|

মাইকেল ভ্যানডর্ট

১৯ জানুয়ারি, ১৯৮০ তারিখে কলম্বোয় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার। মূলতঃ ব্যাটসম্যান হিসেবে দলে ভূমিকা রেখেছিলেন। বামহাতে ব্যাটিং করতেন। এছাড়াও, ডানহাতে মিডিয়াম বোলিংয়ে পারদর্শী। ২০০০-এর দশকে শ্রীলঙ্কার পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন।

দীর্ঘদেহী বামহাতি ব্যাটসম্যান। ১৯৯৮-৯৯ মৌসুম থেকে ২০১৩-১৪ মৌসুম পর্যন্ত সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান রাখেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর শ্রীলঙ্কান ক্রিকেটে কলম্বো ক্রিকেট ক্লাব, রাগামা ক্রিকেট ক্লাব ও ওয়েয়াম্বার প্রতিনিধিত্ব করেছেন। এছাড়াও, খেলাঘর সমাজ কল্যাণ সমিতির পক্ষে খেলেছেন। কলম্বো ক্রিকেট ক্লাব ও শ্রীলঙ্কা ‘এ’ দলের পক্ষে চমৎকার ক্রীড়া নৈপুণ্যের স্বাক্ষর রাখায় ২০০১ সালে জাতীয় পর্যায়ের খেলার সুযোগ পান। বেশ বয়স নিয়ে খেলার জগতে প্রবেশ করেন। সেন্ট যোসেফস প্রথম একাদশের পক্ষে মাত্র একটি প্রথম-শ্রেণীর খেলায় অংশ নেন। তাসত্ত্বেও দ্রুত নিজেকে মেলে ধরতে সচেষ্ট ছিলেন।

২০০১ থেকে ২০০৮ সময়কালে শ্রীলঙ্কার পক্ষে সর্বমোট ২০ টেস্ট ও একটিমাত্র ওডিআইয়ে অংশ নিয়েছিলেন। আগস্ট, ২০০১ সালে ভারতের বিপক্ষে খেলার জন্যে বোর্ড একাদশের সদস্যরূপে মনোনীত হন। মনোমুগ্ধকর শতরানের কল্যাণে শ্রীলঙ্কার ১৬-সদস্যের টেস্ট দলে যুক্ত হন। তবে, ঐ সিরিজে তাঁকে মাঠের বাইরে অবস্থান করতে হয়। অবশেষে ২০০১-০২ মৌসুমে নিজ দেশে বাংলাদেশের বিপক্ষে খেলার সুযোগ পান। এ পর্যায়ে দল নির্বাচকমণ্ডলী জ্যেষ্ঠ খেলোয়াড়দেরকে বিশ্রামে পাঠায়।

২০০১ সালে নিজ দেশে নাইমুর রহমানের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশী দলের মুখোমুখি হন। ৬ সেপ্টেম্বর, ২০০১ তারিখে কলম্বোর এসএসসিতে এশিয়ান টেস্ট চ্যাম্পিয়নশীপে বাংলাদেশের বিপক্ষে প্রতিযোগিতার দ্বিতীয় খেলায় তাঁর অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। দলের একমাত্র ইনিংসে ৩৬ রান সংগ্রহ করেছিলেন। তবে, মুত্তিয়া মুরালিধরনের অসাধারণ বোলিংশৈলীর কল্যাণে স্বাগতিকরা ইনিংস ও ১৩৭ রানে জয় পায়।

২০০২ সালে নিজ দেশে খালেদ মাসুদের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশী দলের মুখোমুখি হন। ২৮ জুলাই, ২০০২ তারিখে কলম্বোর এসএসসিতে অনুষ্ঠিত সফররত বাংলাদেশের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে অংশ নেন। দূর্দান্ত ক্রীড়াশৈলী প্রদর্শনে অগ্রসর হন। ৬১ ও ১৪০ রান সংগ্রহ করেছিলেন। তাঁর অসাধারণ ব্যাটিংশৈলীর কল্যাণে স্বাগতিকরা ২৬৮ রানে জয় পেয়ে ২-০ ব্যবধানে সিরিজে বিজয়ী হয়। খেলায় তিনি ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার লাভ করেন। তবে, শতরানের ইনিংস খেললেও দীর্ঘ সাড়ে তিন বছর জাতীয় দলের বাইরে অবস্থান করে তাঁকে প্রতীক্ষার প্রহর গুণতে হয়।

