মোহাম্মদ হাফিজ
১৭ অক্টোবর, ১৯৮০ তারিখে পাঞ্জাবের সারগোদায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার। মূলতঃ অল-রাউন্ডারের দায়িত্ব পালন করেছেন। ডানহাতে ব্যাটিং করতেন। এছাড়াও, মাঝে-মধ্যে ডানহাতে অফ-ব্রেক বোলিং কর্মে অগ্রসর হন। পাকিস্তান দলের পক্ষে সকল স্তরের ক্রিকেটে অংশ নেয়াসহ অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেছেন।
সচরাচর আগ্রাসী ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি কৌশলগতভাবে প্রয়োজনমাফিক রক্ষণাত্মক ঢংয়েও অগ্রসর হয়ে থাকেন। পাকিস্তান দলের অন্যতম অনুসঙ্গ তিনি। বেশ কয়েকবার বোলিং উদ্বোধনে নেমেছেন বিশেষতঃ টি২০ ক্রিকেটে। শীর্ষ স্পিনার সাঈদ আজমলকে অবৈধ বোলিংয়ের কারণে নিষেধাজ্ঞা প্রদান করা হলে সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্যে এ দায়িত্বে ছিলেন।
২০১২-১৩ মৌসুমে আইসিসি প্লেয়ার র্যাঙ্কিং প্রথায় সেরা অল-রাউন্ডার ছিলেন। বুদ্ধিমত্তা সহযোগে ব্যাটিংকালে দলের প্রয়োজনে মারকুটে শট খেলতে অভ্যস্ত। তেমন শূন্যে বলকে না পাঠালেও চমৎকার নিয়ন্ত্রণ রেখে নিশানা বরাবর প্রেরণ করে থাকেন। ফলশ্রুতিতে, অধিনায়কগণ তাঁকে ইনিংসের যে-কোন পর্যায়েই বোলিং করার জন্যে আমন্ত্রণ করে থাকেন দ্বিধাহীন চিত্তে। এছাড়াও, অন্যতম সেরা ফিল্ডারের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন। সচরাচর, পয়েন্ট অঞ্চলে অবস্থান করে থাকেন। এ সকল গুণাবলীর অধিকারী হওয়া সত্ত্বেও আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রবেশের প্রথম সাত বছর দলের নিয়মিত সদস্যের মর্যাদা পাননি। মূলতঃ বড় ধরনের সংগ্রহ করতে না পারাই এর প্রধান কারণ ছিল। ৩০ ও ৪০ রানের কোটায় প্রবেশ করতেন। এ পর্যায়ে কিছু দর্শনীয় কভার ড্রাইভেই নিজেকে সীমাবদ্ধ করে রাখতেন ও নিজের সম্ভাব্য অবদানের বিষয়ে সোচ্চার হতেন না।
১৯৯৮-৯৯ মৌসুম থেকে ২০১৮-১৯ মৌসুম পর্যন্ত সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান রাখেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর পাকিস্তানী ক্রিকেটে ফয়সালাবাদ, মুলতান, পাঞ্জাব, রাওয়ালপিন্ডি, সারগোদা, সাউদার্ন পাঞ্জাব, সুই নর্দার্ন গ্যাস পাইপলাইন্স লিমিটেড ও পাকিস্তান সুই গ্যাস কর্পোরেশন এবং ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে মিডলসেক্সের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। এছাড়াও, বালুচিস্তান বিয়ার্স, বালুচিস্তান ওয়ারিয়র্স, ফয়সালাবাদ রিজিওন, ফয়সালাবাদ উল্ভস, ফাটা রিজিওন, লাহোর ঈগলস, লাহোর লায়ন্স, লাহোর কালান্দার্স, লাহোর রিজিওন হোয়াইটস, নানগরহর লিওপার্ডস, পেশাওয়ার জালমি, পাঞ্জাব বাদশাহ, পাঞ্জাব স্ট্যালিয়ন্স, ঢাকা ডায়নামাইটস, দূরন্ত রাজশাহী, এডমন্টন রয়্যালস, গায়ানা আমাজন ওয়ারিয়র্স, খুলনা রয়্যাল বেঙ্গলস, কলকাতা নাইট রাইডার্স, মেলবোর্ন স্টার্স, মন্ট্রিল টাইগার্স, সেন্ট কিটস ও নেভিস প্যাট্রিয়টস এবং ওয়েয়াম্বার পক্ষে খেলেছেন।
