২১ সেপ্টেম্বর, ১৮৯৩ তারিখে সাউথ অস্ট্রেলিয়ার পোর্ট পিরি এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ও কোচ ছিলেন। মূলতঃ ব্যাটসম্যান হিসেবে দলে ভূমিকা রেখেছিলেন। ডানহাতে ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি ডানহাতে মিডিয়াম বোলিং করতে পারতেন। ১৯২০-এর দশকে অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছিলেন।
‘নিপ’ ডাকনামে ভূষিত হয়েছিলেন। অ্যাডিলেডভিত্তিক সেন্ট পিটার কলেজে অধ্যয়ন করেছেন। ১৯১২ সালে ক্রিকেটে সেন্টস দলকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। ফুটবলেও পর্যাপ্ত প্রতিশ্রুতিশীলতার স্বাক্ষর রাখেন। ১৯১৩-১৪ মৌসুম থেকে ১৯২৮-২৯ মৌসুম পর্যন্ত সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন অতিবাহিত করেছেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটে সাউথ অস্ট্রেলিয়ার প্রতিনিধিত্ব করেছেন। ১৯১৩ সালের শেষদিকে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে প্রথমবারের মতো অংশ নেন। নয় নম্বর অবস্থানে নিউ সাউথ ওয়েলসের বিপক্ষে ব্যাট হাতে নিয়ে চার্লস কেলেওয়ে ও আর্থার মেইলি’র ন্যায় বোলারদের রুখে দিয়ে ৫৭ রানের ইনিংস খেলেন। এর এক মাস পর ১৯১৪ সালের শুরুতে নিউজিল্যান্ড দল অস্ট্রেলিয়া সফরে আসে। রাজ্য দলের সদস্যরূপে সফররত দলটির বিপক্ষে ৯৪ রান তুলেন।
১৯২০ থেকে ১৯২১ সাল পর্যন্ত সময়কালে অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে সর্বমোট ১০ টেস্টে অংশ নিয়েছিলেন। নিজ দেশে ১৯২০-২১ মৌসুমে ওয়ারউইক আর্মস্ট্রংয়ের নেতৃত্বাধীন দলের সদস্যরূপে অ্যাশেজ সিরিজে অংশ নেন। জনি ডগলাসের নেতৃত্বাধীন এমসিসি দলের মুখোমুখি হন। ১৭ ডিসেম্বর, ১৯২০ তারিখে সিডনিতে অনুষ্ঠিত সফররত ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। আর্থার মেইলি, হার্বি কলিন্স, জ্যাক রাইডার, জ্যাক গ্রিগোরি, জনি টেলর ও বার্ট ওল্ডফিল্ডের সাথে তাঁর একযোগে টেস্ট অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। খেলায় তিনি ৩৬ ও ১৬ রান সংগ্রহ করতে পেরেছিলেন। স্বাগতিকরা ৩৭৭ রানের বিশাল ব্যবধানে জয় পেয়ে পাঁচ-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে এগিয়ে যায়।
প্রথমবারের মতো ৫-০ ব্যবধানে ধবল ধোলাই করাকালীন অ্যাডিলেডে অনুষ্ঠিত সিরিজের তৃতীয় টেস্টে অপূর্ব খেলেন। দ্বিতীয় ইনিংসে ১০৪ রানের ইনিংস খেলে চার্লস কেলেওয়ে (১৪৭) ও ওয়ারউইক আর্মস্ট্রংয়ের (১২১) শতকে ভর করে স্বাগতিক দল ৫৮২ রানে এগিয়ে যায়। ইংল্যান্ড দল ৩৭০ রানে গুটিয়ে যায় ও দুই টেস্ট বাকী রেখেই ৩-০ ব্যবধানে সিরিজ জয় করে।
১৯২১-২২ মৌসুমে প্রথমবারের মতো দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে টেস্ট খেলেন। ঐ মৌসুমে হার্বি কলিন্সের নেতৃত্বাধীন অজি দলের সদস্যরূপে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে যান। ২৬ নভেম্বর, ১৯২১ তারিখে কেপটাউনে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজের তৃতীয় ও চূড়ান্ত টেস্টে অংশ নেন। খেলায় তিনি একবার ব্যাটিংয়ে নেমে ৬ রান সংগ্রহ করেছিলেন। সফরকারীরা ১০ উইকেটে জয় পেলে ১-০ ব্যবধানে সিরিজে বিজয়ী হয়। পরবর্তীতে, এটিই তাঁর সর্বশেষ টেস্টে পরিণত হয়।
বিংশ শতাব্দীর প্রথমার্ধ্বে অস্ট্রেলিয়ার অন্যতম সেরা ফিল্ডারের মর্যাদা পেয়েছেন। ক্রিকেট থেকে অবসর গ্রহণের পর কোচিং জগতের দিকে ধাবিত হন। ১৯৩০ থেকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পর্যন্ত সাউথ অস্ট্রেলিয়ার কোচ হিসেবে মনোনীত হন। এরপর, ১৯৫৮ থেকে ১৯৭০ সাল পর্যন্ত এ দায়িত্বে ছিলেন।
ক্রিকেটের বাইরে অস্ট্রেলীয় রুলস ফুটবলে দক্ষ ছিলেন। অনুমতিজনিত সমস্যার কারণে সাউথ অস্ট্রেলিয়ান ন্যাশনাল ফুটবল লীগে নর্থ অ্যাডিলেড ফুটবল ক্লাবের পক্ষে একটিমাত্র খেলায় অংশগ্রহণের সুযোগ পেয়েছিলেন। ঐ খেলায় সেন্টার অবস্থানে খেলেছেন। প্রতিপক্ষীয় স্টার্ট ফুটবল ক্লাবে একই নম্বরধারী ভিক রিচার্ডসন টেস্টে অস্ট্রেলিয়া দলকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। ৯ মে, ১৯৮১ তারিখে সাউথ অস্ট্রেলিয়ার অ্যাডিলেডে ৮৭ বছর ২৩০ দিন বয়সে তাঁর দেহাবসান ঘটে। এ পর্যায়ে তিনি ১৯২১ সালের ওয়ারউইক আর্মস্ট্রংয়ের নেতৃত্বাধীন অস্ট্রেলিয়া দলের অন্যতম সদস্য ও সর্বশেষ জীবিত খেলোয়াড় ছিলেন। তাঁর ভ্রাতা ল্যান্স পেলিও সাউথ অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট খেলায় অংশ নিয়েছিলেন।
