| |

পার্সি চ্যাপম্যান

৩ সেপ্টেম্বর, ১৯০০ তারিখে বার্কশায়ারের দ্য মাউন্ট এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ছিলেন। মূলতঃ ব্যাটসম্যান হিসেবে দলে ভূমিকা রেখে গেছেন। বামহাতে ব্যাটিং কর্মে মনোনিবেশ ঘটাতেন। ইংল্যান্ড দলের অধিনায়কের দায়িত্বে ছিলেন।

ওকহামের পর আপিংহামে পড়াশুনো করেন। এখানেই ছাত্র হিসেবে তাঁর অসাধারণ ক্রিকেটার হবার গুণাবলী দৃশ্যমান হয়। ১৯১৫ থেকে ১৯১৯ সময়কালে চার বছর আপিংহাম একাদশে খেলেন। তন্মধ্যে, শেষ দুই বছর দলের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেন ও লর্ডসে প্রতিনিধিত্বমূলক খেলায় অংশ নেন। ১৬ বছর বয়সে ১১১.৩৩ গড়ে রান পান ও ২০৬ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেন। ১৯১৯ সালেও আপিংহামের বোলিং গড়ে শীর্ষে অবস্থান করেন।

এরপর, কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন পেমব্রুকে অধ্যয়ন করেন। এ পর্যায়েও খেলোয়াড় হিসেবে আরও কিছু অভিজ্ঞতা অর্জন করেন। ১৯২০ সালে কেমব্রিজে ক্রিকেটাঙ্গন বেশ শক্তিধর হলেও প্রথম একাদশে খেলার সুযোগ পান। ফেনার্সে এসেক্সের বিপক্ষে ১১৮ রানের নিখুঁত ইনিংস খেলে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবনের যাত্রা শুরু করেন। এরফলে, প্রথম বছরেই ব্লুধারী হন। জেন্টলম্যানের পক্ষে লর্ডস ও স্কারবোরায় অংশ নেন। শেষের খেলায় ১০১ রানের মনোজ্ঞ ইনিংস খেলেন। ১৯২২ সালে অক্সফোর্ডের বিপক্ষে দৃষ্টিনন্দন ১০২ রানের অপরাজিত ইনিংস উপহার দেন। এর অল্প কিছুদিন পর লর্ডসে জেন্টলম্যানের সদস্যরূপে প্লেয়ার্সের বিপক্ষে খেলার সুযোগ পান। কেমব্রিজে অবস্থানকালে নিজ জন্মভূমি বার্কশায়ারের পক্ষে মাইনর কাউন্টিজ চ্যাম্পিয়নশীপে খেলতেন। এরপর কেন্টের পক্ষে খেলার সুযোগ পান।

১৯২০ থেকে ১৯৩৯ সাল পর্যন্ত প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন অতিবাহিত করেছেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে কেন্ট দলের প্রতিনিধিত্ব করার পাশাপাশি দলকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। ১৯২৫ সালে কেন্টের পক্ষে চ্যাম্পিয়নশীপে প্রথম খেলেন। নিজের স্বর্ণালী সময়ে ক্রিকেট বিশ্বে অন্যতম জনপ্রিয় খেলোয়াড়ে পরিণত হয়েছিলেন। ঝুঁকিপূর্ণ ব্যাটিং, উন্নততর ফিল্ডিং, দূর্দান্তভাবে দলকে পরিচালনা করার পাশাপাশি সর্বোপরি শৌখিন খেলোয়াড়দের আদর্শের পাত্রে পরিণত হন ও দর্শককূলের হৃদয়ে নিজেকে ঠাঁই করে নেন। মাঠে সংযত ভূমিকা অবলম্বন করে পরিস্থিতি অনুকূলে নিয়ে আসতেন।

