৫ মার্চ, ১৯১৮ তারিখে তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের নিম্বাহেরায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ছিলেন। মূলতঃ অল-রাউন্ডারের দায়িত্ব পালন করতেন। ডানহাতে ব্যাটিং করতেন। এছাড়াও, ডানহাতে মিডিয়াম বোলিংয়ে পারদর্শী ছিলেন। ভারত দলের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন।
১৯৩৫-৩৬ মৌসুম থেকে ১৯৬৩-৬৪ মৌসুম পর্যন্ত সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন অতিবাহিত করেছেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর ভারতীয় ক্রিকেটে বরোদা, হিন্দু, মহারাষ্ট্র ও বোম্বে দলের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। ১৯৪০-এর দশকের শুরুতে মহারাষ্ট্রের উত্থানে অন্যতম ভূমিকার স্বাক্ষর রেখেছিলেন। ঘরোয়া আসরের ক্রিকেটে তারকা অল-রাউন্ডারের মর্যাদা লাভ করেন। সঠিক সময়ে উঁচু স্তরের ক্রিকেট খেলার জন্যে তাঁকে মনোনীত করা হয়েছিল। প্রতিযোগিতাধর্মী অল-রাউন্ডার হিসেবে তিনি এর সবটুকুই সাদরে গ্রহণ করেছিলেন। প্রচণ্ড চাপের মুখে থেকেও ব্যাট হাতে বেশ ভালোমানের ক্রীড়া নৈপুণ্যের স্বাক্ষর রাখেন। পরিস্থিতির উত্তরণ ঘটার পূর্ব-পর্যন্ত নিজেকে সামলে নিতেন। এছাড়াও, ব্যাটিংবান্ধব ভারতীয় পিচেও অবিরাম বোলিং করে গেছেন।
বল হাতে নিয়ে অবিরাম প্রচেষ্টা চালিয়ে গেছেন ও ব্যাট হাতে অসামান্য যোদ্ধারূপে আবির্ভূত হয়েছিলেন। ঘরোয়া ক্রিকেটে মহারাষ্ট্রের পক্ষে খেলেছেন। কাঁধে আঘাতের পূর্বে দ্রুতলয়ে কার্যকর বোলিং করেন। প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে ২৯ গড়ে ৪৩০৭ রান ও ৩৩ গড়ে ২৩২ উইকেট দখল করেছেন। পরিসংখ্যানগত দিক দিয়ে হয়তোবা তেমন ভালো নয়; তবে, রঞ্জী ট্রফি প্রতিযোগিতায় ৩৫ গড়ে ২১৬২ রান সংগ্রহসহ ২৪ গড়ে ১৩৯ উইকেট দখল করেছিলেন। মহারাষ্ট্র দলের সদস্যরূপে ব্যাটিংবান্ধব পিচে এগিয়ে নিয়ে যেতে সচেষ্ট ছিলেন। ঐ দশকে ব্যাটসম্যানদের দাপটে খুব কমই ব্যাটিং করার সুযোগ পেয়েছিলেন।
রঞ্জী ট্রফিতে মহারাষ্ট্রের প্রথম দুইটি শিরোপা বিজয়ে বিরাট ভূমিকা রাখেন। ১৯৩৯-৪০ ও ১৯৪০-৪১ মৌসুমে উপর্যুপরী দুই বছরে দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন। তন্মধ্যে, দ্বিতীয় মৌসুমে প্রতিযোগিতার সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকে পরিণত হয়েছিলে। ১৩১ গড়ে ৬৫৫ রান তুলেন।
তবে, তাঁর মিডিয়াম পেস সুইং বোলিং মূলতঃ ইংরেজ পরিবেশের উপযোগী ছিল। অধিকাংশ পরিবেশেই তাঁর বোলিংয়ের কার্যকরীভাব বজায় থাকতো না। এছাড়াও, বেশ ধীরলয়ে বোলিং করে ব্যাটসম্যানদের সমীহের পাত্রে পরিণত হয়েছিলেন।
১৯৪৬ থেকে ১৯৫১ সময়কালে ভারতের পক্ষে সব মিলিয়ে চারটিমাত্র টেস্টে অংশগ্রহণের সুযোগ পেয়েছিলেন। ৮৩ রান সংগ্রহের পাশাপাশি ২ উইকেট দখল করেছিলেন। ১৯৪৬ সালে ইফতিখার আলী খান পতৌদি’র নেতৃত্বাধীন ভারতীয় দলের সাথে ইংল্যান্ড গমন করেন। ২০ জুলাই, ১৯৪৬ তারিখে ম্যানচেস্টারে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে অংশ নেন। চান্দু সরবটের সাথে তাঁর একযোগে টেস্ট অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। ০/৩১ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। এছাড়াও, ৩ ও ১১* রান সংগ্রহ করেছিলেন। খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ায় ও তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে স্বাগতিকরা ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে যায়। এ সফরে কেবলমাত্র একবারই ভালোমানের খেলা প্রদর্শন করতে পেরেছিলেন। ওভাল টেস্টে নয় নম্বর অবস্থানে থেকে ২৯ রানে অপরাজিত অবস্থায় মাঠ ত্যাগ করেছিলেন।
১৯৫১-৫২ মৌসুমে নিজ দেশে নাইজেল হাওয়ার্ডের নেতৃত্বাধীন এমসিসি দলের মুখোমুখি হন। ১৪ ডিসেম্বর, ১৯৫১ তারিখে বোম্বের বিএসে অনুষ্ঠিত সফররত ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে অংশ নেন। নিজের শেষ টেস্টে দশ নম্বর অবস্থানে মাঠে নেমে ২৮ রান তুলে ভারত দলকে পরাজয়বরণ করা থেকে রক্ষা করেন। প্রথম ইনিংসে ৬ রান সংগ্রহ করেছিলেন। এছাড়াও, ১/৭২ ও ১/১৬ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ায় ও পাঁচ-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজটি অমিমাংসিত অবস্থায় অগ্রসর হতে থাকে। পরবর্তীতে, এটিই তাঁর সর্বশেষ টেস্টে পরিণত হয়। লোয়ারহাউজ ক্রিকেট ক্লাবের পক্ষে ১৯৫৮ সময়কালে খেলেছিলেন।
ভদ্র ও সুদর্শন রঙ্গা সোহনীকে ভি শান্তারম অভিনয় জগতে অংশ নেয়ার প্রস্তাবনা দেন। তবে, তিনি তা ফিরিয়ে দেন। এর পরিবর্তে বরোদা সরকারী কর্মকমিশন ও মহারাষ্ট্র সরকারী কর্মকমিশনে চাকুরী করেছেন।
১৯ মে, ১৯৯৩ তারিখে ৭৫ বছর ৭৫ দিন বয়সে হৃদযন্ত্রক্রীয়ায় আক্রান্ত হয়ে মহারাষ্ট্রের থানা এলাকায় তাঁর দেহাবসান ঘটে।
