চূড়ান্ত টেস্টে ৪৬ ও ৫৫ রান তুললেও ভারত দল শ্রীলঙ্কার কাছে ২-১ ব্যবধানে সিরিজ খোঁয়ায়। এরপর থেকেই বীরেন্দ্র শেহবাগকে উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান হিসেবে দলে রাখা হয়। দল থেকে বাদ পড়েন ও আর তাঁকে ভারত দলের পক্ষে খেলতে দেখা যায়নি। ২০০৩-০৪ মৌসুমে অস্ট্রেলিয়া গমনার্থে তাঁকে পুণরায় জাতীয় দলে ঠাঁই দেয়া হয়। কিছু খেলায় ভালো করলেও পরবর্তীতে দল নির্বাচকমণ্ডলী আকাশ চোপড়াকে অগ্রাধিকার দেয়।

২০০১-০২ মৌসুমে সৌরভ গাঙ্গুলী’র অধিনায়কত্বে শ্রীলঙ্কা গমনের সুযোগ পান। ২৯ আগস্ট, ২০০১ তারিখে কলম্বোর এসএসসিতে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজের তৃতীয় টেস্টে অংশ নেন। ৪৬ ও ৫৫ রান সংগ্রহ করেছিলেন। এছাড়াও, বল হাতে নিয়ে ০/২৪ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। স্বাগতিকরা ইনিংস ও ৭৭ রানে জয় পেয়ে তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে ২-১ ব্যবধানে বিজয়ী হয়। পরবর্তীতে, এটিই তাঁর সর্বশেষ টেস্টে পরিণত হয়।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে প্রত্যাখ্যাত হলেও তামিলনাড়ুর পক্ষে খেলা চালিয়ে যেতে থাকেন। পরবর্তীতে কেরালা ও আসামের প্রতিনিধিত্ব করেন। চলচ্চিত্রে রূপালী জগতে প্রবেশ করেন। তামিল চলচ্চিত্রে নায়কের ভূমিকায় অবতীর্ণ হন।

Similar Posts

  • | |

    স্টুয়ার্ট কার্লাইল

    ১০ মে, ১৯৭২ তারিখে সলসবারিতে জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার। মূলতঃ শীর্ষসারির ব্যাটসম্যান হিসেবে দলে ভূমিকা রেখেছেন। ডানহাতে ব্যাটিং করতেন। এছাড়াও, ডানহাতে মিডিয়াম বোলিংয়ে পারদর্শী ছিলেন। জিম্বাবুয়ে দলের অধিনায়কত্ব করেছেন। ১৯৯৩-৯৪ মৌসুম থেকে ২০০৫-০৬ মৌসুম পর্যন্ত সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান রাখেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর জিম্বাবুয়ীয় ক্রিকেটে ম্যাশোনাল্যান্ডের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। অত্যন্ত দক্ষ ও কার্যকর ব্যাটসম্যান হিসেবে পরিচিতি লাভ…

  • | |

    কলিন ক্রফ্ট

    ১৫ মার্চ, ১৯৫৩ তারিখে ব্রিটিশ গায়ানার ল্যাঙ্কাস্টার ভিলেজ এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ও ধারাভাষ্যকার। মূলতঃ বোলার হিসেবে দলে ভূমিকা রেখেছেন। ডানহাতে ফাস্ট বোলিংয়ের পাশাপাশি ডানহাতে নিচেরসারিতে ব্যাটিং করতেন। ওয়েস্ট ইন্ডিজের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন। ‘ক্রফ্টি’ ডাকনামে ভূষিত হয়েছিলেন। ৬ ফুট ৫ ইঞ্চির লিকলিকে গড়নের অধিকারী ছিলেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান ক্রিকেটে গায়ানা এবং ইংরেজ…

  • |

    ন্যাট থমসন

    ২৯ মে, ১৮৩৯ তারিখে নিউ সাউথ ওয়েলসের সারে হিলস এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ছিলেন। মূলতঃ উইকেট-রক্ষণ কর্মে মনোনিবেশ ঘটাতেন। উইকেট-রক্ষকের দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি ডানহাতে ব্যাটিং করতেন। ১৮৭০-এর দশকে অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছিলেন। ১৮৫৭-৫৮ মৌসুম থেকে ১৮৭৯-৮০ মৌসুম পর্যন্ত প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন অতিবাহিত করেছেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটে নিউ সাউথ অস্ট্রেলিয়ার পক্ষাবলম্বন করেছেন। ১১…

  • | |

    এনামুল হক, ১৯৬৬

    ২৭ ফেব্রুয়ারি, ১৯৬৬ তারিখে কুমিল্লায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ও আম্পায়ার। মূলতঃ অল-রাউন্ডার হিসেবে খেলতেন। বামহাতে ব্যাটিং করতেন। এছাড়াও, কার্যকর স্লো লেফট-আর্ম অর্থোডক্স বোলিয়ে পারদর্শী ছিলেন। বাংলাদেশের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন। ‘মণি’ ডাকনামে পরিচিতি লাভ করেন। ১৯৯৮-৯৯ মৌসুম থেকে ২০০২-০৩ মৌসুম পর্যন্ত সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান রাখেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর বাংলাদেশী ক্রিকেটে চট্টগ্রাম বিভাগের প্রতিনিধিত্ব…

  • | |

    আলেকজান্ডার ওয়েব

    ১৬ জানুয়ারি, ১৮৫৫ তারিখে লন্ডনের বেথনাল গ্রীন এলাকায় জন্মগ্রহণকারী শৌখিন ক্রিকেটার ও প্রশাসক ছিলেন। মূলতঃ উইকেট-রক্ষণের দায়িত্ব পালন করতেন। এছাড়াও, ডানহাতে ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি ডানহাতে ফাস্ট বোলিং করতে পারতেন। ১৮৭০-এর দশকে ইংল্যান্ডের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছিলেন। হ্যারো স্কুলে অধ্যয়ন শেষে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনো করেছেন। হ্যারোতে অধ্যয়নকালে ১৮৭২ থেকে ১৮৭৪ সময়কালে ক্রিকেট একাদশের সক্রিয় সদস্য ছিলেন।…

  • | |

    শহীদ আফ্রিদি

    ১ মার্চ, ১৯৮০ তারিখে খাইবার এজেন্সিতে জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার। মূলতঃ অল-রাউন্ডারের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিলেন। লেগ-ব্রেক গুগলি বোলিং করতেন। পাশাপাশি, ডানহাতে কার্যকরী ও মারকুটে ব্যাটিংশৈলী প্রদর্শনে এগিয়ে আসতেন। পাকিস্তানের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের সকল স্তরে অংশ নিয়েছেন। এছাড়াও, পাকিস্তান দলের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেছেন। পাকিস্তানের প্রথিতযশা অল-রাউন্ডার হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করেছিলেন। সুইংয়ের সুলতান, স্পিনের যাদুকর ও বিধ্বংসী ব্যাটসম্যান…