৫ ফুট ৭ ইঞ্চি (১.৭৪ মিটার) উচ্চতার অধিকারী মোহাম্মদ হাফিজ ‘দ্য প্রফেসর’ ডাকনামে পরিচিতি পান। ভেরায় খেলেন। ২০০৩ সালে বিশ্বকাপ ক্রিকেট প্রতিযোগিতায় পাকিস্তান দলের প্রথম রাউন্ডের বিভীষিকাময় ফলাফলের প্রেক্ষিতে স্বল্প কয়েকজন তরুণ অল-রাউন্ডারের অন্যতম হিসেবে দল থেকে বাদ পড়েন ও পরবর্তীতে দলে ফিরে আসতে সক্ষম হন। ক্যারিবীয় প্রিমিয়ার লীগে বিশ্বের চতুর্থ খেলোয়াড় হিসেবে নিজেকে পরিচিতি ঘটান। পাকিস্তানের টি২০ প্রতিযোগিতায় প্রধান খেলোয়াড় হিসেবে মনোনীত হন।
২০০৩ সাল থেকে ২০২১ সময়কালে পাকিস্তানের পক্ষে সর্বমোট ৫৫ টেস্ট, ২১৮ ওডিআই ও ১১৯টি টি২০আইয়ে অংশ নিয়েছেন। ৩ এপ্রিল, ২০০৩ তারিখে শারজায় জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওডিআইয়ে অংশ নেয়ার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট জীবনের সূত্রপাত ঘটান।
২০০৩ সালে নিজ দেশে খালেদ মাহমুদের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশী দলের মুখোমুখি হন। ২০ আগস্ট, ২০০৩ তারিখে করাচীতে অনুষ্ঠিত সফররত বাংলাদেশের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম টেস্টে অংশ নেন। শাব্বির আহমেদ, উমর গুল ও ইয়াসির হামিদের সাথে তাঁর একযোগে টেস্ট অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। খেলায় ১০৯ রান খরচায় আট উইকেট দখল করেছিলেন। তবে, অপর অভিষেকধারী ইয়াসির হামিদের জোড়া শতকের কল্যাণে সফরকারীরা ৭ উইকেটে পরাজিত হলে তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে পিছিয়ে পড়ে।
২০০৩ সালের শেষদিকে টেস্ট দল থেকে বাদ পড়ার পর ওডিআই দলেও একই ঘটনা ঘটে। স্থানীয় প্রতিযোগিতাসহ পাকিস্তান ‘এ’ দলের সদস্যরূপে চমকপ্রদ ক্রীড়াশৈলী উপস্থাপনের প্রেক্ষিতে ২০০৪ সালের শেষদিক পর্যন্ত পর্যবেক্ষণে থাকেন। ২০০৫ সালে পুণরায় ওডিআই দলে তাঁকে ফিরিয়ে আনা হয়। এ পর্যায়ে ব্যাট হাতে দূর্বলতা পরিলক্ষিত হলেও বোলিংয়ে বিস্ময়কর ক্রীড়া নৈপুণ্যের স্বাক্ষর রাখেন। ২০০৬ সালে অস্ট্রেলিয়ায় অনুষ্ঠিত সিরিজে পাকিস্তানের পক্ষে নিজস্ব প্রথম শতরানের ইনিংস খেলেন।
২০১১ সালে নিজেকে পুরোপুরি বদলে ফেলেন ও স্বর্ণালী সময় অতিবাহিত করেন। সকল স্তরের ক্রিকেটেই ব্যাট ও বল হাতে নিয়ে ক্রমাগত ধারাবাহিক সাফল্য পেতে থাকেন। মূলতঃ নভেম্বর, ২০১০ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে অনুষ্ঠিত সিরিজের পর থেকেই এ সফলতার সূত্রপাত ঘটে ও ২০১১ সালে তা চলমান থাকে। টেস্টে দুইটি ও ওডিআইয়ে তিনটি শতরানের সন্ধান পান। এছাড়াও, টি২০ আন্তর্জাতিক থেকে দুইটি অর্ধ-শতরানের ইনিংস আদায় করে নেন। এরপর থেকেই নিজের ধারাবাহিকতা বহমান রাখতে শুরু করেন। অনেকগুলো সূচকেই নিজেকে পাকিস্তানের অন্যতম সেরা ক্রিকেটারের রূপান্তরিত করেন।