১৯২৪ থেকে ১৯৩১ সময়কালে ইংল্যান্ডের পক্ষে সর্বমোট ২৬ টেস্টে অংশ নিয়েছেন। ১৯২৪ সালে নিজ দেশে হার্বি টেলরের নেতৃত্বাধীন স্প্রিংবকের মুখোমুখি হন। ১৪ জুন, ১৯২৪ তারিখে বার্মিংহামে অনুষ্ঠিত সফররত দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী অংশ নেন। জর্জ উড, হার্বার্ট সাটক্লিফ, মরিস টেট ও রয় কিলনারের সাথে তাঁর একযোগে টেস্ট অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। একবার ব্যাটিংয়ে নেমে ৮ রান সংগ্রহসহ একটি ক্যাচ তালুবন্দী করেছিলেন। ইনিংস ও ১৮ রানে জয়লাভ করলে স্বাগতিকরা পাঁচ-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে এগিয়ে যায়।

১৯২৬ সালে নিজ দেশে হার্বি কলিন্সের নেতৃত্বাধীন অজি দলের মুখোমুখি হন। ১৪ আগস্ট, ১৯২৬ তারিখে লন্ডনের ওভালে অনুষ্ঠিত সফররত অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজের পঞ্চম ও চূড়ান্ত টেস্ট খেলেন। অধিনায়কের দায়িত্বে থেকে খেলায় তিনি ৪৯ ও ১৯ রান সংগ্রহ করেছিলেন। ২৮৯ রানে স্বাগতিকরা জয় পেলে পাঁচ-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে ১-০ ব্যবধানে সিরিজে বিজয়ী হয়।

১৯৩০ সালে লর্ডসে সফরকারী অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ১২১ রানের ইনিংস খেলেন। এরফলে, প্রথম ও একমাত্র খেলোয়াড় হিসেবে লর্ডসে নিজ বিশ্ববিদ্যালয়, জেন্টলম্যান ও ইংল্যান্ডের পক্ষে শতক হাঁকানোর গৌরব অর্জন করেন।

১৯৩০-৩১ মৌসুমে প্রথমবারের মতো দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে টেস্ট খেলেন। ঐ মৌসুমে এমসিসি দলকে নেতৃত্ব দিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে যান। ২৪ ডিসেম্বর, ১৯৩০ তারিখে জোহানেসবার্গে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। খেলায় তিনি ২৮ ও ১১ রান সংগ্রহ করেন। সফরকারীরা ২৮ রানে পরাজিত হলে পাঁচ-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে পিছিয়ে পড়ে।

একই সফরের ২১ ফেব্রুয়ারি, ১৯৩১ তারিখে ডারবানের কিংসমিডে অনুষ্ঠিত সিরিজের পঞ্চম ও চূড়ান্ত টেস্টে অংশ নেন। অধিনায়কের দায়িত্বে থেকে একবার ব্যাটিংয়ে নেমে ২৪ রান সংগ্রহসহ চারটি ক্যাচ তালুবন্দী করেছিলেন। খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ালে স্বাগতিকরা ১-০ ব্যবধানে সিরিজে জয়লাভ করে। পরবর্তীতে, এটিই তাঁর সর্বশেষ টেস্টে পরিণত হয়।

১৬ সেপ্টেম্বর, ১৯৬১ তারিখে হ্যাম্পশায়ারের অ্যাল্টন এলাকার হাসপাতালে ৬১ বছর ১৩ দিন বয়সে তাঁর দেহাবসান ঘটে। এর কয়েক বছর পূর্ব থেকেই তিনি অসুস্থতার কবলে পড়েন।

Similar Posts

  • | | | |

    রমিজ রাজা

    ১৪ আগস্ট, ১৯৬২ তারিখে পাঞ্জাবের লায়লপুরে জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার, প্রশাসক ও ধারাভাষ্যকার। মূলতঃ ব্যাটসম্যান হিসেবে দলে ভূমিকা রেখে গেছেন। ডানহাতে ব্যাটিং করতেন। এছাড়াও, মাঝে-মধ্যে লেগ ব্রেক বোলিংয়ে অগ্রসর হতেন। পাকিস্তান দলের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেছেন। পাকিস্তানের স্বাধীনতা দিবসে তাঁর জন্ম। দর্শনীয় ডানহাতি ধ্রুপদী ব্যাটিংশৈলীর অধিকারী উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান ছিলেন। দূর্দান্ত স্ট্রোকপ্লের কারণে সমর্থকদের কাছে বিপুল সমাদৃত ছিলেন।…