সনথ জয়সুরিয়া ও মারভান আতাপাত্তু’র উদ্বোধনী জুটি থিতু হবার ফলে দলে অংশগ্রহণের সুযোগ আরও কমে আসে। তাসত্ত্বেও, অনেক ক্রিকেটবোদ্ধারই অভিমত যে, দল নির্বাচকমণ্ডলী থেকে ক্রমাগত উপেক্ষার শিকারে পরিণত হয়েছিলেন। ফেব্রুয়ারি, ২০০৬ সালে মেলবোর্নে স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সনথ জয়সুরিয়া’র আঘাতের কারণে ওডিআইয়ে অভিষেক ঘটার সুযোগ আসে। দৃষ্টিনন্দন খেলা উপহার দিয়ে দলের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক হন। তবে, বেশ ধীরলয়ে ৪৮ রান তুললে সিরিজের বাদ-বাকী খেলা থেকে বাদ পড়েন।

২০০৭-০৮ মৌসুমে নিজ দেশে মাইকেল ভনের নেতৃত্বাধীন ইংরেজ দলের মুখোমুখি এরপর, ৯ ডিসেম্বর, ২০০৭ তারিখে কলম্বোর এসএসসিতে অনুষ্ঠিত সফররত ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে অংশ নেন। খেলায় তিনি একবার ব্যাটিংয়ে নেমে ১৩৮ রান সংগ্রহসহ একটি ক্যাচ তালুবন্দী করেন। তবে, দলীয় অধিনায়ক মাহেলা জয়াবর্ধনের অসাধারণ শতক সত্ত্বেও খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ালে স্বাগতিকরা তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে যায়।

এরপর, বাংলাদেশের বিপক্ষে দুই টেস্টে অংশ নেন। আবারও বেশ ভালোমানের ক্রীড়াশৈলী উপহার দেন। বিশেষতঃ সামনের পায়ে ভর রেখে খেলতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। এছাড়াও, অফ-সাইড ও লেগ-সাইডে সমান দক্ষতা দেখিয়েছেন। স্লিপ অঞ্চলে চমৎকার ভূমিকা রাখলেও মাঠে বেশ স্থবির ছিলেন। ফলশ্রুতিতে, সীমিত-ওভারের খেলায় তাঁর অংশগ্রহণ বেশ সীমিত পর্যায়ের ছিল।

২০০৮-০৯ মৌসুমে মাহেলা জয়াবর্ধনে’র নেতৃত্বাধীন শ্রীলঙ্কান দলের সদস্যরূপে বাংলাদেশ গমন করেন। ২৬ ডিসেম্বর, ২০০৮ তারিখে ঢাকায় অনুষ্ঠিত স্বাগতিক বাংলাদেশের বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। ৪৪ ও ৬ রান সংগ্রহ করেছিলেন। তবে, সাকিব আল হাসানের প্রাণান্তঃকর প্রয়াস চালানো সত্ত্বেও সফরকারীরা ১০৭ রানে জয় পেলে দুই-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে এগিয়ে যায়। পরবর্তীতে, এটিই তাঁর সর্বশেষ টেস্টে পরিণত হয়।

Similar Posts

  • | |

    শিখর ধবন

    ৫ ডিসেম্বর, ১৯৮৫ তারিখে দিল্লিতে জন্মগ্রহণকারী বিখ্যাত ক্রিকেটার। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ভারতের প্রতিনিধিত্ব করছেন। মূলতঃ ব্যাটসম্যান হিসেবে দলে ভূমিকা রাখছেন। বামহাতে ব্যাটিং উদ্বোধনে নামেন। এছাড়াও, মাঝে-মধ্যে ডানহাতে অফ-ব্রেক বোলিং করে থাকেন। ভারতের পক্ষে সকল স্তরের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন ও অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০০৪-০৫ মৌসুম থেকে ২০১৯-২০ মৌসুম পর্যন্ত সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান রাখেন।…