২০১০-১১ মৌসুমে মিসবাহ-উল-হকের নেতৃত্বাধীন পাকিস্তানী দলের সদস্যরূপে প্রথমবারের মতো নিউজিল্যান্ড গমন করেন। ৭ জানুয়ারি, ২০১১ তারিখে হ্যামিল্টনে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। খেলায় তিনি ০ ও ৯* রান সংগ্রহ করেছিলেন। তবে, আব্দুর রেহমানের অনবদ্য অল-রাউন্ড ক্রীড়াশৈলীর কল্যাণে স্বাগতিকরা ১০ উইকেটে পরাজিত হলে দুই-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে পিছিয়ে পড়ে।
২০১১ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের সকল স্তর থেকে দশবার ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার পেয়ে সকলকে তাক লাগিয়ে দেন। নিজেকে সকলের কাছে পরিচিতি ঘটান। সনথ জয়সুরিয়া ও জ্যাক ক্যালিসের পর মাত্র তৃতীয় খেলোয়াড় হিসেবে ওডিআইয়ের এক পঞ্জিকাবর্ষে সহস্র রানের মাইলফলক স্পর্শসহ ৩০-এর অধিক উইকেট দখল করেছিলেন। তৌফিক উমরকে সাথে নিয়ে টেস্টে স্থিতিশীল উদ্বোধনী জুটি গড়ে অধিক সফলতার স্বাক্ষর রাখেন। শীর্ষসারিতে আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি তৌফিক উমরের রক্ষণাত্মক ধাঁচের খেলা সঠিক ভূমিকা রাখতে শুরু করে। এ বছরেই সকল স্তরের ক্রিকেটে অংশ নিয়ে দলে স্থান পাকাপোক্ত করে ফেলেন।
২০১১-১২ মৌসুমে মিসবাহ-উল-হকের নেতৃত্বাধীন দলের সদস্যরূপে জিম্বাবুয়ে সফরে যান। ১ সেপ্টেম্বর, ২০১১ তারিখে বুলাওয়েতে অনুষ্ঠিত একমাত্র টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে স্বাগতিক জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে অংশ নেন। ১১৯ ও ৩৮ রানের ইনিংস খেলেন। এছাড়াও, বল হাতে নিয়ে ৪/৩১ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। তাঁর চমৎকার অল-রাউন্ড ক্রীড়াশৈলীর কল্যাণে সফরকারীরা ৭ উইকেটে জয় পায়। খেলায় তিনি ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার লাভ করেন।
১৮ মার্চ, ২০১২ তারিখে বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত খেলায় ভারতের বিপক্ষে ১১৩ বল মোকাবেলা করে ১০৫ রানের ইনিংস খেলেন। এ পর্যায়ে নাসির জামশেদকে নিয়ে উদ্বোধনী জুটিতে ২২৪ রানের রেকর্ডের সাথে নিজেকে যুক্ত রেখেছেন।
ব্যাট হাতে দৃষ্টিনন্দন ক্রীড়াশৈলী উপহার দিতে থাকেন। অফ-সাইডে ড্রাইভ মারার অর্থই হচ্ছে কোন না কোন রান নিজের আয়ত্তে নিয়ে আসা। পাকিস্তানের সর্বকালের ওডিআই রান সংগ্রহকারীদের তালিকায় দশম স্থানে অবস্থান করছেন। মার্চ, ২০১২ সালে ঢাকায় স্বাগতিক বাংলাদেশ দলের বিপক্ষে নিজস্ব চতুর্থ ওডিআইয়ের সন্ধান পান। মে, ২০১২ সালে পাকিস্তানের টি২০ দলের অধিনায়ক হিসেবে মনোনীত হন। একই বছরের জুন মাসে কলম্বোয় অনুষ্ঠিত সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে ১৯৬ রানের ইনিংস খেলে সর্বাধিক বিস্ময়ের সৃষ্টি করেছিলেন।
