| |

পলি উমরিগড়

২৮ মার্চ, ১৯২৬ তারিখে তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের মহারাষ্ট্রের শোলাপুর এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ছিলেন। মূলতঃ উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান হিসেবে দলে ভূমিকা রেখেছিলেন। ডানহাতে ব্যাটিং করতেন। এছাড়াও, ডানহাতে অফ-ব্রেক বোলিংয়ে পারদর্শী ছিলেন। ভারত দলের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেছেন।

ভারতীয় ক্রিকেটের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান ছিলেন। ১৯৫০ ও ১৯৬০-এর দশকে কেন্দ্রবিন্দুতে অবস্থান করেন। ১৯৪৪-৪৫ মৌসুম থেকে ১৯৬২-৬৩ মৌসুম পর্যন্ত সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন অতিবাহিত করেছেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর ভারতীয় ক্রিকেটে গুজরাট, বোম্বে ও পার্সি দলের প্রতিনিধিত্ব করেছেন।

১৯৪৮ থেকে ১৯৬২ সময়কালে ভারতের পক্ষে সর্বমোট ৫৯ টেস্টে অংশ নিয়েছিলেন। ১৯৪৮-৪৯ মৌসুমে নিজ দেশে জন গডার্ডের নেতৃত্বাধীন ক্যারিবীয় দলের মুখোমুখি হন। ৯ ডিসেম্বর, ১৯৪৮ তারিখে বোম্বের বিএসে অনুষ্ঠিত সফররত ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে তাঁর অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। ০/৫১ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। এছাড়াও, ব্যাট হাতে নিয়ে ৩০ রান সংগ্রহ করেছিলেন। খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ায় ও পাঁচ-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজটি ফলাফলবিহীন অবস্থায় অগ্রসর হতে থাকে।

১৯৫৯ সালে ভারত দলের সাথে ইংল্যান্ড গমন করেন। পাঁচ টেস্ট থেকে ২০.১৪ গড়ে ১৪৩ রান সংগ্রহ করেন। ফলশ্রুতিতে, মাদ্রাজে সফরকারী ইংল্যান্ডের বিপক্ষে খেলার জন্যে মূল দল থেকে বাদ পড়েন। তবে, হিমু অধিকারী’র আঘাতপ্রাপ্তির কারণে তাঁকে দলে ফিরিয়ে আনা হয়।

দীর্ঘদেহী, শক্ত-সামর্থ্যের অধিকারী পার্সি ব্যাটসম্যান দলীয় ২১৬/৫ নিয়ে ইংল্যান্ডের ২৬৬ রানের লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রমে তৃতীয় দিন সকালে মাঠে নামেন। সাড়ে চার ঘণ্টা ক্রিজে আঁকড়ে থেকে ১৩০ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলে মাঠ ত্যাগ করেন। এরপর, বিনু মানকড় ও গুলাম আহমেদ ভারতের ইতিহাসের প্রথম টেস্ট বিজয়ে অংশ নেন। এ শতক হাঁকিয়ে ভারতীয় ক্রিকেটের অভ্যন্তরীণ চিত্রের ব্যবচ্ছেদ ঘটান। এরপর তিনি আরও এগারোটি শতরানের ইনিংস খেলেছিলেন। অনেকগুলোই সেরা বোলিং পরিচালনাকারী দলের বিপক্ষে করলেও তিনি এ ইনিংসটিকেই সেরা হিসেবে বিবেচনা করতেন।

খুব শীঘ্রই নিজেকে টেস্ট ক্রিকেটে সেরাদের তালিকায় নিয়ে যেতে থাকেন। পরের গ্রীষ্মে ইংল্যান্ড সফরে যান। এ পর্যায়ে ভারতের ব্যাটিংয়ের অন্যতম চালিকাশক্তিতে পরিণত করেন। এছাড়াও, প্রস্তুতিমূলক খেলাগুলোয়ও এ ধারা অব্যাহত রাখেন। মে মাস শেষে আট শতাধিক রান তুলেন ও এ সফরে সর্বমোট ১৬৮৮ রান সংগ্রহ করেছিলেন। এ সংখ্যাটি দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ছিল। ল্যাঙ্কাশায়ার, কেন্ট ও অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বিপক্ষে দ্বি-শতক হাঁকান। পাশাপাশি কিছু ক্ষেত্রে তাঁর দূর্বলতা লক্ষ্য করা যায়। ফেনার্সে কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিপক্ষে খেলাকালীন কুয়ান ম্যাকার্থি’র পেস বোলিং বেশ জবুথবুভাব পরিলক্ষিত হয়। টেস্ট শুরুর পূর্বে এটি সতর্ক ঘণ্টারূপে বিবেচিত ছিল।

