৬ জুলাই, ১৯৫৮ তারিখে সাসেক্সের শোরহাম-বাই-সী এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ও আম্পায়ার। মূলতঃ উদ্বোধনী ব্যাটসম্যানের দায়িত্ব পালন করতেন। বামহাতে ব্যাটিং করতেন। এছাড়াও, ডানহাতে অফ-ব্রেক বোলিংয়ে পারদর্শী ছিলেন। ১৯৮০-এর দশকে ইংল্যান্ডের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছিলেন।
‘বেনি’ ডাকনামে পরিচিত মার্ক বেনসন ৫ ফুট ৯ ইঞ্চি উচ্চতার অধিকারী ছিলেন। সাটন ভ্যালেন্স স্কুলে অধ্যয়ন করেছেন। ইনিংস উদ্বোধনে খাঁটিমানের ব্যাটসম্যানের পরিচয় দিতেন। তবে, ক্রিকেটে অন্যতম সেরা আম্পায়ার হিসেবে বিবেচিত হলেও বিভিন্ন বিতর্কের সাথে নিজেকে জড়িয়ে রেখেছেন। ১৯৮০ থেকে ১৯৯৫ সময়কাল পর্যন্ত প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান রাখেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে কেন্ট দলের পক্ষে এক দশকের অধিক সময় প্রতিনিধিত্ব করেছেন। দীর্ঘদিন দলের অন্যতম চালিকাশক্তিতে পরিণত হয়েছিলেন। কেন্ট দলের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেছেন।
১৯৮৬ সালে ইংল্যান্ডের পক্ষে একটিমাত্র টেস্ট ও সমসংখ্যক ওডিআইয়ে অংশগ্রহণের সুযোগ পেয়েছিলেন। একমাসের মধ্যেই তাঁর আন্তর্জাতিক খেলোয়াড়ী জীবনের সমাপ্তি ঘটে। ১৯৮৬ সালে নিজ দেশে কপিল দেবের নেতৃত্বাধীন ভারতীয় দলের মুখোমুখি হন। ৩ জুলাই, ১৯৮৬ তারিখে বার্মিংহামের এজবাস্টনে অনুষ্ঠিত সিরিজের তৃতীয় ও চূড়ান্ত টেস্টে সফররত ভারতের বিপক্ষে অংশ নেন। নীল র্যাডফোর্ডের সাথে তাঁর একযোগে টেস্ট অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। দুই ইনিংস থেকে মাত্র (৩০ ও ২১) ৫১ রান তুলেছিলেন। মাইক গ্যাটিংয়ের অসাধারণ ব্যাটিংশৈলী প্রদর্শন সত্ত্বেও খেলাটি ড্রয়ে পরিণত হলে সফরকারীরা ২-০ ব্যবধানে সিরিজ জয় করে নেয়।
এরপর, ১৬ জুলাই, ১৯৮৬ তারিখে লিডসে অনুষ্ঠিত সফররত নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে একটিমাত্র ওডিআইয়ে অংশ নেয়ার পর দল থেকে বাদ পড়েন। এ খেলায় ২৪ রান সংগ্রহ করেছিলেন।
আঘাতের কারণে ১৯৯৫ সালে সকল স্তরের ক্রিকেট খেলা থেকে অবসর গ্রহণ করেন। এরপর আম্পায়ারিংয়ের দিকে ঝুঁকে পড়েন। ১৯৯৭ সালে ইংল্যান্ডে অনুষ্ঠিত প্রথম-শ্রেণীর খেলাগুলো পরিচালনায় অগ্রসর হন। জুন, ২০০৪ সালে প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আম্পায়ারের দায়িত্ব পালন করেন। ২০০৫ সালে আইসিসি আন্তর্জাতিক আম্পায়ার প্যানেলে যুক্ত হন। এরপর, এপ্রিল, ২০০৬ সালে আইসিসি এলিট প্যানেলে প্রবেশ করেন। ৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১০ তারিখে আইসিসি এলিট প্যানেল থেকে অবসর গ্রহণের কথা নিশ্চিত করেন। তবে, ২০১৬ সাল পর্যন্ত কাউন্টি ক্রিকেটে তিনি সরব থাকেন।
প্রথম আন্তর্জাতিক আম্পায়ার হিসেবে ডিসিশন রিভিউ সিস্টেমের সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে ক্রিকেট ইতিহাসে নিজেকে ঠাঁই করে নেন। টি২০ বিশ্বকাপের চূড়ান্ত খেলা পরিচালনায় অংশ নেন। ২০০৭-০৮ মৌসুমে বর্ডার-গাভাস্কার ট্রফির দ্বিতীয় খেলায় ছয়টি ভুল সিদ্ধান্ত প্রদান করে খেলার ফলাফলে বিরূপ প্রভাব ফেলেন। ২০০৯ সালে অস্ট্রেলিয়া-ওয়েস্ট ইন্ডিজের খেলায় তাঁর সিদ্ধান্তের পরিবর্তন হলে খেলা ফেলে ইংল্যান্ডে চলে আসেন। এরপর, আর তাঁকে কোন আন্তর্জাতিক খেলা পরিচালনা করতে দেখা যায়নি। সব মিলিয়ে আম্পায়ার ও টিভি আম্পায়ার হিসেবে ৩৬ টেস্ট, ৯৭টি ওডিআই ও ২৫টি টি২০আই পরিচালনা করেছেন। ২০ জানুয়ারি, ২০১৬ তারিখে পেশাদারী জীবনের ইতি ঘটান।