তাঁর নেতৃত্বে সেপ্টেম্বর, ২০১২ সালে শ্রীলঙ্কায় অনুষ্ঠিত আইসিসি বিশ্ব টি২০ প্রতিযোগিতায় পাকিস্তান দল সেমি-ফাইনালে উপনীত হয়। স্বাগতিক দলের কাছে পরাভূত হলে প্রতিযোগিতা থেকে বিদেয় নেয়। ২০১৩ সালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দারুণ খেলেন। চার খেলার তিনটিতেই শতরান করেছিলেন। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির চূড়ান্ত খেলায় ভারতের বিপক্ষে অপরাজিত ৫৭ রানের ইনিংস খেলেছিলেন।
২০১২-১৩ মৌসুমে মিসবাহ-উল-হকের নেতৃত্বাধীন পাকিস্তানী দলের অন্যতম সদস্যরূপে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে যান। ২২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ তারিখে সেঞ্চুরিয়নে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজের তৃতীয় ও চূড়ান্ত টেস্টে অংশ নেন। ব্যক্তিগত সাফল্যের সন্ধান পান। প্রথম ইনিংসে ১৬ রানে পৌঁছানোকালে টেস্টে ২০০০ রানের মাইলফলক স্পর্শ করেন। খেলায় তিনি ১৮ ও ০ রান সংগ্রহসহ একটি ক্যাচ তালুবন্দী করেন। এছাড়াও, বল হাতে নিয়ে ০/২৪ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। কাইল অ্যাবটের দূর্দান্ত বোলিংশৈলীর কল্যাণে সফরকারীরা ইনিংস ও ১৮ রানে পরাজিত হলে ৩-০ ব্যবধানে সিরিজ খোঁয়ায়।
২০১৪-১৫ মৌসুমে মিসবাহ-উল-হকের নেতৃত্বাধীন পাকিস্তানী দলের সদস্যরূপে সংযুক্ত আরব আমিরাত গমন করেন। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে পুরো সিরিজে অপূর্ব ক্রীড়ানৈপুণ্যের স্বাক্ষর রাখেন। ২৬ নভেম্বর, ২০১৪ তারিখে শারজায় সিরিজের তৃতীয় ও চূড়ান্ত টেস্টে অংশ নেন। কয়েকটি ব্যক্তিগত সাফল্যের ছাঁপ রাখেন। প্রথম ইনিংসে ৮১ রানে পৌঁছানোকালে টেস্টে ২৫০০ রানের মাইলফলক স্পর্শ করেন। এ পর্যায়ে ব্যক্তিগত পূর্বতন সর্বোচ্চ ১৯৬ রান অতিক্রম করেন। খেলায় তিনি ১৯৭ ও ২৪ রান সংগ্রহ করেছিলেন। এছাড়াও, ২/১১০ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। তবে, মার্ক ক্রেগের অল-রাউন্ড ক্রীড়াশৈলীতে নিউজিল্যান্ড দল ইনিংস ও ৮০ রানে জয় পেলে সিরিজটি অমিমাংসিত অবস্থায় শেষ হয়। এ সিরিজে ৪১৮ রান সংগ্রহসহ ৪ উইকেট লাভ করে ম্যান অব দ্য সিরিজের পুরস্কার লাভ করেন।
তিনবার অবৈধ বোলিংয়ের দায়ে নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়েন। নভেম্বর, ২০১৪ সালে আবুধাবিতে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে অবৈধ বোলিংয়ের কারণে অভিযুক্ত হন। ডিসেম্বরে ইংল্যান্ডের লাফবোরায় আইসিসি’র নির্দিষ্ট কেন্দ্রে তাঁর বোলিং পরীক্ষান্তে তা নিশ্চিত করা হয়। ফলশ্রুতিতে, ডিসেম্বর, ২০১৪ সালের শুরুতে বোলিং করা থেকে তাঁকে বিরত থাকতে হয়। কঁনুইয়ের ১৫ ডিগ্রির তুলনায় ৩১ ডিগ্রি বাঁকানো অবস্থায় ধরা পড়ে। ৩ জানুয়ারি চেন্নাইয়ের বায়োমেকানিক্স ল্যাবে অনানুষ্ঠানিক পরীক্ষায় তা প্রমাণিত হয়নি।