ফ্রেড ট্রুম্যানের তোপে পড়েন। আবারও তাঁর খেলার মান নিচেরদিকে যেতে থাকেন। চার টেস্টে সাতবার ব্যাটিংয়ে নেমে মাত্র ৪৩ রান তুলতে পেরেছিলেন। কোন কারণে ফ্রেড ট্রুম্যানের কাছ থেকে রক্ষা পেলেও অপর প্রান্তে অ্যালেক বেডসারের মুখোমুখি হতেন। বিষয়টি অনেকাংশে চক্ষে সর্ষে ফুল দেখার মতো ছিল। ওল্ড ট্রাফোর্ড টেস্টের উভয় ইনিংস থেকে ৪ ও ৩ রান তুলতে পেরেছিলেন। এসকে গুরুনাথন তাঁর প্রতিবেদনে উল্লেখ করেন যে, ‘প্রত্যেক বল খেলতেই তিনি ব্যর্থ হয়েছিলেন। শিক্ষানবীশদের ন্যায় লক্ষ্যচ্যূত হয়ে পড়েছিলেন।’

এক দশক পর খেলোয়াড়ী জীবনে সবচেয়ে দুঃখজনক টেস্টে অংশ নিয়েছিলেন। ১৯৬১-৬২ মৌসুমে মনসুর আলি খান পতৌদি’র নেতৃত্বাধীন ভারতীয় দলের সদস্যরূপে ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জ সফরে যান। ত্রিনিদাদে ওয়েস হল ও চার্লি স্টেয়ার্সের ন্যায় বোলারদের রুখে দিয়ে ১৭২ রানের অপরাজিত ইনিংস উপহার দিলেও দল ৭ উইকেটে পরাজিত হয়। এছাড়াও, প্রথম ইনিংসে ৫৬ রান সংগ্রহসহ ৫/১০৭ ও ০/১৭ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করিয়েছিলেন।

এ সফরের ১৩ এপ্রিল, ১৯৬২ তারিখে কিংস্টনে অনুষ্ঠিত সিরিজের পঞ্চম ও চূড়ান্ত টেস্টে অংশ নেন। ৩২ ও ৬০ রান সংগ্রহ করেছিলেন। স্বাগতিক দল ১২৩ রানে জয় পায় ও ৫-০ ব্যবধানে সিরিজে বিজয়ী হয়। পরবর্তীতে, এটিই তাঁর সর্বশেষ টেস্টে পরিণত হয়। দীর্ঘদিন ত্বকের ক্যান্সারে আক্রান্ত হবার পর মুম্বইয়ে ৭ নভেম্বর, ২০০৬ তারিখে ৮০ বছর ২২৪ দিন বয়সে তাঁর দেহাবসান ঘটে।

Similar Posts

  • |

    হ্যারল্ড লারউড

    ১৪ নভেম্বর, ১৯০৪ তারিখে নটিংহ্যামশায়ারের নানকারগেট এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ছিলেন। মূলতঃ বোলার হিসেবে দলে ভূমিকা রেখে গেছেন। ডানহাতে ফাস্ট বোলিং করতেন। এছাড়াও, ডানহাতে নিচেরসারিতে ব্যাটিংয়ে নামতেন। ইংল্যান্ডের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছিলেন। ৫ ফুট ৮ ইঞ্চি উচ্চতার অধিকারী ছিলেন। বিশ্বযুদ্ধের মধ্যবর্তী সময়কালে সন্দেহাতীতভাবে সেরা ফাস্ট বোলার ছিলেন। প্রায়শঃই ক্রিকেটের ইতিহাসে দ্রুততম বোলার হিসেবে বিবেচিত হয়ে…

