২৯ সেপ্টেম্বর, ১৯৩০ তারিখে তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের মহারাষ্ট্রের বোম্বেতে জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ও কোচ ছিলেন। মূলতঃ ব্যাটসম্যান হিসেবে দলে ভূমিকা রেখেছিলেন। ডানহাতে ব্যাটিং করতেন। এছাড়াও, ডানহাতে অফ-ব্রেক বোলিংয়ে পারদর্শী ছিলেন। ভারতের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন।
১৯৫০-৫১ মৌসুম থেকে ১৯৬৩-৬৪ মৌসুম পর্যন্ত সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন অতিবাহিত করেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর ভারতীয় ক্রিকেটে বাংলা ও বোম্বে দলের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। বোম্বে দলের নিয়মিত ব্যাটসম্যানের ন্যায় কৌশল গ্রহণ, ফুরফুরে মেজাজ ও মনোযোগ সহকারে না খেললেও তাঁর ব্যাটিংয়ের ধরন অনবদ্য ছিল। ৫ ফুট ৭ ইঞ্চি উচ্চতা নিয়ে চমৎকারভাবে পায়ের কারুকাজ ও দর্শনীয় স্ট্রোকপ্লে মারতেন। এ কারণে ১৯৫০-এর দশকে বোম্বের বিদ্যালয়ের ব্যাটিংয়ে আদর্শস্থানীয় ছিলেন। কিন্তু শীর্ষ পর্যায়ের ক্রিকেটে স্বীয় প্রতিভার পূর্ণ বিকাশ ঘটাতে পারেননি। তাসত্ত্বেও, দর্শনীয় ফিল্ডিংয়ে এ ঘাটতি দূরীকরণে সচেষ্ট ছিলেন। রামচন্দ্র গুহ তাঁকে ‘ধ্রুপদীশৈলীর দর্শনীয় সম্মুখ পায়ের উপর নির্ভরকারী ব্যাটসম্যান’ হিসেবে পরিগণিত করেছেন।
পিতা লক্ষ্মণ কেনি বোম্বেভিত্তিক ডেভিড সাসুন এন্ড কোম্পানির ব্যবস্থাপক ছিলেন এবং ১৯৩০-এর দশকের শেষদিক থেকে শুরু করে ১৯৪০-এর দশকের সূচনাকাল পর্যন্ত রঞ্জী ট্রফিতে বোম্বে দলের পক্ষে খেলেছিলেন। তবে তিনি অনেকটা আগেভাগেই নিজেকে এগিয়ে নিয়ে যেতে থাকেন। সফররত কমনওয়েলথ একাদশের বিপক্ষে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে। ১৩ রান তুলে ব্রুস ডুল্যান্ডের শিকারে পরিণত হন।
১৯৫১-৫২ মৌসুমে এমসিসি দল ভারত সফরে আসলে ইন্ডিয়ান ইউনিভার্সিটিজের পক্ষে খেলার সুযোগ পান। ডগলাস কারকে বিদেয় করেন ও এমসিসি দল ৩৪০ রান তুলতে সক্ষম হয়। ‘ডাস্টি’ রোডসের বিপক্ষে হিমশিম খাওয়া ছাত্রদের নেতৃত্বে থেকে পঙ্কজ রায় তাঁকে নয় নম্বরে ব্যাটিংয়ে নামান। দলীয় সংগ্রহ ২৩৬/৭ থাকাকালে মাঠে নামেন তিনি ও ৮৬ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলে দলকে ৩৫ রানে এগিয়ে নিয়ে যান।
১৯৫৮ থেকে ১৯৬০ সময়কালে ভারতের পক্ষে পাঁচটিমাত্র টেস্টে অংশগ্রহণের সুযোগ পেয়েছিলেন। ১৯৫৮-৫৯ মৌসুমে নিজ দেশে জেরি আলেকজান্ডারের নেতৃত্বাধীন ক্যারিবীয় দলের মুখোমুখি হন। ৩১ ডিসেম্বর, ১৯৫৮ তারিখে কলকাতায় অনুষ্ঠিত সফররত ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজের তৃতীয় টেস্টে অংশ নেন। সুরেন্দ্রনাথের সাথে তাঁর একযোগে টেস্ট অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। মোটেই সুবিধে করতে পারেননি। সফরকারীরা ইনিংস ও ৩৩৬ রানে জয় পেয়ে পাঁচ-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে যায়। ব্যাট হাতে নিয়ে ১৬ ও ০ রান সংগ্রহ করেছিলেন।
২৩ জানুয়ারি, ১৯৬০ তারিখে কলকাতায় অনুষ্ঠিত সফররত অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজের পঞ্চম টেস্টে অংশ নেন। ৭ ও ৬২ রান সংগ্রহ করেছিলেন। খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ায় ও পাঁচ-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে সফরকারীরা ২-১ ব্যবধানে জয়লাভ করে নেয়। পরবর্তীতে, এটিই তাঁর সর্বশেষ টেস্টে পরিণত হয়।
টেস্টগুলো থেকে তিনটি অর্ধ-শতকের সন্ধান পেয়েছেন। দুইটি শক্তিধর দলের বিপক্ষে সিরিজে তাঁর দল জয় পায়। স্বর্ণালী মুহূর্ত অতিবাহিত করলেও ব্যক্তিগতভাবে সফল হননি। ২৭.২২ গড়ে ২৪৫ রান সংগ্রহ করেছেন।
প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে ৫৯টি খেলা থেকে ১১ শতক সহযোগে ৫০.৪৭ গড়ে রান তুলেছেন। ১৯৫৬-৫৭ মৌসুমে বোম্বের পক্ষে খেলতে শুরু করেন। দলের প্রধান পরিচালনা শক্তিতে পরিণত হয়েছিলেন। মহারাষ্ট্রের বিপক্ষে ১৩৯, উত্তরপ্রদেশের বিপক্ষে ১৩২ ও মাদ্রাজের বিপক্ষে ব্যক্তিগত সেরা ২১৮ রান তুলেন। এ ইনিংসগুলো উপর্যুপরী খেলেছিলেন। ঐ মৌসুম শেষে ১০৫.৮০ গড়ে রান তুলেছিলেন।
দর্শনীয় ব্যাটসম্যান না হলেও রান সংখ্যায় কমতি ছিল না। টেস্টে বোলিং করার সুযোগ না পেলেও অফ-ব্রেক বোলিং করে মাঝে-মধ্যেই দলকে খেলায় ফিরিয়ে আনতেন। ৩১.২০ গড়ে ১৫ উইকেট পেয়েছেন। ১৯৫০-এর দশকের শেষদিকে বোম্বে দলের সাফল্যে প্রধান ভূমিকা রাখেন। এক পর্যায়ে তিনি বাংলা দলে চলে যান ও ঐ দল থেকেই অবসর গ্রহণ করেন। ক্রিকেট থেকে অবসর গ্রহণের পর কোচিং জগতের দিকে ধাবিত হন।
২১ নভেম্বর, ১৯৮৫ তারিখে মহারাষ্ট্রের বোম্বেতে ৫৫ বছর ৫৩ দিন বয়সে তাঁর দেহাবসান ঘটে।