  • |

    সিস পার্কিন

    ১৮ ফেব্রুয়ারি, ১৮৮৬ তারিখে কো ডারহামের ঈগলসক্লিফ এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ছিলেন। মূলতঃ বোলার হিসেবে দলে ভূমিকা রাখতেন। ডানহাতে অফ-ব্রেক বোলিংয়ের পাশাপাশি ডানহাতে নিচেরসারিতে ব্যাটিংয়ে নামতেন। ১৯২০-এর দশকে ইংল্যান্ডের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন। পিতা রেলওয়েতে চাকুরী করতেন। নর্টন থেকে টিসাইডে তাঁর পরিবারের সাথে চলে যান। এ পর্যায়ে পার্কিন সিনিয়র স্টেশন মাস্টারের দায়িত্ব পালন করতেন। বারো…

  • | |

    রোহিত শর্মা

    ৩০ এপ্রিল, ১৯৮৭ তারিখে মহারাষ্ট্রের নাগপুরের বানসোদ এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার। ব্যাটিং উদ্বোধনে নামেন। ডানহাতে ব্যাটিং করেন। এছাড়াও, মাঝে-মধ্যে ডানহাতে অফ-ব্রেক বোলিং করে থাকেন। ভারতের পক্ষে সকল স্তরের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন ও অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেছেন। ৫ ফুট ১০ ইঞ্চি (১.৭৮ মিটার) উচ্চতার অধিকারী। পূর্ণিমা শর্মা ও গুরুনাথ শর্মা দম্পতির সন্তান। পিতা পরিবহণ প্রতিষ্ঠানের দেখাশোনার…

  • | | | |

    ফ্রাঙ্ক মিচেল

    ১৩ আগস্ট, ১৮৭২ তারিখে ইয়র্কশায়ারের মার্কেট উইটন এলাকায় জন্মগ্রহণকারী বিখ্যাত ক্রিকেটার ছিলেন। মূলতঃ উইকেট-রক্ষক হিসেবে খেলতেন। এছাড়াও, ডানহাতে ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি ডানহাতে মিডিয়াম বোলিংয়ে পারদর্শী ছিলেন। ইংল্যান্ড এবং দক্ষিণ আফ্রিকা – উভয় দলের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন। তন্মধ্যে, দক্ষিণ আফ্রিকা দলকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। ইয়র্কভিত্তিক সেন্ট পিটার্স স্কুলে পড়াশুনো করেন। এখানে শেষ দুই মৌসুমে প্রথম একাদশের…

  • | | |

    হাবিবুল বাশার

    ১৭ আগস্ট, ১৯৭২ তারিখে কুষ্টিয়া জেলার নাগাকান্দা এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ও প্রশাসক। মূলতঃ শীর্ষসারির ব্যাটসম্যান হিসেবে দলে ভূমিকা রেখে গেছেন। ডানহাতে ব্যাটিং কর্মে মনোনিবেশ ঘটাতেন। এছাড়াও, ডানহাতে অফ-স্পিন বোলিংয়ে দক্ষ ছিলেন। বাংলাদেশ দলের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেন। ৫ ফুট ১০ ইঞ্চি (১.৭৮ মিটার) উচ্চতার অধিকারী। ‘সুমন’ ডাকনামে পরিচিতি লাভ করেন। ১৯৮৯ সালে বাংলাদেশের অনূর্ধ্ব-১৯ দলের…

  • |

    মোহাম্মদ নিসার

    ১ আগস্ট, ১৯১০ তারিখে তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের পাঞ্জাবের হোশিয়ারপুর এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ছিলেন। মূলতঃ বোলার হিসেবে দলে ভূমিকা রেখেছিলেন। ডানহাতে ফাস্ট-মিডিয়াম বোলিং করতেন। এছাড়াও, ডানহাতে নিচেরসারিতে ব্যাটিংয়ে নামতেন। ১৯৩০-এর দশকে ভারতের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছিলেন। ১৯২৮-২৯ মৌসুম থেকে ১৯৫৩-৫৪ মৌসুম পর্যন্ত সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন অতিবাহিত করেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর ভারতীয় ক্রিকেটে পাতিয়ালার মহারাজা…