১৪ মে, ১৯৫৫ তারিখে নাটালের পিটারমারিৎজবার্গে জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার। মূলতঃ শীর্ষসারির ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলতেন। ডানহাতে ব্যাটিং করতেন। এছাড়াও, ডানহাতে মাঝে-মধ্যে অফ-ব্রেক বোলিংয়ে পারদর্শীতা দেখিয়েছেন। ১৯৯০-এর দশকে দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছিলেন।
১৯৭৩-৭৪ মৌসুম থেকে ১৯৯৬-৯৭ মৌসুম পর্যন্ত সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন সরব রেখেছিলেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর দক্ষিণ আফ্রিকান ক্রিকেটে বর্ডার ও ওয়েস্টার্ন প্রভিন্স এবং ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে ডার্বিশায়ার ও সাসেক্সের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। তন্মধ্যে, ওয়েস্টার্ন প্রভিন্স ও ডার্বিশায়ারের পক্ষে বর্ণাঢ্যময় খেলোয়াড়ী জীবন চলমান রাখেন।
১৯৯১ থেকে ১৯৯৪ সাল পর্যন্ত সময়কালে দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে সর্বমোট ১২ টেস্ট ও ৪০টি ওডিআইয়ে অংশ নিয়েছিলেন। ১৯৯১-৯২ মৌসুমে দলের সাথে ভারত গমন করেন। ১০ নভেম্বর, ১৯৯১ তারিখে কলকাতায় স্বাগতিক ভারতের বিপক্ষে ওডিআইয়ে অংশ নেয়ার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট অঙ্গনে প্রবেশ করেন।
১৯৯২ সালে কেপলার ওয়েসেলসের নেতৃত্বাধীন স্প্রিংবকের সাথে ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জ সফরে যান। ১৮ এপ্রিল, ১৯৯২ তারিখে বার্বাডোসের ব্রিজটাউনে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজের একমাত্র টেস্টে অংশ নেন। অ্যান্ড্রু হাডসন, অ্যাড্রিয়ান কুইপার, অ্যালান ডোনাল্ড, মার্ক রাশমেয়ার, ডেভিড রিচার্ডসন, মেরিক প্রিঙ্গল, রিচার্ড স্নেল, টারটিয়াস বস ও হান্সি ক্রোনিয়ে’র সাথে তাঁর একযোগে টেস্ট অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। সৎভাই গ্যারি কার্স্টেনকে সাথে নিয়ে ৩৭ বছর বয়সে ঐ টেস্ট খেলেন। খেলায় তিনি ১১ ও ৫২ রান সংগ্রহসহ দুইটি ক্যাচ তালুবন্দী করেছিলেন। অ্যান্ড্রু হাডসনের অসাধারণ শতক সত্ত্বেও খেলায় সফরকারীরা ৫২ রানে পরাজিত হয়।
১৯৯২-৯৩ মৌসুমে নিজ দেশে প্রথমবারের মতো টেস্ট খেলেন। ঐ মৌসুমে মোহাম্মদ আজহারউদ্দীনের নেতৃত্বাধীন ভারতীয় দলের মুখোমুখি হন। মার্চ, ১৯৭০ সালের পর দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে এটি প্রথম টেস্ট খেলা ছিল। ১৩ নভেম্বর, ১৯৯২ তারিখে ডারবানে অনুষ্ঠিত সফররত ভারতের বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। খেলায় তিনি একবার ব্যাটিংয়ে নেমে ১৩ ও ১১* রান সংগ্রহ করেছিলেন। প্রবীণ আম্রে’র অসাধারণ শতকে খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ালে চার-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজটি অমিমাংসিত অবস্থায় অগ্রসর হতে থাকে।
বর্ণবৈষম্যবাদের কবলে পড়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণের স্বর্ণালী সময় ফেলে আসতে বাধ্য হয়েছিলেন। বয়সের ভার ন্যূহ হয়ে পড়লেও কয়েকটি খেলায় তাঁর মাঝে বেশ প্রতিজ্ঞাবদ্ধতার চিত্র ধরা পড়ে। এরফলে, দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে আরও খেলার সুযোগ পান। ১৯৯৪ সালে ৩৯ বছর ৮২ দিন বয়স নিয়ে লিডসের হেডিংলিতে স্বাগতিক ইংল্যান্ডের বিপক্ষে নিজের একমাত্র টেস্ট শতকের সন্ধান পান। একই বছর অ্যাডিলেডে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে দলের পরাজয়বরণ করে। ধৈর্য্য সহকারে ৩১০ মিনিটে ৭৯ ও ২৫৯ মিনিটে ৪২ রান তুলেছিলেন। তাসত্ত্বেও স্বাগতিক দল ঐ সিরিজে সমতা আনতে সমর্থ হয়।
স্বল্পকালীন খেলোয়াড়ী জীবন হলেও তিনি কিছু বিতর্কের সৃষ্টি করেছেন। অ্যাডিলেড টেস্টটিতে প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে দুইবার আইসিসি আচরণবিধি ভঙ্গ করেন। তাঁর জরিমানা আদায়ে জোহানেসবার্গের বেতার কেন্দ্র থেকে অর্থ আদায়ের আবেদন জানানো হয়। এছাড়াও, ১৯৯২-৯৩ মৌসুমে পোর্ট এলিজাবেথে সফরকারী ভারতের বিপক্ষে ওডিআই চলাকালে মানকড়ীয় পন্থায় কপিল দেবকে বিদেয় করেছিলেন।
১৯৯৪ সালে কেপলার ওয়েসেলসের নেতৃত্বাধীন স্প্রিংবকের সদস্যরূপে ইংল্যান্ড গমন করেন। ১৮ আগস্ট, ১৯৯৪ তারিখে লন্ডনের ওভালে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের তৃতীয় ও চূড়ান্ত টেস্টে অংশ নেন। খেলায় তিনি ১৬ ও ০ রান সংগ্রহ করে উভয় ইনিংসে ডেভন ম্যালকমের শিকারে পরিণত হয়েছিলেন। ডেভন ম্যালকমের অনবদ্য বোলিংশৈলী প্রদর্শনের সুবাদে সফরকারীরা ৮ উইকেটে পরাজয়বরণ করলে তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজটি অমিমাংসিত অবস্থায় শেষ হয়। পরবর্তীতে, এটিই তাঁর সর্বশেষ টেস্টে পরিণত হয়।
ইংরেজ ক্রিকেটার ও ধারাভাষ্যকার রবিন জ্যাকম্যান ১৯৮০-এর দশকের সর্বকালের সেরা দক্ষিণ আফ্রিকান একাদশে তাঁকে ঠাঁই দিয়েছেন।
