Skip to content

২৮ এপ্রিল, ১৯৪২ তারিখে মিডলসেক্সের হ্যারো এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার, সাংবাদিক ও লেখক। মূলতঃ উইকেট-রক্ষক হিসেবে খেলতেন। এছাড়াও, ডানহাতে ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি ডানহাতে মিডিয়াম বোলিংয়ে পারদর্শী ছিলেন। ইংল্যান্ড দলকে নেতৃত্ব দিয়েছেন।

‘ব্রিয়ার্স’ বা ‘স্কাগ’ ডাকনামে পরিচিতি পাওয়া মাইক ব্রিয়ারলি ৫ ফুট ১১ ইঞ্চি উচ্চতার অধিকারী। এক পর্যায়ের ইংল্যান্ডের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেন। এ সময়ে তাঁর দক্ষ পরিচালনায় ইংল্যান্ডের খেলার ধারা পরিবর্তিত হয়ে যায়। কৌশলগতভাবে দূর্দান্ত নেতৃত্ব দিয়েছেন ও খেলোয়াড়দেরকে অসাধারণভাবে পরিচালনা করেছেন।

লন্ডন সিটি স্কুলে অধ্যয়ন শেষে কেমব্রিজের সেন্ট জোন্স কলেজে পড়াশুনো করেছেন। ১৯৬১ থেকে ১৯৮৩ সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান রাখেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে মিডলসেক্সের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। এছাড়াও, কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে খেলেছেন। ১৯৬১ সালে কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে খেলায় অংশ নেয়ার মাধ্যমে বর্ণাঢ্যময় প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবনের সূত্রপাত ঘটান। এরপর, ১৯৬৩ ও ১৯৬৪ সালে দলের অধিনায়কত্ব করেন।

১৯৬১ থেকে ১৯৮৩ সময়কালে মিডলসেক্সের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। তন্মধ্যে, ১৯৭১ থেকে ১৯৮২ সময়কালে দলের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেছেন। উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান ও স্লিপ অঞ্চলে দূর্দান্ত ফিল্ডারের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিলেন। তিনবার দলকে চ্যাম্পিয়নশীপের শিরোপা লাভে নেতৃত্ব দেয়াসহ একবার যৌথভাবে দলের শিরোপা আনয়ণে তুখোড় নেতৃত্ব দেন।

সর্বমোট ৪৫৫টি প্রথম-শ্রেণীর খেলায় অংশ নিয়ে ৪৫ শতক সহযোগে ২৫১৮৫ রান সংগ্রহ করেছেন। ১৯৬৬-৬৭ মৌসুমে পেশাওয়ারে এমসিসি অনূর্ধ্ব-২৫ দলের সদস্যরূপে নর্থ জোনের বিপক্ষে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ৩১২ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেছেন। এছাড়াও, ৪১৮টি ক্যাচ তালুবন্দী করেছিলেন।

১৯৭৬ থেকে ১৯৮১ সময়কালে ইংল্যান্ডের পক্ষে সর্বমোট ৩৯ টেস্ট ও ২৫টি ওডিআইয়ে অংশ নিয়েছেন। তন্মধ্যে, ৩১ টেস্টে দলকে নেতৃত্ব দিয়ে ১৮টিতে জয় এনে দেন। সর্বমোট দশবার বিদেশ সফরে যান। লেন হাটনের পর দ্বিতীয় অধিনায়ক হিসেবে উপর্যুপরী অ্যাশেজ সফলতার সাথে করায়ত্ত্ব করেন। এছাড়াও, প্রথম ইংরেজ অধিনায়ক হিসেবে অ্যাশেজ সিরিজে পাঁচটি জয়ের সাথে নিজেকে যুক্ত রাখেন।

১৯৭৬ সালে নিজ দেশে ক্লাইভ লয়েডের নেতৃত্বাধীন ক্যারিবীয় দলের মুখোমুখি হন। ৩ জুন, ১৯৭৬ তারিখে নটিংহামে অনুষ্ঠিত সফররত ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে তাঁর অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। খেলায় তিনি ০ ও ১৭ রান সংগ্রহসহ একটি ক্যাচ তালুবন্দী করেছিলেন। খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ালে পাঁচ-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজটি অমিমাংসিত অবস্থায় অগ্রসর হতে থাকে।

১৯৭৬-৭৭ মৌসুমে ভারত গমন করেন। এ সফরে বোম্বে টেস্টে স্বাগতিক ভারতের বিপক্ষে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ৯১ রান তুলেন।

১৯৮১ সালে নিজ দেশে কিম হিউজের নেতৃত্বাধীন অজি দলের মুখোমুখি হন। ২৭ আগস্ট, ১৯৮১ তারিখে লন্ডনের ওভালে অনুষ্ঠিত সফররত অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজের ষষ্ঠ ও চূড়ান্ত টেস্টে অংশ নেন। খেলায় তিনি অধিনায়কের দায়িত্বে থেকে ০ ও ৫১ রান সংগ্রহসহ তিনটি ক্যাচ তালুবন্দী করেছিলেন। তবে, ডেনিস লিলি’র অসাধারণ ক্রীড়াশৈলী প্রদর্শন সত্ত্বেও খেলাটি ড্রয়ে পরিণত হলে স্বাগতিকরা ৩-১ ব্যবধানে সিরিজে বিজয়ী হয়। এরফলে, নিজ দেশে তিনি ১৯ টেস্টে অধিনায়কত্ব করে অপরাজিত থাকার রেকর্ড গড়েন। পরবর্তীতে, এটিই তাঁর সর্বশেষ টেস্টে পরিণত হয়।

দলের নেতৃত্ব গ্রহণের পাশাপাশি মনস্তত্ববিদ, পরবর্তীতে লেখক ও শিক্ষকতা পেশার সাথে নিজেকে জড়িত করেন। ‘অন ফর্ম’ শীর্ষক গ্রন্থ প্রকাশ করেন। তাঁর ব্যবহৃত ক্রিকেট সরঞ্জামের ট্রাঙ্ক এমসিসি যাদুঘরে রক্ষিত আছে। এমসিসি ওয়ার্ল্ড ক্রিকেট কমিটির সম্মেলনে ভাষণ দেন।