২০০৭ সালের বিশ্বকাপ ক্রিকেট প্রতিযোগিতায় দুইটি ও ২০১১ সালের প্রতিযোগিতায় আটটি খেলায় অংশ নিয়েছিলেন। তন্মধ্যে, ২০১১ সালের আসরে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ৬১ রানের দূর্দান্ত ইনিংস খেলেন। ২০১৫ সালের বিশ্বকাপ ক্রিকেট প্রতিযোগিতায় পাকিস্তান দলের প্রধান খেলোয়াড় হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হন। তবে, দূর্ভাগ্যজনকভাবে বিশ্বকাপ শুরুর ৬ দিন পূর্বে কাঁধের আঘাতের কারণে তাঁর এ স্বপ্ন বিফলে যায়। নাসির জামশেদকে তাঁর স্থলাভিষিক্ত করা হয়। এপ্রিল, ২০১৫ সালে বাংলাদেশের বিপক্ষে টেস্টে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ২২৪ রান তুলেছিলেন।
২০১৫-১৬ মৌসুমে মিসবাহ-উল-হকের নেতৃত্বাধীন পাকিস্তানী দলের সদস্যরূপে সংযুক্ত আরব আমিরাত গমন করেন। ১ নভেম্বর, ২০১৫ তারিখে শারজায় ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের তৃতীয় টেস্টে অংশ নেন। দূর্দান্ত ব্যাটিংনৈপুণ্যের স্বাক্ষর রাখেন। ২৭ ও ১৫১ রান সংগ্রহ করেছিলেন। তাঁর অসাধারণ ব্যাটিং দৃঢ়তায় পাকিস্তান দল ১২৭ রানে জয় পেলে ২-০ ব্যবধানে সিরিজে জয়লাভ করে। খেলায় তিনি ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার পান।
২০১৮-১৯ মৌসুমে সরফরাজ আহমেদের নেতৃত্বাধীন পাকিস্তানী দলের সাথে সংযুক্ত আরব আমিরাত গমন করেন। ৩ ডিসেম্বর, ২০১৮ তারিখে আবুধাবিতে অনুষ্ঠিত অপর সফরকারী নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের তৃতীয় ও চূড়ান্ত টেস্টে অংশ নেন। ০ ও ৮ রান সংগ্রহ করেছিলেন। তবে, প্রতিপক্ষীয় অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসনের অসাধারণ ব্যাটিংশৈলীর কারণে নিউজিল্যান্ড দল ১২৩ রানে জয় পেলে ২-১ ব্যবধানে সিরিজ জয় করে নেয়। পরবর্তীতে, এটিই তাঁর সর্বশেষ টেস্টে পরিণত হয়।
পাকিস্তানী অধিনায়ক হিসেবে টি২০ ক্রিকেটে যৌথভাবে সর্বাধিক জয়লাভ করেন। এছাড়াও, বিদেশের মাটিতে সর্বাধিক সিরিজ জয়ের সাথে নিজেকে জড়ান। তাঁর নেতৃত্বে পাকিস্তান দল র্যাঙ্কিংয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে চলে আসে। পাশাপাশি অধিনায়কের দায়িত্ব পালনসহ উপর্যুপরী তিনটি অর্ধ-শতক হাঁকিয়েছিলেন ও টি২০তে পাকিস্তানের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক হন।
ব্যক্তিগত জীবনে বিবাহিত। নাজিয়া হাফিজ নাম্নী এক রমণীর পাণিগ্রহণ করেন। এ দম্পতির রোশন হাফিজ নামীয় পুত্র ও ঈমান হাফিজ নাম্নী এক কন্যা রয়েছে।