৩০ নভেম্বর, ১৯৮৮ তারিখে নিউ সাউথ ওয়েলসের ম্যাক্সভিল এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ছিলেন। মূলতঃ উদ্বোধনী ব্যাটসম্যানের দায়িত্ব পালন করতেন। বামহাতে ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি মাঝে-মধ্যে উইকেট-রক্ষণে অগ্রসর হতেন। এছাড়াও, ডানহাতে অফ-ব্রেক বোলিং করতে পারতেন। অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে সকল স্তরের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন।
৫ ফুট ৭ ইঞ্চি (১.৭০ মিটার) উচ্চতার অধিকারী ছিলেন। গ্রেগ হিউজ ও ভার্জিন হিউজ দম্পতির সন্তান ছিলেন। ২০০৭ থেকে ২০১৪ সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন অতিবাহিত করেছেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটে নিউ সাউথ ওয়েলস ও সাউথ অস্ট্রেলিয়া এবং ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে হ্যাম্পশায়ার, মিডলসেক্স ও ওরচেস্টারশায়ারের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। ২০১২ সালে ওরচেস্টারশায়ারের ক্যাপ লাভ করেন। এছাড়াও, ইস্ট টরেন্স, মুম্বই ইন্ডিয়ান্স, ওয়েস্টার্ন সাবার্বস ও অ্যাডিলেড স্ট্রাইকার্সের পক্ষে খেলেছেন। ২০ নভেম্বর, ২০০৭ তারিখে সিডনিতে অনুষ্ঠিত নিউ সাউথ ওয়েলস বনাম তাসমানিয়ার মধ্যকার খেলায় অংশ নেয়ার মাধ্যমে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবনের সূত্রপাত ঘটান।
২০০৯ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত সময়কালে অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে সর্বমোট ২৬ টেস্ট, ২৫টি ওডিআই ও একটিমাত্র টি২০আইয়ে অংশ নিয়েছিলেন। ২০০৮-০৯ মৌসুমে রিকি পন্টিংয়ের নেতৃত্বাধীন অজি দলের সাথে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে যান। ২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০০৯ তারিখে জোহানেসবার্গে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। বেন হিলফেনহস ও মার্কাস নর্থের সাথে তাঁর একযোগে টেস্ট অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। খেলায় তিনি ০ ও ৭৫ রান সংগ্রহসহ দুইটি ক্যাচ তালুবন্দী করেছিলেন। তবে, মিচেল জনসনের অনবদ্য অল-রাউন্ড কৃতিত্বে স্বাগতিকরা ১৬২ রানে পরাভূত হলে তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে পিছিয়ে পড়ে।
২০০৯-১০ মৌসুমে রিকি পন্টিংয়ের নেতৃত্বাধীন অজি দলের সদস্যরূপে প্রথমবারের মতো নিউজিল্যান্ড গমন করেন। ১৯ মার্চ, ২০১০ তারিখে ওয়েলিংটনে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। খেলায় তিনি ব্যাট হাতে নিয়ে ২০ ও ৮৬* রান সংগ্রহ করেছিলেন। তবে, মাইকেল ক্লার্কের ব্যাটিং বদান্যতায় স্বাগতিকরা ১০ উইকেটে পরাজিত হলে দুই-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে পিছিয়ে পড়ে।
২০১৩ সালে মাইকেল ক্লার্কের নেতৃত্বাধীন অজি দলের অন্যতম সদস্যরূপে ইংল্যান্ড গমন করেন। ১৮ জুলাই, ২০১৩ তারিখে লন্ডনের লর্ডসে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে অংশ নেন। খেলায় তিনি উভয় ইনিংসে ১ রান করে সংগ্রহ করেছিলেন। জো রুটের অল-রাউন্ড ক্রীড়াশৈলীর কল্যাণে সফরকারীরা ৩৪৭ রানের বিশাল ব্যবধানে পরাভূত হলে পাঁচ-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে ২-০ ব্যবধানে পিছিয়ে পড়ে। পরবর্তীতে, এটিই তাঁর সর্বশেষ টেস্টে পরিণত হয়।
টেস্ট অভিষেকে প্রায় চার বছর পর অস্ট্রেলিয়ার একদিনের দলে ঠাঁই পান। জুলাই, ২০১৪ সালে সীমিত-ওভারের খেলায় স্বীয় দক্ষতার স্বাক্ষর রাখেন। প্রথম অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটার হিসেবে লিস্ট-এ খেলা থেকে দ্বি-শতক হাঁকান। এর একমাস পর প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ রানের ইনিংস খেলেন। অস্ট্রেলিয়া ‘এ’ দলের পক্ষে ২৪৩ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলার কল্যাণে পুণরায় তাঁকে টেস্ট দলে ফিরিয়ে আনা হয়। তবে, অংশগ্রহণকৃত ২৬ টেস্টের সাথে আর কোন টেস্ট যুক্ত করতে পারেননি। তিনমাস পর শেফিল্ড শীল্ডের খেলায় শর্ট বলে গুরুতর আহত হন ও তাঁর জ্ঞান আর ফিরে আসেনি।
২০০৯ সালে ব্র্যাডম্যান বর্ষসেরা তরুণ ক্রিকেটার ও ২০১৩ সালে বর্ষসেরা অস্ট্রেলীয় ঘরোয়া খেলোয়াড় হিসেবে মনোনীত হন।
২৭ নভেম্বর, ২০১৪ তারিখে সিডনির সেন্ট ভিনসেন্টস হাসপাতালে মাত্র ২৫ বছর ৩৬২ দিন বয়সে তাঁর জীবনাবসান ঘটে। এর এক বছর পর ২৭ নভেম্বর, ২০১৫ তারিখে অ্যাডিলেডে অস্ট্রেলিয়া বনাম নিউজিল্যান্ডের মধ্যকার তৃতীয় টেস্টে বিকাল ৪:০৮ ঘটিকায় নীরবতা পালন করা হয়। ২৭ নভেম্বর, ২০১৬ তারিখে অ্যাডিলেডে অস্ট্রেলিয়া বনাম দক্ষিণ আফ্রিকার মধ্যকার তৃতীয় টেস্টের চতুর্থ দিনে তাঁর স্মরণে ম্যাথু ওয়েড ট্যাট্টু নিয়ে খেলেন। একই দিনে তাঁর দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকীতে খেলোয়াড়েরা কালো বাহুবন্ধনী ধারন করে খেলেছিলেন।
