|

পিটার ফন ডার বিল

২১ অক্টোবর, ১৯০৭ তারিখে কেপ প্রভিন্সের কেনিলওয়ার্থ এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ছিলেন। মূলতঃ উইকেট-রক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ডানহাতে ব্যাটিং করতেন। ১৯৩০-এর দশকে দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছিলেন।

দক্ষিণ আফ্রিকার ক্রিকেটের শুরুরদিকের অন্যতম তারকা খেলোয়াড়ের মর্যাদাপ্রাপ্ত হয়েছিলেন। বেশ দীর্ঘকায় গড়নের অধিকারী ছিলেন। রন্ডেবশের ডিওসিসান কলেজ থেকে রোডস বৃত্তি লাভ করে অক্সফোর্ডের ব্রাসনোস কলেজে চলে যান। হেভিওয়েট মুষ্টিযোদ্ধা হিসেবে নিজের পরিচিতি ঘটান। ক্রিকেট ও মুষ্টিযুদ্ধে ব্লু লাভ করেন। এছাড়াও, গোলকনিক্ষেপ ও রাগবিতে কলেজের প্রতিনিধিত্ব করেন। ১৯৩২ সালে শেষ বর্ষে থাকাকালীন লর্ডসে অক্সফোর্ডের সদস্যরূপে এ. ডব্লিউ. কারের নেতৃত্বাধীন নটসের ফাস্ট শর্ট বোলিং মোকাবেলা করেন।

১৯২৫-২৬ মৌসুম থেকে ১৯৪২-৪৩ মৌসুম পর্যন্ত সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন অতিবাহিত করেছেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর দক্ষিণ আফ্রিকান ক্রিকেটে ওয়েস্টার্ন প্রভিন্সের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। এছাড়াও, অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে খেলেছেন। বিশ্ববিদ্যালয় দলে খেলে খ্যাতির তুঙ্গে পৌঁছেন। শুরুতে অবশ্য কিছুটা স্থবিরতা লক্ষ্য করা যায়। এরপর, কারি কাপে ওয়েস্টার্ন প্রভিন্সের পক্ষে খেলে জাতীয় দল নির্বাচকমণ্ডলীর সুনজরে পড়েন।

১৯৩৮ থেকে ১৯৩৯ সাল পর্যন্ত সময়কালে দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে পাঁচটিমাত্র টেস্টে অংশগ্রহণের সুযোগ পেয়েছিলেন। সবগুলো টেস্টই ১৯৩৮-৩৯ মৌসুমে নিজ দেশে ওয়ালি হ্যামন্ডের নেতৃত্বাধীন সফররত এমসিসি দলের বিপক্ষে খেলেছিলেন। ২৪ ডিসেম্বর, ১৯৩৮ তারিখে জোহানেসবার্গে অনুষ্ঠিত সফররত ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। বিলি ওয়েড, অ্যালান মেলভিল ও নরম্যান গর্ডনের সাথে তাঁর একযোগে টেস্ট অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। খেলায় তিনি ৪ ও ৩৮ রান সংগ্রহ করেছিলেন। খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ালে পাঁচ-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজটি অমিমাংসিত অবস্থায় অগ্রসর হতে থাকে।

একই সফরের ৩ মার্চ, ১৯৩৯ তারিখ থেকে শুরু হওয়া ১০ দিনব্যাপী অসীম সময়ের খ্যাতনামা ডারবানে সিরিজের শেষ টেস্টে অংশ নিয়েছিলেন। ব্যক্তিগতভাবে বেশ সফল ছিলেন। প্রথম ইনিংসে ব্যক্তিগত পূর্বতন সর্বোচ্চ ৮৭ রান অতিক্রম করেন। এ পর্যায়ে টেস্টে নিজস্ব প্রথম শতক হাঁকান। নিজের সর্বশেষ টেস্টে ১২৫ ও ৯৭ রান সংগ্রহ করেছিলেন। প্রথম ইনিংসে সূচনা করতে ৪৫ মিনিট সময় ব্যয় করেন। প্রথম উইকেটে অ্যালান মেলভিলের (৭৮) সাথে ১৩১ রানের জুটি গড়েন। ৪২৮ মিনিট ব্যয় করে ১২৫ রান তুলেছিলেন। অদ্যাবধি যে-কোন দক্ষিণ আফ্রিকানের এটিই সর্বাধিক সময় ক্রিজে টিকে থাকার ঘটনা হিসেবে চিত্রিত হয়ে আছে। দ্বিতীয় ইনিংসে ব্রুস মিচেলের সাথে ১৯১ রানের জুটি দাঁড় করান। ৯৭ রান তুলে রাইটের বলে পেন্টার শর্ট-লেগ অঞ্চলে ক্যাচ নিয়ে বিদেয় করলে অল্পের জন্যে প্রথম দক্ষিণ আফ্রিকান ব্যাটসম্যান হিসেবে একই টেস্টের উভয় ইনিংসে শতক হাঁকানো থেকে বঞ্চিত হন। পরবর্তীতে, এটিই তাঁর সর্বশেষ টেস্টে পরিণত হয়।

জাহাজে চড়ে দেশে ফেরায় ব্যস্ততার কারণে পারস্পরিক সমঝোতায় খেলাটি ড্রয়ে পরিণত হয়েছিল। অবশ্য সফরকারীরা ১-০ ব্যবধানে সিরিজ জয় করেছিল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালে উত্তর আফ্রিকায় অবস্থান করেন। কয়েকবার আঘাতের কবলে পড়েছিলেন। যুদ্ধের কারণে তাঁর খেলোয়াড়ী জীবনের অকাল সমাপ্তি ঘটে। শিক্ষকতার মহান পেশায় মনোনিবেশ ঘটান। খ্যাতনামা বিশপ প্রিপারেটরি স্কুলের প্রধানশিক্ষকের দায়িত্ব পালন করেন। এক পর্যায়ে টেস্ট দল নির্বাচকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হন।

