৬ ডিসেম্বর, ১৯৮৫ তারিখে উত্তরপ্রদেশের রে বারেলি এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার। মূলতঃ বোলার হিসেবে দলে ভূমিকা রেখেছিলেন। বামহাতে ফাস্ট-মিডিয়াম বোলিং করতেন। এছাড়াও, ডানহাতে নিচেরসারিতে ব্যাটিংয়ে নামতেন। ভারতের পক্ষে সকল স্তরের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন।
২০০৪ সালে বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত আইসিসি অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ ক্রিকেট প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়ার মাধ্যমে পাদপ্রদীপে চলে আসেন। ঐ প্রতিযোগিতায় ৮ উইকেট দখল করেছিলেন তিনি। ২০০৩-০৪ মৌসুম থেকে ২০১৭-১৮ মৌসুম পর্যন্ত সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান রাখেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর ভারতীয় ক্রিকেটে উত্তরপ্রদেশ ও ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে লিচস্টারশায়ারের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। এছাড়াও, ডেকান চার্জার্স, কোচি তুস্কার্স কেরালা, মুম্বই ইন্ডিয়ান্স, রাইজিং পুনে সুপারজায়ান্টস ও রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরের পক্ষে খেলেছেন। রঞ্জী ট্রফি প্রতিযোগিতায় উত্তরপ্রদেশের সদস্যরূপে ৩৪ উইকেট পেয়েছিলেন। ভারতীয় দল নির্বাচকমণ্ডলী উদীয়মান ব্যাটসম্যান ও বোলারদের সন্ধানে অগ্রসর হলে তাঁকে খুব সহজেই চিহ্নিত করে।
২০০৫ থেকে ২০১১ সময়কালে ভারতের পক্ষে সর্বমোট ১৪ টেস্ট, ৫৮টি ওডিআই ও ১০টি টি২০আইয়ে অংশ নিয়েছেন। ৪ সেপ্টেম্বর, ২০০৫ তারিখে হারারেতে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওডিআই অংশ নেয়ার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট অঙ্গনে প্রবেশ করেন। তাৎক্ষণিক সফলতার স্বাক্ষর রাখতে সচেষ্ট হন। নিজস্ব দ্বিতীয় ওভারেই দুই উইকেট লাভ করেন। অল্প কিছুদিন পরই তাঁকে টেস্ট দলে ঠাঁই দেয়া হয়।
২০০৫-০৬ মৌসুমে রাহুল দ্রাবিড়ের অধিনায়কত্বে ভারত দলের সদস্যরূপে পাকিস্তান সফরে যান। ২১ জানুয়ারি, ২০০৬ তারিখে ফয়সালাবাদে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে তাঁর অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। বড় রানের খেলায় তিনি দারুণ বোলিং করে নিজেকে স্মরণীয় করে রাখেন। ৪/৮৯ ও ১/৭৫ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ায় ও তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজটি অমিমাংসিত অবস্থায় অগ্রসর হতে থাকে। তিনি ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার লাভ করেন।
ঐ বছরের শেষদিকে ইংল্যান্ড সফরের নিজের প্রতিভার বিচ্ছুরণে সচেষ্ট হন। খ্যাতনামা লর্ডসে প্রথমবারের মতো পাঁচ-উইকেটের সন্ধান পান। ২১ বছর পর ভারতের সিরিজ বিজয়ে দারুণ ভূমিকা রাখেন। এরপর, টি২০ বিশ্বকাপ ক্রিকেট প্রতিযোগিতার উদ্বোধনী আসরে আবারও ভালোমানের খেলা উপহার দিয়ে ভারতের শিরোপা বিজয়ে অংশ নেন।
কল্পলোকের ন্যায় পার্থেও ভারতের ঐতিহাসিক বিজয়ের সাথে নিজেকে যুক্ত রেখেছিলেন। ছয় উইকেট পেয়েছিলেন তিনি। তবে, এর পরপরই ছন্দহীনতায় ভুগেন। ২০০৮ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে নিজ দেশে অনুষ্ঠিত সিরিজে উইকেট শূন্য অবস্থায় ছিলেন ও দল থেকে বাদ পড়েন। তবে, ওডিআই দলের নিয়মিত সদস্যের মর্যাদাপ্রাপ্ত হয়েছিলেন। কিন্তু, ধারাবাহিকতা রক্ষা করতে না পারা ও আঘাতের কারণে নিজের সেরা খেলা প্রদর্শন করতে পারেননি।
ভারতীয় পেস বোলারদের দীর্ঘ তালিকায় অন্যতম ছিলেন। বেশ প্রতিশ্রুতিশীলতার স্বাক্ষর রাখা স্বত্ত্বেও জাতীয় দলে নিজেকে দীর্ঘ সময় ধরে রাখতে পারেননি। ইংল্যান্ড গমনার্থে ভারত দলে আঘাত হানলে শেষ মুহূর্তে তাঁকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। ২০১১ সালে এমএস ধোনি’র নেতৃত্বাধীন ভারতীয় দলের সদস্যরূপে ইংল্যান্ড গমন করে। ১৮ আগস্ট, ২০১১ তারিখে ওভালে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের চতুর্থ টেস্টে অংশ নেন। কিন্তু, ঐ টেস্টে ৩৪ ওভার বোলিং করলেও কোন উইকেট পাননি। ০/১১৮ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। এছাড়াও, ব্যাট হাতে ২৫ ও ০ রান সংগ্রহ করেছিলেন। স্বাগতিকরা ইনিংস ও ৮ রানে জয় পেয়ে ৪-০ ব্যবধানে সিরিজ জয় করে। পরবর্তীতে এটিই তাঁর সর্বশেষ টেস্টে পরিণত হয়। এরপর, ওডিআই সিরিজেও তাঁকে খেলানো হয়। কিন্তু, তেমন আশানুরূপ খেলা উপহার দিতে ব্যর্থ হলে তাঁকে ভারত দল থেকে বাদ দেয়া হয়।
আইপিএলের উদ্বোধনী আসরে ডেকান চার্জার্সের পক্ষে খেলার জন্যে চুক্তিবদ্ধ হন। দক্ষিণ আফ্রিকায় অনুষ্ঠিত আইপিএলের দ্বিতীয় আসরে দলের শিরোপা বিজয়ে বিরাট ভূমিকা রাখেন। ১৬ খেলায় অংশ নিয়ে ২৩ উইকেট দখল করেছিলেন তিনি। ফলশ্রুতিতে সর্বোচ্চ উইকেট সংগ্রাহকের মর্যাদা পান ও পার্পল ক্যাপের অধিকারী হন। কোচির বিশেষ প্রাধিকারপ্রাপ্ত দল ২০১১ সালের নিলামে $৪৭৫,০০০ মার্কিন ডলারের বিনিময়ে কিনে নেয়।
এরপর, ২০১২ সালে মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের প্রতিনিধিত্ব করার পর পরের বছর রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরে চলে যান। কিন্তু, আরসিবিতে তেমন ক্রীড়াশৈলী প্রদর্শন করতে না পারার কারণে ও ঘরোয়া আসরের ক্রিকেটে সাধারণমানের ক্রীড়া নৈপুণ্যের স্বাক্ষর রাখতে ২০১৪ সালের আইপিএল নিলামে তাঁর প্রতি কোন দলের আগ্রহ জন্মায়নি।
