রেগ পার্কস
৪ অক্টোবর, ১৯১১ তারিখে হিয়ারফোর্ড এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ছিলেন। দলে মূলতঃ বোলিং কর্মে অগ্রসর হতেন। ডানহাতে ফাস্ট-মিডিয়াম বোলিংয়ের পাশাপাশি বামহাতে ব্যাটিংয়ে নামতেন। ১৯৩০-এর দশকে ইংল্যান্ডের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছিলেন।
অনেক ক্রিকেট বিশ্লেষকই তাঁকে সর্বাপেক্ষা উপেক্ষিত বোলার হিসেবে চিত্রিত করেছেন। অথচ, ১৯৩০-এর দশক থেকে ১৯৫০-এর দশক পর্যন্ত ওরচেস্টারশায়ারের প্রধান বোলিং চালিকাশক্তি হিসেবে বিবেচিত হয়েছিলেন। ক্রিকেটপ্রেমী পরিবারের সন্তান ছিলেন। তাঁর পিতা টমাস পার্কস ১৯০২ সালে এমসিসি’র সদস্যরূপে একটি প্রথম-শ্রেণীর খেলায় অংশ নিয়েছিলেন। দৈহিক উচ্চতাকে কাজে লাগাতে সচেষ্ট ছিলেন। যথেষ্ট প্রভাব ফেলতেন এবং প্রায়শঃই উভয় দিক থেকেই পর্যাপ্ত বাউন্স আনয়ণে সক্ষম ছিলেন। তবে, ব্যাটিংয়ের ক্ষেত্রে তাঁর ভূমিকা বেশ তথৈবাচৈ ছিল। বোলার হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত হবার পূর্বে ১৯২৮ সালে ওরচেস্টারশায়ারের মাঠকর্মী হিসেবে যুক্ত হন।
ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে ওরচেস্টারশায়ারের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। ১৯৩০ থেকে ১৯৫৫ সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন অতিবাহিত করেছেন। জ্যাক হবসের মাধ্যমে প্রথমবার উইকেটের সন্ধান পান। বর্ণাঢ্যময় খেলোয়াড়ী জীবনে দুই সহস্রাধিক উইকেট লাভ করেন। তন্মধ্যে, উপর্যুপরী ষোলো মৌসুমে ১০০ উইকেট লাভের মাইলফলক স্পর্শ করেন। তাঁর সংগৃহীত ২১৪৩ উইকেট লাভের বিষয়টি ওরচেস্টারশায়ারের অনন্য রেকর্ড হিসেবে অদ্যাবধি অক্ষত রয়েছে।
১৯৩৯ সালে সব মিলিয়ে ইংল্যান্ডের পক্ষে দুইটিমাত্র টেস্টে অংশগ্রহণের সুযোগ লাভ করেছিলেন। তাসত্ত্বেও, উভয় টেস্টেই পাঁচ-উইকেটের সন্ধান পেয়েছিলেন। ১৯৩৮-৩৯ মৌসুমে ওয়ালি হ্যামন্ডের নেতৃত্বাধীন এমসিসি দলের সাথে দক্ষিণ আফ্রিকা গমন করেন। ৩ মার্চ, ১৯৩৯ তারিখে ডারবানে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজের পঞ্চম ও চূড়ান্ত টেস্টে তাঁর অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। খেলায় তিনি ৫/১০০ ও ১/৯৯ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। একবার ব্যাটিংয়ে নেমে ২* রান সংগ্রহ করেন। খেলাটি ড্রয়ে পরিণত হলেও সফরকারীরা ১-০ ব্যবধানে সিরিজ জয় করে নেয়।
১৯ আগস্ট, ১৯৩৯ তারিখে ওভালে ওয়ালি হ্যামন্ডের নেতৃত্বাধীন ইংরেজ দলের সদস্যরূপে রল্ফ গ্রান্টের নেতৃত্বাধীন সফরকারী ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সর্বশেষ টেস্ট খেলেন। ইংল্যান্ড দল প্রথম ইনিংসে ৩৫২ রান তুলে ও তিনি এক রানে অপরাজিত অবস্থায় মাঠ ত্যাগ করেন। এছাড়াও, একটি ক্যাচ তালুবন্দী করেছিলেন। পাশাপাশি, ৫/১৫৬ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ালেও তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে স্বাগতিকরা ১-০ ব্যবধানে সিরিজ জয় করে নেয়।
সব মিলিয়ে ৫৯৫টি প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট খেলায় অংশ নিয়েছেন। তবে, দূর্ভাগ্যজনকভাবে সর্বাধিক ১৫৬বার শূন্য রানে বিদেয় নেয়া খেলোয়াড়দের তালিকায় শীর্ষে রয়েছেন। এছাড়াও, ৮৮৪টি ইনিংসের ১৫০টিতে অপরাজিত অবস্থায় মাঠ ত্যাগ করেছিলেন। কোন শতরানের সন্ধান পাননি। ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ৭৫ রান তুলেছেন। ১৪টি অর্ধ-শতক হাঁকানোর পাশাপাশি ২৩৮টি ক্যাচ তালুবন্দী করেছিলেন। ২৪.০৭ গড়ে ২২৩৩ উইকেট লাভ করেছেন। প্রতি ৫২ বল থেকে একটি করে উইকেট পেয়েছেন। ব্যক্তিগত সেরা ৯/৪০ লাভ করেছেন। ১৪৩বার ইনিংসে পাঁচ-উইকেট ও ২৪বার খেলায় দশ উইকেট পেয়েছেন। ২২ নভেম্বর, ১৯৭৭ তারিখে ওরচেস্টারে ৬৬ বছর ৪৯ দিন বয়সে তাঁর দেহাবসান ঘটে।