১ সেপ্টেম্বর, ১৯১৯ তারিখে নাটালের রসবার্গ এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ছিলেন। মূলতঃ ব্যাটসম্যান হিসেবে দলে ভূমিকা রেখে গেছেন। ডানহাতে ব্যাটিং করতেন। এছাড়াও, ডানহাতে কার্যকর মিডিয়াম বোলিংয়ে পারদর্শী ছিলেন। ১৯৪০-এর দশকে দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছিলেন।
দৌঁড়ুতে বেশ পটু ছিলেন। ১৯৩৮-৩৯ মৌসুম থেকে ১৯৬১-৬২ মৌসুম পর্যন্ত সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন অতিবাহিত করেছিলেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর দক্ষিণ আফ্রিকান ক্রিকেটে বর্ডার ও নাটালের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। উভয় দলের পক্ষে ৭৫টি প্রথম-শ্রেণীর খেলায় অংশ নিয়ে ৩৪.৫৮ গড়ে ৩৮০৪ রান সংগ্রহ করেছিলেন। খেলাগুলো থেকে ছয়টি শতক ও ২০টি অর্ধ-শতকের সন্ধান পান। প্রাপ্ত ১২৩ উইকেটের মধ্যে তিনবার ইনিংসে পাঁচ-উইকেট পেয়েছিলেন।
১৯৪৭ থেকে ১৯৪৯ সাল পর্যন্ত সময়কালে দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে নয়টিমাত্র টেস্টে অংশগ্রহণের সুযোগ পেয়েছিলেন। ১৯৪৭ সালে অ্যালান মেলভিলের নেতৃত্বাধীন স্প্রিংবকের সাথে ইংল্যান্ড সফর করেন। ৭ জুন, ১৯৪৭ তারিখে নটিংহামের ট্রেন্ট ব্রিজে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। অ্যাথল রোয়ান, জনি লিন্ডসে, লিন্ডসে টাকেট, টাফ্টি মান, টনি হ্যারিস ও ইয়ান স্মিথের সাথে তাঁর একযোগে টেস্ট অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। খেলায় তিনি ১/৩৫ ও ২/৫৭ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। পাশাপাশি, একবার ব্যাট হাতে নিয়ে ৪৮ রান সংগ্রহসহ একটি ক্যাচ তালুবন্দী করেছিলেন। খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ালে পাঁচ-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজটি অমিমাংসিত অবস্থায় অগ্রসর হতে থাকে।
একই সফরের ১৬ আগস্ট, ১৯৪৭ তারিখে লন্ডনের কেনিংটন ওভালে অনুষ্ঠিত সিরিজের পঞ্চম ও চূড়ান্ত টেস্টে অংশ নেন। ব্যক্তিগত সাফল্যের সন্ধান পান। প্রথম ইনিংসে ব্যক্তিগত পূর্বতন সর্বোচ্চ ৪৮ রান অতিক্রম করেন। খেলায় তিনি ৫৫ ও ০ রান সংগ্রহ করেছিলেন। এছাড়াও, বল হাতে নিয়ে ১/৮০ ও ১/৫০ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ালে সফরকারীরা পাঁচ-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে ৩-০ ব্যবধানে পরাজিত হয়। এ সফরে ৩২.৩২ গড়ে ১০০২ রান সংগ্রহসহ ২৬.০৭ গড়ে ৫৪ উইকেট দখল করেছিলেন। ওভালে ড্র হওয়া টেস্টে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ৫৫ রান তুলেন।
এরপর, ১৯৪৮-৪৯ মৌসুমে নিজ দেশে প্রথমবারের মতো টেস্ট খেলেন। ঐ মৌসুমে জর্জ মানের নেতৃত্বাধীন এমসিসি দলের মুখোমুখি হন। ১৬ ডিসেম্বর, ১৯৪৮ তারিখে ডারবানে অনুষ্ঠিত সফররত ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। খেলায় তিনি ২৪ ও ৩ রান সংগ্রহ করেছিলেন। এছাড়াও, ০/১৬ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। ২ উইকেটে পরাজিত হলে স্বাগতিকরা পাঁচ-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে পিছিয়ে পড়ে।
একই সফরের ৫ মার্চ, ১৯৪৯ তারিখে জিকিবার্হায় অনুষ্ঠিত সিরিজের পঞ্চম ও চূড়ান্ত টেস্টে অংশ নেন। খেলায় তিনি একবার ব্যাটিংয়ে নেমে ২০ রান সংগ্রহসহ চারটি ক্যাচ তালুবন্দীকরণে অগ্রসর হন। স্বাগতিকরা ৩ উইকেটে পরাভূত হলে ২-০ ব্যবধানে সিরিজ খোঁয়ায়। পরবর্তীতে, এটিই তাঁর সর্বশেষ টেস্টে পরিণত হয়।
অংশগ্রহণকৃত টেস্টগুলোর চারটিতে বোলিং উদ্বোধনে নেমেছিলেন। তবে, পেসের অভাবহেতু শীর্ষসারির ব্যাটসম্যানদের সমীহের পাত্রে পরিণত হতে পারেননি। এছাড়াও, ধৈর্য্যের অভাবে বড় ধরনের ইনিংস উপহার দিতে পারেননি। ঘরোয়া আসরের সফলতা আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পুণরাবৃত্তি ঘটাতে ব্যর্থ হন। টেস্টগুলো থেকে ২০.৯২ গড়ে ২৯৩ রান সংগ্রহ করেছিলেন।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন। উত্তর আফ্রিকায় রয়্যাল ডারবান লাইট ইনফ্যান্ট্রির সদস্যরূপে ১৯৪২ সালে এল আলামিনের যুদ্ধে অংশ নেন। এছাড়াও, ইতালিতে অংশগ্রহণ করেন। এ পর্যায়ে মিলিটারি ক্রস লাভ করেছিলেন। ক্রিকেট খেলা থেকে অবসর গ্রহণের পর জন অর্স নামীয় প্রতিষ্ঠানের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮৪ সাল পর্যন্ত এ দায়িত্বে ছিলেন।
ব্যক্তিগত জীবনে বিবাহিত ছিলেন। মৌরিন নাম্নী এক রমণীর পাণিগ্রহণ করেন। এ দম্পতির পাঁচ সন্তান ছিল। ২২ ডিসেম্বর, ২০০৮ তারিখে কোয়াজুলু-নাটালের আমলাঙ্গা এলাকায় নিজ গৃহে ৮৯ বছর ১১২ দিন বয়সে তাঁর দেহাবসান ঘটে। মৃত্যুকালীন লিন্ডসে টাকেট, ডেনিস বেগবি ও নরম্যান গর্ডনের পর চতুর্থ বয়োজ্যেষ্ঠ দক্ষিণ আফ্রিকান টেস্ট খেলোয়াড়ের সম্মাননার অধিকারী ছিলেন।