  • |

    সায়মন হারমার

    ১০ ফেব্রুয়ারি, ১৯৮৯ তারিখে ট্রান্সভালের প্রিটোরিয়ায় জন্মগ্রহণকারী বিখ্যাত ক্রিকেটার। মূলতঃ বোলার হিসেবে দলে ভূমিকা রাখছেন। ডানহাতে অফ-ব্রেক বোলিং করে থাকেন। এছাড়াও, ডানহাতে নিচেরসারিতে কার্যকর ব্যাটিং শৈলী প্রদর্শন করেন। দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন। ২০০৯-১০ মৌসুম থেকে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান রাখেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর দক্ষিণ আফ্রিকান ক্রিকেটে ওয়ারিয়র্স, বর্ডার ও ইস্টার্ন প্রভিন্স এবং…

  • |

    মনসুর আখতার

    ২৫ ডিসেম্বর, ১৯৫৭ তারিখে সিন্ধু প্রদেশের করাচীতে জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার। মূলতঃ ব্যাটসম্যান হিসেবে দলে ভূমিকা রেখে গেছেন। ডানহাতে ব্যাটিং করতেন। পাশাপাশি, ডানহাতে মিডিয়াম বোলিংয়ে পারদর্শী ছিলেন। পাকিস্তানের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন। ১৯৭৪-৭৫ মৌসুম থেকে ১৯৯৬-৯৭ মৌসুম পর্যন্ত সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান রাখেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর পাকিস্তানী ক্রিকেটে করাচী, সিন্ধু ও ইউনাইটেড ব্যাংক লিমিটেডের প্রতিনিধিত্ব…

  • | | | |

    কৃষ শ্রীকান্ত

    ২১ ডিসেম্বর, ১৯৫৯ তারিখে তামিলনাড়ুর মাদ্রাজে জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার, ধারাভাষ্যকার ও প্রশাসক। মূলতঃ ব্যাটসম্যান হিসেবে দলে ভূমিকা রেখেছিলেন। ডানহাতে ব্যাটিং করতেন। এছাড়াও, ডানহাতে কার্যকর অফ-ব্রেক বোলিংশৈলী প্রদর্শন করতেন। ভারত ক্রিকেট দলের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেছেন। বিদ্যুৎ প্রকৌশলী হিসেবে শিক্ষালাভ করেন। চেন্নাইভিত্তিক গুইন্ডির ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে অধ্যয়ন করেছিলেন তিনি। সহজাত প্রকৃতির তীক্ষ্ণ দৃষ্টি ও অতিদ্রুততার সাথে ভারসাম্য বজায়…

  • | |

    সাকলাইন মুশতাক

    ২৯ ডিসেম্বর, ১৯৭৬ তারিখে পাঞ্জাবের লাহোরে জন্মগ্রহণকারী বিখ্যাত ক্রিকেটার ও কোচ। মূলতঃ বোলার হিসেবে দলে ভূমিকা রেখে গেছেন। ডানহাতে অফ-ব্রেক বোলিং করতেন। এছাড়াও, নিচেরসারিতে ডানহাতে কার্যকর ব্যাটিংশৈলী প্রদর্শনে অগ্রসর হতেন। পাকিস্তানের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন। বিশ্বের সেরা স্পিনারদের অন্যতম ছিলেন। স্পিনের উপর তাঁর অসম্ভব নিয়ন্ত্রণ ছিল। দুসরার জন্যে সবিশেষ পরিচিতি লাভ করেন। ব্যাটসম্যানের কাছে…

  • |

    ব্যাসিল গ্রিভ

    ২৮ মে, ১৮৬৪ তারিখে মিডলসেক্সের কিলবার্ন এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ছিলেন। মূলতঃ ব্যাটসম্যান হিসেবে দলে ভূমিকা রেখে গেছেন। ডানহাতে ব্যাটিং করতেন। এছাড়াও, ডানহাতে মিডিয়াম-ফাস্ট বোলিংয়ে পারদর্শী ছিলেন। ১৮৮০-এর দশকে ইংল্যান্ডের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন। হ্যারো স্কুলে অধ্যয়ন করেছিলেন। ক্লাব পর্যায়ের ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন। পেশায় পানশালা পরিচালনা করতেন। হ্যারোর পক্ষে বোলার হিসেবে বেশ সফলতার স্বাক্ষর রাখেন।…