ব্যক্তিগত জীবনে বিবাহিত ছিলেন। ভিন্স নামীয় সন্তান রয়েছে। ১৬ ফেব্রুয়ারি, ১৯৭৩ তারিখে কেপ প্রভিন্সের কল্ক বে এলাকায় ৬৫ বছর ১১৮ দিন বয়সে তাঁর দেহাবসান ঘটে।

Similar Posts

  • |

    সায়মন কেরিগান

    ১০ মে, ১৯৮৯ তারিখে ল্যাঙ্কাশায়ারের প্রেস্টন এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার। মূলতঃ বোলার হিসেবে খেলছেন। স্লো লেফট-আর্ম অর্থোডক্স বোলিংয়ের পাশাপাশি ডানহাতে নিচেরসারিতে ব্যাটিংয়ে নামেন। ২০১০-এর দশকে ইংল্যান্ডের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছিলেন। ৫ ফুট ৯ ইঞ্চি উচ্চতার অধিকারী তিনি। ইংল্যান্ডের পরবর্তী স্পিনার হিসেবে বিবেচিত হয়েছিলেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে ল্যাঙ্কাশায়ার দলের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। এছাড়াও, ইংল্যান্ড…

  • | | |

    রাহুল দ্রাবিড়

    ১১ জানুয়ারি, ১৯৭৩ তারিখে মধ্যপ্রদেশের ইন্দোরে জন্মগ্রহণকারী বিখ্যাত ক্রিকেটার ও কোচ। মূলতঃ শীর্ষসারির ডানহাতি ব্যাটসম্যান খেলেছেন। এছাড়াও, ডানহাতে অফ-ব্রেক বোলিংয়ে পারদর্শী ছিলেন। মাঝে-মধ্যে উইকেট-রক্ষণ কর্মে অগ্রসর হয়ে থাকেন। ভারতের পক্ষে সকল স্তরের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন ও দলের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেছেন। সেন্ট যোসেফস বয়েজ হাই স্কুলে অধ্যয়ন করেছেন। খুব সম্ভবতঃ অন্যতম সর্বশেষ ধ্রুপদী মানসম্পন্ন…

  • |

    রেগ পার্কস

    ৪ অক্টোবর, ১৯১১ তারিখে হিয়ারফোর্ড এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ছিলেন। দলে মূলতঃ বোলিং কর্মে অগ্রসর হতেন। ডানহাতে ফাস্ট-মিডিয়াম বোলিংয়ের পাশাপাশি বামহাতে ব্যাটিংয়ে নামতেন। ১৯৩০-এর দশকে ইংল্যান্ডের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছিলেন। অনেক ক্রিকেট বিশ্লেষকই তাঁকে সর্বাপেক্ষা উপেক্ষিত বোলার হিসেবে চিত্রিত করেছেন। অথচ, ১৯৩০-এর দশক থেকে ১৯৫০-এর দশক পর্যন্ত ওরচেস্টারশায়ারের প্রধান বোলিং চালিকাশক্তি হিসেবে বিবেচিত হয়েছিলেন। ক্রিকেটপ্রেমী…

  • |

    জোই বেঞ্জামিন

    ২ ফেব্রুয়ারি, ১৯৬১ তারিখে সেন্ট কিটসের ক্রাইস্টচার্চ এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ছিলেন। দলে মূলতঃ বোলার হিসেবে ভূমিকা রেখে গেছেন। ডানহাতে মিডিয়াম-ফাস্ট বোলিং করতেন। এছাড়াও, ডানহাতে নিচেরসারিতে ব্যাটিংয়ে নামতেন। ১৯৯০-এর দশকে ইংল্যান্ডের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন। ১৯৮৮ থেকে ১৯৯৯ সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন অতিবাহিত করেছেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে সারে ও ওয়ারউইকশায়ার দলের প্রতিনিধিত্ব…

  • |

    ফ্রাঙ্ক অ্যালান

    ২ ডিসেম্বর, ১৮৪৯ তারিখে ভিক্টোরিয়ার অ্যালান্সফোর্ড এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ছিলেন। মূলতঃ ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলতেন। ডানহাতে ব্যাটিং করতেন তিনি। ১৮৭০-এর দশকে অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন। ‘ক্যাঙ্গারু’ ডাকনামে ভূষিত হয়েছিলেন। ১৮৬৭-৬৮ মৌসুম থেকে ১৮৮২-৮৩ মৌসুম পর্যন্ত সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন অতিবাহিত করেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটে ভিক্টোরিয়ার প্রতিনিধিত্ব করেছেন। ১৮ বছর বয়সে মেলবোর্নে নিউ…

  • |

    একনাথ সোলকার

    ১৮ মার্চ, ১৯৪৮ তারিখে মহারাষ্ট্রের বোম্বেতে জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ছিলেন। মূলতঃ ব্যাটসম্যান হিসেবে দলে ভূমিকা রেখেছিলেন। বামহাতে ব্যাটিং করতেন। এছাড়াও, বামহাতে মিডিয়াম কিংবা স্লো লেফট-আর্ম অর্থোডক্স বোলিংয়ে দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন। ভারতের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছিলেন। ‘এক্কি’ ডাকনামে ভূষিত হয়েছিলেন। বোম্বের ক্রিকেটের ভিত্তি গড়ার ক্ষেত্রে তিনি কল্পনাতীত ভূমিকা রেখেছিলেন। কার্যকর বামহাতি ব্যাটসম্যান হলেও বামহাতে মিডিয়াম-পেস বোলিংয়ের…