  • | |

    অ্যালান ডোনাল্ড

    ২০ অক্টোবর, ১৯৬৬ তারিখে অরেঞ্জ ফ্রি স্টেটের ব্লোমফন্তেইন এলাকায় জন্মগ্রহণকারী বিখ্যাত ক্রিকেটার ও কোচ। মূলতঃ বোলার হিসেবে দলে ভূমিকা রেখে গেছেন। ডানহাতে ফাস্ট বোলিং করতেন। এছাড়াও, ডানহাতে নিচেরসারিতে ব্যাটিংয়ে নামতেন। দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন। ৬ ফুট ৪ ইঞ্চি (১.৯৩ মিটার) উচ্চতার অধিকারী। ‘হোয়াইট লাইটনিং’ ডাকনামে পরিচিতি পান। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর দক্ষিণ আফ্রিকান…

  • |

    ধীরাজ পারসানা

    ২ ডিসেম্বর, ১৯৪৭ তারিখে গুজরাতের রাজকোটে জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার। মূলতঃ বোলার হিসেবে দলে ভূমিকা রেখেছিলেন। বামহাতে মিডিয়াম-ফাস্ট কিংবা স্লো লেফট-আর্ম অর্থোডক্স বোলিংয়ে পারদর্শী ছিলেন। এছাড়াও, বামহাতে নিচেরসারিতে ব্যাটিংয়ে নামতেন। ১৯৭০-এর দশকে ভারতের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন। ৪০ একর ভূমির মালিক, ধনী কৃষকের সন্তান ছিলেন। ১৯৬৫-৬৬ মৌসুম থেকে ১৯৮২-৮৩ মৌসুম পর্যন্ত সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান…

  • |

    ব্যাসিল গ্রিভ

    ২৮ মে, ১৮৬৪ তারিখে মিডলসেক্সের কিলবার্ন এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ছিলেন। মূলতঃ ব্যাটসম্যান হিসেবে দলে ভূমিকা রেখে গেছেন। ডানহাতে ব্যাটিং করতেন। এছাড়াও, ডানহাতে মিডিয়াম-ফাস্ট বোলিংয়ে পারদর্শী ছিলেন। ১৮৮০-এর দশকে ইংল্যান্ডের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন। হ্যারো স্কুলে অধ্যয়ন করেছিলেন। ক্লাব পর্যায়ের ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন। পেশায় পানশালা পরিচালনা করতেন। হ্যারোর পক্ষে বোলার হিসেবে বেশ সফলতার স্বাক্ষর রাখেন।…

  • | | |

    জেজে ফেরিস

    ২১ মে, ১৮৬৭ তারিখে নিউ সাউথ ওয়েলসের সিডনিতে জন্মগ্রহণকারী বিখ্যাত ক্রিকেটার ছিলেন। মূলতঃ বোলার হিসেবে দলে ভূমিকা রেখে গেছেন। বামহাতে বোলিং করতেন। এছাড়াও, বামহাতে নিচেরসারিতে ব্যাটিংয়ে নামতেন। অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ড – উভয় দলের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন। ৫ ফুট ৫ ইঞ্চি উচ্চতার অধিকারী জে. জে. ফেরিস শক্ত-মজবুত গড়নের কাঁধের কারণে বলে পেস আনয়ণ করতে…

  • | | | |

    হানিফ মোহাম্মদ

    ২১ ডিসেম্বর, ১৯৩৪ তারিখে তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের গুজরাতের জুনাগড়ে জন্মগ্রহণকারী বিখ্যাত ক্রিকেটার, প্রশাসক ও কোচ ছিলেন। মূলতঃ ব্যাটসম্যান হিসেবে দলে ভূমিকা রেখে গেছেন। ডানহাতে ব্যাটিং করতেন। এছাড়াও, ডানহাতে অফ-ব্রেক বোলিংয়ে পারদর্শী ছিলেন। পাশাপাশি দলের প্রয়োজনের উইকেট-রক্ষণে অগ্রসর হতেন। পাকিস্তান দলের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেছেন। পাকিস্তানী ক্রিকেটের প্রথম তারকা খেলোয়াড় ছিলেন। রান তোলার ক্ষেত্রে ডন ব্র্যাডম্যানের…