১৪ নভেম্বর, ১৯৬৭ তারিখে বিহারের পাটনায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার, ধারাভাষ্যকার ও প্রশাসক। মূলতঃ উইকেট-রক্ষক হিসেবে দলে ভূমিকা রেখেছিলেন। এছাড়াও, ডানহাতে ব্যাটিং করতেন। ভারতের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন।
১৯৮২-৮৩ মৌসুম থেকে ১৯৯৯-২০০০ মৌসুম পর্যন্ত সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান রাখেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর ভারতীয় ক্রিকেটে বাংলা ও বিহারের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। ১৯৮৮-৮৯ মৌসুমে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে বিস্ময়করভাবে ভারত দলে খেলার জন্যে মনোনীত হন। রবিন সিংয়ের ন্যায় তাঁকেও কিরণ মোরে’র সহকারী হিসেবে রাখা হয়। তাঁর ন্যায় তিনিও কোন খেলায় অংশ নেয়ার সুযোগ পাননি। সাত বছর তাঁকে মাঠের বাইরে রাখা হয়। রবিন সিংয়ের ন্যায় তাঁকেও একই মৌসুমে খেলানো হয়।
১৯৯৭ থেকে ২০০০ সময়কালে ভারতের পক্ষে একটিমাত্র টেস্ট ও ৩৪টি ওডিআইয়ে অংশ নিয়েছিলেন। ১৯৯৬-৯৭ মৌসুমে দলের সাথে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে যান। ২৩ ডিসেম্বর, ১৯৯৭ তারিখে ব্লোমফন্তেইনে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ওডিআইয়ে অংশ নেয়ার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট অঙ্গনে প্রবেশ করেন। অভিষেক পর্বটি চমৎকার হয়েছিল। ৪৮ বল থেকে ৫৫ রান তুলে দলের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক হন। দ্বিতীয় খেলায় ৪৬ বলে ৩৮ রান তুললেও খেলাটি টাইয়ে পরিণত হয়। দূর্ভাগ্যজনকভাবে আর কোন খেলায় ৩০-এর কোটা অতিক্রম করতে দেখা যায়নি। ওডিআই থেকে ১৬ গড়ে রান তুলেছেন। পাশাপাশি ২৭ ক্যাচ ও ৩ স্ট্যাম্পিং করেছিলেন।
দলে সর্বদাই তাঁকে আসা-যাবার পালায় থাকতে হতো। নয়ন মোঙ্গিয়া ও এমএস ধোনি’র আধিপত্যে স্ট্যাম্পের পিছনে অবস্থানের জন্যে তাঁকে তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বিতায় অবতীর্ণ হতে হয়। এরপর, ২০০০ সালে ঢাকায় অনুষ্ঠিত এশিয়া কাপের খেলায় বাংলাদেশের বিপক্ষে খেলাকালীন অনিল কুম্বলে’র বলে ব্যাটসম্যানের জুতোয় বল লেগে ডান চোখে আঘাত হানে। কিছুদিন খেলার জগৎ থেকে দূরে থাকেন।
এ আঘাত নিয়েও তিনি তাঁর একমাত্র টেস্টে অংশ নেন। ২০০০-০১ মৌসুমে ভারতীয় দলের সাথে বাংলাদেশ সফর করেন। ১০ নভেম্বর, ২০০০ তারিখে ঢাকায় অনুষ্ঠিত বাংলাদেশের ইতিহাসের উদ্বোধনী টেস্টে জহির খান ও শিবসুন্দর দাসের সাথে তাঁর একযোগে অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। ১৫ রান সংগ্রহ করেন ও একটি ক্যাচ গ্লাভস বন্দী করেছিলেন। অপর অভিষেকধারী জহির খানের বলে মেহরাব হোসেন অপি’র ক্যাচ নিয়েছিলেন তিনি। দলীয় সংগ্রহ ১৯০/৫ থাকাকালীন সৌরভ গাঙ্গুলী’র সাথে ষষ্ঠ উইকেটে ৪৬ রান যুক্ত করেছিলেন। তাঁকে বিদেয় করে খালেদ মাসুদ পাইলটকে পাশ কাটিয়ে আল শাহরিয়ার বাংলাদেশের পক্ষে প্রথম স্ট্যাম্পিং করার কৃতিত্ব প্রদর্শন করেন। সৌরভ গাঙ্গুলী প্রথমবারের মতো দলকে নেতৃত্ব দেন ও সুনীল জোশী’র দূর্দান্ত বোলিং নৈপুণ্যে সফরকারীরা খেলায় ৯ উইকেটে জয় পেয়েছিল।
দূর্ভাগ্যবশতঃ চিকিৎসা করেও তিনি আরোগ্য লাভ করতে পারেননি। চোখ স্থায়ীভাবে নষ্ট হয়ে যাবার এক বছর পর ক্রিকেট খেলা ছেড়ে দেন। এ সময়ে তাঁর বয়স ৩৩ বছর হলেও ১৮ বছর প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে অংশ নিয়েছিলেন। যদি তিনি উইকেট-রক্ষণে অগ্রসর নাও হতেন, তাহলেও প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে ৫৭ গড়ে রান তুলে ঘরোয়া ক্রিকেটে তারকা খ্যাতি লাভ করতেন। ২৯৮টি ডিসমিসালের পাশাপাশি ১২০ খেলা থেকে ৭৩১০ রান পেয়েছেন। অধিকাংশ খেলাই বিহার ও বাংলা দলের পক্ষে খেলেছেন।
ক্রিকেট থেকে অবসর গ্রহণের পর টেলিভিশনে ধারাভাষ্যকারের দায়িত্ব পালন করেন। সেপ্টেম্বর, ২০১২ সালে জাতীয় দল নির্বাচকমণ্ডলীর সদস্য হন।
