১৭ আগস্ট, ১৮৮০ তারিখে নাটালের ইসিপিঙ্গো এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ও প্রশাসক ছিলেন। মূলতঃ উইকেট-রক্ষণে অগ্রসর হতেন। উইকেট-রক্ষকের দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি ডানহাতে ব্যাটিং করতেন। দক্ষিণ আফ্রিকা দলের নেতৃত্বে ছিলেন।
নাটালে জন্মগ্রহণ করলেও ইংল্যান্ডে অবস্থানকালে তাঁর ক্রিকেটে উত্তরণ ঘটে। কর্নওয়ালের পক্ষে মাইনর কাউন্টি ক্রিকেটে অংশ নেন। এক পর্যায়ে দেশে ফিরে আসেন ও খনিজ প্রকৌশলী হিসেবে কাজ করেন। স্পিনারদের বিপক্ষে দর্শনীয় ভঙ্গীমায় উইকেট-রক্ষণে অগ্রসর হতেন ও স্ট্যাম্পিং ঘটাতেন। তবে, উইকেট-রক্ষণের সাথে তুলনান্তে তাঁর ব্যাটিং বেশ ম্রিয়মান ছিল। ১৯০২-০৩ মৌসুম থেকে ১৯১৩-১৪ মৌসুম পর্যন্ত সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন অতিবাহিত করেছেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর দক্ষিণ আফ্রিকান ক্রিকেটে ট্রান্সভালের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। এছাড়াও, মেরিলেবোন ক্রিকেট ক্লাবের পক্ষে খেলেছেন।
১৯০৬ থেকে ১৯১১ সাল পর্যন্ত দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে সর্বমোট ১৩ টেস্টে অংশ নিয়েছিলেন। সবগুলো টেস্টেই অধিনায়ক ও উইকেট-রক্ষকের দায়িত্বে ছিলেন। এছাড়াও, অধিনায়ক হিসেবে সর্বাধিক ব্যাটিং উদ্বোধন ও উইকেট-রক্ষণের দায়িত্ব পালন করেছেন।
স্বল্প কয়েকজন ক্রিকেটারের অন্যতম হিসেবে সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনেই দলের অধিনায়কের দায়িত্বে ছিলেন। দুইটি উল্লেখযোগ্য ইনিংস খেলেছিলেন। ১৯০৫-০৬ মৌসুমে নিজ দেশে পেলহাম ওয়ার্নারের নেতৃত্বাধীন এমসিসি দলের মুখোমুখি হন। ২ জানুয়ারি, ১৯০৬ তারিখে জোহানেসবার্গে অনুষ্ঠিত সফররত ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। বার্ট ভগলার, অব্রে ফকনার, গর্ডন হোয়াইট, রেজি সোয়ার্জ ও টিপ স্নুকের সাথে তাঁর একযোগে টেস্ট অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। ১১ নম্বর অবস্থানে ব্যাটিংয়ে নেমেছিলেন। চতুর্থ ইনিংসে ডেভ নোর্সের সাথে ৪৮ রানের নিরবিচ্ছিন্ন ইনিংস খেলেন। অধিনায়কের দায়িত্বে থেকে খেলায় ব্যাট হাতে নিয়ে ১ ও ২২* রান সংগ্রহ করেছিলেন। এছাড়াও, উইকেটের পিছনে অবস্থান করে দুইটি স্ট্যাম্পিং ও একটি ক্যাচ গ্লাভসবন্দীকরণের সাথে নিজেকে জড়ান। দক্ষিণ আফ্রিকা নাটকীয়ভাবে ১ উইকেটে জয়ী হয় ও দলের প্রথম টেস্ট জয়ের সাথে নিজেকে যুক্ত রাখেন। স্বাগতিকরা পাঁচ-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে এগিয়ে যায়। অবশ্য, তাঁর অধিনায়কত্বে দক্ষিণ আফ্রিকা দল ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৪-১ ব্যবধানে পরাজিত হয়।
পরের বছর পুণরায় ইংল্যান্ড সফরে যান। ১৯০৭ সালের লর্ডস টেস্টে ফলো-অনের কবলে পড়লে ব্যাটিং উদ্বোধনে নেমে ১১৫ রান তুলে খেলাকে ড্রয়ের দিকে নিয়ে যান। ঐ সিরিজে ৩০.৮০ গড়ে ১৫৪ রান তুলে দলের সর্বোচ্চ গড়ের অধিকারী হন।
এরপর, ১৯১০-১১ মৌসুমে প্রথমবারের মতো অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে টেস্ট খেলেন। ঐ মৌসুমে স্প্রিংবককে নেতৃত্ব দিয়ে অস্ট্রেলিয়া গমন করেছিলেন। ৯ ডিসেম্বর, ১৯১০ তারিখে সিডনিতে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। অধিনায়কের দায়িত্বে থেকে খেলায় তিনি ৮* ও ৬০ রান সংগ্রহ করেন। এছাড়াও, উইকেটের পিছনে অবস্থান করে দুইটি স্ট্যাম্পিং ঘটিয়েছিলেন। সফরকারীরা ইনিংস ও ১১৪ রানে পরাজিত হলে পাঁচ-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে পিছিয়ে পড়ে।
একই সফরের ৩ মার্চ, ১৯১১ তারিখে সিডনিতে অনুষ্ঠিত সিরিজের পঞ্চম ও চূড়ান্ত টেস্টে অংশ নেন। অধিনায়কের দায়িত্বে থেকে খেলায় তিনি ৫ ও ১৪ রান সংগ্রহ করেন। এছাড়াও, উইকেটের পিছনে অবস্থান করে তিনটি স্ট্যাম্পিংয়ের সাথে নিজেকে জড়ান। সফরকারীরা ৭ উইকেটে পরাজিত হলে ৪-১ ব্যবধানে সিরিজ খোঁয়ায়। পরবর্তীতে, এটিই তাঁর সর্বশেষ টেস্টে পরিণত হয়।
গ্লাভস হাতে নিয়ে প্রায়শঃই ঐ যুগের সেরা উইকেট-রক্ষকদ্বয় – ডিক লিলি ও স্যামি কার্টারের সাথে তুলনায় চলে আসতেন। তাঁর অধিনায়কত্বে দক্ষিণ আফ্রিকা দল পাঁচটিতে জয় পায় ও ছয়টি পরাজয়বরণ করে।
হটন ও ডগলাসের ন্যায় তিনিও টেনিসে সিদ্ধহস্তের অধিকারী ছিলেন। ১৯০৪ সালে ঘরোয়া আসরের শিরোপা জয় করেছেন। ১৯০৯-১০ মৌসুমে দক্ষিণ আফ্রিকা দলের খেলোয়াড় হিসেবে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে টেনিস খেলেন। খেলোয়াড়ী জীবন শেষে ১৯০৭ থেকে ১৯২৪ সময়কালে টেস্ট দল নির্বাচকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিলেন। ১৭ এপ্রিল, ১৯৪৮ তারিখে রোডেশিয়ার বুলাওয়েতে ৬৭ বছর ২৪৪ দিন বয়সে তাঁর দেহাবসান ঘটে।
